নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি খুবই সাধারন একজন মানুষ।লিখালিখি ভাললাগে।লিখালিখির মাঝে আমি আমাকে খুঁজে পাই তাই লিখি।

সিয়াম মেহরাফ

আমি নিজেকে খুব ভালবাসি।

সিয়াম মেহরাফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

"মা"

০১ লা নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৫৫

---মা এক গ্লাস পানি দিবা?খুব তেস্টা
পেয়েছে।
---হ্যা বাবা!!এইত দিচ্ছি।একটু অপেক্ষা কর।
---আচ্ছা মা।
.
.
ছেলেটার মা পানি আনতে চলে যায়।ছেলেটা
শুধু চোখ বুঝে সুয়ে থাকে।কোন কাজ করতে পারে
না ছেলেটা,,সারাদিন ঘুমিয়েই সময়টা কাটিয়ে
দেয়।ঘরের বাইরে বেরোনোর ইচ্ছা থাকলেও
পারে না।সবার মত বাইরের প্রকৃতি উপভোগ
করার ক্ষমতা তার নেই।সে সবার থেকে আলাদা।
আর আলাদা হবে নাই বা কেন?সে তো সবার মত
চোখে দেখতে পায় না।তার দুটো চোখ তাকে শুধু
অন্ধকার পরিবেশ দেখায়,,আলো দেখতে দেয় না।
বড়ই নিষ্ঠুর দুটি চোখ তার।
.
.
---এই নে বাবা!পানি খা।
---কোথায়?দাও না মা।
.
.
ছেলেটার মা নিজ হাতে ছেলেটাকে পানি
খাইয়ে দেয়।এরপর নিজের শাড়ির আঁচল দিয়ে
ছেলেটার মুখ মুছিয়ে দেয়।ছেলেটাকে সে অনেক
ভালবাসে।ঘরে বাইরের মানুষজন আর প্রকৃতি
ছেলেটাকে হেয় করে যায় সবসময়।প্রকৃতির এই
নিষ্ঠুর অবহেলা তাকে সবার থেকে আলাদা করে
রাখে,,শুধু পারেনা নিজের মায়ের কাছ থেকে
তাকে আলাদা করতে।মা তাকে ভালবাসে
নিজের জীবনের থেকেও বেশি।
.
.
একদিন দুপুরে মা রান্নাঘরে রান্না করছে।তখন
ছেলেটা মাকে ডাক দিল...
---মা,মা, অনেক ক্ষুধা পেয়েছে।একটু ভাত
দাওনা
---ভাত হয়ে গেছে।দাঁড়া বাবা দিচ্ছি।
---আরেকটা কথা বলবো মা??প্লিজ রাগ করবা
না।
---হ্যা বাবা বল।
---মা আজকে আমি নিজ হাতে ভাত খাবো।না
করোনা মা প্লিজ।
---কিন্তু বাবা.....
.
মাকে কোন কথা না বলতে দিয়ে ছেলেটা বলে:-
---কোন কিন্তু নেই মা।আজ আমি নিজ হাতেই
ভাত খাবো।না করবা না।প্লিজ সোনা না
আমার।
---বাবা আজকে তো আমি মাছ রান্না করেছি।
মাছটাতে অনেক কাটা।তোর গলায় কাঁটা বাঁধলে
তোর অনেক কস্ট হবে যে।
---সমস্যা নেই মা।তুমি তো আছো।প্লিজ মা
প্লিজ।আমি আজ নিজ হাতে ভাত খাবোই।
---না বাবা!!অন্য একদিন নিজ হাতে খাবি।
আজকে খেতে হবে না।
---আমি আজকেই খাবো।ব্যাস!
---আচ্ছা বাবা!!ঠিকাছে খা।তবে একটু সাবধানে
বাবা।
---চিন্তা করোনা মা।
.
.
এরপর মা তাকে ভাত খেতে দিয়ে বলে:-
.
---আমি কি কাটা বেঁছে দিবো বাবা?
---না মা।আমি নিজেই পারবো।
---আচ্ছা ঠিকাছে।
.
এটা বলেই ছেলেটার মা আবার রান্নাঘরে চলে
যায়।খানিক বাদেই ছেলেটার চিৎকার শুনতে
পায়।সাথে সাথে দৌড়ে চলে যায় তার কাছে।
.
.
---মা,মাগো আমার গলায় মনে হয় কাঁটা
বেঁধেছে।
---আমি আগেই বারন করেছিলাম একা একা ভাত
খাস না।শুনলি না তো আমার কথা!!এবার দেখ
মায়ের কথা না শুনলে কি হয়।
.
.
ব্যাকুল হয়ে যায় ছেলেটার মা।ছেলেটার গলায়
কাঁটা বেঁধেছে না যেন মায়ের প্রান চলে গেছে।
ব্যাকুলতায় কাঁটা সরানোর নানা পদক্ষেপ নেয়
ছেলেটার মা।ছেলেটার গলার কাঁটা সরে যায়।
কিন্তু ইতোমধ্যে ছেলেটার মায়ের দুছোখের
কোন আলতো জল চলে আসে।ছেলেটার মা জোরে
কান্না করতে চায় কিন্তু পারে না।আঁচলের
দিয়ে ঢেকে নেয় নিজের মুখ।মায়ের কান্না
শুনলে ছেলেটাও ব্যাকুল হয়ে যায়।
.
.
মা কাঁদে আর ভাবতে থাকে কেন আজ তার
একমাত্র ছেলেটি সবার থেকে আলাদা?কেন সে
চোখে দেখতে পায় না?আল্লাহর কাছে
প্রার্থনা করে,,যেন আল্লাহ তার ছেলের দুটি
চোখ ফিরিয়ে দিয়ে তার চোখ অন্ধকার করে
দেয়।ছেলেটা তার মাকে জরিয়ে ধরে কাঁদতে
থাকে,আর বলতে থাকে--""আমি তোমাকে অনেক
ভালবাসি মা,,অনেক ভালবাসি""..।মা শুধু
নিরবে কাঁদতে থাকে।আর নিজের ছেলের
জলেভরা চোখ মুছে দেয়।ছেলেটাও তার মায়ের
চোখ মুছে দেয়।এভাবেই মা নিরবে চোখের জল
ফেলে আর তার ছেলেটাকে ভালবেসে যায়
.
.
.
এটাই হলো ""মা""।মা সবার থেকে আলাদা।
মায়ের ভালবাসার প্রতিদান দেয়া অসম্ভব।
মায়ের মত কেউ ভালবাসতে পারে না তার
সন্তানদের।যেই মা নিজের সন্তানদের ১০ মাস
১০ দিন গর্ভে ধারন করে,,অতিকস্টে লালন-পালন
করেন সেই মায়ের ঠিকানা আজকের বর্তামানে
হয় ""বৃদ্ধাশ্রম""।আজ আমরা সন্তানেরা পারিনা
মায়েদের ভালবাসার প্রতিদান দিতে।
প্রতিদান দেই ঠিকই তবে সেটা ""বৃদ্ধাশ্রম""।
এটা না করে আমাদের সকলেরই উচিত নিজেদের
মাকে যথাযথ ভালবাসা।সম্মান আর শ্রদ্ধা করা।
কেননা,,আমাদের সবার প্রিয় ব্যাক্তিত্ব
মহানবী হয়রত মুহাম্মাদ (সাঃ)
বলেছেন--""মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের
বেহেশত""
.
লেখা:- Siam Mehraf

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.