নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেনিআসহকলা

সবাইকে শুভেচ্ছা।

শফিক আলম

মানুষকে বিশ্বাস করতে চাই এবং বিশ্বাস রেখেই কাজ করতে চাই।বাস্তবের ভিতরে বসবাস করতে ভালবাসি। কল্পনা করতে ভাল লাগে, কিন্তু বাস্তবকে ভুলে নয়। সততা বলতে আংশিক বুঝি না, পুরোটাই বুঝতে চাই। প্রকৃতির মাঝে শান্তি এবং স্বস্তি দু\\\'টোই খুজে পাই। নারীর প্রতি আকর্ষন আছে তবে উন্মাদনা নেই। বয়সকে অনেক ক্ষেত্রেই বাধা মনে করি না। লিখতে ভালবাসি, কবিতা-গল্প, যা কিছু। চারটে বই প্রকাশ করেছি নিজ উদ্যোগে। প্রতিভা নেই, শখ আছে। অনেক কিছুই করতে ইচ্ছে করে, পারি না কেন বুঝি না।

শফিক আলম › বিস্তারিত পোস্টঃ

চোখের জলে লিখছি...

১৪ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:৩০

আমি তখন পাকিস্তানে। সম্ভবতঃ ২০১০ সালের ঘটনা। ইসলামাবাদের অফিসে বসে আছি। পাকিস্তানী কলিগদের মাঝে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে...কি নিয়ে যেন আহারে, আহারে করছে। এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম ব্যাপার কি! মিঃ আমজাদ বললেন, কাল রাতে টেলিভিশনে খবর দেখেন নি? দুই ভাইকে কেমন করে পিটিয়ে মেরে ফেললো, তাও দিনে দুপুরে। 'দেখিয়ে, কেয়া চাল্‌ রাহা হ্যায় হামারা পকিস্তান মে।'

গতরাতে আমি ওদের খবর দেখিনি। কত দেখবো! প্রায় প্রতিদিনই বোমাবাজি, টার্গেট কিলিং আছেই। সেদিন অফিস থেকে হোটেলে ফিরে খবরের সময় টেলিভিশন অন করে দেখলাম সেই একই খবর তখনও প্রচার চলছে ভিডিও ক্লিপের সঙ্গে। খবরটা ভয়াবহ, মর্মান্তিক! দেখা যায় না। শিয়ালকোটে দুই ভাইকে চুরির অভিযোগে দিনভর পিটিয়ে মেরে ফেলে। এখানেই শেষ নয়। দু’জনের মৃতদেহ উল্টো করে প্রকাশ্যে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এরপর পিকআপ ভ্যানের পিছনে বেঁধে গ্রামে রাস্তায় চক্কর দেওয়া হয়। ভিডিও ফুটেজে সবই দেখানো হচ্ছে। সবচেয়ে করুন ব্যাপারটা হচ্ছে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড প্রকাশ্যে জনতার সামনেই ঘটানো হয়েছে। জনতা ভিড় করে দেখছে, কেউ কিছুই বলছে না! এমন কি সেখানে একজন পুলিশকেও দেখা যাচ্ছিল। খবরে সেটাও বারবার বলা হচ্ছে। ফুটফুটে দুই কিশোর, সহোদর। আমার চোখের পানি আমি ধরে রাখতে পারিনি, কোন মানুষ পারবে না। আমি বাঙ্গালিদের দেখানোর জন্য টিভি থেকে সরাসরি ভিডিও করেছিলাম এই ভেবে যে ওদের রক্তে নির্মমতা কেমন ভয়ংকরভাবে মিশে আছে। এই রকম নিষ্ঠুর ঘটনা ওদের দেশে অহরহ ঘটছে।

কিন্তু এখন, এই পাঁচ বছর পর আমার দেশের নির্মম-নিষ্ঠুর ঘটনা দেখে লজ্জায় অবনত হয়ে যাই। পাকিস্তানের সেই ভিডিও ফুটেজটা তাহলে আমি এখন আর কাকে দেখাবো? আমি কি ভেবেছি কখনো যে আমাদের দেশেও একদিন এমন ঘটনা ঘটবে। কি পার্থক্য তবে ওদের সঙ্গে আমাদের! রাজনের হত্যার খবর আর ছবি দেখে আঁতকে উঠেছি। আমাকে মুহূর্তেই মনে করে দিয়েছে পাকিস্তানের সেই ঘটনা। আমরা কি অন্ধকার যুগে ফিরে যাচ্ছি! আমরা হয়তো ভুলে গেছি, কিন্তু প্রায় একই রকম ঘটনা এর আগেও দু’চারবার ঘটেছে এই দেশে। এই সব নিষ্ঠুর-নির্মমতার আখ্যান এখানেই বন্ধ করতে হবে। নইলে আমাদের সামাজিক এবং রাষ্ট্রিক অবস্থান ভয়ংকরভাবে বদলে যাবে।

আমরা বাঙ্গালীরা কি খুব বেশি নিষ্ঠুর হয়ে যাচ্ছি আজকাল? নিকট অতীতের ইতিহাস তো তাই বলে। কারা করে সেটা বিচার্য নয়, কিন্তু যারা করে তাঁরা বাঙ্গালীই, বাংলাদেশী। কাকে বলবো আমি, আমরা কি একজন আরেকজনকে ভাল করে চিনি?...শুধু GDP দিয়ে কিছু হবে না, ওতে পকেট একটু ভারী হবে ঠিকই, গায়ে ভাল জামাও উঠবে কিন্তু হৃদয়ের পচন রুখবো কি দিয়ে! আমরা পচেই চলেছি প্রতিদিন। হৃদয় পচলে কিছুই থাকেনা।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:৪০

শাহাদাত হোসেন বলেছেন: পচতে পচতে এখন আমাদের পচার জন্যও কিছুই নাই ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.