![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন মা এই ব্লগের কোন ছবি, লেখা বা মন্তব্য (সম্পূর্ণ অথবা আংশিকভাবে) লেখকের পূর্ব-অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা যাবেনা। ধন্যবাদ।
রাস্তার ধারে অ্যাডমিন-বিল্ডিং এর সিঁড়িতে বসে সে সমানে কবিতা শুনিয়ে যাচ্ছে। চারপাশে গাদা-গাদা বেহায়া মেয়েগুলোর হ্যাংলামি দেখে গা কিরকির করে সুমনার। একজনের ন্যাকা কন্ঠ শোনা গেলো “আজকে কিন্তু সেই কবিতাটা শোনাতেই হবে নিশান ভাই, সেই যে আহসান হাবিবের লেখা। একটা ছেলে আর একটা মেয়ে কথা বলছে বাসা ছেড়ে চলে যাবার সময়ে...!” কথা বলছে? কথা?? এইই বুঝলো এই হাবা মেয়ে, সে আবার কবিতা শুনতে চায়? তাই বলে সে কবিতার নামটাও জানবে না? উফ্, আহ্লাদি দেখানোর জন্য আবার এরা নিশানকেই বেছে নিয়েছে, আহাম্মকটা তো ভাবছে ওরা না জানি কি কবিতার পাগল!!
দোতলার ল্যান্ডিং মুখোমুখি দুজন - এই কবিতাটার প্রতি সুমনাও অনেক দূর্বল। ঠিক এই কবিতা দিয়েই নিশান প্রথম কথা বলেছিলো তার সাথে। সেদিন ক্লাস শেষ হয়েছিলো অনেকক্ষণ, সুমনা একা বসে লেকচার কপি করছিল কিছু, তাই খেয়াল করেনি কখন দুপুর গড়িয়ে গিয়েছিলো। পেটে খিদে জানান দিতেই খাতা বন্ধ করে চারতলার সিঁড়ি থেকে দুদ্দাড় করে নামতে নামতে দোতলার বারান্দা্তেই শুনতে পেলো নিশান বলছে, “আপনারা যাচ্ছেন বুঝি?” ঘুরে দাঁড়ালো সুমনা। “এক্সকিউজ মি, আপনি কি আমাকে বলছেন?” বলতে বলতেই খেয়াল করলো নিশানের চোখ আটকানো বইয়ের পাতায়, খোলা কন্ঠে সে কার সাথে যেন আলাপচারিতায় মগ্ন। এমনভাবে বলছে কথাগুলো, যেন সত্যি সত্যিই কোনও স্বল্প-পরিচিতা কিন্তু অনেক চেনা প্রতিবেশীর সাথে তার না-বলা অনেক কথা জমিয়ে রেখেছিল মনের গহীনে কোথাও!
মুখোমুখি ফ্ল্যাট
একজন সিঁড়িতে, একজন দরজায়
: আপনারা যাচ্ছেন বুঝি ?
: চলে যাচ্ছি, মালপত্র উঠে গেছে সব।
: বছর দুয়েক হল, তাই নয়?
: তারো বেশী। আপনার ডাক নাম শানু, ভালো নাম?
: শাহানা, আপনার?
: মাবু।
: জানি।
: মাহবুব হোসেন। আপনি খুব ভালো সেলাই জানেন।
: কে বলেছে। আপনার তো অনার্স ফাইন্যাল, তাই নয়?
: এবার ফাইন্যাল।
: ফিজিক্স-এ অনার্স ।
: কী আশ্চর্য! আপনি কেন ছাড়লেন হঠাৎ?
: মা চান না। মানে ছেলেদের সঙ্গে বসে...
: সে যাক গে, পা সেরেছে?
: কী করে জানলেন?
: এই আর কি! সেরে গেছে?
: ও কিছুনা, প্যা সেজটা পিছল ছিল মানে...
: সত্যি নয়। উচুঁ থেকে পড়ে গিয়ে...
: ধ্যাৎ। খাবার টেবিলে রোজ মাকে অতো জ্বালানো কি ভালো?
: মা বলেছে?
: শুনতে পাই। বছর দুয়েক হল, তাই নয়?
: তারো বেশী। আপনার টবের গাছে ফুল এসেছে?
: নেবেন? না থাক। রিকসা এল, মা এলেন , যাই।
: আপনি সন্ধ্যে বেলা ওভাবে কখনও পড়বেন না,
চোখ যাবে, যাই।
: হলুদ শার্টের মাঝখানে বোতাম নেই, লাগিয়ে নেবেন, যাই।
: যান, আপনার মা আসছেন। মা ডাকছেন, যাই।
সিঁড়ির শেষমাথার রেলিংটা ধরে রেখে চুপচাপ দাঁড়িয়ে শুনছিলো সুমনা। যখন কবিতা শেষ হলো, নিশান বই বন্ধ করে চোখ তুলে তাকালো তার দিকে। সুমনার বুকটা ততক্ষণে ভীষণ ব্যাথা, এমন কবিতা সে আগে কখনও শুনেনি। কিছু কথা বলতে গিয়ে যেন টের পেলো হাজারো এমন কথা চাপা পড়ে আছে কোথাও, সেসব হয়তো আর কোনওদিন বলা হবেনা!
“কবিতাটা কি আপনি লিখেছেন?”
-পাগল? আমি কি কবিতা লিখতে পারি নাকি? এটা আহসান হাবীবের কবিতা। কেন, আগে শুনেন নাই?
“আসলে, আমি কবিতা শুনিনাই কখনও। কেউ আমাকে শোনায়নাই, আমারও মাথায় স্ট্রাইক করেনাই যে পড়তে কিংবা শুনতে হবে!”
সেই থেকে নিশানের হাত ধরে সুমনা শব্দের জগতের একোণ-ওকোণে ঘুরে বেড়াতে শুরু করলো।
“অ্যাই, ওঠো এবার, আমার কাজ শেষ।” নিশানের চারপাশে ঘেরাও করে থাকা মেয়েগুলা এবার সচকিত। ওদের দেখিয়েই যেন সুমনা তার হাত ধরে ওঠালো। নিশান একটু অপ্রস্তুতের মত হাসি উপহার দিলো তাদের, যেন যাবার আগেও কিছু ঢেলে দিয়ে যাবার ইচ্ছে।
-অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেওয়া শেষ? আরে ভাই, শার্ট ছিঁড়ে যাবে তো, এভাবে টানছো কেন? লোকজন তাকিয়ে আছে, দেখতে পাচ্ছো??
সুমনা কোনও কথা না-বলে একটা রিকশা ডেকে নিয়ে নিশানের সাথে উঠে পড়লো। এখান থেকে আগে বের হয়ে যেতে হবে। আজকে নিশানের সাথে তার ঝগড়া আছে। সে কি বুঝেনা, যে মেয়েগুলা আসলে তার সাথে হ্যাংলামি করে? নাকি সে এসব খুব এঞ্জয় করে? যত্তোসব!!
৩০ শে মে, ২০১৩ দুপুর ১২:১৪
শাফ্ক্বাত বলেছেন: হা হা হা!!
আমি হাসতেই আছি আপনার মন্তব্য পড়ে।
আপনি মনে হয় সুমনারে চিনেন!!!
২| ২৯ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৫:২৫
ঝটিকা বলেছেন: সুমনাটা কি আপু তুমি নিজে?
অ.ট: আপু অনেকদিন ধরে ভাবি তোমার সাথে একটু পরিচিত হব। কেন জানি তোমার সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করে। আমার মেইল আইডিটা রাখো। সময় পেলে নক কোরো। জানিনা সময় মত আমি রিপ্লায় দিতে পারব কিনা। রিসেন্টলি প্রথমবার ছেলের মা হয়েছি তো, খুব বিজি থাকি । [email protected]
৩০ শে মে, ২০১৩ দুপুর ১২:১৭
শাফ্ক্বাত বলেছেন: আমি নিজে মানে? ওয়াট ডু ইউ মীন?
এই লেখার সাথে লেখকের কিংবা অন্য কারো ব্যক্তিগত ঘটনা মিলে গেলা সেটা একান্তই কাকতালীয়। লেখাটি কল্পনাপ্রসূত এবং কাউকে নির্দেশ করে লেখা নয়
ছেলের মা হয়েছ!! ষুনে খুবই ভালো লাগলো, আলহামদুলিল্লাহ!!
আমি তোমাকে ইমেইল করবো। ফেইসবুকে ইনবক্স করতে পারো আমাকে। এখন তো দেখি সবাই সবাইকে ইনবক্সে মেসেজ পাঠাইতে পারে।
আমার ফেইসবুকের লিংক https://www.facebook.com/anwarshafqat
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:৫৬
হাসান মাহবুব বলেছেন: সুমনারে ভালো লাগসে।