![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষকে বিশ্বাস করতে চাই এবং বিশ্বাস রেখেই কাজ করতে চাই।বাস্তবের ভিতরে বসবাস করতে ভালবাসি। কল্পনা করতে ভাল লাগে, কিন্তু বাস্তবকে ভুলে নয়। সততা বলতে আংশিক বুঝি না, পুরোটাই বুঝতে চাই। প্রকৃতির মাঝে শান্তি এবং স্বস্তি দু\\\'টোই খুজে পাই। নারীর প্রতি আকর্ষন আছে তবে উন্মাদনা নেই। বয়সকে অনেক ক্ষেত্রেই বাধা মনে করি না। লিখতে ভালবাসি, কবিতা-গল্প, যা কিছু। চারটে বই প্রকাশ করেছি নিজ উদ্যোগে। প্রতিভা নেই, শখ আছে। অনেক কিছুই করতে ইচ্ছে করে, পারি না কেন বুঝি না।
গতকাল সন্ধ্যায় চোখের ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম চোখ দেখাতে। চোখের পাওয়ারে তেমন একটা হেরফের পাওয়া গেল না। তবে দিনান্তের অস্তরাগের পাশাপাশি আমার দু’চোখ কেন রাজ্যের ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়তে চায়, এই প্রশ্নটা করেছিলাম। তিনি আমাকে প্রেসক্রাইব করলেন একটা ড্রপ যার নাম ‘অটো-টিয়ার’। এটা আমাকে প্রতিদিন চার বেলা ব্যবহার করতে হবে।
কেন? আমি কি কাঁদি না? কান্না আসে না আমার!
আমার তো চোখ ভিজে উঠে প্রতিদিন বাবা-মা, ভাই-বোনদের আহাজারিতে। দগ্ধ শিশুর মুখখানি দেখে আমার চোখের কোনে জলফোটা জমে ওঠে কখন বুঝতেই পারি না। বোমার স্প্লিন্টারে রক্তাক্ত শরীর নিয়ে রাস্তায় পড়ে থাকা স্কুল-যাওয়া শিশুটির ছবি দেখে আমি কি চোখের জল ধরে রাখতে পেরেছিলাম? কোন মৃত্যু কি আমাকে না কাঁদিয়ে নির্লিপ্ত রাখতে পেরেছে?
একান্ত ব্যক্তিগত আমার পাওয়া না-পাওয়ার গ্লানিতে আমার দু’চোখ কি জলে ভিজে ওঠে না কখনো? খুব সহজ-সিদ্ধ, নির্লোভ আর নিষ্পাপ চাওয়াগুলোর না পাওয়ার বঞ্চনা কি আমার দু’চোখকে জলমগ্ন করে না? তারপরও কেন এই ‘অটো-টিয়ার’ বুঝতে পারলাম না। ডাক্তার সাহেব তার কি এক যন্ত্র বসিয়ে একেবার চোখে চোখ রেখে (যেন তার সঙ্গে আমার জন্ম-জন্মান্তরের প্রেম!) গভীরে ডুব দিয়ে কি দেখলেন, হয়তো চোখের ভিতরের নদীবক্ষ শুকিয়ে যাওয়ার আলামত দেখতে পেলেন কি না কে জানে। এতই কি তবে কেঁদেছি এ জীবনে যে অশ্রুধারা শুকিয়ে যাওয়ার অবস্থা!
দোকানে যেয়ে ওষুধ চাইলাম, পেলাম। কিছুক্ষন দেখলাম এবং ফেরত দিয়ে বললাম, লাগবে না। দোকানি হা করে রইলেন। আমি বললাম, যারা কাঁদায় কিন্তু কাঁদতে জানে না, এটা তাদের জন্য। দোকানি অপলক তাকিয়ে থেকে বললেন, কিছু বুঝলাম না, স্যার। আমি মুচকি হেসে পথে নেমে পড়ি। বাড়ি ফেরার রাস্তায় যেতে যেতে মনে মনে আওড়াই......
“জলের আগুনে পুড়ে হয়েছি কমল,
কি করে নেভাবে বল আগুনের জল”
– কি কঠিন কথা বলেছে হেলাল হাফিজ।
©somewhere in net ltd.