![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হুমায়ুন আজাদ, নামটা শুনলেই আমাদের চোখে ভাসে একজন নাস্তিকের চেহারা। জেগে উঠে আমাদের ভিতরকার সুপ্ত মৌলবাদী চেতনা।
কিন্তু হুমায়ুন আজাদ কি শুধুই একজন নাস্তিক ছিলেন? তিনি কি তার লেখালেখির জীবনে নাস্তিক্য ছাড়া আর কিছুই লেখেন নি?
অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ ছিলেন একজন প্রথাবিরোধী ও বহুমাত্রিক মননশীল লেখক। তিনি তাঁর লেখক জীবনে ৭০ টিরও বেশী গ্রন্থ রচনা করেছেন। ১০টি কাব্যগ্রন্থ, ১৩টি উপন্যাস, ২২টি সমালোচনা গ্রন্থ, ৮টি কিশোরসাহিত্য, ৭টি ভাষাবিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থ তাঁর জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর পরে প্রকাশিত হয়।
হুমায়ুন আজাদ তার সমালোচনা গ্রন্থ গুলোতে তুলে ধরেছেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, রাজনীতি, সমাজনীতি, নারীবাদের সঠিক চিত্র। তাঁর "ছাপান্ন হাজার বর্গমাইল" এমন একটা রচনা যেখানে তিনি তুলে ধরেছেন মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত চিত্রটাকে। আবার "আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়ে ছিলাম" গ্রন্থে ফুটিয়ে তুলেছেন আমাদের মহান রাজনৈতিক নেতাদের মুখোশের আড়ালে ঢেকে রাখা চেহারাটাকে। তার সম্পাদনা গ্রন্থ "নারী" আমাদের মৌলবাদী চেতনার উপর এতটাই আঘাত করেছিল যে, মৌলবাদী চাপের মুখে তৎকালীন সরকার একে নিষিদ্ধ ঘো্ষনা করতে বাধ্য হয়।
হুমায়ুন আজাদ আমৃত্যু কাব্যচর্চা করে গেছেন। তিনি ষাটের দশকের কবিদের সমপর্যায়ী আধুনিক কবি। সমসাময়িক কালের পরিব্যাপ্ত হতাশা, দ্রোহ, ঘৃণা, বিবমিষা, প্রেম ইত্যাদি তার কবিসত্বার প্রধান নিয়ামক। তার রচিত "অলৌকিক ইস্টিমার, জ্বলো চিতাবাঘ, সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে, যতোই গভীরে যাই মধু যতোই ওপরে যাই নীল, আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়ে, কাফনে মোড়া অশ্রুবিন্দু, পেরোনোর কিছু নেই" কাব্য গ্রন্থগুলো পড়লে কবিতা সম্পর্কে আপনার অভিজ্ঞতাটাই বদলে যাবে।
কিন্তু হুমায়ুন আজাদকে আমরা কখনোই চিনতে শিখিনি। সমাজব্যবস্থা, রাষ্ট্রযন্ত্র, মৌলবাদ আমাদের যা দেখিয়েছে আমরা সেই পথেই গড্ডলিকের মত প্রবাহিত হয়েছি। চিল কান নিয়েছে শুনে আমারা চিলের পিছনে ছুটেছি, কানে হাত দিয়ে দেখিনি। নিজের মেধা, শিক্ষাকে কখনোই কাজে লাগাইনি সত্যটাকে জানার জন্য।
আজ হুমায়ুন আজাদের ৬৭তম জন্মদিন। শুভ জন্মদিন হুমায়ুন স্যার।
৫২% স্বাক্ষরতা জ্ঞান সম্পন্ন বাঙ্গালী কখনোই আপনাকে চিনতে পারেনি, কখনো পারবেও না। আপনি চীরকাল অচেনাই রয়ে যাবেন বাঙ্গালীর কাছে।
©somewhere in net ltd.