নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি \'স্মৃতিকাতরতা \' নামক ভীষণ এক রোগগ্রস্ত, সেই সাথে বিষাদগ্রস্থ মানুষ। আমার চিকিৎসার প্রয়োজন।

স্বপ্নবাজ সৌরভ

আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্য মারা যাবো .......

স্বপ্নবাজ সৌরভ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কারা চুমু খাবে পথ অবরোধ করে?

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১০:১৯



২১ সেপ্টেম্বর ২০০৭ সাল। মধ্যদুপুর
রিজওয়ান নামের এক মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলের লাশ পাওয়া যায় রেল লাইনের পাশে। তার মাথায় ছিল গভীর একটা ক্ষত।
ধারণা করা হয় মাথায় আঘাত করে থাকে খুন করা হয়।
কিন্তু কেন ?

কোলকাতায় শহরের 'রিজওয়ান রহমান' আর 'প্রিয়াঙ্কা তদি'। হটাৎ পরিচয়। ভালোলাগা। ভালোবাসা । প্রেম।তারপর বিয়ে।
প্রিয়াঙ্কা একটা মাল্টিমিডিয়া সেন্টারে গ্রাফিক্সের স্টুডেন্ট, রিজওয়ান ছিল শিক্ষক। প্রিয়াঙ্কা তদি ধর্মে হিন্দু আর রিজওয়ান মুসলমান।প্রিয়াঙ্কার বাবা ‘আশোক তদি’ ভীষণ সম্পদশালী এবং প্রভাবশালী একজন লোক।

ওরা লুকিয়ে বিয়ে করে ১৮ আগস্ট। বিয়ের পর ৩১ আগস্ট রিজওয়ান প্রিয়াঙ্কা কে তার বাড়িতে এনে তুলে। একটা মধ্যবিত্ত পরিবারের মুসলিম ছেলেকে প্রিয়াঙ্কার প্রভাবশালী বাবা মেনে নেন নি । বাধা হয়ে দাঁড়ায় প্রিয়াঙ্কার বাবা। প্রিয়াঙ্কার জীবন থেকে সরে যেতে বলে বহুবার। কিন্তু মধ্যবিত্ত পরিবারের মুসলিম রিজওয়ান আর ধর্মে হিন্দু প্রিয়াঙ্কা বাবার কথার ধার ধারে না। প্রত্যাখ্যান করে। বিত্তের জোরে শিল্পপতির পরিবার রিজওয়ানুর-প্রিয়াংকার ঘর ভাঙ্গতে উঠে আদাজল খেয়ে লাগে।
এরপর থেকেই পুলিশ স্বয়ং হুমকি দিতে থাকে।ভয় দেখায়। মামলায় ফাঁসানোর কথা বলে।

৮ সেপ্টেম্বর রিজওয়ান কে ধরে হয় পুলিশ হেডকোয়ার্টারে এবং একটি পেপারে সাইন নেয়া হলো।
সেই পেপারে বলা ছিল , সাতদিনের জন্য প্রিয়াঙ্কা পরিবারের কাছে যাবেন। রিজওয়ান সাইন দিলো , বাধ্য ছিল সে।

১৫ সেপ্টেম্বর।পেপারসের কথা অনুযায়ী প্রিয়াঙ্কার ফিরে আসার কথা ছিল। রিজওয়ান অনেক চেষ্টা করে প্রিয়াঙ্কার সাথে যোগাযোগ করার জন্য , কথা বলার জন্য। রিজওয়ান ব্যার্থ হয়।
উল্টো তাকে প্রিয়াঙ্কার ফ্যামিলি থেকে বলা হয় তাকে তার জীবন থেকে সরে যেতে।

১৯ সেপ্টেম্বর। প্রিয়াঙ্কাকে আসতে দেয়া হলো না। অসহায় রিজওয়ান তার স্ত্রীকে ফিরে পেতে একটা এনজিও’র সাথে যোগাযোগ করে এবং অন্যান্য অন্যান্য আইনি পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করছিল রিজওয়ান। এটা জানা যায় তার ডায়েরি থেকে। এগুলো কিছুই আর হয়ে উঠে নি।

কবীর সুমন 'রিজওয়ানুর বৃত্ত' নাম একটা অ্যালবাম বের করে ২০০৮ সালে। সেই অ্যালবাম এর একটা গান। যার শিরোনাম হচ্ছে "খুন হওয়া গান "। শুনলে অনেক কিছুই জানতে পারবেন।



রাস্তা আটকে দেব থেমে যাবে সব
লোকসংখ্যারা হবে বিশ্রী সরব
প্রাইভেট মিনি আর স্টেট বাস থেকে
টিটকিরি দেবে লোকে আমাদের দেখে।

সানগ্লাস পরা এক খাকি অফিসার
বেতারে জানাবে যেটা আছে জানাবার
স্কুটারে ব্যস্ত এক মিডিয়ার ছেলে
ভাববে এমন শট একবারই মেলে।

ভিখিরির ট্যাক থেকে পরে যাবে টাকা
পথ আটকানো প্রেমে মাধুকরী রাখা
ভিক্ষে কিসের বলো দাবিতেই জোর
দুজনে আটকে দেবো রাস্তার মোড়।

আমাদের আশ্লেষে আইন কামাল
ঠোঁটের ভেতরে ঠোঁট ভিজে বেসামাল
জিভের ভেতরে জিভ বোজা চোখে চোখ
আমাদের প্রেম ছুলো তার সপ্তক।

সাপাট তানের মতো আদরে আদরে
ট্র্যাফিক আইন ভেঙে দেবো প্রেম করে
প্রতি চুম্বনে আমি হবো রিজওয়ান
তুমিই প্রিয়াঙ্কা খুন হওয়া গান।

খুন হয়ে গেল গান আরো একবার
জানিয়ে দিলাম যেটা ছিলো জানাবার
আমার সময় আর আমার শহরে
কারা চুমু খাবে পথ অবরোধ করে।

কবীর সুমন এক বক্তব্যে বলেছিলেনঃ

অরিন্দম মান্না নামে এক তরুণ পুলিশ অফিসার, যিনি রিজওয়ানুরের মৃত্যু-সংক্রান্ত তদন্তে জড়িত ছিলেন, তাঁর মৃতদেহও রিজওয়ানুরের মতই রেল লাইনের ধারে পাওয়া গিয়েছিল। এতো তাড়াতাড়ি বুড়ো হয়ে যাচ্ছি…এতো ভুলে যাচ্ছি – বিশেষ করে নাম, স্থানকাল যে এই মুহূর্তে সন্দেহ হচ্ছে – সেই তরুণের নামটি ঠিক বলছি তো? সকলে আমার এই শারীরিক-মানসিক বৈকল্য ক্ষমা করে দেবেন। সেই তরুণ পুলিশ কর্মীর জন্য আমরা মোমবাতি নিয়ে নীরবে দাঁড়াইনি। তাঁর বাড়িতে কি কোনও নেতা গিয়েছিলেন? কারা? কিভাবে, কেন ঐ তরুণটি (পরে শুনেছি অপমৃত্যুর কিছুদিন আগেই তিনি বিয়ে করেছিলেন) খুন হলেন, কে বা কারা তাঁকে খুন করে রেল লাইনের ধারে ফেলে রেখে গেল – এই প্রশ্নগুলি কি করবেন না কেউ? তাঁর মা? তাঁর বাবা? তাঁর কোনও ভাইকে ভোটের প্রার্থী করা হয়েছে বলে তো শুনিনি। আমি নিজে? রিজওয়ানুরকে নিয়ে আমি এক গুচ্ছ গান বেঁধে, রেকর্ড করে আমার এক বান্ধবীর আর্থিক সহায়তায় সিডি হিসেবে প্রকাশ করেছিলাম। ‘রিজওয়ানুর বৃত্ত’। অরিন্দম মান্নাকে নিয়ে আমি একটি গানও বাঁধতে পারিনি। অনেক চেষ্টা করেও আমি তাঁর সম্পর্কে কোনও খবরই জোগাড় করতে পারিনি।


কেমন আছেন প্রিয়াঙ্কা তদি?

আজ ১৫ বছর জানতে ইচ্ছা হলো প্রেমিক/স্বামীহারা প্রিয়াঙ্কা কেমন আছেন। কেমন কাটছে তার দিনকাল। নৃশংস ভাবে খুন হওয়া ভালোবাসা হারানোর কথা কি মনে পড়ে? কাঁদেন? চোখ ভেজান? আগুনে পোড়েন ভেতরে ভেতরে?
শোনা যায় তিনি কোলকাতার বাইরে আছেন। আবার শোনা যায় প্রভাবশালী বাবা তাকে পাঠিয়ে দিয়েছে দেশের বাইরে। সেখানে নাকি চারুরীও করছেন। 'লাক্স কোজি'র অংশীদার সে। কারণ তার বাবা 'লাক্স কোজি'র মালিক, অশোক তদি। প্রিয়াঙ্কার হাসি মুখের ছবি দেখে বোঝার উপায় নেই। কারণ হাসিমুখ সব সময় সত্যিটা বলে না।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১০:৩৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
মর্মান্তিক ও দুঃখজনক ঘটনা।
দূনিয়াটা টাকার গোলাম, ভালোবাসার
জানাকিড়ি দাম নেই এখানে।

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:০০

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
প্রিয়াঙ্কার বাবা অশোক তদি লাক্স কোজির মালিক। পুলিশ অফিসার অরিন্দম মান্না কেউ মরতে হলো।

২| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ২:১৫

কামাল৮০ বলেছেন: এখানে টাকার খেল কোথায় দেখলেন।এটা তো ধর্মের খেল।ছেলেটি হিন্দু হলে হয়তো মেনে নিতো।মধ্যবিত্ত আর বড় লোকের বিয়ে অহরহ হয়।

২৬ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৩০

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
ধর্ম , ধন... দুটাই বাধা।

৩| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৮:৪৩

শেরজা তপন বলেছেন: দারুণ কিছু তথ্য দিলেন- এই প্রথম জানলাম এদের নিয়ে।

২৬ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৩১

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
ধন্যবাদ শেরজা তপন। কবির সুমনের অনেক গান তথ্যবহুল। ধীরে ধীরে পোস্ট করবো।

৪| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:১৩

রাজ মো, আশরাফুল হক বারামদী বলেছেন: রিজওয়ান ছেলেটা একটা গাধা। মেয়েটা তো ঠিকই বেঁচে আছে, অযথা এই বালের ছেড়ির সাথে পীরিত মারাতে যেয়ে ছেলেটা মারা গেলো। কিসের বালের প্রেম, মেয়েটার সাথে মিশে ছাগলের বাচ্চা ছাগল রিজওয়ান চ্যাগাইয়া মইরা থাকলো। ঠিকই আছে, হালার্পুতে মরছে, ভালো হইছে, দুনিয়া থেকে একটা ছাগল কমছে। প্রেম মারাইতে গেছে হালার্পুতে।

২৬ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:২৮

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
হ্যা , ঠিক বলেছেন।

৫| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৫৫

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ঐ দেশের পুলিশও অন্যায় করেছে। প্রিয়ায়ঙ্কা ঐ সময় প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে থাকলে দেশের কোন আইন দিয়ে তাদের বিয়েকে ঠেকাতে পারার কথা না। প্রিয়াঙ্কার বাবার অর্থ, প্রভাব এবং পুলিশের জুলুমের কারণে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে মনে হয়।

২৬ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৩২

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:

অর্থ আর ধর্ম !

৬| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:২৪

অঙ্গনা বলেছেন: নামের লিষ্ট বড় হয়
হু কেয়ার্স।
আমরা কিছুদিন মনে রাখি দেন বিজি হয়ে যাই।

৭| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:২৩

বিটপি বলেছেন: উল্টোটা হলে খবরে বড় করে দেখাত। একটা হিন্দু ছেলে একটা মুসলিম ঘরের মেয়ে বাগাতে পারলে সেটা পত্রিকা এবং টিভি চ্যানেলের জন্য হট টপিক হয়ে যায়। যেমন এই মুহূর্তে ইন্ডিয়ার সবচেয়ে বড় মুসলিম সম্ভবত নুস্রত জাহান আর অভিনেত্রী মিথিলা।

৮| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩৭

নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো প্রিয়াঙ্কা এখন দিব্যি আছেন । কেন যেন মনে হয় এখানে আসলে ভালোবাসাটা ছিল এক নিছক কিশোরী হুজুগে , এখন ওসবকে ভুলে গিয়ে তিনি এখন ম্যাচিউরড হতে চাইছেন !!

৯| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৯:১২

রাজীব নুর বলেছেন: চারিদিকে কত কিছু ঘটে যায়। কিচ্ছু জানি না। অবশ্য জানতে ইচ্ছাও করে না।

১০| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৯:২২

রানার ব্লগ বলেছেন: ধর্ম কাষ্ট আর আভিজাত্য এই সব গুলাই মানবিকতার বিরুদ্ধে কাজ করে।

১১| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৭:৩২

সোহানী বলেছেন: এসব গল্প আর নৃশংসতা শুনতে ভালো লাগে না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.