![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঐশীকে কেন্দ্র করে তার ঘনিষ্ট বন্ধু জনির পরিবারেও ছিল কলহ। জনির সঙ্গে ঐশীর সম্পর্ক কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি তার স্ত্রী আইরিন।
আর এ কারণে দু’জনের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। এমনকি মাঝেমধ্যে দু’জনের মধ্যে হাতাহাতি হতো। জনির মতো তার স্ত্রী আইরিনও একজন ড্যান্সার। বিভিন্ন পার্টিতে নাচতেন তিনি।
পার্টিতে নাচতে গিয়েই আইরিনের সঙ্গে পরিচয় হয় জনির। পরে বিয়ে করে দু’জনে।
ইয়াবা ব্যবসায় জড়ানোর পর ঐশীর সঙ্গে পরিচয় ঘটে জনির। পুলিশ কর্মকর্তার মেয়ে হওয়ায় ঐশীকে কৌশলে আয়ত্তে আনে জনি । এক পর্যায়ে দু’জনে স্বামী স্ত্রীর মতই চলাফেরা করে। আর এই বিষয়টি জানার পর কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি জনির স্ত্রী আইরিন।
ঐশী রাজধানীর চামেলীবাগে চাঞ্চল্যকর পুলিশ দম্পতি হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের একমাত্র কন্যা ঐশী রহমানের আলোচিত বন্ধু ডিবির হাতে আটক জনির মেরুল বাড্ডার ডিআইটি প্রজেক্টের ভাড়া বাসায় গিয়ে এ সব তথ্য জানা গেছে।
জনি ডিআইটি প্রজেক্টের এই বাসা ভাড়া নেওয়ার আগে রামপুরা এলাকায় থাকতো।
রাজধানীর মেরুল বাড্ডার পূর্ব দিকে কিছুদূর যেতেই ডিআইটি প্রজেক্ট। এই আবাসিক এলাকার ৯ নম্বর রোডের ৪০ নম্বর টিনশেড বাড়ি। বাড়ির দক্ষিণ দিকের দুই নম্বর রুমটিতেই জনি ও তার স্ত্রী আইরিন থাকতো।
গত জুলাই মাসে বাড়ির মালিক শহিদুল্লাহ মাস্টারের ছোট ছেলে রেদোয়ানের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকায় এক রুম ভাড়া নেয় তারা।
রেদোয়ান বাংলানিউজকে বলেন, জুলাই মাসে তারা এই বাসায় ওঠে। বাসায় ওঠার পর থেকে জনি ও তার স্ত্রী আইরিনের চলাফেরা মেনে নিতে পারেননি বাসার অন্যান্য ভাড়াটিয়ারা।
তিনি বলেন, বাসায় ওঠার সময় জনি নাচ করতেন বলে জানিয়েছিলেন। ভালো বলেই আমরা বাসায় তাদের উঠিয়েছিলাম। কিন্তু বাসা ভাড়া নেওয়ার পর তার গতিবিধি ছিল খুবই রহস্যজনক। অন্যান্য ভাড়াটিয়া কারও সঙ্গে কথা বলতো না জনি।
সকালে জনি বাইরে গেলে আইরিনের বন্ধু বান্ধবরা বাসায় আসতো। চলতো আড্ডাবাজি। আর আইরিনের ড্রেসআপ থেকে শুরু করে তার চলাফেরা কেউ মেনে নিতো না। এ জন্য আমরা তাকে বাসা ছেড়ে দেওয়ার জন্য জুলাই মাসেই কয়েকবার বলেছি।
আগস্ট মাসের মাঝামাঝি থেকে জনি ও তার স্ত্রী এই বাসায় থাকেনি। পুলিশ এসে বাসার কিছু জিনিসপত্র নিয়ে গেছে। পাশাপাশি ওই রুমে তালাও মেরে গেছে বলে তিনি জানান।
বাসার অন্য ভাড়াটিয়া সুরাইয়া আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, জনি তার স্ত্রী আইরিনকে সব সময় বকাঝকা করতো। এমনকি দু’জনের মধ্যে বেশ কয়েকবার হাতাহাতি হতে দেখেছেন।
তিনি বলেন, তাদের ঝগড়ার সময় আইরিন বার বার ঐশী’র নাম বলতেন। কিন্তু জনি, ঐশীর নাম বলতেই চিৎকার করে নানা কথা বলতো। জনি
তিনি বলেন, আমরা কেউ আইরিনের সঙ্গে তেমন কথা বলতাম না। তার পোশাক-আশাক ভালো ছিল না। জনি বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর দুই তিনজন করে বন্ধু বান্ধব আসতো আইরিনের কাছে। এমনকি সেই বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গেও চলে যেত সে।
তিনি বলেন, আইরিনও নাচ করতেন বলে জানিয়েছে। তার বাবার বাড়ি গাজীপুর জেলায় বলে জানিয়েছিল।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জনি মেরুল বাড্ডায় থাকলেও তার আস্তানা ছিল মূলত শাহজাহানপুর, বাসাবো, মানিকনগর, খিলগাঁও, বনশ্রী এলাকায়। নাচ করার পাশাপাশি ইয়াবা বিক্রি ছিল মূল ব্যবসা।
আর ইয়াবা ব্যবসা করতে গিয়েই ঐশীর সঙ্গে বছর খানেক আগে তার পরিচয় ঘটে। ঐশী পুলিশ কর্মকর্তার একমাত্র মেয়ে জানতে পেরে বিভিন্ন কৌশলে তার সঙ্গে সম্পর্ক করে জনি।
তারা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একসঙ্গেই থাকতো। কখনও বনশ্রী, কখনও খিলগাঁও আবার কখনও বাসাবো এলাকায় তারা একসঙ্গেই থেকেছে। আর এ বিষয়টি কখনো মেনে নিতে পারেননি জনির স্ত্রী আইরিন। রামপুরা এলাকায় থাকার সময় ঐশীকে নিয়ে বিরোধের কারণে সেই বাড়িটি ছাড়তে হয় তাদের।
আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের দু’দিন পর গত ১৭ আগস্ট নিহত পুলিশ দম্পতির একমাত্র কন্যা ঐশী রহমান পুলিশের কাছে ধরা দেয়। এরপর বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য।
ঐশীর বন্ধু হিসেবে নাম আসে জনি, রনি, সাইদুলসহ আরও বেশ কয়েকজনের। গোয়েন্দা পুলিশ রনিকে আটক করলেও জনি থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। অবশেষে ১৯ সেপ্টেম্বর গোয়েন্দা পুলিশ জনিকে আটক করে। বর্তমানে সে ৫ দিনের রিমান্ডে গোয়েন্দা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
জানা গেছে, জনির হাত ধরেই অন্ধকার জগতের ভেতরে প্রবেশ করেন ঐশী। মাদকাসক্ত বাবা মায়ের বখে যাওয়া ঐশীকে তুরুপের তাসের মত ব্যবহার করে জনি। জনির কৌশলগত সম্পর্ক ঐশীকে তার সবচেয়ে কাছের মানুষ বানিয়ে দেয়।
জনির পুরো সার্কেলই ঐশীর বিষয়টি জানতো। পারিবারিকভাবে ঐশীকে যখন তার বাবা মা শাসন করতে থাকেন তখন এই জনির হাত ধরে সে চলে আসে। জনি তাকে বাড়ি ভাড়া করে দেয়।
বাবা মা বিষয়টি জানতে পেরে তাকে সে বাড়ি থেকে নিয়ে আসেন। এরপর জনির সঙ্গে যেন যোগাযোগ করতে না পারে বা ঐশী বাড়ি থেকে একা যেন বাইরে যেতে না পারে সে ব্যাপারেও চেষ্টা করেন তার বাবা মা। কিন্তু ঐশী ঠিকই যোগাযোগ করে জনির সঙ্গে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেন, হত্যার আগে ও পরে সব কিছু জানতো জনি। এমনকি হত্যার পরপরই ঐশীকে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়ার কথা জানায় জনি। কিন্তু জনির দেওয়া আশ্বাস বিশ্বাস করতে না পারার কারণেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে ঐশী।
উল্লেখ্য, গত ১৬ আগস্ট রাজধানীর চামেলীবাগে এসবি’র পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের একমাত্র কন্যা ঐশী রহমান পরের দিন ১৭ আগস্ট পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে।
পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ঐশীর বন্ধু মিজানুর রহমান রনি ও গৃহকর্মী সুমিকে আটক করে। হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেয় ঐশী রহমান।
২| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৪
নজরুল ইসলাম বিডি বলেছেন: বিশ্ময়ে তাকিয়ে রয়
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৬
১১স্টার বলেছেন: অবাক পৃথিবী।