নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন গুনাহগার

সাময়িক পৃথিবী

আমি একজন গুনাহগার বান্দা...............।

সাময়িক পৃথিবী › বিস্তারিত পোস্টঃ

নারীর নিরাপত্তা যে পথে আসতে পারে.........................

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১৭

খবরের কাগজে নানা সময়ে আমরা আমাদের প্রতিবেশি দেশ-ভারতে ধর্র্ষণ, গণধর্ষণসহ এজাতীয় বহু সংবাদ ইতিপূর্বে দেখেছি। ভাল কিছু শিখতে না পারলেও খারাপ এ দিকটা এখন আমাদের মাঝেও অনুপ্রবেশ করেছে। বিস্মিত হবার মতো কিছু ঘটনা বর্তমানে বাংলাদেশেও ঘটেছে। পূর্বাপর অবস্থা দেখে মনে হয়, হর হামেশাই এমন বহু ঘটনা ঘটে চলেছে। ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে অহরহ। গণ ধর্ষণের ঘটনাও কম নয়। কোনো কোনো ঘটনা পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তবে বেশিরভাগ ঘটনাই অপ্রকাশিত থেকে যায়। কোনোভাবে প্রকাশ হয়ে গেলে তখনই সংবাদ মাধ্যমে আসে। না হয় আপন মান-মর্যাদা রক্ষায় সবাই তা চেপে রাখারই চেষ্টা করে। আবার প্রকাশ হলেও তার যথাযথ কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না।
উপরন্তু চলমান শিক্ষা, শিক্ষা ব্যবস্থা ও সমাজ ব্যবস্থা এজাতীয় অপরাধকে উস্কে দেয় বৈ কি? সাম্প্রতিক নষ্টা সংস্কৃতি বিনোদনের নামে চরিত্র হনন আর ধর্ষণের ফেরি করে চলে সারাক্ষণ। যুবক যুবতীদের যৌন সুরসুরি দিয়ে যায় হরহামেশা। জাগিয়ে দেয় মানুষের ঘুমন্ত পশুত্বকে। সৃষ্টি করে যৌন উম্মাদনা। চলমান রেডিও, টেলিভিশন এবং ডিশ সংযুক্ত বিভিন্ন চ্যানেলের নাম উল্লেখ করাই বাহুল্য। আত্মপরিচয় ভুলা ও সাংস্কৃতিক দেওলিয়া মানুষেরা তাতে দেখা সাজ-সজ্জা এবং পোষাক-পরিচ্ছদে অনুকরণ করতে ত্রুটি করেনা। এতে রীতিমত প্রতিযোগিতা চলে। বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে এ প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায়। ফলে যৌন সুরসুরিপ্রাপ্ত, মনে কুইচ্ছা লালিত যুবকগুলো রাস্তায় বের হয়ে অনুরূপ ভরযৌবনের অর্ধনগ্ন যুবতীর রূপলাবন্য ও কোমলতা প্রত্যক্ষের পর তাদের সে ইচ্ছা ও আকাংখা বুভুক্ষার রূপ নেয়। যে কারণে ঘটে যত অঘটন, অনৈতিক কার্যকলাপ। উন্নত বিশ্ব এবং ফ্রি সেক্সের দেশগুলিতে এসব অন্যায় অকল্পনীয় হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। মিডিয়ার সঙ্গে পরিচিত সবাই তা ভালভাবেই জানার কথা। বাস্তব কথা হল, এসব অনৈতিক কার্যকলাপের প্রত্যাশা কোনো মানুষ করে না। সে জন্য চেষ্টায়ও কারো কমতি থাকার কথা নয়। তবে চেষ্টার পথ ও পদ্ধতি নিয়ে কথা। অপরাধের জন্য শাস্তির ব্যবস্থা আছে। সাম্প্রতিক পৃথিবীর বাস্তব চিত্র দেখলে দেখা যায়, সবার প্রতিরোধ ব্যবস্থা অনাকাংখিত সব ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর কার্যকর হয়। অপরাধ সংঘটিত না হওয়ার জন্য পূর্ববর্তী কোনো পদক্ষেপ কারো নেই। অপরাধ প্রতিরোধে পূর্বব্যবস্থা প্রয়োজন। না হয় কঠোর আইন করে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর অপরাধীকে শাস্তি দেয়া যাবে, তবে অন্যায় রোধে তা ফলপ্রসূ হবে না। এ জন্য প্রয়োজন ভেতর থেকে পরিশুদ্ধিকরণ। প্রয়োজন অন্যায়ের শেকড়ের মুলোৎপাটন এবং এর যথার্থ কার্যকরী পদক্ষেপ।
ইসলাম তিন ধাপে এর যথার্থ কার্যকরী ব্যবস্থা নিয়েছে। পৃথিবীকে ধর্ষণমুক্ত নিরাপদ করতে দেখে নেয়া যেতে পারে সার্বজনীন শ্বাশত সেইসব ব্যবস্থাগুলো।
ক. অন্তর থেকে তার জড় উপড়ে ফেলা। মুসলমানদের অন্তরে খোদাভীতির মাধ্যমে ব্যভিচারের জড় মুলোৎপাটন করার চেষ্টা করা হয়েছে। যেন মুমীন পুরুষ ও নারী কখনো এমন গর্হিত কাজের চিন্তাও না করে। শরীয়তের দৃষ্টিতে ব্যভিচার হারাম। এতে মহান রাব্বুল আলামীনের চরম অসন্তুষ্টির পাশাপাশি ইহকাল ও পরকালে কঠিন শাস্তির ঘোষণা করা হয়েছে। কালামে পাকে ইরশাদ হয়েছে, “আর তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেও না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।” [বনী ইসরাঈল-৩২]
খ. যুবক যুবতীদের চলাফেরায় বিধি-নিষেধ আরোপের মাধ্যমে অন্যায়ের সূত্রপাতের সম্ভাবনা হ্রাস করা। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, “মুমীনদের বলুন তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। ঈমানদার নারীদের বলুন, তারা যেন দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। তাদের যা সাধরণত প্রকাশমান তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে, এবং তারা তাদের মাথার ওড়না বক্ষদেশে ফেলে রাখে। [মুমীনুন-৩০-৩১] অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, “তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে- জাহেলি যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না।” [আহযাব-৩৪]
গ. সবশেষে মহান রাব্বুল আলামীনের নিষেধ অমান্য কারীদের জন্য দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি নিশ্চিত করা হয়েছে। আর কিছু না হোক, অন্তত শাস্তির ভয়ে হলেও যেন অন্যায় থেকে বিরত থাকে। না হয় তার শাস্তি দেখে অন্যরা যেন শিক্ষা গ্রহন করে এবং তা থেকে দুরে থাকে।
কোনো প্রকার এক ঘেয়েমি ছাড়া নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে বিবেচনা করলে ধর্ষণ রোধে ইসলামের এসব ব্যবস্থার চেয়ে ফলপ্রসূ ও কার্যকরী ব্যবস্থা আর কি হতে পারে? প্রয়োজনে ইতিহাসের দিকে একটু চোখ ভুলিয়ে নেয়া যেতে পারে। জাহেলি বর্বরযুগে নারীরা ছিল তাদের ভোগ্যসামগ্রী, বিহার পণ্য। মানুষ হিসেবে তাদের মূল্যায়ন করতেও তারা ছিল নারাজ। নারীরা ছিল নিগৃহীত, নিরাপত্তাহীন, নির্যাতনের শিকার। চরম সেই নিগৃহীত অবস্থা থেকে কোন আদর্শ ও ব্যবস্থা তাদের মুক্তি দিয়েছিল, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিল? তারা পেয়েছিল প্রকৃত অধিকার ও স্বাধীনতা! প্রমাণের জন্য সে সময়ের একটি চিত্রই যথেষ্ট। হযরত আদী ইবনে হাতেম রা. থেকে বর্ণিত, একদা আমি নবী কারীম সা.-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। জনৈক ব্যক্তি এসে তার নিকট দারিদ্রতার অভিযোগ করল। তারপর অপর একজন এসে ডাকাতির অভিযোগ করে। তখন নবী কারীম সা. বলেন, “আদী! তুমি কী হীরা শহর দেখেছো? আমি বলি, না; তবে তার কথা শুনেছি। তিনি তখন বলেন, তুমি দীর্ঘজীবি হলে দেখবে ইরাকের সুদুর হীরা শহর থেকে একজন নারী ভ্রমন করে এসে বাইতুল্লার তওয়াফ করবে, পথে আল্লাহ ছাড়া কারো ভয় তার থাকবে না। আমি তখন মনে মনে বলি, “অনাচার সৃষ্টিকারী তাঈ গোত্রের লম্পটরা তখন কোথায় থাকবে?” “তিনি বলেন, তুমি দীর্ঘজীবি হলে দেখবে, কিসরার ধনভান্ডার বিজিত হবে।” “আমি জিজ্ঞেস করলাম, কোন্ কিসরা, ইবনে হরমুয?” তিনি বলেন, হ্যাঁ। তিনি আরো বলেন, ‘‘তুমি দীর্ঘজীবি হলে দেখবে, একজন লোক দু’হাত ভর্তি স্বর্ণ রোপা কাউকে দেয়ার জন্য নিয়ে ঘুরবে, তবে কোনো গ্রহীতা খোঁজে পাবে না।” হযরত আদী রা. বলেন, “সুদুর হীরা থেকে ভ্রমন করে বাইতুল্লার তওয়াফ কারী মহিলাকে আমি দেখেছি, পথে আল্লাহ ছাড়া কারো ভয় তার ছিল না। কিসরার ধনভান্ডার বিজয়ীদলে স্বয়ং আমি ছিলাম। তোমরা দীর্ঘজীবি হলে নবী কারীম সা.-এর তৃতীয় ভবিষ্যৎবাণীও প্রত্যক্ষ করবে।” [বুখারী]
আজও একই কায়দায় নারীর সম্ভ্রম লুন্ঠিত হচ্ছে। প্রতিনিয়ত তারা ধর্ষিতা হচ্ছে। তাদের ইজ্জত রক্ষায় আন্তরিক প্রচেষ্টা ও ইচ্ছা আছে সবার। এ জন্য বহু আইন-কানুন করা হচ্ছে; তবে তেমন সুফল মিলছে না। নারীদের ইজ্জত ও সম্ভ্রম রক্ষায় শতভাগ সুফল পেতে পরীক্ষিত ইসলামী শ্বাশত ব্যবস্থা গ্রহণ করে দেখা যেতে পারে।
স্মর্তব্যঃ কথিত পদ্ধতিতে নারীর নিরাপত্তা ও মুক্তির শ্লোগান নারীমুক্তি ও স্বাধীনতা পরিপন্থী। এতে নারীদেরকে পুরুষের বিহার সামগ্রী ও লুলোপ দৃষ্টির শিকার না হওয়ার উপায় কি! সর্বত্র যৌন সুরসুরির ফেরি করে, পথে পথে নারী মাংসের সৌন্দর্যের প্রদর্শনী করে, তাদের নিরাপত্তার জন্য আইন করে নিরাপত্তার শ্লোগান দেয়া প্রহসন বৈ কি? নারী নিরাপত্তার যৌক্তিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি হল, নারী পুরুষ উভয়কে আত্মসংযমের দীক্ষা দিয়ে উভয়ের মাঝে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ, তাদের সং¯্রবে কাম বাসনার উদ্রেক মানবীয় গুন। অন্যথায় স্বাভাবিক ভাবেই সবাই তাদের অসুস্থ বলবে নিশ্চয়। সে অবস্থায় অঘটন ঘটার সমূহ সম্ভাবনা বিরাজমান। সে ক্ষেত্রে নিরাপদ দূরত্বের বিকল্প কি? গা জোরি নয়, যৌক্তিকতা এবং বাস্তবতার নিরীখে প্রমাণ করেই দেখাতে হবে। কথিত সভ্যসমাজের অনুকরণে দেহ প্রদর্শনী করে তার অপরিহার্য পরিণতিকে অসভ্যতার চপেটাঘাত না বলে অপরিহার্য পরিণতির মধুর আলিঙ্গন বলাই শ্রেয়।
এক্ষেত্রে নারীর পশ্চাৎপদতার প্রশ্ন নিতান্তই অমুলক। প্রত্যেককে তার সৃষ্টিগত ও স্বভাবসুলভ কাজে ব্যবহার করাই যুক্তিযুক্ত। না হয় পৃথিবী আপন সৌন্দর্য হারাবে। মানব উন্নয়ন ব্যহত হবে। পাশ্চাত্য জগত তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। পরীক্ষিত সেই শ্বাশত বিধান মেনে, তাদের দাবি মোতাবেক ধর্মানুরাগী হয়ে এবং নারীর পশ্চাৎপদতা মেনে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেতো আমরাই সফল। স্পষ্ট ভ্রষ্টতার পরও পৃথিবীজুড়ে তাদের সংস্কৃতির খয়রাত উদ্দেশ্য প্রণোদিত। নিজেদের সব হারিয়ে অন্যদের কল্যাণে গা জ্বালা অস্বাভাবিক কী? আল্লাহ তাআলা আমাদের বুঝার ও মানার তাওফিক দান করুন। আমীন।
-
আল জান্নাত

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.