নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আজাইরা প্যাঁচাল

যাহ পাই তাহা চাই না, যাহা চাই তাহা পাই না

সৌমিক রহমান

বিশ্ব জোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র নানান ভাবে নতুন জিনিস শিখছি দিবারাত্র

সৌমিক রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিজ্ঞাপন......যত্তসব !!!

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫৪

আজকাল এমনিতেই টিভিতে বাংলাদেশের চ্যানেলগুলোতে বিজ্ঞাপনের যন্ত্রণায় কোন অনুষ্ঠান দেখা মুশকিল। তাই বেশীরভাগ সময়ই দেখা যায় টিভিতে কোন নাটক দেখার মধ্যে বিজ্ঞাপন শুরু হওয়ার ২০ মিনিট পরও যখন নাটকের মুখ আর দেখা যায় না তখন চ্যানেল বিনা নোটিশে পরিবর্তন করা ছাড়া অন্য কোন উপায় থাকে না। এই পদ্ধতিতে দেখা যায়, কোন অনুষ্ঠানেরই পুরোটা দেখা হয় না।

কার্টুনিস্ট আহসান হাবিবের কোন একটা লেখায় যেন টিভি নাটক সার্জারির একটা সংজ্ঞা পড়েছিলাম। সেখানে অবশ্য বিজ্ঞাপনের ঝামেলা ছিল না। ছিল লোডশেডিং এর উপদ্রব। পাঠকদের কৌতুহল মেটানোর জন্য সংজ্ঞাটা তুলে দিচ্ছি। লেখাটা হুবুহু দিতে পারছি না বলে আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। মোটামোটিভাবে যেটুকু মনে আছে তা এরকমঃ

“ধরা যাক, টিভিতে কোন নাটক শুরু হবার পর মাঝপথে যথারীতি ইলেক্ট্রিসিটি চলে গেল। তারপর ইলেক্ট্রিসিটি যখন আসলো তখন সেই চ্যানেলে দেখা গেল, নতুন কোন নাটক চলছে অর্থাৎ আগেরটা শেষ। কিন্তু এই নাটকেরও অর্ধেক ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু সব নাটকেরই অভিনেতা-অভিনেত্রীরা পারমুটেশন কম্বিনেশন করে প্রায় একই থাকে বলে দর্শক আগের নাটকের শুরুর অর্ধেক ও এই নাটকের শেষের অর্ধেক মিলিয়ে নিজের মত করে একটা কাহিনী বুঝে নিয়ে একটা আরামের দীর্ঘশ্বাস ফেলে। এটাই টিভি নাটক সার্জারি”।

সবই প্রায় ঠিক আছে কিন্তু সমস্যাটা বাঁধে তখনই যখন এই টানা একঘেয়েমি বিজ্ঞাপন বিরতির মধ্যেও মেজাজ খারাপ করিয়ে দেওয়া টাইপ কোন বিজ্ঞাপন এসে হাজির হয়। উদাহরন দিচ্ছি,

১। প্রথমে একটি সিমেন্ট কোম্পানির বিজ্ঞাপন দিয়ে শুরু করছি। বলাই বাহুল্য, বাংলাদেশের প্রথম সারির একটি সিমেন্টেরই বিজ্ঞাপন। এই বিজ্ঞাপনে দেখা যায়, একটি নদীর উপরে (খালও হতে পারে) বেশ কিছু বড়সড় সাইজের নৌকা ভেসে যাচ্ছে। কিন্তু অস্বাভাবিক বিষয়টি হল, প্রতিটি নৌকারই উপরে একটি করে বাড়ি। তখন এক টেকো লোক নদীর পাঁড়ে দাড়িয়ে টিভি দর্শকদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “অমুক সিমেন্ট দিয়ে বাড়ি বানান, নাহলে এমন খেলনা বাড়িতে থাকুন”। ঠিক তখন ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এক গায়েবী আওয়াজ বলে, “কিন্তু অমুক সিমেন্টের দাম তো বেশী”। তখন টেকো লোকটি বলে, “তার চেয়ে জীবনের মূল্য আরও বেশী”। তখন গায়েবী আওয়াজ আবার বলে ওঠে, তাহলে বেশী দাম দিয়ে যখন কিনব তখন বিদেশি সিমেন্টই কিনব ?? তখন টেকো লোকটি যে উত্তর দেয় তার আগে একটি কৌতুক বলে নিচ্ছি। তাহলে আশা করি পরবর্তীতে কোন ব্যাখ্যার দরকার পড়বে না।

এক ব্যক্তি বাইরে থেকে বাড়ি ফিরেই তার স্ত্রীকে বলল, “এই শুনছ, আমার চেহারা কি বিদেশীদের মত ?” তখন স্ত্রী বলল, “না, তোমার চেহারা বিদেশীদের মত হতে যাবে কেন ?” তখন লোকটি জবাব দেয়, “ না মানে, আমি গতবছর যেবার ইংল্যান্ডে গিয়েছিলাম তখন অনেকেই দেখি রাস্তায় আমাকে দাড় করিয়ে জিজ্ঞেস করেছিল, “Are you foreigner?”

প্রসঙ্গে ফিরছি, টেকো লোকটি তখন আকর্ণ বিস্তৃত হাসি নিয়ে জবাব দেয়, “হ্যা, অমুক সিমেন্টকে যখন বিদেশে রপ্তানি করা হয় তখন ঐ দেশে অমুক সিমেন্টকে তো বিদেশই সিমেন্টই বলে। বোঝা গেছে জিনিসটা ?” ......। দেখেন তো, উপরের কৌতুকের সাথে এই জবাবের কোন মিল খুঁজে পান কিনা ?????

২। এদেশে ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলোর ভক্ত নেহাত কম না। আমার নিজের বাসাতেও এই জিনিসের পাড় ভক্ত বিদ্যমান (আমার মা এবং কাজের বুয়া। সন্ধ্যার পর এই জিনিসের উৎপাতে আমার নিজেরই টিভি দেখা মুশকিল। আর এর ভুক্তভোগী হল আমার মত নিরীহ জনসমাজ।) সে যাই হোক, সম্ভবত ‘জি বাংলা’য় (অন্য কোন চ্যানেলও হতে পারে) ‘দিদি No. 1’ নামে একটা মহা বিরক্তিকর রিয়েলিটি শো হয়। যে অনুস্থানে যাবতীয় নারী সম্প্রদায় জেতার জন্য হাস্যকর সব প্রতিযোগীতায় নামে। এই অনুষ্ঠানের একটা বিজ্ঞাপনের কথা মনে পড়ছে।

একগাদা পিচ্চি পিচ্চি মেয়ে তাদের জীবনের লক্ষ্য বলে। বিজ্ঞাপনটা অনেক এরকম, প্রথমে হয়ত একটা দৃশ্যে দেখা যায় একটা মেয়ে ডাক্তারের পোশাক পরে ডাক্তারের ‘বেবি সেট’ নিয়ে খেলছে। তখন এক মহিলা এসে পিচ্চিটাকে জিজ্ঞেস করে, “বল তো মামনি, তুমি বড় হয়ে কী হবে?” পিচ্চিটা সাথে সাথে উত্তর দেয়, “ডাক্তার”। এভাবে বিভিন্ন পিচ্চি উত্তর দিতে থাকে। কেউ বা হতে চায় ইঞ্জিনিয়ার, কেউ বা টেনিস প্লেয়ার.........এরকম। কিন্তু সব শেষে এক পিচ্চি লাফিয়ে উঠে অত্যন্ত জোরের সাথে চেঁচিয়ে জানান দেয় তার জীবনের লক্ষ্য। ভাবখানা দেখলে মনে হতে পারে এটাই বোধ সব থেকে ভাল সিদ্ধান্ত। সে উত্তর দেয়, “আমি হতে চাই, দিদি No. 1”।

৩। এটা অবশ্য অন্য আরেকজনের চিন্তাপ্রসুত। তারপরেও বলছি,

বলছিলাম, টয়লেট ক্লিনারের বিজ্ঞাপনের কথা। বলাই বাহুল্য, অনেক শিশুকেই টিভি দেখার মাধ্যমে না খাওয়ালে আলাদা করে খাওয়ানো যায় না। ঠিক সে সময়ই যদি এসব টয়লেট ক্লিনারের ‘বমি উদগিরনমুলক’ (ব্যকরন সম্পর্কিত দোষ-ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য অনুরোধ রইল) বিজ্ঞাপন এসে হাজির হয় তখন অবস্থাটা কী দাড়ায় ?????

৪। বাংলালিংকের একটা বিজ্ঞাপনের কথা না বলে পারছি না। আমার মতে পুরাই আজাইরা একটা বিজ্ঞাপন। এই বিজ্ঞাপনে নাচতে নাচতে মডেলরা গান গেয়ে গেয়ে বাংলালিংকের গুণগান করেন। কিন্তু সমস্যাটা অন্য জায়গায়। এই গান গাওয়ার ব্যাপারটি ঘটে একটি বিয়ের অনুস্থানে। বাংলালিংকের সাথে বিয়ের অনুষ্ঠানের কী সম্পর্ক সেটা আমি আজও বুঝতে পারলাম না। ধরুন, আপনার বিয়েতে যদি কেউ এভাবে বাংলালিংকের গান গাইতে থাকেন তাহলে আপনার কেমন লাগবে ????

৫। এটাও আরেকটা মোবাইল কোম্পানি অপারেটরের বিজ্ঞাপন। এটা অবশ্য গ্রামীনফোনের। অনেক পুরনো বিজ্ঞাপন। এতে দেখা যায়, নৌকায় চড়ে চঞ্চল চৌধুরি ঈদের ছুটিতে গ্রামে মায়ের কাছে যাচ্ছে। মায়ের জন্য ঈদের উপহার হিসেবে নিয়ে যাচ্ছে একটা মোবাইল ফোন। মা নিশ্চয়ই অনেক খুশি হবার কথা। বিজ্ঞাপনের সবই ঠিক ছিল কিন্তু একটা দৃশ্যে দেখা যায় মা সন্ধাবেলা জানালার পাশে হারিকেন নিয়ে বসে আছে। এই দৃশ্য থেকে প্রথমেই মাথায় আসে নিশ্চয়ই ঐ গ্রামে বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই। বাংলাদেশের অনেক গ্রামেই বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই তাই এটা ভাবা অস্বাভাবিক কিছু না। প্রশ্ন হল, মা মোবাইল চার্জ দিবে কীভাবে ???????

অবশ্য সব বিজ্ঞাপনই যে এরকম তা কিন্তু না। অনেক চমৎকার বিজ্ঞাপনও দেখেছি। আর এটা নিশ্চই আপনারা নিজেরাও স্বীকার করবেন যে, বেশীরভাগ ভাল বিজ্ঞাপনই বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির অবদান। এর মধ্যে বাংলালিংক ও গ্রামীনফোনও আছে। আর আমার প্রায়ই মনে হয়, আমাদের বিজ্ঞাপনের মান বাইরের অনেক উন্নত দেশের তুলনায় ভাল। আপনাদের কী মনে হয় ?

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৯

আরজু পনি বলেছেন:

টিভিই তো তেমন দেখি না, তাই বিজ্ঞাপন্ও তেমন দেখা হয় না। তবে বিজ্ঞাপনের উন্নতি হচ্ছে, তা খেতে বসে টিভিতে চোখ রাখলে বোঝা যায়।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৬

সৌমিক রহমান বলেছেন: তা অবশ্য ঠিক

২| ২০ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ২:১৩

আহ্নিক অনমিত্র বলেছেন: কিসের উন্নতি ? কিছুদিন ছিল সুস্থ ধারার বুদ্ধিদীপ্ত কিছু, এখনকার গুলো যেমন অখাদ্য হয়ে গিয়েছে, তার সাথে নতুন যন্ত্রণা যুক্ত হয়েছে, হিডেন ম্যাসেজ থাকে। প্রচণ্ড খারাপ মিনিং করা যায় প্রত্যেকটার। আর যেভাবে বাচ্চাদের ভুল বোঝানো হচ্ছে !!! বলা হচ্ছে দুধ খাও, পিচ্চি বলে দুধ পকেটে। এমনিতেই এখনকার বাচ্চারা খেতে চায়না। আর আমাদের দেশ বলে কথা, হয়তো একদিন শুনবো এই সব দুধের প্যাকেটে গরুর দুধের ছিটে ফোটা নেই।
আর আছে ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি, নতুন যন্ত্রণা ছেলেদের জন্যে একই প্রোডাক্ট অন্য নামে। এগুলোর মাঝে যে যেঁ কি থাকে তা খুব কম মানুষই জানে। ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।
আরও আছে হরলিক্স, বুস্ট এর মিথ্যাচার।

রেগুলেশন নেই কোন, যাদের দেখার কথা তারা ব্যস্ত অন্য কাজে।

২০ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ২:২৮

সৌমিক রহমান বলেছেন: B:-) B:-) B:-)

৩| ২০ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ২:৩৪

সাদা কলো বলেছেন: গ্রামীণ ফোনের ঐ বিজ্ঞাপনে - ধইরা নেন গ্রামে ঐ সময় লোড শেডিং চলছিল আর তাই হারিকেন।

২০ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ২:৪০

সৌমিক রহমান বলেছেন: সবই যদি ধরে নিতে হয় তাহলে কীভাবে চলবে????

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.