![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি শাহেদ শাহরিয়ার,একটু আবেগি আর খানিকটা যৌক্তিক।
৫ জানুয়ারী ২০১৪ এর আগের ইতিহাস বাদ দিয়ে বললে,এমন কোন দিন যায় নি দু' একটা লাশ পরেনি,দু' একজনের অপঘাতে মৃত্যু হয়নি;সে যেভাবেই হোক: চাপাতির কোপ কিংবা বন্দুকের গুলি।এমনও হয়েছে স্বজনরা লাশটাও ফিরে পায়নি শেষ শোকের পাথরটা গলাতে!প্রতিদিনের পত্রিকা ভরা ছিল,হত্যা,গুম কিংবা ধর্ষণের সচিত্র খবরে,সাথে ছিল উত্তরাধিকারের আসনে বসা রাজাদের দম্ভোক্তি " এ গুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা!অপরাধি যেই হোক পার পাবে না!" উক্তির জয়ন্তী যায়,মানুষের জান- মাল যায়,শুধু অপরাধীর অপরাধ দমানো যায় না!এদেশের মানুষের জন্ম কিংবা মৃত্যু দু' টোর ক্ষেত্রেই ভাগ্যটা খুব খারাপ।এখানে জন্মানোর আগেই মায়ের পেটেই গুলির আঘাত বহন করতে হয়,জন্মাতেই কোন নর্দমা কিংবা পরিত্যক্ত নলে আটকা পরে মরতে হয়,নয়তো বা অমানুষদের অমানুষিক নির্যাতনে দঁড়ি বাঁধা অবস্থায়,পায়ুপথে বায়ু যন্ত্রের পাইপ নিয়ে বুকফাটা আর্তনাদে মরতে হয়।কেউ যদি এই ফাঁড়াগুলা কাটিয়েও ওটে,তবে নতুন ফাঁড়া ওত পেতে থাকে রাস্তায়,অলিতে গলিতে,এমনকি নিজের নিরাপদ ঘরেও! এছাড়া, রাষ্ট্রের অপরিকল্পিত চিন্তার দরুন প্রতিদিন রাজপথে যানের নিচে কত জান পিসে যায় তার সঠিক খবর আমরা কমই রাখি,তারওপর মৃত্যুকে আরোও সহজলভ্য করে দেয়া হয়েছে রাজনীতির নষ্টামিতে,যেটা ইউপি নির্বাচনে সব্বাই দেখেছে,এরপরতো জমদূত ঘরে ঘরে হানা দিবে।এমন হয়ে গেছে,মৃত্যুটা এখানে সত্য,কিন্তু অপমৃত্যু চরম সত্য! অপমৃত্যু থামাতে এখানে আইন আছে,বিচার বিভাগে বড় বড় বিচারক আশ্বাসের ফুলঝুড়ি ছিটাচ্ছেন।অথচ,যেখানে আশ্রয়,সেখানেই বাঘের ভয়!সহজ সরল মানুষ বলি আর নির্যাতিত জনতা,পুলিশি থানাটা এদেশে তাদের কাছে বাঘের খাঁচার মতই,ওখানে কেউই যেতে চায় না; না হত্যা হয়ে যাওয়া পুত্রের পিতা,না ধর্ষিতা,না হুমকিতে থাকা কোন ব্লগার!তাইতো,প্রতিদিন কোন এক পিতা তাঁর স্নেহের পুত্রের প্রান বির্সজন দিচ্ছে,কোন জয়িতা তাঁর সম্ভ্রম বিলিয়ে দিচ্ছে,কোন ব্লগার তাঁর মস্তক বলি দিচ্ছে।
বিনিময়ে রাষ্ট্রযন্ত্র কি দিচ্ছেঃ
রাষ্ট্রে বিশাল বিশাল খাঁচা বানানো আছে,মানুষরূপি জানোয়ারদের জন্য,সেখানে মানুষেরই সংখ্যা এখন বেশি,জানোয়াররা সব্বাই বুক চেতিয়েই ঘুরছে,কেউই পাজেরোতে,কেউ কারে,কেউ সি এনজি কিংবা কেউ বাইকে!এইতো সেদিন জানোয়াররা বাইকে করে এসে মিতুকে মেরে দিয়ে গেল!আমরা আবারও আশ্বাস পেলাম,জানি বিচার পাব না,জানি আরো মৃত্যু অপেক্ষা করছে মিতু,মিরাজদের জন্য!কিন্তু মিতুর অর্ধাঙ্গ তো বেঁচে আছে,যিনি নাকি আবার জানোয়ারদের জম! এখানে তারেও কাঁদতে দেখলাম।আর দেখলাম,একটা খেলা: প্রাণের বিনিময়ে টাকার কামানোর খেলা,উছিলায় রাতের আঁধারে মানুষের জান নেবার খেলা।সেটাতেও রাষ্ট্রেরই অংশীদার,আসামী ঘোষণার আগেই,কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর আগেই,কিংবা নিরীহ মানুষ জানার আগেই ক্রসফায়ার নাটকে কথিত সন্ত্রসীর মৃত্যু,ডিরেক্টরাই ভাল জানেন,এ নাটক বাজারে চলছে কেমন!নাটক যেমনই চলবে চলুক,জনগণ খাক বা না খাক,সেটা চলবেই.. এখন চলছে মিতুর নাম করে,,সর্বশেষ জেনেছি আট হাজার ছাড়িয়ে গেছে,ক্রসে পরেছে আট/ দশজন।চলছে চলুক,কিন্তু সেটা একজন মিতু হত্যার পর কেন!?!?এর আগেওতো সহস্র প্রাণ বলি গেছে,সহস্রজনের সম্ভ্রম গেছে।তবে কি শাসকদের প্রাণেরই শুধু দাম আছে!?শাসিতের যান- মাল- ইজ্জতের কি কোন মূল্য নেই!?এক মিতুর মৃত্যুতে পুলিশ উঠে পরে লেগেছে,রাতারাতি ক্রসফায়ারে দিচ্ছে,এতদিন ধরে যে মানুষের লাশ পরছে,তাদের বাঁচার আকুতি কিংবা স্বজনের আর্তনাদ কি পুলিশ কিংবা রাষ্ট্রের কর্ণকুহরে প্রবেশ করে নি!?তবে তখন কেন অভিযান হয়নি,ঈদ আসেনি বলে!?নাকি ওনাদের কোন ওয়ারিশের প্রাণ যায়নি বলে!?
এই অভিযান যদি কিছুদিন আগে থেকে হতো,তবেতো মিতুর সন্তানরা মাতৃহারা হতো না,আরো আগ থেকে হলে,পুরোহিত সাহেব,পাদ্রী সাহেব,মাওলানা সাহেবদেরও প্রাণ যেত না,আরো আগ থেকে হলে,হয়তো ইউপি নির্বাচনে এত্তজনের জীবন দিতে হতোনা,যদি আরও আগ থেকে হতো,তবে আস্তিক কিংবা নাস্তিক কারো ঘাড়েই চাপাতির কোপ পরতো না!
ইস্! এই অভিযান যদি শুরু থেকেই হতো,তবেতো পুলিশ কিংবা প্রশাসন নিয়ে এতকথা রটতো না,এত প্রাণ হারানোর ব্যথায় এ জাতি মহ্যূমান হতোনা!
©somewhere in net ltd.