নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এটা আমার ক্যানভাস। এখানে আমি আমার মনের কোণে উঁকি দেয়া রঙ-বেরঙের কথাগুলোর আঁকিবুঁকি করি।
বাতাসে রমজানের মিষ্টি গন্ধ ভেসে বেড়াচ্ছে, জানান দিয়ে যাচ্ছে পবিত্রতার বার্তা। আরবি মাসসমূহের নবম মাস হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। আরবি অন্যান্য মাসের মতো রমজানও একটি মাস, তবে অন্যান্য মাসের চেয়ে ফজিলতপূর্ণ হওয়ায় এর মূল্য ও মর্যাদা অনেক বেশি। কারণ রমজান কুরআন অবতরণের মাস, রহমত বর্ষণের মাস।
রোজা হচ্ছে ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ। রোজা শব্দটি ফারসি। এর আরবি পরিভাষা হচ্ছে সাওম, বহুবচনে বলা হয় সিয়াম। সাওম অর্থ বিরত থাকা, পরিত্যাগ করা। পরিভাষায় সাওম হলো, আল্লাহর সন্তুটি কামনায় সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত নিয়তসহকারে পানাহার থেকে বিরত থাকা।
তবে শুধু পানাহার থেকে বিরত থাকলেই রোজার হক আদায় হয়ে যাবে না। পানাহার থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি সকল প্রকার পাপ কাজ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে হবে এবং অন্যান্য আমল ও ইবাদতে নিজেকে মশগুল রাখতে হবে, তবেই রোজার পূর্ণ হক আদায় হবে। নবিজি (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি রোজা রেখেও অশ্লীল কাজ ও পাপাচার ত্যাগ করতে পারল না, তার পানাহার ত্যাগ করার কোনো মূল্য নেই।”
আল্লাহ তাআলা সুরা বাকারার ১৮৩ নম্বর আয়াতে বলেছেন, “হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য রোজার বিধান দেওয়া হলো, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীগণকে দেওয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা তাকওয়া (আল্লাহভীরুতা) অবলম্বন করতে পারো।”
যেহেতু রোজা আল্লাহর বিধান এবং আমাদের জন্য তা ফরজ করা হয়েছে, তাই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে রোজা পালন-সহ অন্যান্য হক যথাযথভাবে আদায় করতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, “রোজা একমাত্র আমার জন্য এবং আমিই এর প্রতিদান দিব।”
রোজায় করণীয় বর্জনীয়:
রোজা রাখার মাধ্যমে যেহেতু তাকওয়া অর্জন হয়, তাই রমজান মাসে প্রত্যেক মুমিন-মুসলমানের কর্তব্য হচ্ছে, তাকওয়া অর্জনের জন্য দৃঢ় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। রমজান মাসে একটি নেক আমলের সওয়াব ৭০ গুণ। তাই এই মাসে আমরা মুখরোচক ইফতার সামগ্রী আর সাহরি নিয়ে ব্যস্ত না থেকে যথাসম্ভব ইবাদত ও আমলে মশগুল থাকব। বেশি বেশি দান-সাদাকা করব। বছরের অন্যান্য সময় ঘুমের কারণে তাহাজ্জুদ পড়তে আমাদের অনেকরই কষ্ট হয়ে যায়, রমজান আমাদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ তাহাজ্জুদ আদায় করার। সাহরির কিছুসময় আগে উঠে তাহাজ্জুদ আদায় করে; আল্লাহ তাআলার দরবারে হাত তুলে নিজেদের ভুলের জন্য ক্ষমা চাইব, পাশাপাশি আগামী দিনগুলোতেও যেন শয়তানের ধোকা থেকে নিজেকে মুক্ত রেখে আল্লাহর পথে চলতে পারি, সেজন্য দোয়া করব।
রমজান মাস হচ্ছে দোয়া কবুল ও সওয়াব অর্জনের মাস। এ মাসে আল্লাহর অবারিত রহমত-বরকতের পাশাপাশি দোয়া-মুনাজাতের মাধ্যমে নিজেকে পবিত্র করে নেওয়া যায়। নিশ্চয় আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করবেন এবং আশ্রয় দিবেন শয়তানের ধোকা থেকে, ইনশাআল্লাহ।
রমজানে আমরা বেশি বেশি ইস্তেগফার পড়ব। নবিজি (সা.) এই আমলটি বেশি বেশি করতেন। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে¬ : “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে তাওবা করো। এতে আশা করা যায়, তোমাদের রব তোমাদের পাপরাশিকে মোচন করে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে। ( সুরা তাহরিম, আয়াত : ৮)
রমজান কুরআন নাজিলের মাস, তাই এই মাসে আমরা বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত করব এবং অর্থ বুঝে বাংলা তরজমা ও তাফসির সহকারে পড়ব। এতে করে আমরা কুরআনে আল্লাহ তাআলা কী বলেছেন, তা সহজেই বুঝতে পারব এবং সে অনুযায়ী কাজ করতে পারব।
খুশু-খুযুর সাথে ৫ ওয়াক্ত নামাজ (পুরুষেরা জামাতে) আদায় করার পাশাপাশি গুরুত্বসহকারে নফল ইবাদতগুলোও করার চেষ্টা করব। সেইসাথে সকল প্রকার পাপ কাজ থেকে নিজেকে হেফাজত করার অভ্যাস করব। যাতে বাকি জীবন এভাবেই করে যেতে পারি।
অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলা থেকে নিজেক বিরত রাখব এবং খুব বেশি প্রয়োজন না থাকলে অনলাইনভিত্তিক সোস্যাল সাইডগুলো যথাসম্ভ কম ব্রাউজ করব।
রমজানের শেষ দশকে বিজোড় রাতগুলোতে হাজার বছরের চেয়ে শ্রেষ্ঠ রজনী লাইলাতুল কদরের সন্ধান করব। নবিজি (সা.) বলেছেন, “তোমরা রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে শবে কদর সন্ধান করো।” (মুসলিম)
এটি একটি মহিমান্বিত রাত। কারণ এ রাতে আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিম নাজিল করেছেন। উবাদা ইবনে সামিত থেকে বর্ণিত, নবিজি (সা.) বলেছেন, “যে কদরের রাতের অন্বেষণে সেই রাতে নামাজ পড়ে এবং তা পেয়ে যায়, তার অতীতের ও ভবিষ্যতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।” (নাসায়ি)
রমজান মাসকে আল্লাহ তাআলা যেহেতু নানা নেয়ামত ও রহমত দ্বারা পরিপূর্ণ করেছেন, সেহেতু আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে, যাতে সেই নেয়ামত ও রহমতের বারিধারায় নিজেকে সিক্ত করতে পারি।
আমাদের পছন্দের কোনো শপে যখন অফার চলে, তখন যেমন আমরা তড়িঘড়ি করে সেই অফার নেওয়ার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠি, তার চেয়েও সহস্র গুণ মরিয়া হয়ে উঠতে হবে রমজান মাসে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে আসা অফারগুলো হাসিল করার জন্য। কেননা নিঃসন্দেহে তা দুনিয়াবি অফারের চেয়ে উত্তম।
তাই আমাদের সদাসর্বদা সজাগ থাকতে হবে, যেন অবহেলাবশত এই মহান মাসটির এত এত নেয়ামত থেকে আমরা ছিটকে না পড়ে যাই।
এত এত নেয়ামত পেয়েও যদি আমরা তা হাসিল করতে না পারি তাহলে আমাদের চেয়ে হতভাগা আর কে আছে?
জিবরাঈল (আ.) বলেছেন, ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক যে রমজান পেয়েও নিজের গুনাহ মাফ করাতে পারল না। তার কথার সাথে একমত পোষণ করে নবিজি (সা.) আমিন বলেছেন।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে রমজানের হক আদায় করার তাওফিক দান করুন এবং নবিজির অভিশাপ থেকে বাঁচার তাওফিক দান করুন। আমিন!
ছবিঃ গুগল
২১ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:২৮
শাওন আহমাদ বলেছেন: আমল করার চেষ্টা করেছি আর সে অনুযায়ী ফজিলতও পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। বিশ্বাসে মেলেয় বস্তু।
২| ২১ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৫২
রাজীব নুর বলেছেন: বস্তু পেলে ভালো কথা।
আমি আবার রমজানের আমল আর ফজিলত খুবই অপছন্দ করি।
২১ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ২:১৬
শাওন আহমাদ বলেছেন: জেনে খুশি হলাম
৩| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: ভাইসাহেব ফজিলত, আমল, নেকী, সোয়াব ইত্যাদি ভুয়া কথা। এসব কথায় বিশ্বাস করবেন না।
৪| ২৪ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ১১:২৩
গণকবি বলেছেন: রমজানের আমল নীরবে নিভৃতে করতে হয়। সময় পেলে আমার ব্লগটা একবার ঘুরে আসবেন।
২৫ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:১৮
শাওন আহমাদ বলেছেন: আমল তো সব রবের জন্য, তাই শুধু সে জানলেই হয়। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: গত বছর আপনি রমজানে কি কি ফজিলত ও আমল পেয়েছেন?