নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজপথ ঘুরে, নর্দমা খুড়ে, খুজি জীবনের মানে।

নব জাগরণ মন্ত্রণা শোন, ঋজু হও তাজা প্রান, নব মোড়কে বাসি জিনিসের হইয়াছে অবসান; একসাথে আজ গাইব মোরা শিকল ভাঙ্গার গান।

সুপ্ত-আগ্নেয়গিরি

দোহাই তোমার হে মহাকাল,আর একটু সময় দাও, বৈষ্যমের বেড়াজাল থাকবেনা, থাকবেনা বর্ণের বিভাজন; শুভ সত্তার কান্না বন্ধ হবে সেদিন, আর প্রতিশোধ প্রতি বিন্দু কান্নার, দেখো সেদিন বাতাসে থাকবে শুভ্রতা আর স্বর্ণালী নিমন্ত্রণ।

সুপ্ত-আগ্নেয়গিরি › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিমূর্ত কায়া-১

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:০৭

কালের দেয়ালে মূহূর্ত জমে শিশিরের মত , একটু একটু করে;

ওরা সঙ্গোপনে খসে পড়ে , মহাকালের দীঘিতে।

যা ছিল অসাবধান বেশ্যার গর্ভপাতের মতই স্বাভাবিক; অকপট।



তবুও থামলনা বেদূঈন, মৃত্যুর বুকে হাত ;

আততায়ীর মত নিঃশব্দ পায়ে আসে রাত।



তার বয়স বাড়ে, অজানা কোন আশে ;

নোংরা গুমোট ঘরে কসবির দীর্ঘশ্বাসে।

রাত গভীর হয়, গভীর থেকে গভীরতর;

সেই গভীরতায় হার মানে, শেষ ঝিঁঝিঁ পোকাটার স্বর;

আড়মোড়া ভাঙে পেঁচারা।



মুখে শ্মশানের নীরবতা নিয়ে বসে থাকে যে সাধক,

সেও ঢিমেতালে উঠে দাঁড়ায়; হাঁটা ধরে শুঁড়িখানার পথে।



এক দমকা বাতাস তখন খুনসটি করে তরুনীর চুলে;

ওতে মিশে থাকে নিশিকন্যার সস্তা পারফিউমের গন্ধ,

ক্লান্ত ফেরীওয়ালার ঘামের গন্ধ।



ওদিকে বিশ্বপ্রভুর মুখোশ ভিজেছে ঘামে;

ভক্তেরা তার ঘুমিয়ে পড়েছে, ভন্ডামি তাই থামে।

শুরু হয় তার রাত্রিবেলার কারবার;

শুরু হয়ে যায় কুজ্ঝটিকায় অভিসার।

মত্ত হয়ে মুখ গোঁজে, হুরপরীর স্তনের খাঁজে;

তাই দেখে চিৎকার করে গলা ফাটায় শয়তানের পোষা কুকুর ;

জাহান্নামের চৌরাস্তায় চলে বিক্ষোভ মিছিল।



ধরনীর একপ্রান্তে তখন অন্য আরেক যজ্ঞ ।



একটা ব্যস্ত শহর, যার দম ফেলার ফুসরত নেই;

ফুসরত নেয় ঘাড় ফেরানোর;

সে ভুলেছে তার দাইমার কথা।

যে দাইমা তাকে পালন করেছে জীবন যৌবন ক্ষয়ে;

সে আজ দাঁড়িয়ে মৃত্যুদুয়ারে, কাঁপছে মৃত্যু ভয়ে;



দেহ তার কুষ্ঠরোগীর মত, দূষিত, দূর্গন্ধযুক্ত। ।

অনেক অভিমান তাই বুড়িগঙ্গার মনে;

আরেকবার জলোগর্জনে ফুঁসে উঠতে চায় ,বিগতযৌবনা বুড়িগঙ্গা।



তখন হয়তো চলনবিলের পাশের কোন গাঁয়ে;

দুষ্ট ছেলের ঘুম আসে না, গল্প শোনায় মায়ে।

রাখাল ছেলে বাজায় বাঁশি বসিয়া ডিঙ্গি নায়ে;

বাঁশির সুরে জোছনা নামে আলতা রাঙ্গা পায়ে।



আর আমি ?

আমি আর জোনাকি, বসে আছি একাকী;

অপেক্ষা করছি ঘুমের দেবীর।



মাথার ভেতর উন্মাদপোকা হুটোপুটি করে।



হয়তো ভাবি, সেই মানবীর কথা,

যে চলে গিয়েছিল এমনই এক রাতে;

চোখে ছিল টলটলে বৃষ্টির আভাস;

বুকে নিয়ে আস্ত একটা ভিসুভিয়াস।



কখনো ভাবি, ছেলেবেলার সেই গুপ্তধনের কথা;

সেই রঙিন মার্বেলের কথা;

এক টুকরা ভাঙা চুম্বকের কথা;

ঘুর্নায়মান লাটিমের কথা;

এভাবেই কাটে আমার বিনিদ্র রাত;

ঘুমের দেবীর দেখা নেই।



কিন্তু আমি তার উপর রাগ করি না; একটুও না।



আমি জানি, সে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে;

ব্যস্ত হয়ে পড়েছে,

পঙ্গু ভিখারির চোখে,

বৃদ্ধ শাঁখারীর চোখে,

ছানি পড়া হকারের চোখে,

দিশেহারা বেকারের চোখে,

ঘুম এনে দেবে বলে।



তাইতো আমার তাড়া নেই;

আমি তেমনি করে বসে থাকি; নিরালায়;

একটা রাত জাগা অচিন পাখি,

ডানা ঝপটে উড়ে যায়।

যেতে যেতে ঘাড় ঘুরিয়ে বলে-

হে কবি, তোমার এই খেয়ালিপনার সময় নেইতো আর;

চেয়ে দেখ ঐ, অরূন আলোয় খুলছে ঊষার দ্বার।



অমনি আমার ঘোর কাটে;

টুকরো আমিকে একত্র করি;

সিঁড়িতে ঐ কার পদধ্বনি?

এক চিলতে হাসি ছলকে ওঠে আমার ঠোঁটে;

সেই পা, সেই নূপুর, সেই ধ্বনি; এতো আমার চেনা;

মায়ের শরীরের গন্ধের মত চেনা।



সমগ্র হৃদয়মন্দিরে ঘন্টা বেজে ওঠে;

কে যেন কিন্নরকণ্ঠে ঘোষণা করে-

সে এসেছে! সে এসেছে!

অবশেষে, বধূবেশে।



দেবী মোর লজ্জা পেয়ে হাসে;

চেয়ে থাকে অতল চোখে অতুল মমতা নিয়ে;

স্বর্গলোকের দেবকন্যার শূদ্রের সাথে বিয়ে।



আমি সম্মোহিত হই;

তলিয়ে যেতে থাকি; অতলে, গহীনে।



ওদিকে বুড়িগঙ্গা, ভগবান, লাটিম, ঝুলে থাকে দরজার চৌকাঠে;

বিষাক্ত দৃষ্টি মেলে।

আগামীকাল হয়তো ওরাই এসে দাঙ্গা বাঁধাবে;

আমার মাথার ঘিলুর দখল নিতে।

কিংবা ওরা নয়, অন্য কোন কিছু।



আজ তবে যাই; বিদায়!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.