![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বেঁচে থাকার চেষ্টায় ব্যস্ত আছি.......
১
রাজ্যের রাজা যদি কাউকে রাজ্যরত্ন বলেন তাহলে সাড়া পরে যাওয়ার কথা তো বটেই । আমার বুকে যখন রাজ্যরত্ন খেতাবের রিবন লাগানো হলো তখন সবাই বলল, এতদিনে একটা সত্যিকারের কাজের লোক পেলো পুরষ্কারখানা । দেশের প্রধান পত্রিকায় লিখা হলো, মানুষের আদিমতম আকাঙ্ক্ষা সুখী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা । আমরা যা কিছু করি না কেনও সবকিছুতেই সুখ বিনা অন্যকিছুর চাওয়া থাকে না । কিন্তু শেষপর্যন্ত অসুখিই রয়ে যাই । তাই মানুষকে সুখী করবার যন্ত্রটি সত্যিকার অর্থেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ আবিষ্কার ।
আর আমি, মানুষকে সুখী করবার যন্ত্রের আবিস্কারক, সমগ্র মানবজাতিকে গভীর বেদনা থেকে মুক্তি দিতে চেয়েছিলাম ।
২
(পূর্ব কথা - নিশিতা মারা গেলো ঠিক আমবস্যার রাতে । বাদুরের চোখের মতো অন্ধকার সে রাত । নিশিতে পাওয়া পাখিগুলোও ঘুমিয়ে পরেছিলো সে রাতে । আর নিশিতার ধূসর হওয়া শরীরের পাশে ঠাণ্ডা নক্ষত্রর মতো চুপচাপ বসেছিলাম আমি । কোনোদিন এতো শীতলতা জমেনি আমার বুকের ভিতর । খুব ভালবেসেছিলাম আমি ওকে , খুব বেশি । তাই বুঝি সব হারিয়ে শূন্য অনুভূতিতে ঝুলে ছিলাম পলকতলে । কত ভেজা দিন, কত শুকনো পাতায় দীর্ঘ পথ, কখনও অসমাপ্ত উপন্যাসের মতো দীর্ঘ রাত একা একা কেটে গেলো তবুও নিশিতা বুকের গহীনে থেকে গেলো অবিশ্রাম রক্তক্ষরণ হয়ে । ওকে পেয়ে আমি যেমন চিনেছিলাম ঘাসের উপর কোন শিশিরটি ঘুমিয়ে যায় রোদ মেখে । তারপর ওকে হারিয়ে জানলাম কেনও সব পূর্ণতার মাঝেও পাঁজরের ফ্রেমে কিভাবে জমে থাকে দীর্ঘশ্বাস ।
তারপর - অনেক শূন্য হাতের নিথর রাতের শেষে আমি আবার কাজে নামলাম । সব কষ্ট, সব দীর্ঘশ্বাস মুছে ফেলার জন্য । একদিন, সত্যিই এক অভূতপূর্ব যন্ত্র আবিষ্কার করলাম ।)
৩
সমগ্র দেশে হুড়োহুড়ি পরে গেলো । সবারই যন্ত্রখানা চাই । কেউ রাতের পর রাত অপেক্ষায় কাটিয়ে দিলো শুধু একবার তার কষ্টগুলো নিভিয়ে নিতে। কেউ লেগে গেলো মারামারিতে । কেউ চুরি করে হলেও চাই । ধনি গরিব রাজা প্রজা কোনও ভেদাভেদ নেই । সবারই চাই কষ্ট নিধন যন্ত্র , এমনই নাম দিয়েছে ওরা । আমি অবাক তাকিয়ে রই । এতো যন্ত্রণা মানুষের মনে ! এতোটা সুখের সাধ মানুষের শিরা উপশিরায় ! কে জানতো !
৪
মানুষের সুখী হওয়ার প্রয়োজনীয়তা কি?? কেনও এতো সুখী হতে চাওয়া ??
৫
কেউ কি কখনও ভেবেছে কেনও এতো সুখী হতে চায় সে ?? বোধহয় না । তাই গণহারে সুখী মানুষ চলতে শুরু করলো পথের শরীরজুড়ে । সেই পথ চলায় কোনও তাড়া নেই । কোনও চাওয়া নেই । নেই কোনও আকাঙ্ক্ষার তীব্রতা । তীব্র অলসতায় বাড়তে থাকে শরীরের ঘের , বাড়তে থাকে বুদ্ধির স্থূলতা আর নাম না জানা ক্লান্তি । বড় কুৎসিত সে দৃশ্য ।
৬
শহরের বুদ্ধিজীবীরা হায় হায় করে উঠলেন । শ্রম দেওয়ার কেউ নেই বলে থেমে গেছে উদ্যোগ । অন্তরদহন নেই বলে কেঁদে ওঠে না কবির কলম । অপূর্ণতা নেই বলে কারও খোঁজ করে না কেউ । এমন সময় অন্য ক্রোশ দূর থেকে আগমন হলো সুযোগসন্ধানী মানুষের । তখনই হুঁশ হলো রাজার । একঘেয়ে জীবনে ছটফট করে উঠলো কেউ কেউ । তারপর গ্রেফতার হলাম আমি ।
৭
বিচারক রায় বললেন, সুখী মানুষের সমাজ স্থবির সমাজ । সমাজকে এগিয়ে নেওয়ার জন্যই প্রয়োজন ত্রুটিপূর্ণ জীবনের । এই কারনেই প্রকৃতি মানুষকে অসুখী প্রজাতি করেছে । বিচারক জানিয়ে দিলেন আমি প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধচারণ করেছি তাই আমাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে , ধংস করা হবে আমার আবিষ্কার । আমার মৃত্যুর কষ্ট থেকে আবার কষ্ট পেতে শুরু করবে মানুষ ।
শেষ কথা
কিছুক্ষণ পর আমাকে ফাঁসি দেওয়া হবে না । আমার কোন অনুভূতি হচ্ছে না । আমি আমার যন্ত্র আমার উপরে ব্যবহার করিনি । কারন আমি মৃত্যুর আগে মৃত্যুর বিষণ্ণতা অনুভব করতে চাই । অনুভব করতে চাই, মৃত্যুর আগের শেষ মহৎ ভাবনাটি । তাই আমি মৃত্যু নয়, এক তীব্র বেদনার অপেক্ষায় আছি ।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:১৯
আদনান শাহ্িরয়ার বলেছেন: ধন্যবাদ । ভালো থাকবেন!!!
২| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:০৫
হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লাগলো থিমটা। তবে আরেকটু বিস্তারিত লেখা যেতো।
২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:০৮
আদনান শাহ্িরয়ার বলেছেন: লিখাটা শেষ করে আমারও তাই মনে হয়েছে । ভবিষ্যতে এই থিমে বড় কিছু লিখা যায় কিনা চেষ্টা করে দেখবো ইনশাল্লাহ ! ধন্যবাদ । ভালো থাকবেন ।
৩| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৫৬
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: এরকম কাছাকাছি একটা থিম নিয়ে একটা সায়েন্স ফিকশন পড়েছিলাম।
ভালো লাগল গল্পটা।
২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:১২
আদনান শাহ্িরয়ার বলেছেন: আমি সুখে থাকার উপায় নিয়ে কয়েকদিন পড়াশুনা করলাম । করার পর ভেবে দেখলাম, সুখে থাকার দরকারই বা কি! হাহাহাহাহাহাহা!!!! ধন্যবাদ !
৪| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:১১
অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: সুন্দর লেখনী। ভালো লেগেছে।
২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:১৪
আদনান শাহ্িরয়ার বলেছেন: ধন্যবাদ জানবেন !
৫| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:৪০
শান্তির দেবদূত বলেছেন: অদ্ভুত ও অভিনব ভাষাশৈলী! অবাক হলাম!! প্রতিটি লাইনে লাইনে যেন আবেগ উথলে উঠছে! সত্যি বলছি, অভিভূত হয়েছি।
যন্ত্র ছাড়ায় সুখী হয়েছি লেখাটা পড়ে।
২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:২৯
আদনান শাহ্িরয়ার বলেছেন: শেষ লাইনটা পরে মজা পেলাম। হাহাহাহাহহাহাহাহাহ ! আসলেই হয়তো সুখী হওয়ার জন্য প্রয়োজন নেই কোনও যন্ত্রের ! ধন্যবাদ !
৬| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৩
কয়েস সামী বলেছেন: ভালো লাগলো থিমটা।
০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৫৭
আদনান শাহ্িরয়ার বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ !
৭| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০০
মাহমুদ০০৭ বলেছেন: আপনার গল্পের সবকিছুই ভাল লাগল , বিশেষ করে ভাবনার জায়গাটা ।
শুভকামনা রইল আপনার প্রতি ।
কোন সন্দেহ নেই সামু আরেকজন দক্ষ গল্পকার পেল ।
লিখা চালিয়ে যাবেন এই অনুরোধ জানিয়ে রাখলাম ।
০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩৬
আদনান শাহ্িরয়ার বলেছেন: আমার দীর্ঘদিন কিছু একটা করতে ভালো লাগে না। কিন্তু আপনাদের উৎসাহ পেয়ে মনে হচ্ছে আমার এটা অব্যহত রাখা উচিৎ । অনেক ধন্যবাদ !
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩০
কসমিক- ট্রাভেলার বলেছেন:
পূর্ব কথা - নিশিতা মারা গেলো ঠিক আমবস্যার রাতে । বাদুরের চোখের মতো অন্ধকার সে রাত । নিশিতে পাওয়া পাখিগুলোও ঘুমিয়ে পরেছিলো সে রাতে । আর নিশিতার ধূসর হওয়া শরীরের পাশে ঠাণ্ডা নক্ষত্রর মতো চুপচাপ বসেছিলাম আমি । কোনোদিন এতো শীতলতা জমেনি আমার বুকের ভিতর । খুব ভালবেসেছিলাম আমি ওকে , খুব বেশি । তাই বুঝি সব হারিয়ে শূন্য অনুভূতিতে ঝুলে ছিলাম পলকতলে । কত ভেজা দিন, কত শুকনো পাতায় দীর্ঘ পথ, কখনও অসমাপ্ত উপন্যাসের মতো দীর্ঘ রাত একা একা কেটে গেলো তবুও নিশিতা বুকের গহীনে থেকে গেলো অবিশ্রাম রক্তক্ষরণ হয়ে । ওকে পেয়ে আমি যেমন চিনেছিলাম ঘাসের উপর কোন শিশিরটি ঘুমিয়ে যায় রোদ মেখে । তারপর ওকে হারিয়ে জানলাম কেনও সব পূর্ণতার মাঝেও পাঁজরের ফ্রেমে কিভাবে জমে থাকে দীর্ঘশ্বাস ।
চমৎকার ভাষাশৈলী।
ব্যস্ততার মাঝেই সুখ
সুস্থ দেহ প্রশান্ত মন, কর্মব্যস্ত সুখী জীবন।