নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানব সেবাই প্রকৃত ধর্ম

আসাদবেস্ট

মানুষের উপকার করার মধ্যেই প্রকৃত সার্থকতা নিহীত

আসাদবেস্ট › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছবির দ্বন্দ্ব, শো-অফ বনাম বাস্তবতা

২৭ শে মে, ২০২০ বিকাল ৫:১২

পানিতে ঈদের জামায়াতের ছবি নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলছে‍ন। ভাইরাল হওয়ার জন্য নাকি নামাজ নিয়ে চটকদারিতা করা হয়েছে! গাবুরা-কয়রার মতো জায়গার ভৌগোলিক বাস্তবতা না জানার কারণে এই বিভ্রান্তি‍। আর চারদিকে মানুষের যে শো-অফ প্রবৃত্তি, তাতে সন্দেহ আরও উস্কে ওঠে‍।

উপকূলীয় এলাকার মানুষ‍ মাত্রই জানে ভেড়িবাঁধ নিয়ে হাহাকার‍। পৃথিবীতে যেখানে সাগর ভরাট করা ডালভাত হয়ে গেছে, সেখানে মাত্র ১০ ফুট উঁচু মজবুত একটা বাঁধ নির্মাণ ৪০ বছরেও সম্পন্ন করা যাচ্ছে না‍। কত টাকা লাগে এই কাজটা করতে!

কয়রার গাবুরায় যখন উত্তাল জলোচ্ছ্বাস দাপিয়ে আসে, ভঙ্গুর বাঁধ যখন চতুর্দিক থেকে হুড়মুড় করে ওঠে, তখন পুরো অঞ্চলের মাথাব্যথা হয় প্লাবন ঠেকানো‍। সেসময় করোনার ভয় থাকে না, ঈদের আমেজ থাকে না‍। শো-অফের শয়তানি, ভাইরালের ভণ্ডামি মনে আসে না‍। বাঁধ জোড়াতালির সম্মিলিত কাজ আর আল্লাহর উপর ভরসা তাদের বেঁচে থাকার সম্বল হয়‍।

কথা ছিল উপকূলীয় বাঁধ বানানোয় সাগরপ্রমাণ দুর্নীতি নিয়ে সোচ্চার হওয়ার। সুন্দরবনের পক্ষে দাঁড়াবার। কিন্তু তা না করে ইস্যু হয়েছে ‘ধর্ম’। ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত জনপদের মানুষের পাশে থাকার কথা ছিল, সেটা না করে কেন তারা পানিতে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়লো সেই নিয়ে সরব। সব ব্যাপারে ধর্মকে টেনে আনা ধর্ম ব্যবসায়ীর আকাজ।

আম্ফানে তলিয়ে যাওয়া গ্রামের মানুষের ঈদ–চাঁদের সময় ছিল না। বাংলাদেশের কৃষকের ফসল তোলার মাস এটা। এই মাসেই তার ভয় বেশি: ঝড়–বৃষ্টি আর ফড়িয়ার, দাম না পাওয়ার। এই মাসেই তারা বছরের সেরা খাটুনিটা দেয়। করোনা আর আম্ফানে দিনে কৃষকেরা কী বিপদে আছে, সেসবের কোনও খোঁজ আমরা কতজন রাখতে পারি? তা না পারলেও বাইনোকুলার দিয়ে ছিদ্রান্বেষণের কৌশল আমরা ভালোভাবেই রপ্ত করতে পেরেছি।

আমাদের দরকার ছিলো জনপ্রতিনিধিদের ধরার, ওয়াপদাকে ধরার, তাদের সমালোচনা করার। তারা যেন তেন প্রকারে বাঁধ বানিয়ে কাজ সারে। কিন্তু এসবে তাদের মাথা-ব্যথা নেই। তাদের কাছে দোষের হলো পানিতে দাঁড়িয়ে ঈদের নামাজ পড়া। কেন বাড়ি থেকে প্রস্তুতি নিয়ে নামাজের জন্য এলো না? কেন ভালো কাপড় পরে এলো না?

কেউ কেউ আবার কয়েক কাঠি সরেস হয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এরা কি ফজরের নামাজ পড়েছে? এরা কী জোহরের নামাজ পড়েছে? সামান্য ওয়াজিব নামাজ কেন এভাবে হাটু পানিতে দাঁড়িয়ে পড়তে হবে? এরা কী প্রস্রাব করে পানি নিয়েছে? এরা কি প্রস্রাব করে এই এলাকা তলিয়ে দেয়নি? এরা কী বড়ি থেকে ওজু করে এসেছে। এরা কী অপবিত্র ছিলো। এরা অপবিত্র ছিলো না, পবিত্র ছিলো তার দায়-ভায় এদের উপর পড়বে। আপনার কেন ঠেকা পড়েছে এদের অপবিত্র বানানোর? এরা প্রস্রাব করে পানি নিয়েছে, এই প্রশ্নের মাধ্যমে আপনি কি বলতে চাচ্ছেন, আপনি প্রস্রাব করে পানি নেন না?

যে মানুষেরা সকালবেলা দল বেঁধে মাটি কেটেছে কাদায় মাখামাখি হয়ে, তারাই হাটু পানিতে দাঁড়িয়ে ঈদের নামাজটাও পড়েছে। তাদের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা থাকলে সরকারকে বলতেন, বাঁধ বানায়ে দাও যেভাবে পারো।

টলমল পানিতে কৃষিজীবী মানুষগুলো সিজদার ভঙ্গিতে দুহাত ছোঁয়াচ্ছে; এর থেকে সুন্দর ছবি আর কয়টা আছে? এক অপূর্ব দৃশ্য। এই নামাজ শেষে তারাই আবার ফিরে যাবে বাঁধ তৈরির কাজে। কৃষকের চাষের জমি তার পবিত্র ভূমি, তার জীবনের আশা-ভরসার স্থল।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে মে, ২০২০ বিকাল ৫:৩২

চাঁদগাজী বলেছেন:


মানুষ যদি ইহা করতেন, ইহা প্রতীকি প্রতিবাদ হতো।

জামাত-শিবির উহা করাতে মানুষ ভীত।

২| ২৭ শে মে, ২০২০ বিকাল ৫:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: নদী ভাঙ্গন প্রতিবছর হচ্ছে।
এর কি কোনো স্থায়ী সমাধান নাই?

২৭ শে মে, ২০২০ বিকাল ৫:৫৭

আসাদবেস্ট বলেছেন: আমাদের জনপ্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যতদিন সততার সাথে দায়িত্ব পালন না করবেন ততদিন কোনো কিছুরই সুষ্ঠু সমাধান হবে না।

৩| ২৭ শে মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৮

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: যে মানুষেরা সকালবেলা দল বেঁধে মাটি কেটেছে কাদায় মাখামাখি হয়ে,
তারাই হাটু পানিতে দাঁড়িয়ে ঈদের নামাজটাও পড়েছে। তাদের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা থাকলে সরকারকে বলতেন,
বাঁধ বানায়ে দাও যেভাবে পারো।

....................................................................................................................................
আপনার কথাগুলির যতার্থতা আছে, তারপরও কথা থাকে এজন্য নামাজ এভাবে পড়তে হবে ???
স্হানীয় আরও অনেকের বক্তব্য পেয়েছি, চেষ্টা করে কাছেই শুকনো স্হানে নামাজ পড়ার ব্যবস্হা করা যেত ।

৪| ২৭ শে মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৬

মীর আবুল আল হাসিব বলেছেন: আপনার কথার সারমর্ম হচ্ছে:-
ধর্ম নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে কেন হাটু পানির সৃষ্টি হলো, কাদের অসাবধানতার কারনে হাটু পানি হলো তাদের দোষারোপ করা।

আমার কথা হলোঃ- দোষ, কতৃপক্ষ + নামজ আদায়কারী উভয়েরই আছে। কতৃপক্ষ অবহেলা করে আসছে এটা পুরাতন সমস্যা। বরঞ্চ দায়িত্ব পালন করলে আমরা অবাক হই। তাই বলে হাটু পানিতে আমি কেন নামাজ পড়বো।

আপনি নামাজ আদায়কারীদের হয়ে ধামা ধরার একটা সুক্ষ্ম চেষ্টা করেছেন।

৫| ২৭ শে মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: আমাদের জনপ্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যতদিন সততার সাথে দায়িত্ব পালন না করবেন ততদিন কোনো কিছুরই সুষ্ঠু সমাধান হবে না।

জনপ্রতিনিধিরা তো মানুষের মঙ্গলের জন্যই রাজনীতিতে নামেন।

২৭ শে মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৫

আসাদবেস্ট বলেছেন: জনপ্রতিনিধিরা তো মানুষের মঙ্গলের জন্যই রাজনীতিতে নামেন।
তাদের দৃষ্টিতে এই মানুষ কারা সেটাই তো গবেষণার বিষয়? এই মানুষ মনে হয় তারা নিজেরা, তাদের আত্মীয়-স্বজন এবং কতিপয় চ্যালা-চামুন্ডা!

৬| ২৭ শে মে, ২০২০ রাত ৮:৩৩

নেওয়াজ আলি বলেছেন: এই ঈদের জামাত নিয়ে চিল্লাচিল্লির পর ওইখানের মিনার মেহেদি নামে একজন লেখকের “কান্নার নোনাজল” বইটা পড়ে মানুষের কষ্টের যে ধারণা পেলাম আর কিছু বলার নাই। প্রতিবছর বাধ ভাঙ্গবে পানি আসবে নেতা তা নিয়ে রাজনীতি করবেই।

২৭ শে মে, ২০২০ রাত ৮:৫০

আসাদবেস্ট বলেছেন: বাধ যতবার ভাঙবে, ততবার বরাদ্দ হবে, ততবার পকেট ভরবে, এভাবেই চলতে থাকবে.....

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.