![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সবার জন্যে শিক্ষা। আমার জন্যে তো বটেই। নিজে আগে শিক্ষা নিয়ে আরেকজনের মাঝে তা ছড়িয়ে দেওয়া...এটাই থাকবে আমার লেখাগুলোর উদ্দেশ্য।
অফিসের রাজনীতি শুনতে নেতিবাচক মনে হলেও, এটি প্রায় প্রতিটি কর্মক্ষেত্রেই বিদ্যমান। কেউ অফিস পলিটিক্সকে সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে নিজের ক্যারিয়ার এগিয়ে নেয়, আবার কেউ এড়িয়ে চলতে গিয়ে বারবার পিছিয়ে থাকে। হয়তো আপনি দক্ষ, পরিশ্রমী, এমনকি সবার চেয়ে ভালো কাজও করছেন, কিন্তু তবুও পদোন্নতি বা গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্টে জায়গা পাচ্ছেন না। তখন মনে হয়, “আমি কোথায় ভুল করছি?”
বাস্তবতা হলো—অফিসে শুধু কাজ করলেই হয় না, সম্পর্ক, প্রভাব এবং নেটওয়ার্ক গড়ার কৌশলও জানতে হয়।
১. সম্পর্ক গড়তে ব্যর্থতা
যারা অফিসে রাজনীতিতে পিছিয়ে থাকেন, তাদের অনেকেই কেবল কাজের উপর মনোযোগ দেন। সহকর্মীদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বা ম্যানেজারের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে চান না। এর ফলে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় তাদের উপস্থিতি উপেক্ষিত হয়।
বাস্তব উদাহরণ:
আফরোজা একটি ব্যাংকে কাজ করেন। তিনি সবসময় নিজের ডেস্কে ব্যস্ত থাকেন, সহকর্মীদের সঙ্গে আড্ডা দেন না, ম্যানেজারের সাথে কথাও বলেন কম। তার কাজ নিখুঁত হলেও, ম্যানেজার যখন টিম লিড বাছলেন, তখন সেই সহকর্মীকেই বেছে নিলেন যে নিয়মিত আলাপ করত, আস্থা তৈরি করেছিল।
২. আত্মপ্রকাশের ঘাটতি
অনেকে মনে করেন “ভালো কাজ করলে একদিন সবাই টের পাবে।” কিন্তু অফিসে তা হয় না। যদি আপনি নিজের কাজ বা সাফল্য সঠিকভাবে প্রকাশ না করেন, তবে অন্য কেউ সেটির কৃতিত্ব নিয়ে নিতে পারে।
বাস্তব উদাহরণ:
রুবেল একটি আইটি প্রজেক্টে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সমাধান করেছিলেন। কিন্তু মিটিংয়ে তিনি চুপ থাকলেন। অন্যদিকে, তার সহকর্মী সমাধানটা তুলে ধরে বলল—“আমরা এভাবে কাজ করেছি।” ফলে ম্যানেজমেন্ট ভেবেছিল সেই সহকর্মীর অবদান বেশি। রুবেল থেকে গেলেন অচেনা।
৩. অফিস পলিটিক্সকে সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলা
অনেকেই অফিস রাজনীতিকে খারাপ ভেবে একেবারেই অংশ নেন না। কিন্তু পলিটিক্স মানেই সবসময় ষড়যন্ত্র নয়; অনেক সময় এটি সম্পর্ক, আস্থা এবং প্রভাব গড়ার মাধ্যম। সম্পূর্ণ দূরে থাকলে, আপনিই সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া থেকে বাদ পড়ে যান।
৪. ক্ষমতার গতিবিধি না বোঝা
অফিসে সবকিছু অফিসিয়াল নিয়মে চলে না; বরং কে কাকে প্রভাবিত করতে পারে, কে ম্যানেজারের কাছের মানুষ—এসব বোঝা জরুরি। যে কর্মীরা এই ক্ষমতার গতিবিধি বোঝেন না, তারা অনিচ্ছাকৃতভাবেই ভুল জায়গায় দাঁড়িয়ে পড়েন।
বাস্তব উদাহরণ:
একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে ফাহিম সবসময় তার ডিপার্টমেন্ট হেডের সাথে দূরত্ব বজায় রাখতেন। অথচ সেই হেডই ছিলেন পদোন্নতির প্রধান সিদ্ধান্তগ্রহণকারী। ফাহিম ভেবেছিলেন শুধু HR-কে খুশি করলেই চলবে, কিন্তু বাস্তবে তিনি “পাওয়ার সেন্টার” চিনতে না পারায় পিছিয়ে গেলেন।
৫. আবেগ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা
অফিস পলিটিক্সে যারা টিকে থাকেন, তারা আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখেন। কিন্তু কেউ যদি হঠাৎ রেগে যান, বা ছোটখাটো বিষয়কে বড় করে দেখান, তাহলে তাকে অনেক সময় “টিম প্লেয়ার” হিসেবে দেখা হয় না।
৬. কৌশল না জানা
অফিস রাজনীতিতে সফল হতে কৌশল দরকার—কাকে কখন সমর্থন করবেন, কাকে কখন না বলবেন। যারা শুধু সরলভাবে কাজ করেন, কৌশল শিখেন না, তারা বারবার উপেক্ষিত হন।
সমাধান কী হতে পারে?
• সম্পর্ক গড়ুন। সহকর্মীদের সাথে সময় কাটান, ম্যানেজারের সাথে যোগাযোগ করুন।
• সাফল্য প্রকাশ করতে শিখুন। মিটিংয়ে নিজের অবদান তুলে ধরুন।
• পলিটিক্স এড়িয়ে নয়, ইতিবাচকভাবে অংশ নিন। আস্থা তৈরি করুন।
• অফিসের ক্ষমতার গতিবিধি বোঝার চেষ্টা করুন। কারা সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলে জানুন।
• আবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন। রাগ বা হতাশা গোপন রেখে পেশাদার আচরণ করুন।
• কৌশল শিখুন। কখন কথা বলা, কখন চুপ থাকা জরুরি তা বোঝার দক্ষতা গড়ে তুলুন।
উপসংহার
অফিস রাজনীতিতে পিছিয়ে থাকা মানে এই নয় যে আপনি অযোগ্য। বরং এর মানে হলো আপনি শুধু কাজের উপর মনোযোগ দিয়েছেন, কিন্তু সম্পর্ক ও প্রভাবের খেলা বোঝেননি। মনে রাখবেন—কাজের দক্ষতা আপনাকে “ভালো কর্মী” বানায়, কিন্তু সম্পর্ক আর প্রভাব আপনাকে “সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীর টেবিলে” বসায়।
তাই যদি বারবার মনে হয় আপনি অফিসের রাজনীতিতে পিছিয়ে পড়ছেন, তাহলে কৌশল বদলান। কারণ অফিসে এগিয়ে যেতে হলে শুধু দক্ষতা নয়, সঠিক রাজনীতিও জানা জরুরি।
০৩ রা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৮:৪২
শাইয়্যানের টিউশন (Shaiyan\'s Tuition) বলেছেন:
চাইলেও অফিস রাজনীতি থেকে দূরে থাকা যায় না। ওখানে বুদ্ধি খাটায় চলতে হয়।
ধন্যবাদ নিরন্তর।
২| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ৯:৫৮
রাজীব নুর বলেছেন: অফিস পলিটিক্স খুব জঘন্য বিষয়।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা অক্টোবর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: রাজনীতি বিষয়টা আসলে ঝামেলার। সাধারন এজন্য রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে চায়।