নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার পরিচয় একজন ব্লগার, আমি সাহসী, আমি নির্ভীক, আমি আপোষহীন । যা বিশ্বাস করি তাই লিখি তাই বলি ।
এক হতভাগা ছাত্রের গল্প বলি, ছেলেটি পড়াশুনার দারুণ মেধাবী । সব কিছুতে প্রথম স্থান তার দখলে । লেখা পড়ার পাঠ চুকিয়ে পিতা মাতা আত্মীয় স্বজন শুভাকাঙ্ক্ষীদের চাপে উন্নত জীবনের আশায় সে বিসিএস পরীক্ষা দিলো । কিন্তু বুকের ভেতর সে অন্য স্বপ্ন লালন করে । সে স্বপ্ন দেখে শিক্ষক হবে নিজ হাতে গড়ে তুলবে মানুষের মতো মানুষ । বিশ্ব-বিদ্যালয়ের শেষ পরীক্ষায় প্রথম স্থান তার জন্য ছিলো অবধারিত । চোখ বন্ধ করে বলে দেওয়া যেত, প্রথম স্থান অন্য কেউ নিতে পারবে না। হলোও তাই । সেই ছেলেই ফাস্ট ক্লাস ফাস্ট হলো । বিশ্ব-বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক বললেন, এসো জয়েন করো । লেগে পরো মানুষ গড়ার কাজে । ইতিমধ্যে
বিসিএস পরীক্ষার ফল প্রকাশ হলো, এ পরীক্ষাতেও সে পুরো বাংলাদেশে প্রথম । সবাই ভাবল আর কি চাই সোনার হরিণ হাতে পাওয়া গেছে । পিতা মাতা আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধব সবাই বলল, হয়ে যাও আমলা । তুমি অনেক ভাল করবে । জীবনে কোন দিন ওএসডি হয়ে বসে থেকে মশা মাছি মারতে হবে না । কিন্তু ছেলেটি আমলার খাতার নিজের নাম লেখাল না । বোকা আর কাকে বলে। সকলের মত উপেক্ষা করে সে বিশ্ব-বিদ্যালয়ে যোগ দিলো । মানুষ গড়ার কাছে লেগে গেল । সাদা মনের মানুষ । সাদাসিধে পোশাক আশাকের শিক্ষক অল্প কদিনেই সকলের মন জয় করে ফেললো। সকলের মুখে মুখে তার কথা । তার পড়ানোর ধরনের কথা ।
বছর দুয়েক পর সেই ছেলেটিই যখন আবারো বিএসএস পরীক্ষায় বসলো, তখন সবাই ঠোটে বাঁকা হাসি টেনে বলল, এবার এসেছে উট পাহাড়ের নীচে। তখন আমাদের কথা শুনলে এ দিন আর দেখতে হতো না । যাক দেরীতে হলেও যে আক্কেল হয়েছে সেই ই বা কম কিসে । এবারের বিসিএস পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরও দেখা গেল সেই প্রথম । কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে এবারও সে আমলাদের খাতায় নিজের নাম লেখাল না । শিক্ষক ই রয়ে গেলেন । সকলে বিরক্তির চূড়ান্ত । সকলের মনে প্রশ্নে, যদি আমলাই না হবি বাপু তবে কেন শুধু শুধু বিসিএস পরীক্ষা দেওয়া ? অনেক চাপা চাপির পর জানা গেলে নিজের মেধা পরীক্ষার জন্যই পরীক্ষাটিতে অংশ গ্রহণ করেছিলেন । আমলা হবার জন্য নয় । দেখতে চেয়েছিলেন, শিক্ষক হবার পর তার মেধা কমেছে নাকি আগের মতোই আছে । কি পাগল,কি বোকা তাই না ?
এবার এক হতভাগা শিক্ষকের গল্প বলি। আমরা কথায় বলি শিক্ষক হচ্ছেন, পিতার মতন । তিনি মারবেন কাটবেন আবার শিক্ষা দেবেন । আমার মনে আছে, আমার মা যখন আমাকে প্রথম ক্লাসে ভর্তি করিয়ে ছিলেন তখন তিনি ক্লাস শিক্ষককে বলে ছিলেন, স্যার এই যে, আপনার ছাত্র দিয়ে গেলাম। হাড্ডিগুলো আমার মাংস চামড়া আপনার । এর অর্থ হচ্ছে, শিক্ষককে আসস্থ করা । প্রাণ-খুলে শিক্ষা দিতে অনুপ্রাণিত করা।
বাদশা আলমগিরের সেই কবিতায় আমরা সেই প্রমাণই পেয়েছি। যাক গল্পে ফিরে আসি ।
সেই ছাত্র একদিন সফল শিক্ষক হলেন । অন্তত মনে মনে তিনি তাই ভাবেন । রাজনীতি করে, ঘণ্টা হিসাব করে, প্রাইভেট পড়িয়ে, নোটের বিনিময়ে, প্রাইভেট বিশ্ব-বিদ্যালয়ে ক্লাস করিয়ে, টক শোতে অংশ নিয়ে তিনি অর্থ রোজগার করেন না । নীরবে নিবৃত্তে তিনি মানুষ গড়ে যান। বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে যা পান তাই দিয়ে তার সংসার চলে । একসময় বিয়ে থা করে সেই শিক্ষক সংসারী হলেন । ঘর আলো করে ছেলে মেয়ের জন্ম হল । একদিন মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পরলে তিনি তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (মেক) হাসপাতালে ভর্তি করলেন । মেয়ে বেদে শুয়ে আছে তিনি,ঔষধদের জন্য এখানে ওখানে একতলা দোতালা বাসা ফার্মেসি দৌড় ঝাপ করছেন । এভাবে দৌড় ঝাপ করার সময় হঠাৎ তার ধাক্কা লাগলো, মোবাইল ফোনে ব্যস্ত এক ইন্টার্নই চিকিৎসকের সাথে । সেখান থেকে কথা কাটাকাটি । নিজের শিক্ষক পরিচয় দিয়েও তিনি নিস্তার পেলেন না । সেই ইন্টার্র্নি চিকিৎসক অন্য চিকিৎসকদের ডেকে এনে ঝাঁপিয়ে পরলেন শিক্ষকের উপর । চড়,থাপ্পড়, লাথি ঘুষি দিয়ে মনের ঝাল মেটালেন তারা। কতো বড় সাহস ! চিকিৎসকদের সাথে তর্ক করে ? শিক্ষক ভর্তি হলেন হাসপাতালে । মানুষ গড়ার কারিগর তার জীবনের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেলেন ।
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এমন একটি পর্যায় চলে গেছে, এখন আর মানুষ তৈরি হচ্ছে না । গাদাগাদা টাকা খরচ করে আমরা বোধহীন রোবট তৈরি করছি । ক্লাস থ্রি পড়ুয়া একজন ছাত্র, ছাত্রীকে যদি ১২টি পরীক্ষা দিতে হয় । প্রতিদিন মোট ১২টি খাতা আর বইয়ের ওজন পিঠে ঝুলিয়ে স্কুলে যেতে হয় তাহলে সে রোবট না হয়ে আর কি হবে ? সৃজনশীল পরীক্ষার নামে বাচ্চাদের সৃজনি শক্তি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে । প্রশ্নপত্র আউট করে, নম্বর বাড়িয়ে দিয়ে, পাশের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। শিক্ষাকে বাণিজ্যে পর্রিণত করে প্রতি বছর ভুলে ভরা বই ছাপিয়ে কোটি কোটি টাকা যারা হাতিয়ে নিচ্ছে তাদের সন্তানেরা যদি চিকিৎসক হয়, তাদের তো শিক্ষকদের পেটাতে, হাত পা ভাংতে কুণ্ঠা বোধ করার কথা নয় । কারণ তাদের আছে, রাজনৈতিক পরিচয় । পিটিয়ে হাত পা ভেঙ্গে দেওয়ার পর রাবি'র এই শিক্ষককেও এখন জামাতী বলে প্রচার করা হচ্ছে। খুনি বলা হচ্ছে । রাজাকার নামে ডাকা হচ্ছে । কারণ যারা তাকে মেরেছে তাদের দলীয় পরিচয় রয়েছে । তারা যে নকল করে পাশ করেনি,ফাস হওয়া প্রশ্নপত্র দিয়ে পাশ করেনি সেটা বলি কি করে ? একজন প্রকৃত ছাত্র তো কখনো শিক্ষকের শরীরে হাত তুলতে পারে না । এখন বৈরি সময় চলছে । এখন অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বললেই, রাজাকারের পয়দা হয়। জামাতির পয়দা হয় । কিন্তু কথা হচ্ছে, এই সব রাজাকার জন্ম দিচ্ছে কারা ? যাদের নিজেদেরই কোন পিতৃ পরিচয় নাই তারাই কথায় কথায় জামিতি রাজাকারের জন্ম দিচ্ছে । কারণ বঙ্গবন্ধুর আর্দশে যারা পথ চলে তারা কখনো স্বার্থের জন্য অন্য একজনকে রাজাকার বলে গালি দেয় না । লুটে পুটে খেয়ে সর্ম্পদ বানায় না । শিক্ষক পেটায় না ।
০৬ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৯
সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ০৬ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:২৫
তারেক ফাহিম বলেছেন: বিশ্লেষন ভালো লাগল।
০৬ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৯
সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ
৩| ০৬ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:১৩
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ভাল লিখেছেন।
০৬ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:৫০
সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: ধন্যবাদ
৪| ০৬ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:৪০
চাঁদগাজী বলেছেন:
গল্প ওকে, ভালো।
শিক্ষা ব্যবস্হা নিয়ে আপনি যা লিখেছেন, উহা অপরিপক্ক
০৬ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:৫০
সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: আপনার পরিপক্ষ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ
৫| ০৬ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৫:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: গল্প দু'টি বাস্তব।
৬| ০৬ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৩
জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: শিক্ষাব্যবস্থা, প্রশ্নফাস এসব ব্যাপারে সরকারকে সিরিয়াস হতে হবে।
০৭ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:১০
সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: জিরো টলারেন্স , দেখা মাত্রই গুলি
৭| ০৬ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:০৬
মিঠু পারভেজ বলেছেন: বাস্তবতার সহিত যুক্তি !!
ভালো লাগলো।
০৭ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:১০
সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: ধন্যবাদ
৮| ০৭ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:৩৪
জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: এদের গুলি করে মেরে ফেললে ভালোই হতো। সাসপেন্ড করলে বা জেলে ভরে রাখলেও দেশের ক্ষতি।
মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে বরং শাস্তি হিসেবে আজীবন বিনা বেতনে দেশের কাজ করাতে ভালো হতো।
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৯
হংস বলাকা বলেছেন: য্তার্থ বলেছেন