নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্য মারা যাবো .......
ছোটবেলায় বেশ কয়েকটা শখ ছিল । বেশী সময় যেত বই পড়ে আর ছবি এঁকে। নিতান্তই একঘেয়ে সব ছবি। নদী, নৌকা, নদীর ঐ পাশে পাহার সূর্য। বাড়ির পিছে কলা গাছ, পাশে খড়ের গাদা। যুদ্ধের ছবি, একাত্তরের ছবি, বিজয়ের ছবি একুশের ছবি। ছোটবেলায় এর বাইরে ভাবা হয়নি । ক্লাস ফোরে উঠে চিন্তার পরিবর্তন ঘটে ছবিতে। বৃষ্টির নামাতে পারতাম, ঝড় তুলতে পাড়তাম, ধান ক্ষেতে আর শাড়ির আঁচলে দোলা দিয়ে যেতো মাতাল হাওয়া।
ছোটবেলাতে ছন্দ বানাতে ভালো লাগতো। মনের অজান্তেই মিলে যেতো লাইনের পর লাইন। মিলতো ঠিকই তবে মোটেও অর্থবহ নয়।
ছোটবেলায় মনে ধরেছিল,
সিংহ মামা সিংহ মামা করছো তুমি কি?
এই দেখো না তোমার আমি ছবি এঁকেছি।
একদিন আম্মা রান্নাঘর থেকে এসে দেখে আমি খাটে বসে ছোট একটা হেক্সো ব্লেড দিয়ে জানলা কাটছি আর বলছি,
জানলা জানলা করছো তুমি কি?
এই দেখো না তোমায় আমি কেটে ফেলছি।
সেইদিন যদি সজোরে গালে একটা থাপ্পড় খেতাম তবে কাব্য রচনা উবে যেতো। না, সেদিন কেউ আমাকে বকেও নি। বরং আমার প্রতিভায় মুগ্ধ হয়েছিল ! আমার সেই জানালা সেই স্মৃতির হয়ে বেঁচে ছিল অনেকদিন।
ক্লাস থ্রিতে পড়ি। ভেড়ামারা সাহিত্য সংসদ থেকে বিজয় দিবসের স্মরনীকা ছাপা হবে। সেইবার নাকি ঠিক করা হয়ছে ছোটদের লেখাও তারা ছাপবে। সম্পাদক মন্ডলীদ্বারা বাছাই হবার পর লেখা ছাপা হবে। আমি লেখা দিলাম। মনে হলো কত মানুষ লিখবে, আমারটা নিশ্চয়ই ছাপবে না ।
বিজয় দিবস এমনিতেই আনন্দের ছিল ছোটবেলায়। একেতে ছুটি তারপর বিজয়ের আনন্দ। উঠতাম খুব সকালে আব্বা বলতেন, গিয়ে দেখে এসো সূর্যটা আজ কেমন লাল!
আমি মাঠে গিয়ে লাল টকটকে সূর্য দেখতাম । এমন সূর্য আমি অনেক এঁকেছি। এই সূর্যের ভেতর একটা তেজ থাকতো। রুখে দাঁড়ানোর প্রত্যয় থাকতো । এই সূর্য যুদ্ধ করে আনা হয়েছে।
আনন্দ আরো দ্বিগুন হলো ১৫ ডিসেম্বর বিকেলে । স্মরনীকা প্রকাশ হয়েছে। সেটা বিতরণ করা হচ্ছে। আমার হাতে একটা পত্রিকা দেয়া হলো। উপরে লেখা, 'আমি বিজয় দেখিনি'। এটাই স্মরনীকার নাম।
বলল আমার লেখা কবিতা ছাপা হয়েছে। আমি হাতে নিলাম। হাত কাঁপছে। বিজয় ও অশ্রু শিরোনামে আমার লেখা কবিতা।সৌরভ। তৃতীয় শ্রেণী।
১৬ ডিসেম্বর। সকালে আব্বার সাথে হাইস্কুল যাচ্ছি বিজয় দিবসের প্রোগ্রামে। আব্বা বললেন, তোমার কবিতাটা নেবা না?
আমি এক দৌড়ে বইটা হাতে নিলাম। সযতনে আঁকড়ে ধরলাম বুকে। সেই বইয়ের অপরিপক্ক শব্দের সমন্বয়ে সামন্য কিছু লেখা কিন্তু আমার কাছে ভীষণ দামী।
"বাংলাদেশে জনম আমার
হেথায় আমার ঘর
বিজয় দিবস জানি আমি
১৬ই ডিসেম্বর
স্বাধীনতা দেশে বসত করি
এইতো আমার গৌরব
এই গৌরবেও ঝরে অশ্রু
আমি এক সৌরভ।"
আমি আব্বার হাত ধরে হেঁটে যাচ্ছি । মাইকে বিজয়ের গান বাজছে । পিছনে পূবের লাল সূর্য টা তেজ ছড়াতে শুরু করেছে তীব্র ভাবে।
ছবিঃ ইন্টারনেট
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ৮:১৭
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: কুষ্টিয়া জেলায়।
আব্বা এখানে প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেছিলেন।
২| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৩৬
শেরজা তপন বলেছেন: বেশ ভালই তো লিখছেন। আপনার আব্বার প্রতি শ্রদ্ধা!
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৪৭
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
লিখতে লিখতে লিখেই ফেললাম শেরজা ভাই।
৩| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:০২
কবিতা ক্থ্য বলেছেন: ১ম কাব্য রচনায় অভিনন্দন।
বেশ বুঝতে পারছি কেমন ছিলো সেই অনুভুতি।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:২২
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
সেই অনুভূতিতে এখনো ভাসি।
৪| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:০৮
জুল ভার্ন বলেছেন: প্রথম কবিতা চমৎকার লিখেছেন! ❤️
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:২৩
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
গৌরবের চেয়ে কি অশ্রুর পরিমাণ বেশি?
৫| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৫৯
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
আপনার বাবার শরীর কেমন এখন?
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:২১
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
আব্বাকে ঢাকা থেকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গত তিন বছর ধরে তিনি বিজয় দিবসের প্রোগ্রামে যেতে পারেন না।
৬| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৫২
রাজীব নুর বলেছেন: আপনার মধ্যে প্রতিভা আছে।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:১৯
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
ছিল হয়তো।
বিজয়ের শুভেচ্ছা রাজীব ভাই।
৭| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:০৪
নেওয়াজ আলি বলেছেন: প্রথম লেখা ছাপানোর অনুভূতি এখনো নাড়া দেয় হৃদয়।
১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:১৬
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
তরতাজা স্মৃতি যেন।
৮| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৪০
Naznin71 বলেছেন: ছোটবেলার স্মৃতি চমৎকার অনুভূতি, প্রথম ছাপা কবিতা অসাধারন। বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা ভাই
১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:১৫
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
অনুভূতি আগলে রাখা কঠিন কাজ , কিছুটা কস্টকর। তবুও আমি সেটা করি ,
আপনাকেও শুভেচ্ছা আপা।
৯| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৩৯
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
এমন একটি সময় ছিলো ছাপার অক্ষরে লেখা দেখতে পারা ভাগ্যের বিষয় ছিলো, তখন ইন্টারনেট ছিলো না। বাংলাদেশে পত্রিকা ম্যাগাজিনে লেখা যাদের ছেপেছে তারা সেই লেখা দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করে রেখেছেন।
১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:১৩
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
শৈশবের অনেকগুলো দিন আমার মনে রাখার মত ছিল।
আব্বা যদি কবিতা লেখা বইটা না নিতে বলতেন তবে হয়তো বুকে আঁকড়ে ধরে আব্বার সাথে হাঁটা হতো না।
আচ্ছা ,
১৬ ডিসেম্বরের ভোরের সূর্যটা কি বেশি লাল?
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ৮:০৮
সোনাগাজী বলেছেন:
ভেড়ামারা কোন জেলায়?