নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নপূরণই জীবনের একমাত্র লক্ষ্য নয়।তাই বলে স্বপ্নকে ত্যাগ করে নয়,তাকে সঙ্গে নিয়ে চলি।ভালো লাগে ভাবতে, আকাশ দেখে মেঘেদের সাথে গল্প পাততে, বৃষ্টি ছুঁয়ে হৃদয় ভেজাতে, কলমের খোঁচায় মনের অব্যক্ত কথাগুলোকে প্রকাশ করতে...

শাওন আহমাদ

এটা আমার ক্যানভাস। এখানে আমি আমার মনের কোণে উঁকি দেয়া রঙ-বেরঙের কথাগুলোর আঁকিবুঁকি করি।

শাওন আহমাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার ফুপি আমার শৈশব

২৪ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ১১:১৩



কিছু কিছু সম্পর্ক কে দুই বা এক শব্দে প্রকাশ করা যায় না।কিছু কিছু সম্পর্ক বড়-ছোট'র হিসেব কষে চলেনা।
এই মানুষটার সাথে আমার সম্পর্কটাও তেমন। এখানে নেই ছোট-বড়'র দেয়াল, নেই গুটি কয়েক শব্দের সীমাবদ্ধতা। এই মানুষটা একাধারে আমার ফুপি, আমার বন্ধু ও সেই সাথে আমার অভিভাবক।

আমার জীবনের সোনালি মুহূর্ত গুলো কেটেছে এই মানুষটার সাথে।শৈশবের কতশত স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই মানুষ টাকে কেন্দ্র করে।ডুবসাঁতার, মাছধরা, চড়ুইভাতি, অন্যের বাগানের ফল পেড়ে খাওয়া ফুল তুলে আনা, গাছে উঠা, ঘুড়ি উড়ানো আরো কতো কি!!এই মানুষটা না থাকলে আমার শৈশব এতো সুন্দর হতোনা, হতোনা এতো আমোদে আমার শৈশব কে উপভোগ করা।

আম্মু অসুস্থ থাকার কারণে অধিকাংশ সময় নানাবাড়ি থাকতেন আর আমার পড়াশোনার জন্য আমাকে দাদাবাড়ি থাকতে হতো। দাদাবাড়ি আমার কাছাকাছি বয়সের কেউ না থাকায় বন্ধু বলতে এই মানুষটাই ছিলো আমার সবকিছু। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধান আমাদের মধ্যে।কিন্তু আমি বা ও কেউ এটা মাথায়'ই আনতাম না।আমি নির্দ্বিধায় ওকে নাম ধরে তুই করে ডাকতাম।এটা নিয়ে ওর কোনো মাথা ব্যথা না থাকলেও প্রথম প্রথম পরিবারের লোকজন ভীষণ আপত্তি করতেন। আমাদের দুজন কে বলে দেয়া হয়েছিলো। আমি ওকে নাম ধরে ডাকলে আমার শাস্তি হবে, আর আমার ডাকে ও সাড়া দিলে ওর শাস্তি হবে।কিন্তু কে শোনে কার কথা! আমরা আমাদের মতোই চলতে বলতে লাগলাম।পরে অবশ্য পরিবারের লোকজন বুঝতে পেরেছিলেন আমরা সুধরাবার নোই। তাই আমাদের শাস্তি তুলে দেয়া হয়েছিলো।

আমার শৈশবের পুরোটা সময় জুড়ে ও আমার পাশে ছিলো। সবসময় বন্ধু, কখনো কখনো ফুপি আবার কখনো অভিভাবক হয়ে।
হঠাৎ করে কৈশোরে ও আমার ও আমাদের জীবন থেকে অনেক দূরে হারিয়ে যায়....

এর মধ্যে কত কিছুর পরিবর্তন হয়েছে! কত চেনা মুখ পাড়ি জমিয়েছে দূর আকাশে, কত বাগান কেটে বানানো হয়েছে বাসস্থান, কত গাছ হয়ে গেছে ঘরের ফার্নিচার, কত মাঠ চলে গেছে বাউন্ডারির ভেতরে, ঘুড়ি উড়ানোর জায়গা গুলো ধ্বংস করে দিয়েছে ড্রেজার মেশিন!!
আমার সমস্ত শৈশব যখন ওর হারিয়ে যাওয়ার সাথে পাল্লা দিয়ে হারিয়ে যাচ্ছিলো,ঠিক এই সময় হঠাৎ এক যুগ পর ওর সাথে আমার ও আমাদের আবার দেখা।

এতোদিন পর ওকে দেখে আমি অথর্ব হয়ে গিয়েছিলাম ও দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আমার হাত-পা কাঁপছে একবার আমি আপনি বলছি, একবার তুমি আর একবার তুই।সব গুলিয়ে যাচ্ছিলো। সেদিনের পর থেকে আমি আবার আমার শৈশব কে খুঁজে পাচ্ছি প্রতিনিয়ত। ও আমার হারিয়ে যাওয়া শৈশব কে সাথে নিয়ে আবার ফিরে এসেছে।

ছবিঃ গুগল

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ১১:৪১

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: ফুফু নিয়ে আমার অনেক গল্প আছে।
আপনার লেখা ভালো লাগলো।

২৪ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ১২:০৩

শাওন আহমাদ বলেছেন: ধন্যবাদ! আপনার মন্তব্যের জন্য।

২| ২৪ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ১২:৫২

জুল ভার্ন বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছে! সম্পর্ক হল দুই বা তার অধিক ব্যক্তির আন্তিঃ ক্রিয়াশীল অনুভূতি প্রকাশের একটি অদৃশ্য মাধ্যম, যা কিনা অনেকগুলো পারিপার্শ্বিক বিষয়বস্তুর ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে। সবার কাছেই আপনাকে কিছু না কিছু হতে হবে না বরং একজন এর কাছে সবকিছু হওয়াই যথেষ্ট। আপনি আপনার ফুফুর কাছে সেই প্রত্যাশিত সম্পর্কের বন্ধনে আবদ্ধ হতে পেরেছেন। আপনি সৌভাগ্যবান।

২৪ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ১২:৫৭

শাওন আহমাদ বলেছেন: ধন্যবাদ! আপনার মন্তব্যের জন্য। সত্যিই আমি ভাগ্যবান।

৩| ২৪ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ২:৫০

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ফুপু নিয়ে আমার তেমন কোনো গল্প নেই, তেমন কোনো স্মৃতি নেই। আমি বুঝাদার হওয়ার আগেই আমার এক ফুপু ইন্তেকাল করেছেন। অন্যজনের অতিসামান্য মনে আছে।

২৪ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৩:১৭

শাওন আহমাদ বলেছেন: আল্লাহু সুবহানাহু ওয়া তা'ইয়ালা আপনার ফুপুর আত্মার শান্তি প্রদান করুন। আমার শৈশব ও কৈশরের প্রায় পুরো সময়টাই কেটেছে ফুপিদের সাথে। ফুপির বান্ধবিরাও আমাকে মাথায় তুলে রাখতেন, এখানে সেখানে নিয়ে যেতেন এবং এখনো কারো সাথে দেখা হয়ে গেলে সেই আগের মতোই স্নেহ করেন।

৪| ২৪ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৩:৪৮

মনিরা সুলতানা বলেছেন: শৈশবের কিছুকিছু মানুষের স্থান কখনো মুছে যাবার নয়।
ভালো লাগলো আপনার স্মৃতি।

২৪ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৪:১৩

শাওন আহমাদ বলেছেন: সত্যিই কিছু কিছু স্মৃতি আমাদের মাঝে এমনভাবে গেথে থাকে যে আমরা তা খুব যত্ন করে বুক পকেটে পুষে রাখি, মাঝেমাঝে হাত বুলিয়ে অনুভব করি। আমার নিজের তো স্মৃতি জমিয়ে রাখার জন্য বয়াম আছে। আমি ভীষন স্মৃতি কাতুরে ,স্মৃতি আগলে রাখতে ভালোবাসি। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

৫| ২৪ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৪:৫৩

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: সুন্দর স্মৃতিচারণ।

২৪ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:৪০

শাওন আহমাদ বলেছেন: আমি স্মৃতি ভালোবাসি। ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য।

৬| ২৪ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:২৫

রানার ব্লগ বলেছেন: সমবয়সি বা এক দু বছরের বড় সম্পর্কের মামা খালা ফুফু চাচা থাকাটা একধরনের আনন্দের বিষয় !!!

২৪ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:৪৩

শাওন আহমাদ বলেছেন: জ্বী আমার এরকম ফুপি এবং খালামনি দুজনই আছেন যাদের সাথে আমার তুই তুকারি সম্পর্ক। ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য।

৭| ২৪ শে জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৩৯

জগতারন বলেছেন:
সুন্দর স্মৃতি!
সুখপাঠ্য!!
লাইক!!!

কিন্তু ফুফু শব্দটিকে ফুপি বানিয়ে ফেলায় আপত্তি র'ইয়েই গেলো।
ফুপি বলে কোন শব্দ বাংলাভাষায় নেই।

২৪ শে জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫২

শাওন আহমাদ বলেছেন: আসলে কিছু শব্দের কোনো গ্রামার থাকেনা তবুও শব্দ গুলোতে কেমন মায়া লেগে থাকে আপন আপন গন্ধ পাওয়া যায়। ফুপি বলেই ডেকে অভ্যস্ত আমরা তাই এটাই ব্যবহার করেছি। আমারা আমাদের দাদী কে সবাই দাদু বলি যদিও এর কোনো ভিত্তি নেই তবুও বলি এটা বলেই অভ্যস্ত দাদী বললে দাদুর গন্ধ টা ঠিক পাইনা।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

৮| ২৪ শে জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫০

মোগল সম্রাট বলেছেন: আমার ফুপুরাই আমাকে সবয়ে বেশি স্নেহ করতেন। খালাদের চাইতে অনেক বেশি।

২৪ শে জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫৯

শাওন আহমাদ বলেছেন: আপনি ভাগ্যবান! আসলে ভালোবাসার ব্যাপারে খালা ফুপু মেটার করেনা এখানে পুরোটাই মায়ার ব্যাপার।

৯| ২৪ শে জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৫

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমার ছোটবেলায় আমি আর আমার ছোট ফুফু ছিলাম সবচেয়ে অবহেলিত। কয়েক বছর উনি আর আমি ঘুমাতাম ড্রয়িং রুমের মেঝেতে বিছানা করে। আমাদের বাসাতে অনেক আত্মীয় স্বজন ছিল। ফলে জায়গার সমস্যা হতো। আমার ফুফু আর আমাকে মশারা খুব পছন্দ করতো। এই কারণে রাতে ঘুমানোর আগে আমাদের প্রধান কাজ ছিল একটা একটা করে সব মশা মারা।

২৫ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ১০:২৫

শাওন আহমাদ বলেছেন: এক একটা মানুষের পিছনে লুকিয়লে থাকে কতশত হাসি কান্না আর মন খারাপের গল্প। এখন আপনি আর আপনার ফুপি ভালো আছেন তো?

১০| ২৪ শে জুলাই, ২০২২ রাত ১০:১৩

শায়মা বলেছেন: এই ফুপি তো বন্ধু ফুপি।

অনেক ফুপিরাই বন্ধু হয়ে যায়।

আমার এক কাজিনের ফুপি তাকে মায়ের স্নেহে বড় করেছিলো আর তারপর ফুপির বিয়ের সময় তার সেই মেয়ে মা মা করে কাঁদছিলো।

শ্বশুরবাড়ির লোকজনের তো চক্ষু ছানাবড়া।

২৫ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ১০:৩৫

শাওন আহমাদ বলেছেন: আমার ফুপিও আমার বন্ধু। আমরা দুজন দুজনের সমস্ত খবর জানি হোক তা প্রেম ঘটিত বা অন্যকিছু। আমার ফুপি কোথাও যেতে নিলে কান্না করে ফেইন্ট হয়ে যেতাম। আমকে আড়াল করে তাকে স্কুলে যেতে হতো। ভালো থাকুক পৃথিবীর সব ভালো সম্পর্ক গুলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.