নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্য মারা যাবো .......
আজ সকালে বাসে মা বাবার সাথে একটা ছোট্ট মেয়ে বাচ্চা উঠেছিল। খানিক দূরত্ব পরে বাবাটা নেমে গেল আর মেয়ের ঠোঁট ফুলিয়ে কান্না।
পাশের সীটে বসে ভাবছি-
বাবারা আসলে খুব খারাপ হয়। বাবারা বাচ্চাকে রেখে রেখে কাজে বের হয়। আমি খারাপ, ঐ বাবাটা খারাপ এবং এমন কি আমার বাবাও খারাপ ছিল।
তবে আব্বা মাঝে মাঝে দুটো কমলা হাতে নিয়ে দুপুরে বাড়িতে চলে আসতেন। বলতেন, খিদা লেগেছে ভাত দাও। টেবিলে ভাত দেয়ার সময়ে আব্বা কমলার খোসা ছাড়িয়ে দিতেন।
৩৬ বছর চাকুরী জীবনে দুপুরে চা সিঙ্গারা খাওয়া মানুষটা শুধু খিদায় ভাত খেতে বাড়িতে আসবে সেটা তখনো বিশ্বাস হতো না , এখনো হয় না।
একদিন দুপুরে অবশ্য দেখলাম আব্বার পেটটা বসে গেছে। হয়তো সত্যিই খিদা লেগেছে। বাবাদেরো খিদা লাগে।
ছোটবেলায় একদিন সকালে কি কারণে যেন কাঁদতে ছিলাম। হয়তো রাগ হয়েছিল। বিছানার উপর বসে বসে কাঁদছি। ঘরের বাইরে আব্বা বসে বসে সেভ করছে।
আব্বা সেভ করতে করতে বলল , ' দ্যাখো কুল গাছে কেমন একটা পাখি। কি পাখি দেখতো। '
আমি কাঁদতে কাঁদতে বললাম , না দেখবো না।
এরপর আরো তিনবার ডেকেছিল। আমি যায়নি। আব্বা এর পর গোসল করে নাস্তা করে স্কুলে চলে যান। সারাদিন আমার মন খারাপ ছিল। আব্বা ডেকেছিল আমি যায়নি। এখনো খারাপ লাগে।
মাঝে মাঝে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছা হয় , আব্বা কুল গাছে ঐটা কি পাখি ছিল ?
আব্বার সে কথা মনে থাকার কথা না । কোকিল , বুলবুলি , বৌ কথা কও ... না আসলে পাখি নিয়েও আমার কোন মাথা ব্যাথা নেই।
বললো , "ঐযে একদিন ছোটবেলায় তুমি একদিন ডেকেছিলা , আমি গেছিলাম না। কি পাখি মনে করার দরকার নাই। আমি কল্পনায় পাখি ভেবে নিতে পারবো। "
প্রতিবছর আমাদের কুল বড়ই গাছে প্রচুর কুল ধরে। পাখিদের কিচিরমিচির আর কুল ঝরে পরার টুপটাপ শব্দ। লাল নীল রঙের সেই অদ্ভুত পাখিটাও হয়তো আসে ! আমার কল্পনার পাখি।
ছুটির দিনে ছেলেটা আমার পিছু ছাড়ে না। সপ্তাহে একটাদিন বাবা কে পায় তো ! বাজারে গেলেও পিছু ধরে। আমার সাথে বাজারে যেতে চায়।
আমি কোলে নিয়ে বাজারে যেতে যেতে বলি ,
শোন বীরব্রতী , বাজারে যে যাচ্ছিস তো কি কিনবি ?
ইশ মাছ।
তুই কি ইলিশ মাছ খাস যে ইলিশ মাছ কিনবি ? তুই তো খাস পাবদা মাছ।
আমি ইশ মাছ খাই।
মাছের বাজারে ঢুকে হাততলি দিয়ে গান গেয়ে ওঠে , বেবি শাক দুদুদুদু ... !
আমি বলি , ওটা শার্ক নারে .... ওটা বোয়াল মাছ।
উটা কিইইই.... ?
ওটা চিতল মাছ।
তিতল মাছ আমি খাই।
চিতল মাছ তুই খাস না বাবা। তোর পাবদা মাছ কিনেছি। এবার চল।
ইলিশ মাছের পাশ নিয়ে যেতেই বলে ওঠে , উটা কিইইই.... ?
আমি বলি , এটা ইলিশ মাছ।
ইশ মাছ আমি খাই।
আজ পাবদা মাছ কিনে ফেলেছি তো বাবা , টাকা শেষ। আমরা আরেক দিন কিনি?
আমার বিশতাতা আছি !
আজ থাক আরেকদিন তোর বিশ টাকা নিয়ে মাছ কিনতে আসবো।
আমার ছেলেটা 'বিশতাতা' নিয়ে 'ইশ মাছ' কেনার অপেক্ষায় আছে। আগামীকাল শুক্রবার। ছুটি।
৩০ শে জুন, ২০২২ সকাল ১১:৪৪
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: আমি অন্তত ছেলের হাত ধরে হাটতে পারি !
পরিবার ছেড়ে রোজগারের জন্য আরব , মালেশিয়া যাওয়া মেনে নিতে পারিনা।
আমার খুব খারাপ সময় গেছে। বিদেশে পাঠানো বা যাওয়ার চিন্তা মাথায় আসেনি। বেশি ইনকামের জন্য অনেকেই বাইরে যায়।
২| ৩০ শে জুন, ২০২২ সকাল ১১:১৪
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
তিতল মাছ আমি খাই।
৩০ শে জুন, ২০২২ সকাল ১১:২৩
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
আমিও খাই। খুব পছন্দ। ইশ মাছ ততটা না।
পাবদা খুব পছন্দ কিন্তু ছেলে খায় বলে খাওয়া হয়না।
৩| ৩০ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:১৩
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আমি অল্প কিছু দিন হয় বাজারে মাছ কিনতে যাই মাসে-দুই মাসে এক আধবার।
বাবা জীবিত থাকতে কখনো বাজারে যাই নাই।
বাবা মারা যাওয়ার পরে কয়েক মাস আগ পর্যন্ত শ্বশুর মশাই মাছ কিনে দিতেন। এখন আমিই কিনতে পারি।
৩০ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:৩৩
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: বাড়িতে থাকা কালে কোনদিন বাজারে যায়নি। (পিকনিকের বাজার ছাড়া )
মাঝে মাঝে আব্বার স্কুল থেকে ফিরে বাজারে নিয়ে যেত। পাউরুটি , বিস্কিট , কলা কিনে কথা বলতে বলতে বাড়ি ফিরতাম।
৪| ৩০ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:২২
রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল সুন্দর গল্প।
৩০ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:৩৪
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব ভাই।
৫| ৩০ শে জুন, ২০২২ দুপুর ২:৩১
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: বাবা হওয়ার জন্য কোন দিবস লাগে। বাবারা প্রতিদিনই বাবা। একটি নির্দিষ্ট দিনে দিবস পালন করা আমার খুবই অপছন্দের।
৩০ শে জুন, ২০২২ দুপুর ২:৩৩
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: বাবা নিয়ে লেখা বলে শিরোনাম দিলাম।
আপনার মন্তব্যের সাথে একমত বলেই এমন শিরোনাম দিয়েছি।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে জুন, ২০২২ সকাল ১০:৫৭
সোনাগাজী বলেছেন:
বাংলাদেশের অনেক বাবারা এখন আরব দেশে ও মালয়েশিয়ায় থাকে ছেলেমেয়েরা একা বড় হয়।