নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগ আমার বাসার ড্রয়িং রুমের মত, আমি এখানে যেকোনো কিছু দিয়ে সাজাতে পারি আপনার পছন্দ না হলে বলতে পারেন আমার কোন আসবাবটির অবস্থান বা ডিজাইন আপনার পছন্দ হয় নি এবং কেন হয় নি। তবে তা অবশ্যই ভদ্র ভাষাতে। ভাষার ব্যবহার করতে জানা অনেক বড় একটি গুন

শেখ এম উদ্‌দীন

আমি বাংলাদেশি ....আমি বাঙালী....আমি মুসলিম....আমি বাংলার জন্য জীবন দিতে সর্বদা প্রস্তুত ।

শেখ এম উদ্‌দীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

লালবাগের কেল্লা এবং ভি আই পি বাঙ্গালী চেতনাবাদ

২৮ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৫

১৬৭৮ সালে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের পুত্র ঢাকার সুবেদার মুহাম্মদ আজম শাহ আওরঙ্গবাদ কেল্লা নামে একটি কেল্লার নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ১৫ মাস নির্মাণ কাজ পরিচালনার পরে এটির কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই তিনি দিল্লিতে ফিরত যান। শায়েস্তা খান তাঁর পরিবর্তে বাংলার সুবেদার নিয়োগ পান। বিখ্যাত পরিব্রাজক ইবনে বতুতা এই সুবেদারের আমলেই বাংলা ভ্রমন করেন। সুবেদার শায়েস্তা খান কেল্লার নির্মাণ কাজ কিছুদূর আগানোর পরে ১৬৮৪ সালে তাঁর কন্যা দুখত পরী বিবি এখানে মৃত্যু বরণ করেন। পরী বিবি কে এখানে সমহিত করলেও এই কেল্লাটিকে অপয়া ভেবে এর নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখেন। এর পরে ১৭০৪ সালে মুর্শিদ কুলি খান বাংলার রাজধানী ঢাকা হতে মুর্শিদাবাদে স্থানান্তর করলে কেল্লাটি পরিত্যাক্ত হয়। ১৮৪৪ সালে ঐ এলাকা আওরঙ্গবাদ থেকে লালবাগ নামে পরিচিত হলে কেল্লাটির নামও লালবাগ কেল্লা হয়ে যায়। অর্থাৎ লালবাগ কেল্লাটি প্রায় ৪৩৭ বছরের পুরনো স্থাপত্যই নয় এটি রাজধানী ঢাকার ঐতিহ্যের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত।

সম্প্রতি এই প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী কেল্লার দেয়ালের এক অংশ ভেঙে সেখানে গাড়ি পারকিং এর স্থাপনা করার উদ্যেগ গ্রহন করেই ক্ষান্ত হন নি দেওয়াল ভেঙ্গে পারকিং তৈরির কাজ ও শুরু করে দিয়েছেন। অথচ এমন ঐতিহাসিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থাপনার স্থাপত্যশৈলীতে সামান্য পরিবর্তন করাও অনুচিত। ইউনস্কো এর বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার সংরক্ষণ এর সংজ্ঞা তে বলা আছে-

“Each State Party to this Convention recognizes that the duty of ensuring the identification, protection, conservation, presentation and transmission to future generations of the cultural and natural heritage referred to in Articles 1 and 2 and situated on its territory, belongs primarily to that State. It will do all it can to this end, to the utmost of its own resources and, where appropriate, with any international assistance and co-operation, in particular, financial, artistic, scientific and technical, which it may be able to obtain”.

যদিও লালবাগ কেল্লাটি বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার তালিকাতে নেই কিন্তু এটি তো আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য। তাহলে এই কেল্লার দেয়াল ভেঙ্গে এমন পারকিং করার যৌক্তিকতা কতটুকুন? ২৬ অক্টোবর ২০১১ তারিখে হাইকোর্ট থেকে এই কেল্লার ভিতর কিংবা বাইরের অবৈধ সকল স্থাপনা সরাতে সংশ্লিষ্ট করতিপক্ষকে নির্দেশ দেন তা সম্পূর্ণ পালন না করা হলেও এই আদেশ অমান্য করে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে এখানে পারকিং তৈরি করতে উনাদের কোন অলসতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

আশ্চর্যজনক ভাবে এই ব্যাপারে নাগরিক সমাজের অনেকরই নিরবতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমাদের চেতনাবোধ কেমন যেন ভি আই পি কেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে। গাড়ি পারকিং যেহেতু ভি আই পি দের জন্য সুবিধা বাড়াবে সেহেতু এই ব্যাপারে আমি নিশ্চুপ থাকি। এই রকম চেতনাবোধ যে একটি দেশ ও জাতীর জন্য হুমকি সরুপ। যদিও এই কেল্লা বাংলাতে মুসলিম শাসনের এক ঐতিহ্য যা অনেক চেতনাজিবি ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজি এর আগ্রাসন এর ফলাফল বলে চালিয়ে দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। যদিও তাদের চোখে অথর্ব অত্যাচারি শাসক লক্ষন সেন একজন অবিসংবাদিত নেতা যিনি তাঁর রাজ্য এবং প্রজাদের এই আগ্রাসন কারীর অনুসারী মাত্র ১৭ জন্য সৈন্যের ভয়ে অরক্ষিত রেখে পিছনের দরজা দিয়ে পালায়ন করেছিলেন। আশ্চর্যের ব্যাপার হল এই আগ্রাসন কারিকে কিন্তু তৎকালীন বাংলার জনগন সেন বংশের সম্রাটদের চেয়ে অনেক স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে মেনে নিয়েছিলেন।

যাই হোক এটি বাংলার একটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা এবং এর অক্ষুণ্ণতা রক্ষা করা সকল বাঙ্গালিদের দায়িত্ব। এই অপরিনামদর্শী কাজের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন। অবিলম্বে বন্ধ করুন এই সকল আগ্রাসন তা না হলে এটি একটি উদাহরণ হিসেবে রয়ে যাবে যার ফলাফল অদূর ভবিষ্যতে আরও খারাপ হতে পারে। এই একটি উদাহরণ কে পুজি করে সকল ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাতে যে এমন অগ্রাসন হবে না এর নিশ্চায়তা কে দিবে? তাই এই হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের শাস্তি প্রদান পূর্বক এই কাজ অবিলম্বে বন্ধ করুন।

মন্তব্য ২৩ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৭

রমিত বলেছেন: ছবিটা দেখলেই মনটা খারাপ হয়ে যায়। ইতিহাসখ্যাত এই ঢাকা শহরের উপর আমি একাধিক আর্টিকেল লিখেছি। নগরীটির বয়স ১৫০০ শত বছর। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ইতিহাস বইয়ে স্থান পেয়েছে এই নগরীটি। এককালের বাগান আর প্রাসাদের নগরী ঢাকা শহরের পুরাতন স্থাপনার প্রায় কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। যে অল্প কয়েকটি আছে তার মধ্যে লালবাগ কেল্লা একটি। ওর ভাঙা দেয়াল দেখে আমার বুক ভেঙে গেলো। মনে হলো আমাদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস-ঐতিহ্যের উপরই আঘাত হানা হয়েছে!

২৮ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৪

শেখ এম উদ্‌দীন বলেছেন: :(
দুঃখ আমরা সকলেই পেয়েছি শুধু ঐ সকল করতিপক্ষ এবং যাঁদের জন্য করা হচ্ছে তাঁরা ব্যতিত।
যদিও এক কোটি বাঙ্গালীর মনের দাবী আর ঐ রকম এক জনের মনের খেওয়ালিপনা সমান গুরুত্বের। :ও

২| ২৮ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ২:১০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: লালবাগ কেল্লা প্রাচীর ভাঙ্গার কাজ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধের নির্দেশ ]

মুঘল আমলের ঐতিহাসিক স্থাপনা লালবাগ কেল্লার সীমানা প্রাচীরের এক অংশ ভেঙ্গে গাড়ি পার্কিং নির্মাণের কাজ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার (২৮ জুন) এ আদেশ দেন।

হাইকোর্টকে ধন্যবাদ।

২৯ শে জুন, ২০১৫ ভোর ৬:৫৫

শেখ এম উদ্‌দীন বলেছেন: দেখলাম সংবাদ টি। তবে কেল্লার দেয়াল কিন্তু ভাঙ্গা হয়ে গেছে। :(

৩| ২৮ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:০৩

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: এই হল বাঙালী। যেদিন লালবাগ কেল্লার ভেতরে টিলার মাটি সরিয়ে নতুন করে অনেকগুলো ঘরের মত করে কাঠামো তৈরি হল, সেদিন কেউ কিছু বলে নাই। সেই নির্মাণের মূল কারণ ছিল, পরবর্তী "লাইট এন্ড সাউন্ড শো"!!! যা এখন নিয়মিত হচ্ছে। বানিজ্যিক ভাবনা একবার মাথায় ঢুকলে এই সমস্যা হবেই। সেই "লাইট এন্ড সাউন্ড শো" শুরু হয় ঢাকার ৪০০ বছর পূর্তি দিয়ে, তারপর থেকে তা চলছেই। আর সেই "লাইট এন্ড সাউন্ড শো"র আগত অতিথিদের কার পারকিং এর জন্য জায়গা করে দিতেই এই উদ্যোগ। তাই বলি কি, মূল ঘটনা কেউ দেখেনা, দেখে তার পরের ফলাফলগুলো। :(

২৯ শে জুন, ২০১৫ ভোর ৬:৫৮

শেখ এম উদ্‌দীন বলেছেন: মূল ঘটনাগুলো তো মিডিয়া বের করে আনা উচিৎ। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় আমাদের মিডিয়া তো নিজেদের প্রোপ্যাগান্ডা বিস্তারের লক্ষ্যে সর্বদা তটস্ত থাকে এই সব দেখার সময় ওনাদের একটু কমই। :(

৪| ২৮ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৬

রমিত বলেছেন: ঢাকার বয়স সম্বন্ধে একটা ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। অনেকেই ভাবে ও বলে যে ঢাকার বয়স ৪০০ বছর। কিন্তু এটা সঠিক নয়। ঢাকা আরো পুরাতন, নগরীটির বয়স ১৫০০ (পনের শত) বছর। বিশ্বের পুরাতন শহরগুলোর মধ্যে একটি। চারশত বছর আগে নগরীটিকে বাংলার রাজধানী ঘোষণা করা হয়। রাজধানী হিসাবে ঢাকার বয়স চারশত বছর।

৫| ২৮ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৫:১১

শিশির খান ১৪ বলেছেন: হুম দেয়াল তো ভাই ভাঙ্গাই ফেলছে দেখলাম খারাপ তো যা হবার হওয়া গেছে ক্ষতি যা হবার হওয়া গেছে। এতো সাহস পায় কি ভাবে কে তাদের পিছন থেকে এই রকম বুদ্ধি দেয়। দেখেন হয় তো কয়েক দিন পর ভিতরে কোনো রাজনৈতিক দলের অফিস দেখবেন তারপর মার্কেট এমনে করে এক দিন নাই হয়ে যাবে সব ঐতিহাসিক স্থাপনা

২৯ শে জুন, ২০১৫ ভোর ৬:৫৯

শেখ এম উদ্‌দীন বলেছেন: ভাই জন্মের পরে থেকে দেখে এসছি বাঙ্গালী এমন এক জাতি যে সে কারো থেকে বুদ্ধি ধার করে না বিশেষ করে এমন আত্মঘাতী বুদ্ধি গুলো এদের উর্বর মস্তিষ্ক থেকেই আসে। তবে আমি জানতে চাই এত বুদ্ধি নিয়ে এরা ঘুমা যায় কীভাবে?

৬| ২৮ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৫:১৬

নুর ইসলাম রফিক বলেছেন: হোক প্রতিবাদ হোক প্রদিবাদ.।.।.।.।.।.।।।

৭| ২৮ শে জুন, ২০১৫ রাত ১০:২২

মায়াবী রূপকথা বলেছেন: কিছু বলার নেই। পুরাতন ঢাকার লোকেরা কিছু বলেনা কেন?

২৯ শে জুন, ২০১৫ সকাল ৭:০১

শেখ এম উদ্‌দীন বলেছেন: যেই সাপের নখ নেই দাত নেই
করে নাক ফোঁস ফোঁস .।.।.।.।।।

৮| ২৮ শে জুন, ২০১৫ রাত ১১:৪২

নাহিদ তানভীর বলেছেন: দুঃখজনক

৯| ২৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ১২:০৩

হামিদ আহসান বলেছেন: সবারই উচিৎ প্রতিবাদ করা৷ ধন্যবাদ অাপনাকে পোস্টের জন্য ..।

১০| ২৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ১২:০৬

আলাপচারী বলেছেন: মায়াবী রুপকথা @ প্রতিবাদ না করার ব্যাপারটা আপনি বোঝেন আবার বোঝেনও না।
প্রতিবাদ করতে গিয়ে বাণিজ্য করনে ওয়ালা পলিটিশিয়ানের প্যাদানী খেতে হবে।

২৯ শে জুন, ২০১৫ সকাল ৭:০২

শেখ এম উদ্‌দীন বলেছেন: প্রতিবাদ এমন একটি শব্দ যা কখনোই সুখকর অভিজ্ঞতা দিয়ে বাস্তবায়ন হয় না ভাই।

১১| ২৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ১২:৩৮

মোহামমদ ইকবাল হোসেন বলেছেন: বন্ধ হোক এই আগ্রাসন। জয় হোক সুনিপুন বাংলাদেশের।

২৯ শে জুন, ২০১৫ সকাল ৭:২২

শেখ এম উদ্‌দীন বলেছেন: জয় হোক সাম্যের বাংলাদেশের।

১২| ২৯ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: এটি অন্যায়, খুব অন্যায়। ঢাকাবাসীর এগিয়ে আসা উচিত।

৩০ শে জুন, ২০১৫ ভোর ৫:৫০

শেখ এম উদ্‌দীন বলেছেন: হাইকোর্ট নিসেধাজ্ঞা আরপ করেছেন।
কষ্টের ব্যাপার হল স্থাপনার দেয়াল অলরেডি ভেঙে ফেলা হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত যে সকল কর্মকর্তা এই প্রকল্প অনুমোদন করেছেন তাঁরা কি বাংলাদেশী?

১৩| ২৯ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৫

মুদ্‌দাকির বলেছেন:

এই সব পুরান জিনিশ রাইখা লাভ কি? সেলিমভাই আর বিপু ভাইরে দিয়াদেন উনারা বেশ কয়েকটা দারুন সুন্দর এ্যপার্টম্যান্ট কমপ্লেক্স বানায়া ফালাইবো ........................

৩০ শে জুন, ২০১৫ ভোর ৫:৫১

শেখ এম উদ্‌দীন বলেছেন: খুবই ভালো প্রস্তাব এতে করে কিছু দারিদ্র বিমোচন ও হবে সাথে বাসস্থান এর সমস্যাও মিটবে।
কি বলেন ভাই?

১৪| ২৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ৯:৩৩

আলাপচারী বলেছেন: @মুদ্ দাকির একেবারে অপ্রিয় রূঢ় বাস্তব বলেছেন। হাজী সেলিম (জমি লোভী), বিপু সাহেব (ভূমি দস্যূ) কে দিয়ে দিলেই ভালো। কি দরকার এসব কেল্লা ফেল্লার আপদ রাখার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.