![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সবার জন্যে শিক্ষা। আমার জন্যে তো বটেই। নিজে আগে শিক্ষা নিয়ে আরেকজনের মাঝে তা ছড়িয়ে দেওয়া...এটাই থাকবে আমার লেখাগুলোর উদ্দেশ্য।
কিছু মানুষ আপনাকে অনবরত কোন কারণ ছাড়াই অপমান করে, আপনি তাদের বিরুদ্ধে চুপ কেন?
আমাদের সমাজে এমন অনেক মানুষ আছে যারা নিজের স্বভাব, ঈর্ষা, হীনমন্যতা বা কোনো গোপন স্বার্থের কারণে অন্যকে বারবার অপমান করতে থাকে। কখনো প্রকাশ্যে, কখনো আড়ালে, কখনো সোশ্যাল মিডিয়ায়—এই অপমান ছুঁড়ে দেয় তারা যেন এটাকে তাদের অধিকার ভেবে বসেছে।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, অপমানের শিকার ব্যক্তি অনেক সময় আইনি পদক্ষেপ না নিয়ে চুপ করে থাকে। মুখে কিছু বলে না, আদালতের দ্বারেও যায় না—বরং নীরবে সহ্য করে।
প্রশ্ন হচ্ছে: কেন?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজলেই আমরা আমাদের সমাজের মানসিকতা, সম্পর্কের ধরণ ও আইন সম্পর্কে অজ্ঞতার এক বাস্তব চিত্র দেখতে পাই।
১. “লোক জানাজানি” ও মানহানির ভয়
অনেকেই মনে করেন, অপমানের বিরুদ্ধে মামলা করলে ব্যাপারটা “বড় হয়ে যাবে”। মানুষ জানবে, সামাজিকভাবে ‘ড্রামা’ হবে। অনেকে ভয় পান যে মামলা করলে নিজেরও নাম খারাপ হবে, কারণ অনেক সময় মানহানির মামলায় ঘটনাটি বিস্তারিতভাবে আদালতে বলতে হয়, যা তারা অস্বস্তিকর মনে করেন।
বাস্তব উদাহরণ:
ঢাকার এক নামী স্কুলের শিক্ষক রাকিব স্যারকে এক অভিভাবক নিয়মিত মিথ্যা অভিযোগ ও অপমানজনক মন্তব্য করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করছিলেন। অথচ তিনি মামলা করেননি। কারণ তিনি ভাবলেন, “মামলা করলে পত্রিকায় আসবে, স্কুলে কথা উঠবে, আমারই মানহানি হবে।”
এই চুপচাপ থাকা সেই অভিভাবককে আরও সাহসী করে তোলে—শেষ পর্যন্ত ব্যাপারটা অনেক দূর গড়ায়।
২. সামাজিক সম্পর্ক ভাঙার ভয়
অনেক সময় যারা অপমান করে তারা আত্মীয়, বন্ধু, প্রতিবেশী বা সহকর্মী। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করলে সম্পর্ক খারাপ হয়ে যেতে পারে, পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হতে পারে—এই ভয়েই অনেক সময় মানুষ চুপ থাকে।
বাস্তব উদাহরণ:
সিলেটের এক পরিবারে দুই ভাইয়ের মধ্যে জমি নিয়ে মনোমালিন্য ছিল। ছোট ভাই বড় ভাইকে গ্রামে নিয়মিত অপমান করত—সবার সামনে কথা কেটে যেত, মানহানিকর মন্তব্য করত। বড় ভাই মামলা না করে চুপ করে ছিলেন, কারণ ভাবলেন “ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করাটা ভালো দেখাবে না।” কিন্তু এই নীরবতা ছোট ভাইকে আরও উদ্ধত করে তোলে, শেষ পর্যন্ত প্রকাশ্যে মারমুখী পরিস্থিতি তৈরি হয়।
৩. আইন সম্পর্কে অজ্ঞতা
বাংলাদেশের অনেক মানুষ জানেই না যে “মানহানি” বা “অপমান” এর বিরুদ্ধে দেওয়ানি ও ফৌজদারি উভয় ধরনের আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায়। Penal Code-এর 499-500 ধারায় মানহানি অপরাধ হিসেবে উল্লেখ আছে, এবং ডিজিটাল মাধ্যমে অপমানের ক্ষেত্রে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেও ব্যবস্থা রয়েছে।
কিন্তু অনেকেই মনে করে এসব মামলা “শুধু বড়লোক বা রাজনৈতিক লোকজন” করতে পারে। এই অজ্ঞতার কারণে অনেক অপমানকারীরা বারবার একই কাজ করেও শাস্তির মুখ দেখে না।
বাস্তব উদাহরণ:
একজন নারী উদ্যোক্তা দেখলেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী ব্যবসায়ী সোশ্যাল মিডিয়ায় তার সম্পর্কে মিথ্যা ও অপমানজনক পোস্ট দিচ্ছে। তিনি ভেবেছিলেন, “এসব নিয়ে মামলা করা সম্ভব না, এটা তো ফেসবুক।” অথচ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এই ধরনের পোস্টের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান আছে।
৪. “ভদ্রতা” বা ভুল জায়গায় ধৈর্য
অনেক সময় মানুষ ভাবে, “আমি ভদ্র মানুষ, এসব নিয়ে ঝামেলা করব না।”
তারা ভাবে, “চুপ থাকাই ভালো, সময়ই সব ঠিক করে দেবে।” কিন্তু বাস্তবে সময় অনেক সময় সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়, কারণ অপমানকারী ব্যক্তি ভাবে — “ও কিছুই বলছে না, মানে আমি পার পেয়ে যাচ্ছি।”
বাস্তব উদাহরণ:
একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে তার সহকর্মী নিয়মিত সভায় খারাপভাবে সম্বোধন করত। তিনি ভদ্রতার খাতিরে কিছু বলতেন না। ধীরে ধীরে সহকর্মীর সেই আচরণ নিয়মে পরিণত হয়, এমনকি ছাত্রছাত্রীরাও সেই শিক্ষককে হালকাভাবে নিতে শুরু করে। পরে তিনি বুঝলেন—প্রথমেই দৃঢ়ভাবে দাঁড়ালে পরিস্থিতি ভিন্ন হতো।
তাহলে করণীয় কী?
১) অপমানের প্রমাণ রাখুন: কথোপকথন, পোস্ট, ইমেইল বা সাক্ষীদের মাধ্যমে অপমানের রেকর্ড সংরক্ষণ করুন।
২) প্রাথমিক সতর্কবার্তা দিন: অনেক সময় একটি আইনি নোটিশ বা লিখিত সতর্কবার্তাই কাজ করে দেয়।
৩) আইনের আশ্রয় নিন: মানহানির মামলা বা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।
৪) সামাজিক চাপে ভেঙে পড়বেন না: অপমান সহ্য করা ভদ্রতা নয়, বরং অন্যায়ের প্রতি নীরব সমর্থন।
৫) নিজেকে সুরক্ষিত করুন: চুপ থাকা অনেক সময় আপনার সম্মান ও অবস্থানকে দুর্বল করে ফেলে।
উপসংহার
অপমান সহ্য করা কোনো “উচ্চমার্গীয় ধৈর্য” নয়, বরং অনেক সময় এটা নিজের অধিকার ও মর্যাদার প্রতি অবহেলা। যখন কেউ আপনাকে বারবার অপমান করে, আর আপনি চুপ করে থাকেন, তখন তারা মনে করে আপনি দুর্বল—এবং এই সুযোগে অপমানকে নিয়মে পরিণত করে।
তাই সামাজিক ভয়, সম্পর্কের সংকোচ বা অজ্ঞতার কারণে নীরব না থেকে নিজের মর্যাদার পক্ষে দৃঢ় হোন।
আইনি পথ যেমন আছে, তেমনি সামাজিকভাবেও স্পষ্ট অবস্থান নেওয়া জরুরি।
আপনার নীরবতা যেন কখনো অন্যায়ের পক্ষে নীরব সম্মতি না হয়ে যায় — সেটাই হোক সচেতনতার শুরু।
০৭ ই অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১২:১৩
শাইয়্যানের টিউশন (Shaiyan\'s Tuition) বলেছেন:
সামুর কোন ব্লগারের বিরুদ্ধে আমার অভিযোগ ছিলো না, অনুযোগ ছিলো।
কিন্তু, আজকাল ব্যাপারটা এখন সিরিয়াস দিকে মোড় নিয়েছে।
ধন্যবাদ নিরন্তর।
২| ০৭ ই অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১:০৩
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
সিরিয়াস ইস্যু হলে। ইমার্জেন্সি হিসেবে পদক্ষেপ নিবেন। যাদের কাছে টাকা পয়সা পাবেন তাদের কোর্টের বারান্দায় দৌড়ের উপরে রাখুন। টাকা দিয়ে উপকার করতে গিয়ে নিজে বিপদে থাকা ভালো কাজ নাহ।
০৭ ই অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১:১৬
শাইয়্যানের টিউশন (Shaiyan\'s Tuition) বলেছেন:
আমি একটি Cease & Desist Notice (Defamation / Harassment) লেটার পাঠিয়েছি, ভাইয়া!
শুভেচ্ছা নিরন্তর।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১২:০২
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনাকে সামুতে ভালোই কটু কথা শোনানো হয় । এখন কি আইনি পথে হাটবেন ? আজকের লেখা পড়ে যারা আপনাকে কটু কথা বলে তারা ভয় পাবেন ।