নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এটা আমার ক্যানভাস। এখানে আমি আমার মনের কোণে উঁকি দেয়া রঙ-বেরঙের কথাগুলোর আঁকিবুঁকি করি।
সকালবেলা অফিস যাবার জন্য তৈরি হচ্ছিলাম, আচানক মস্তিষ্কে এক অদ্ভুত ইচ্ছে নাড়া দিলো। ভাবছিলাম, আমার যদি মানুষের মন পড়ার অদ্ভুত ক্ষমতা থাকতো, তাহলে কতোই না ভালো হতো! প্রত্যেকটা মানুষের মন আমার চোখের সামনে খোলা বইয়ের ন্যায় উন্মোচিত হয়ে থাকতো, কৃষ্ণকায়, শুভ্র, রক্তবর্ণ, বেদনার রঙে নীল হওয়া সহ কতশত বহুরূপী রঙের মনের খবর আমি এক পলকেই পড়ে ফেলতে পারতাম।
মন পড়ে পড়ে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট মনের মানুষ গুলো কে আমার মনের বাগানে অবাধ বিচরণের জন্য ছেড়ে দিতাম। তারা প্রজাপতির মতো বাহারী রঙের ডানাঝাপটে বিশুদ্ধতার বাতাস বইয়ে দিতো আমার ফুসফুস জুড়ে। আমি বুক ভরে সেইসব প্রজাপতি রুপি মানুষের বিশুদ্ধ বাতাস টেনে নিয়ে, প্রাপ্তির আনন্দে অশ্রুসিক্ত নয়নে তৃপ্তির ঠেঁকুর তুলতাম। একে অপরের প্রতি বিশ্বাস আর অগাধ ভালোবায় জড়িয়ে থাকতাম স্বর্ণলতিকার মতো।
পরক্ষণেই আমার ভাবনার জাল ছিন্ন করে মস্তিষ্কে আরেক বিপত্তি এসে নাড়া দিলো। আমাদের আশেপাশে এতো এতো মানুষ নানা রকমের মুখোশ পড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এদের মধ্যে আমাদের প্রিয় মানুষ গুলোর সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়, এ দল আরও কিছুটা ভারী করতে হয়তো আমাদের খুব কাছের মানুষ গুলো যাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের শব্দ আমরা প্রতিনিয়ত টের পাই তারাও আছেন।
যদি কোনো এক সুন্দর সকালে, এই অদ্ভুত ক্ষমতা বলে জেনে যাই যাদের সাথে আমি একই ছাদের তলায় থাকি, একই টেবিলে বসে খাই, সুখ-দুঃখের গল্প ভাগ করি তাদের কাছে আমি মোটেও প্রিয় নোই; বরং তারা আমার সাথে দিনের পর দিন প্রিয় হবার অভিনয় করে যাচ্ছে! এর চেয়ে ভয়ংক সত্য কি আর হতে পারে? আকাশ-মাটি চৌচির করে দিবে সেই অজানা সত্য।
অধিকতর প্রিয় বন্ধু বলতে যাদের বুঝি; যাদের সাথে দিনমান আড্ডা দিয়ে বেড়াই, যার জন্য জান কুরবান করতে প্রস্তুস, প্রচন্ড কষ্টে যাকে বুকে জড়াই। কোনো এক ভর দুপুরে যদি যেনে যাই সেই প্রিয় বন্ধুটিই আমার পেতে দেওয়া বুকে ছুরি চালাতে প্রস্তুত।কিংবা জেনে গেলাম, কর্মক্ষেত্রের সবচেয়ে প্রিয় সহকর্মী যার সাথে কর্মক্ষেত্রের সকল গোপনীয়তা ভাগ করা যায়, যে সহকর্মী আমার সকল কাজে উৎসাহ দেয়, সেই আসলে এসবের আবডালে আমাকে চাকুরিচ্যুত করতে কর্মক্ষেত্র প্রধানের কান ভারী করে যাচ্ছে! এভাবে হায় হ্যালো করা মানুষ গুলো থেকে শুরু করে পার্কের বাদামওয়ালা, পাড়ার মোড়ের চায়ের দোকানী, বাসের হেল্পার, হাসিমাখা মুখের প্রতিবেশী সকলের মনের খবর যদি জেনে যেতাম; তাহলে আসলে নিজের খুব কাছের মানুষ বলে কাউকেই হয়তো পাওয়া যেতো না আর যার কাছে নিজের সমস্তকিছু নির্দ্বিধায় জমা রাখা যায়!
তারচেয়ে ভালো আমার কিছু না জানা থাক, এতে করে অন্তত কিছু মানুষ তো আমার থাকবে যাদের কাছে নির্দ্বিধায় নিজেকে জমা রাখতে পারব, দিনশেষে আমারও কিছু প্রিয় মানুষ আছে জেনে শান্তিতে ঘুমতে যাব।
২৬ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ১১:৫০
শাওন আহমাদ বলেছেন: ঠিক বলেছেন, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
২| ২৫ শে জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৫৪
ভুয়া মফিজ বলেছেন: থট রিডিং এর ক্ষমতা কোন ভালো জিনিস না। এই ক্ষমতা থাকলে আপনার লাইফ হেল হয়ে যাবে। এমন কি ইচ্ছা পূরণের দৈত্যও এই ব্যাপারে অপারগ। একটা কৌতুক পড়েন,
নববর্ষের আগের দিন। রফিক হেটে যাচ্ছিল বনের ভিতর দিয়ে। ঘুটঘুটে অন্ধকার। হঠাৎ শােনা গলে অশরীরী আওয়াজ, 'রফিক'।
রফিক: কে? কে কথা বলে?
অশরীরী: ভয় পেয়ো না। আমি ইচ্ছাপূরণ দৈত্য। আজ এই আনন্দের দিনে আমি তােমার একটি ইচ্ছা পূরণ করব। বলাে, কী চাও তুমি?
সাহস ফিরে পেল রফিক। বলল, আমার জন্য পুরাে বিশ্ব ভ্রমণ করে আসবে এমন একটা ট্রেন সার্ভিস চালু করে দাও, যেন আমি ঘুরে ঘুরে সব দেশের নববর্ষের উৎসব উপভােগ করতে পারি।
দৈত্য: এটা তাে খুব কঠিন একটা কাজ, তুমি বরং অন্য কিছু চাও।
রফিক: তাহলে আমাকে এমন ক্ষমতা দাও, আমি যেন যেকোনো মেয়ের দিকে তাকালে তার মন বুঝতে পারি।
দৈত্য: (একটু চিন্তা করে...) ট্রেন কি এসি, নাকি নন-এসি লাগবে?
২৬ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ১১:৫৫
শাওন আহমাদ বলেছেন: হা হা হা আপনি আসলেই একটা ভুয়া মফিজ। জ্বী জীবন হেল হবে বলে আমি আর সেই ক্ষমতা পেতে চাইনি। ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
৩| ২৬ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১:০১
রাজীব নুর বলেছেন: ছবি ও লেখা চমৎকার হয়েছে।
২৬ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ১১:৫১
শাওন আহমাদ বলেছেন: ভালোবাসা জানবেন ভাইয়া।
৪| ২৬ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:২০
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
এই ক্ষমতা যদি আল্লাহ মানুষকে দিতেন তবে প্রতিনিয়ত ঝগড়া, মারামারি, কটাকাটি হত কারণ তখন সবাই সবার মনের খবর জানে। সুন্দর ভাবনা।
২৬ শে জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৫:৫২
শাওন আহমাদ বলেছেন: এটার উল্টোও কিন্তু হতে পারতো, সবাই যদি সবার মন পড়তে পারতো তাহলে কেউ হয়তো নিজের মনের মধ্যে অন্যের প্রতি বাজে কিছু পুষে রাখতো না। তবে এটাই ভালো যেটা আছে। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
৫| ২৭ শে জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৪:১৩
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- যাদের সাথে আমি একই ছাদের তলায় থাকি, একই টেবিলে বসে খাই, সুখ-দুঃখের গল্প ভাগ করি তাদের কাছে আমি মোটেও প্রিয় নোই; বরং তারা আমার সাথে দিনের পর দিন প্রিয় হবার অভিনয় করে যাচ্ছে!
এমনটা কিন্তু হয়।
৩০ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৫১
শাওন আহমাদ বলেছেন: অনেক হয়।
৬| ১০ ই আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ১২:১৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: ভাবনাটা ব্যতিক্রমী, তবে ভালো।
মানুষ একে অপরের মন নিশ্চিত ভাবে জানতে বা পড়তে পারুক, এমনটা আমি চাই না। তার চেয়ে বরং যেমন এখন আমি আমার বিচার, বুদ্ধি ও বিবেচনা দিয়ে অন্যের মন পড়তে চাই এবং পারি, সেটাই ভালো, শতভাগ নিশ্চিত না হলেও ভালো।
পোস্টে তৃতীয় প্লাস। + +
১০ ই আগস্ট, ২০২৩ বিকাল ৩:২১
শাওন আহমাদ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৫:৫৪
মেঠোপথ২৩ বলেছেন: দিনশেষে নিজের বিবেকের কাছে পরিষ্কার থাকতে পারাটাই আসল। কে কি ভাবলো বা বলল তাতে কি যায় আসে! তবে এটা ঠিক বলাটা যত সহজ , ততটা সহজ নয় অন্যেের কথা বা ভাবনাকে গুরুত্ব না দেয়া। তাই মানুষের মন পড়ার চাইতেও অনেক বেশি জরুরী সেলফ কন্ট্রোল বা প্রতিক্রিয়া না দেখানোর ক্ষমতা আয়ত্ব করতে পারা।