নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে \"আমার কবিতা নামে\" আমি ব্লগিং করি মূলত নিজের ভেতরে জেগে উঠা ব্যর্থতা গুলোকে ঢেকে রাখার জন্য । দুনীতিবাজ, হারামখোর ও ধর্ম ব্যবসায়িদের অপছন্দ করি ।

সাখাওয়াত হোসেন বাবন

আমার পরিচয় একজন ব্লগার, আমি সাহসী, আমি নির্ভীক, আমি আপোষহীন । যা বিশ্বাস করি তাই লিখি তাই বলি ।

সাখাওয়াত হোসেন বাবন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ম্যায়\'নে পরকীয়া কিউ কিয়া ?

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:১৯


পাখিদের কুন্জনে, পথচারিদের গুঞ্জনে চোখ খুলে তাকালাম । শীতের সকাল । সকালের ঘুমটা আরামের হওয়ায় সহজে বিছানা ছাড়তে ইচ্ছে করে না । বালিশের পাশ থেকে মোবাইলটা নিয়ে চোখ বুলোতেই বদুর আঠারোটা মিস কল দেখে আঁতকে উঠলাম । বদু মানে বুবলী। আমার নতুন গার্লফেন্ড। আসল নামে সেভ করলে বউ ধরে ফেলতে পারে । তাই সেই পুরাতন টেকনিক ব্যাবহার করে বুবলীর ফোন নাম্বার "বদু ভাই" নামে সেভ করেছি। আমার ফোন আবার বউ এর কাছে খুল্লাম খোলা অবস্থায় থাকে । এতে ফায়দা আছে । বউয়ের কাছে সাধু সেজে থাকা যায় । কোন কিছুতেই বউ আর সন্দেহ করে না । কথায় আছে না , সে চলে পাতায় পাতায় আমি চলি ডালে ডালে ।

ঘরে সুন্দরী বউ থাকার পরেও যারা দুই একজন গার্লফ্রেন্ড রাখতে পছন্দ করে আমি তাদের মধ্যে একজন । নিন্দুকেরা চাইলে এটাকে চারিত্রিক দোষ কিংবা পরকীয়া ভেবে কানাঘুষা করতে পারে । আমার তাতে কিচ্ছু যায় আসে না । কারণ সত্যিকার পরকীয়ার মধ্যে যে সব শারীরিক সম্পর্ক টম্পর্কের ব্যাপার, স্যাপার থাকে আমি সে সবের মধ্যে যাই না । হালকা প্রেম প্রেম ভাব করে সুন্দর একটা সম্পর্ক বজায় রাখি । তাতে এ কূল ও কূল দু'কূলই ঠিক থাকে ।

বুবলী মেয়েটা কিন্তু বেশ । দুধে আলতা গায়ের রং, রূপ যে তার কাঞ্চা সোনা মার্কা চেহারা । আমাদের পরিচয়টা পর্বটা ফেসবুকে হলেও কাকতালীয় ভাবে দু'বার আমাদের দেখা হয়ে গিয়েছে । একবার বই মেলায় অন্যবার বসুন্ধরা শপিং মলে । ভার্চুয়াল প্রেম আর বাস্তব জীবনের প্রেমের মধ্যে বিস্তর ফারাক । ভার্চুয়াল প্রেম হচ্ছে, মুখে রাখা থুথুর মতো যতক্ষণ মুখে আছে ততোক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ মুখ থেকে ফেলে দিলেই আর কোন গুরুত্ব নেই ।

কিন্তু বুবলীর সাথে সম্পর্কের বিষয়টা একটু আলাদা বলে মনে হচ্ছে । যে দু'বার ওর সাথে দেখা হয়েছে সে দু'বারই ও আমাকে বেশ দামি উপহার কিনে দিয়েছে । সাধারণত ছেলেরাই মেয়েদের উপহার কিনে দেয় এ ক্ষেত্রে বুবলি বেশ ব্যতিক্রম । আমি খেতে পছন্দ করি জেনে বুবলি প্রায়ই আমার অফিসের ঠিকানায় কখনো ফুডপাণ্ডা থেকে আবার কখনো পিজা হাট থেকে খাবার পাঠায় । সকাল দুপুর শরীর, স্বাস্থ্যের খোজ খবর নেয় । অসুস্থ্য হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে বলে । না যাওয়া পর্যন্ত খাবে না বলে মর্জি করে । সত্যিকারের প্রেম না হলে কি আর কেউ কারো জন্য এতোটা করে ? গত ঈদে তো আড়ং থেকে দামি একটা পান্জাবি পাঠিয়ে আমাকে চমকে দিয়েছে । এসব কারণে বুবলির সাথে আমার প্রেমটা বেশ জমে গেছে ।

কথায় আছে গুয়ের গন্ধ আর প্রেমের গন্ধ নাকি কখনো চেপে রাখা যায় না । ইদানিং আমার রকম সকম, ভাব সাপ দেখে বউ মনে হয় কিছু একটা সন্দেহ করছে। বুবলীর প্রেমে পরার পর আমার ভেতর সত্যিই যে কিছু পরিবর্তন এসেছে সেটা আমি ও টের পাচ্ছি । মনের ভেতর, দেহের ভেতর সব সময় ক্যামন একটা উড়ু উড়ু ভাব লেগে থাকে। দিনের বেলা চাঁদ দেখি, রাতে দেখি চমৎকার ।

একদিন তো বউ চোখে মুখ শক্ত করে বলেই ফেললো, " কি ব্যাপার ! প্রেমে ট্রেমে পরেছো নাকি ? তোমার লক্ষন তো ভাল মনে হচ্ছে না । "

চমকে গেলেও ক্যাবলা হাসি হেসে নিজেকে সামলে নিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে পাকা অভিনেতার মতো বললাম, "পাগল হয়েছো ? ! ঘরে তোমার মতো বউ থাকতে প্রেম পড়তে যাবো কোন দু:খে ।? আমকে কি পাগলা কুত্তায় কামড়াইছে যে ঘরে হীরা ফেলে রাস্তার কাচ কুড়াবো?"

বউ তাতে আশ্বস্ত হলো কিনা সেটা বুঝা না গেলেও, মুখ বাকিয়ে বললো , দেখো বাপু আগেই সাবধান করে দিলাম, "পঁচা শামুকে পা কেটে মান ইজ্জত রাস্তায় বিকিয়ে এসো না । পথের কুকুর আর ঘরের স্বামীকে কিন্তু কিছুতেই বিশ্বাস করতে নেই । কারণ উভয় ই গু দেখলে মুখ দেয় ।"

সেই থেকে আমি আরো বেশি সর্তক । আরো বড় পাকা অভিনেতা । পরকীয়া করতে হলে, সাহসের চেয়েও বেশি বুদ্ধি বেশি লাগে সাথে থাকতে হয় দক্ষতা । যে বেশি দক্ষ সে ততো সফল ।

বুবলীর যে জিনিসটা আমার কাছে খারাপ লাগে সেটা হচ্ছে, ওর রগচটা ভাব । মানুষের ঠোট কাটা হয় শুনেছি, কিন্তু ববুলির ঠোট নেই বললেই চলে । মুখে যা আসে তাই বলে ফেলে । এ কারণে মেয়েটাকে আমার ‌একটু ভয় ভয়ও লাগে । তবুও বুবলির সাথে বিন্দাস আছি । আমার নামের সাথেও ও'র নামের ও মিল রয়েছে , আমি বাবন ও বুবলী । এক্কেবারে খাপে, খাপ । মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে , দেয়ালে দেয়ালে লিখে দেই , বাবন যোগ বুবলি। বাবন যোগ বুবলি।

দুই

আড় চোখে একবার বউকে দেখে নিয়ে ম্যাসেন্জার ওপেন করলাম । সিক্টেট ম্যাসেজ অপশনে বুবলীর তিনটা ম্যাসেজ । প্রথম ম্যাসেজ পাঠিয়েছে, রাত ১২টায়, হ্যাপি ভ্যালেনটাইন জানিয়ে । ২য় টা রাত দু'টোয় । তাতে লেখা, "কি করছো জানু? বউয়ের বুকে ঘুম ক্যামন হচ্ছে ? খবরদার ডাইনীটার সাথে সেক্স করবে না । খুন করে ফেলবো কিন্তু।" তাপর দুটো মন খারাপের ইমো । ৩য় ম্যাসেজটা ভোর ৪টায়, "জানু আমার ঘুম আসছে না । কাল কি দেখা করবে ? তোমাকে খুব জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছে ।"

৩য় টা ম্যাসেজে পড়ে চমকে উঠলাম । তাড়াতাড়ি ডিলিট করে দিয়ে । লাভ, লাভ একটা হাসির স্মাইল ইমো পাঠিয়ে দিয়ে বিছানা ছেড়ে উঠে দাড়ালাম । মনে মনে ভাবলাম , ভাগ্যিস বউ দেখেনি । দেখলে হয়তো আজই আমাকে কুরবানি করে ফেলতো ।

বিছানা ছেড়ে গুন গুন করে গান গাইতে গাইতে ওয়াশ রুম ঢুকে গেলাম । ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে দেখি , নীলা বিছানা ছেড়ে উঠে পরেছে । আমাকে দেখে, হেসে বললো , হ্যাপি ভ্যালেনটাইন । আমি ও হেসে বললাম, হ্যাপি ভ্যালেনটাই । তারপর নাস্তা সেরে অফিসের পথ ধরলাম । বাসা থেকে বের হবার আগে বউকে চুমু খেতে ভুললাম না ।

ল্যাঞ্চের সময় বুবলি'র ম্যাসেজ এলো , জানু আজ কি দেখা করবে ?
আমি লিখলাম , কোথায় ?
তুমি বলো ?
না, তুমি বলো , আমি আহল্বদে গলে যাবার ভান করে লিখলাম ।
বুবলি হাসির ইমো পাঠালো । আমিও হার্ট ইমো পাঠালাম ।

বসের সাথে মিটিং শেষ করে নিজের রুমে এসে বসতেই দেখি, বুবলী ম্যাসেজ পাঠিয়েছে - জানু আছো ?
আমি লিখলাম , আছি ।
সাথে সাথে রিপ্লে এলো, কি হলো বললে না যে, দেখা করবে কি না ?
হুম, করবো তো ।
কোথায় আসবো বলো তাহলে ?
তুমিই বলো । কোথায় আসতে চাও ।
বেশ কিছুক্ষন চুপচাপ । বুবলী কোন রিপ্লে দিলো না । একটু পর সে আবার লিখলো আমার বাসায় চলে এসো ।
আমি আতকে উঠে , লিখলাম , বাসায়! একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে বা ছেলে যখন কেউ কাউকে বাসায় ডাকে তখন নিশ্চয় শুধু গল্প করার জন্য ডাকে না ।
বুবলী হাসির ইমো দিয়ে লিখলো, চাইলে আসতে পারো । না , চাইলে নাই । তোমার ইচ্ছে । আমার কোন অসুবিধা নেই ।

আমি বললাম, আমার অসুবিধা আছে । বউ যদি জানতে পারে তাহলে জবাই করবে ।
জানবে কি ভাবে ? তুমি তো আর বাসায় গিয়ে বউয়ের গলা জড়িয়ে ধরে বলবে না , জানো না আজ না আমার গার্লফ্রেন্ডের বাসায় ডেটিং এ গিয়েছিলাম ।
না, তা বলবো কেন ? নিজের সর্বনাশ কেউ নিজে করে ?
তাহলে এসো । গল্প করা যাবে ।
শুধু গল্প নাকি অন্যকিছু ? আমি হেসে লিখলাম ।

সাথে সাথে দু'টো লালমুখি রাগের ইমো এসো আমাকে চোখ রাঙ্গাতে লাগলো ।
তারপর বুবলী লিখলো, না, শুধুই গল্প ।
আমি কান্নার ইমো পাঠালাম ।
পুরো ব্যাপারটাকে মজা হিসাবে নিয়েছিলাম । কিন্তু এরপর আমাকে অবাক করে দিয়ে, বুবলী সত্যি সত্যি ওর বাসার ঠিকানা পাঠালো ।
বাড়ি নং, ২০, রোড নং ৪ , ফ্লাট নং- ডি ৪ ,৪থ তলা । বসুন্ধরা ।

আমি লিখলাম, সত্যি আসতে বলছো ?
বুবলি লিখলো, হুম ,এসো ।
আমি লিখলাম, এখন ফ্রি আছি । বললে আসতে পারি ।
ও লিখলো, আচ্ছা এসো ।
ঘন্টাখানেক লাগতে পারে ।
অসুবিধা নেই এসো । লিখে, দুটো লাল হার্টের ইমো পাঠালো ।

আমার মনের অবস্থা তখন, ব্যাটা মন মে লাড্ডু ফোটা অবস্থা । যাবো কি যাবো না । ভাবতে ভাবতে ফোনটা তুলে নিয়ে বসকে ফোন দিয়ে ,এ কথা ও কথা বলার ফাঁকে বললাম, বস একটু বাসায় যেতে চাচ্ছিলাম । বস বললেন, যাও । আমিও বের হচ্ছি । কাল কথা হব। মনে মনে বললাম, বস আপনিও কি তাহলে ? ছি, বস ছি, আপনি এতো খারাপ । কুজা ভাবে দুনীয়াটার সবাই তার মতো কুজা ।

আমাকে আর পায় কে ? বনে যখন ফুটলো কুসুম ...... গান গাইতে গাইতে ব্যাগ গুছিয়ে অফিসে থেকে বের হয়ে এলাম ।

ভ্যালেনটাইন দিবস আর ১লা ফাল্গুন এক সাথে হওয়ায় চারিদিকে ফুল আর হুরের ছড়াছড়ি । আমার মনে তখন নানান সুখানুভূতির গড়াগড়ি । কোন দিকে খেয়াল নেই । মনের ভেতর নানান কথা ঘুরপাক খাচ্ছে । কখনো বুবলীর সাথে রোমান্সের কথা ভেবে রোমান্চিত হচ্ছি । আবার কখনো নীলা'র কথা ভেবে ভয়ে চমকে উঠছি । বউ আর মৌ একসাথে খেতে গেলে বহুত যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়।

একটা ফুলের দোকান দেখে, বুবলী'র জন্য কিছু ফুল কিনে নিলাম । মহাখালি থেকে বসুন্ধরা পৌছতে আধা ঘন্টার মতো সময় লাগলো । বাসা খুজে পেতে লাগলো আরো মিনিট দশেক । ব্যাগ থেকে পয়জন এর মিনি স্পের শিশিটা বের করে একটু স্পে করে নিলাম। দামী পারফিউমের গন্ধে চারিদিক মো মো করে উঠলো ।

তিন

কলিং বেল বাজাতেই বুবলী দরজা খুলে দিয়ে হেসে বলল, আসলে তাহলে ? আমরা মনে হলো মাথাটা ঘুরে যাবে । নীল রংয়ের হালকা একটা জামায় মেয়েটা পরীর মতো লাগছে । মনে মনে ভাবলাম, মেয়েটা তো ভয়াবহ সুন্দর !
ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বললাম, তুমি ডেকেছো আর আমি আসবো না ! সেকি হয় ?

ফ্লাটের ভেতরে ঢুকতেই আমার কপাল কুচকে গেল । অগোছালো,নোংরা একটা ফ্লাট । এখানে ওখানে ময়লা জামা, কাপড় স্তূপ হয়ে আছে । ডাইনিং টেবিলের উপর এঁটো প্লেট, জগ, হাড়ি পাতিলের ছড়াছড়ি।

বুবলীর মতো এমন স্মার্ট একটা মেয়ে এমন নোংরা একটা ফ্লাটে থাকে ব্যাপারটা ঠিক যেন মিলাতে পারলাম না । আমার মনোভাব বুঝতে পেরে বুবলী বলল," এটা আমার এক কাজিনের ফ্লাট । আমি এখানে থাকি না । আমার কার্জিন মাঝে মাঝে এখানে আসে । আমি আজ ই প্রথম এলাম। এসব দেখে আমার ও গা গুলিয়ে উঠেছে । তুমি তাড়াতাড়ি চলে এসেছ বলে কিছু গোছানোর সময় পাইনি। দেখেই ক্যামন ঘেন্না ঘেন্না লাগছে , তাই কিছু ধরিনি । তারপর হাতু উচু করে বাম পাশটা দেখিয়ে বললো, এদিকে চলো। ওখানে একটা রুম আছে । আমরা ওখানে বসে গল্প করি।

আমি কিছু না বলে , বুবলী'র পেছন পেছন মাঝারি আকৃতির আরেকটা রুমে গিয়ে ঢুকলাম । দেখেই বুঝলাম, রুমটা বেড রুম হিসাবে ব্যবহৃত হয় । মোটামুটি গুজ গাছ করা । ঘরের মাঝখানে একটা খাট । তাতে দুটো মাথার বালিশ । খাটের দুপাশে হাত দু'য়েকের মতো জায়গা । পায়ের দিকটায় এটার্চ বাথরুমের দরজাটা হালকা ফাক হয়ে আছে । আর ডান পাশে একটা বারান্দা । দরজা জানালায় লম্বা পর্দা ঝুলছে । আমি ভেতরে ঢুকতেই বুবলী আমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলল, তোমাকে খুব মিস করছিলাম। তাই আসতে বলেছি ।

আমি নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে খাটে বসতে বসতে বললাম , এভাবে আসাটা কি ঠিক হলো ?
বুবলী আমার গা ঘেঁষে বসতে বসতে বলল, ক্যান ভয় করছে ? তোমায় খেয়ে ফেলবো নাকি ?
না , মানে, কেউ জানলে কি ভাববে?
কেউ জানলে তো । বলে , বুবলী আমাকে আবার জড়িয়ে ধরে বিছানায় শুইয়ে দিলো । ওর ঠোট, মুখ হঠাৎ অস্থির হয়ে উঠলো । আমি শরীর ঝাড়া দিয়ে উঠে দাঁড়ালাম।
বললাম , থামো, এসব কি করছো ?
কি হলো ? বুবলী একটু অবাক হলো ।
না , কিছু না , বলে আমি ওকে সরিয়ে দিতে দিতে বললাম, এসব ঠিক হচ্ছে না । আমি এখন যাবো ।
যাবো মানে ?
যাবো মানে, যাবো ।
বুবলী হেসে বলল, যাবো বললেই তো আর যাওয়া যায় না । এসো আমার কাছে । তারপর খুব সাবলিল ভাবে বললো, চলো সেক্স করি । বলেই আমাকে জড়িয়ে ধরলো ।

আমি বাধা দিয়ে বললাম, না, থামো ।

তারপর আর দাঁড়ালাম না । দরজার দিকে পা বাড়ালাম । বুবলী বাধা দিলো না । তবে ঘরের দরজা খুলতেই চমকে উঠলাম । ডাইনিং স্পেসে মোবাইল হাতে চারটা ছেলে বসে আছে । আমাকে দরজা খুলে বের হয়ে আসতে দেখেই তারা উঠে দাঁড়ালো ।

আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না আমি কাদের হাতে পরেছি । অতি চালাকের গলায় দড়ি, এতোদিন এ কথা শুনে এসেছি, আজ তা হাড়ে হাড়ে টের পেলাম ।

রোগা মতো একটা ছেলে হাসতে হাসতে বলল, যা শালা কিছুই তো হইলো না । নিজ থেকে করলে, কাজটা সহজ হইয়া যাইতো । এখন আবার সেই জোরাজোরি করতে হইবো । আমার পেছনে তখন বুবলী এসে দাঁড়িয়েছে । সে আমার সাটের পেছনের অংশটা খামচে ধরে ছেলেগুলোর উদ্দেশ্যে বলে উঠলো, যা ভেবে ছিলাম এই মালটা সে রকম না । ধর শালারে, প্লান বি মতো কাজ করতে হবে ।

সাথে সাথে দু'টো ছেলে উঠে এসে আমাকে দু'পাশ থেকে ধরে ফেললো । তারপর একজন , সিনেমার ভিলেনদের মতো হেসে বলল, চলেন দুলাভাই বাকি শুটিংটা সাইড়া ফেলি ।

বুবলীর দিকে তাকিয়ে আমি অসহায়ের মতো বললাম, বুবলি, এসব কি হচ্ছে ? আমাকে ছাড়তে বলো । আমি বাসায় যাবো ।

টেবিলে বসা মোটা মতো লোকটা তখন বলল, কে বুবলী, সোনা? ওর নাম বুবলী না । এখন ও বুঝো নাই তুমি কাদের পাল্লায় পরেছো ? যা, যা বলি তা ঠিক ঠাক করলে প্রাণে বেচে যাবে । তা না হলে পেট কেটে ৩০০ ফিটে নিয়ে গিয়ে পুতে রাখবো। বুঝতে পেরেছো ?

একজন একটা ছোট কোকের বোতল নিয়ে এসে আমার মুখ ভেতর ঢুকিয়ে দিলো । মনে মনে বলে উঠলাম,হায় খোদা এ আমি কাদের পাল্লায় পরলাম । বুবলী পেছন থেকে চুল টেনে ধরে বলল, কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে বললো, এটা খেয়ে নাও জানু ভাল লাগবে । আমি অনিচ্ছা সত্ত্বেও তেতো স্বাদে'র পানিয়'টা গিলতে বাধ্য হলাম ।

কিছু সময়ের মধ্যেই শরীরে একটা ঝিমুনি ভাব চলে এলো । বারবার তন্দ্রছন্ন হয়ে পরতে লাগলাম ।
কখনো বুবলি , কখনো অন্যরা আমার মাথায়, গালে চড় থাপ্পড় দিয়ে আমাকে জাগিয়ে রাখতে চেষ্টা করতে লাগলো। আর কি সব বলে যাচ্ছিলো । এর মধ্যেই বুঝতে পারলাম আমার শরীরে কোন কাপড় নেই । বুবলীর শরীর ও উলঙ্গ প্রায়। ছেলেগুলো আমার শরীরটাকে বুবলীর শরীরের উপর তুলে দিয়ে বিভিন্ন ভঙ্গিতে ছবি তুলছে আর দাঁত বের করে হাসছে । ববুলী নামের মেয়েটাও ওদের সাথে হাসিতে যোগ দিয়ে , কখনো কখনো বলে উঠছে, এই কাতুকুতু লাগছে তো, এই কাতুকুতু লাগছে তো।

চার

চক্রটা আমাকে পুরো দু'দিন জিম্মি করে রাখলো । তৃতীয় দিন একটা গাড়িতে করে ব্রাক ব্যাংকের এটিএম বুথে নিয়ে গিয়ে দু'লাখ টাকা উঠিয়ে নিলো । তারপর বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যাবার আগে বলল,"অনেক ছবি তুলে রেখেছি, দুলাভাই । কাউকে কিছু বললে, কালই সব পোস্ট করে দিবো । সবার আগে ছবিগুলো পাঠাবো তোর বউ এর কাছে । আর , তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলাটা তো তোলাই আছে । মনে থাকে যেনো। "

পরিশেষ : ওই ঘটনার পর বেশ কিছু দিন কেটে গেছে । ঘটনাটা আমি কাউকে বলিনি । পুলিশের কাছেও যাইনি । সুস্থ হতে আরো বেশ কয়েকদিন সময় লাগলো । আবার নিয়মিত অফিস করতে শুরু করলাম । মন থেকে ঘটনার ছাপটা মুছে ফেলার জোড় প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলাম, এমন সময় একদিন, মোবাইলে একটা এসএমএস এলো,"জানু আমার আমার হাজার দশেক টাকা দরকার, বিকাশ করতে পারবে ?"

মন্তব্য ২১ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৩৪

নতুন বলেছেন: জানু আমার আমার হাজার দশেক টাকা দরকার বিকাশ করতে পারবে ?

=p~

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:৩০

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: দারুণ মন্তব্য করেছেন :)

২| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি সাহসী মানুষ। কি সুন্দর বলে দিলেন- ঘরে বউ থাকার পরও দুই একটা গার্ল ফ্রেন্ড থাকতেই পারে। তবে এটা ভালো আপনি গারর ফ্রেন্ড এঁর সাথে সম্পর্কের একটা সীমানা আছে।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:৩১

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: ভাই এটা শুধুই গল্প । কাল দেখলাম একটা চক্র ধরা পরেছে । তাই ভ্যালেটাইন নিয়ে লিখলাম । যাতে অন্যরা সর্তক হয়ে যায় ।

৩| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:০৩

মরুর ধুলি বলেছেন: জানু আমার আমার হাজার দশেক টাকা দরকার বিকাশ করতে পারবে ?[/sb
জানু’কে হাজার দশেক টাকা বিকাশ করেই দিননা।
বেচারা হয়তো কোন কষ্টে আছে। তাই আপনার মতো মুরগীকে স্মরণ করেছে।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:৩২

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: মুরগী না ভাই মোরগ হবে । এইটুকু ইজ্জত তো আশা করতে পারি :)

৪| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:১৬

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: রসিয়ে দারুণভাবে লিখেছেন। এমন ঘটনা কিন্তু বাস্তবেও ঘটে অহরহ।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:৩৩

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: কাল দেখলাম একটা চক্র ধরা পরেছে । তাই ভ্যালেটাইন নিয়ে লিখলাম । শুভ কামনা , ভাল থাকবেন ।

৫| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৫:৫৮

নতুন বলেছেন: এই রকমের অনেক কাহিনি সমাজে ঘটে এবং বেশির ভাগই চেপে যায় মানসন্মানের ভয়ে।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩৭

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: ঠিক বলেছেন। কাল নিউজে দেখলাম একটা চক্র ধরা পরেছে। স্বামী স্ত্রী মিলে ২০১৮ সাল থেকে এই ব্যবসা করে আসছে।

৬| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫৬

মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: ভালো লাগলো।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩৮

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: শুভ ব্লগিং, ভাল থাকবেন।

৭| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২০

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আহা কি মজা, ব্যাপোক মজা, পরকীয়ায় খালি মজাই মজা।

তবে, জায়গামত ধরা পড়লে পরকীয়ায় খালি মজাই মজা না :( মাঝে মাঝে গজাও খাইতে হয়।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩৯

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: খুব ভাল বলেছেন, শুভ ব্লগিং

৮| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:০৬

তানীম আব্দুল্লাহ্ বলেছেন: সুন্দর বর্ণনা , মনে হচ্ছে লেখকের চোখের সামনে ঘটেছে ;) ;) B-)
তবে আপনি যাদের সতর্ক করতে চাইছেন তারা সবাই মনে মনে সতর্ক হয়ে যান ! (যদি জানা যেত এই ব্লগে এমন কে কে আছেন ;) ;) )

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৫৮

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: নিজের সর্বনাশ কি কেউ নিজে করে ? শুভ ব্লগিং

৯| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ৮:১৪

নেওয়াজ আলি বলেছেন: পিরিত হলো পিকনিক ।
বিয়ে হলো প্রতিদিনকার রান্না
বাণীতে মারজুক রাসেল

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৫৭

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: ভাল বলেছে ...

১০| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:২৫

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: মেয়েটা ধান্দা করছে বোঝা উচিত ছিল।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৩৪

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: কেউ জানু বলে ডাকলে তো অনেকের জান কুরবাণি করে ফেলতে ইচ্ছে করে । এটা গল্প ভাই । তবে বাস্তবে প্রতিদিন এমনটা হচ্ছে । তাই পুরুষেরা সাবধান

১১| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে আমার মন্তব্যের উত্তর দেওয়ার জন্য।

ভালো থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.