নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন সাধারণ মানুষ। গল্প , কবিতা লিখি।\nশখ- বই পড়া, গান শোনা, রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করা, ভ্রমণ, ছবি তোলা(ডিজিটাল ক্যামেরায়)।\nট্র্যান্সক্রিপশনের কাজ করি। পত্রিকায় ফিচার লিখি।

শুভ্রা হক

আমি একজন সাধারণ মানুষ। লেখালেখি করি, পড়তেও পছন্দ করি।

শুভ্রা হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধারাবাহিক উপন্যাস-মেঠো পথের কাহিনী-২

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৮


সকালে তাড়াতাড়িই ঘুম থেকে উঠলো কান্তা। গতকাল সন্ধায় ফোন এসেছিল সেই গবেষণা প্রতিস্ঠান থেকে। আজ নাকি ভাইভা পরীক্ষা হবে , পাশের সার্টিফিকেট গুলো নিয়ে যেতেও বলেছে সাথে করে।

দেখলো ভাইয়া রুটি বানিয়ে রেখে গেছে ডাইনিং টেবিলে ।
ওর বড় ভাই আবিদ, একটা বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকরি করে। ওরা দুই ভাই -বোন ঢাকায় থাকে । বাবা সরকারী চাকুরে। সেই সুত্রে মা-বাবা দুজনে থাকেন রাজশাহীতে। ওদের গ্রামের বাড়ি অবশ্য নাটোরে।

ছাত্র জীবন থেকে ওর ভাইয়া ঢাকায় থাকে। আগে হলে থাকতো , পাশ করে চাকরি পাওয়ার পর এবং কান্তা ঢাকায় কলেজে চান্স পাওয়ার পর দুইজনে ঢাকায়ই থাকে কয়েক বছর ধরে। মাও আসেন মাঝে মাঝে।

নাস্তা খেয়ে তৈরি হয়ে নিলো কান্তা। সার্টিফিকেটগুলো আগেই বের করে রেখেছিলো। আরেকবার দেখে নিয়ে বের হয়ে পড়লো।

বাসের কাউন্টারে গিয়ে দাঁড়ালো ।আজ বিআরটিসির এসি বাসে যাবে ও। অন্য বাসগুলোর তুলনায় এটার যাত্রীগুলো একটু ভদ্রগোছের। টিকিটের ভাড়া বেশি বলে সব শ্রেণীর মানুষ এটায় ওঠে না। তাই বিরক্ত লাগে না। অন্যান্য বাসে এমন কিছু যাত্রী ওঠে, যাদের অনেকেই মনে হয় জীবনে প্রথম রাজধানী শহরে এসেছে, আচরণ দেখলেই বুঝা যায়। দেশটার রাজধানীটা যে বাড়তি মানুষের চাপে দম বন্ধ হয়ে ক্রমশ মারা যাচ্ছে দেখার কেউ নাই। সব অফিস-আদালত এই শহরে, কাজের খোঁজ এখানে। তাই তো দুর্যোগে সব কিছু হারানো মানুষ গুলোর ভরসা এই শহর। তাদের উপর কান্তার রাগও হয়, আবার মায়াও লাগে।

যাই হোক একটু আগেই পৌঁছে গেলো অফিসে, এখনো ভাইভা দিতে আসছে অনেকেই।
ঠিক সাড়ে নয়টায় একজন একজন করে ডাকা শুরু হলো। কান্তাকে ডাকলো সাড়ে দশটার দিকে।
রুমে ঢুকে দেখল পাঁচজন মানুষ বসে আছে, এদের মধ্যে একজন নারী।

-”বসুন” একজন বললো।
“ধন্যবাদ “ বলে কান্তা বসলো।
“আপনি ইংরেজিতে পাস করে গবেষণার কাজে আবেদন কেন করেছেন?”একজন প্রশ্ন করলেন
“কারণ, আমার গবেষণাধর্মী কাজের প্রতি আগ্রহ আছে, এর আগেও দুইটা ফিল্ড ওয়ার্কের কাজ করেছি।”কান্তা উত্তর দিলো।
“আচ্ছা, আপনার মাতৃস্বাস্থ্য বা শিশুদের স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে “ আরেক জন জিজ্ঞাস করলেন।
“না” কান্তার সরাসরি উত্তর।
“ আপনাকে যদি নিয়োগ দেয়া হয়, প্রতিদিন ঢাকা থেকে যাতায়াত করতে পারবেন?” তিনিই আবার বললেন।
“ আমি তো শুনেছি আপনাদের থাকার ব্যাবস্থা থাকবে সেখানে” কান্তা বললো।
“তা নাও থাকতে পারে”
“এক মাসের কাজ তো , তা পারবো “কান্তা জবাব দেয়।মনে মনে ভাবলো , একটা তো মাস মোটে , দেখতে দেখতে কেটে যাবে।
“ঠিক আছে আপনি যেতে পারেন, আমরা পরে জানাবো।”সেই প্রশ্নকর্তা বললেন।
কান্তা বের হয়ে এলো। ২ বছর আগেও একবার ইন্টারনেটে এই সংস্থার বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করেছিলো। সেটার লিখিত পরীক্ষায় প্রথম হলেও লবিং করার কেউ ছিল না বলে ভাইভাতে বাদ পরে গিয়েছিলো কান্তা। তখন মাত্র বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে বের হয়েছে, খুব হতাশ হয়েছিলো। ভাইভার দিনই বুঝেছিল এখানে হবে না। কারণ , যারা ভাইভা দিতে এসেছিলো তাদের সবারই বাবা, মা , চাচা -কেউ না কেউ পরিচিত ছিলো।

এবারো হবে না ভেবেই এসেছে ও। আর যদি আকাশের বন্ধুর কল্যাণে হয়ে যায়, তাহলে একটা অভিজ্ঞতা হবে। সেটাও মন্দ না। ভাবলো কান্তা।(চলবে...।)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:০৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আমি তো ভেবেছিলাম কান্তা একা মানুষ যেহেতু একাই থাকে। ওর ভাইয়াটা ভালোই, বোনের জন্য নাস্তাও বানায়।

দেশটার রাজধানীটা যে বাড়তি মানুষের চাপে দম বন্ধ হয়ে ক্রমশ মারা যাচ্ছে দেখার কেউ নাই।
-- কান্তারাও কিন্তু নাটোর থেকেই ঢাকা এসেছে। তাই কান্তার বিরক্ত হওয়াটা কেমন যেন দেখায়।

চলতে থাকুক আপনার মেঠো পথের কাহিনী। ধারাবাহিক কিছু লেখার ব্যাপারে আমি চরম অলস। হুট করে আগ্রহ ফুরিয়ে যায়। আপনি লেখাটা কন্টিনিউ করুন।

শুভকামনা থাকলো

২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৩৯

শুভ্রা হক বলেছেন: কান্তা আর ওর ভাই -এই দুইজন । কিন্তু নিজের মন জগতে কান্তা খুবই একা মানুশ।আর এখনকার ছেলেরা যারা মার কাছ থেকে দূরে থাকে তারা আস্তে আস্তে ঘরের কাজে পতু হয়েই ওঠে। আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ক্লাসমেট যারা হলে থাকতো , সেই সব ছেলেদের সবাই নিজের রান্নাটা নিজেই করতো । এখনো পরের প্রজন্মের জুনিয়র ছেলে বন্ধুর রান্নাও খেয়েছি। রান্না কিন্তু খুব ভালো তাদের।
আর ঢাকা শহরে আমরা যারা বড় হয়ে উঠেছি বা আমাদের জন্ম ,আমরাও কিন্তু কিছুটা বিরক্ত হলেও শহরটাকে ভালবাসি কিন্তু ঢাকার বাইরে থেকে আসা মানুষ কিন্তু ঢাকাকে পছন্দ করে না, এটা আমি খেয়াল করে দেখেছি।
আপনার শুভকামনার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আমিও চরম অলস মানুষ। দেখি কয় দিন লিখতে পারি । ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.