![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি নিজেকে খুব ভালবাসি।
মফিজের শ্বশুরবাড়ি হইতে ডাক আসছে বউকে সেখানে দিয়া আসতে হবে।ভদ্র জামাই শ্বশুরআব্বার কথা ফেলে না। তাই কিছু না ভেবেই হ্যা সুচক উত্তর দিছে।বেচারা মফিজ,শ্বশুরের কথায় না করবে তারও উপায় নায়।আর ভাগ্য কি শ্বশুরবাড়ির লোকজনের আর মেয়ের এমন এক্ষান জামাই পাইছে।মফিজের পুরা নাম মফিজউদ্দীন ব্যাপারী।বউয়ের নাম অজানা থাকা ভালো।বউয়ের শৌখিন নাম শুনলে হার্টফেল করতেও টাইম লাগবে না।
.
মফিজ শ্বশুরবাড়ি যাইবে! কিন্তু! কিন্তু কি? না মানে হাতে টাকা পয়সা নাই।গ্রাম্য ভাষায় ঘট না কি বলে ওইটা ভাঙ্গছে। কিছু টাকা পাইলো।টাকাগুলা নিয়া কোমরে গামছা বাঁইধা দধি আর মিস্টি কিনতে গেলো।বাকি যে টাকা পয়সা আছে ওইটা যাইতে যাইতেই শেষ হয়ে যাবে।বাড়ি আসলো দধি মিস্টি নিয়া।বউ হেবি খুশি।জামাই আদর করে আনছে।মফিজের আবার লজ্জা অনেক।বউয়ের চোখের দিকেই তাকাতে লজ্জা পায়।বিয়ের দিন কেমন করছিল আল্লাহ তা,আলা জানে।কৌতুহল নাই জানার।
.
গরুর গাড়িতে রওয়ানা দিলো তার বউয়ের বাপের বাড়ি মানে শ্বশুরবাড়ির দিকে।পথে এত ভাঙ্গা রাস্তা চলতে অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।তাও মফিজ বউয়ের মুখে হাসি দেখে সহ্য করে।বাধ্য জামাই।বউয়ের মনে হয় কন্যা রাশি। কন্যা রাশির মানুষদের ভাগ্য নাকি খুব ভালো হয়।জামাই আদর পায়।
.
জামাই যেমন শ্বশুরবাড়ির লোকজনেরাও তেমন।জামাই বাধ্য হলে কি হইবে উনারাও উনাদের মেয়ে জামাইকে ভালবাসে অনেক।জামাইকে মেয়ে নিয়ে আসতে বলার সাথে সাথেই আটা নিয়ে রান্নাঘরে বসে গেছে।পিঠা বানাবে জামাইয়ের জন্য।জামাই আসলে আজকে আর মনে হয় যাইতে দিবে না।পুরা যেন আরেকবার বিয়ে দিবে মেয়ের সাথে।পুরো বাড়ির আঙ্গিনা থেকে শুরু কইরা সব পরিস্কার করে ফেলছে।প্রত্যেকটা ঘরও।জামাই আইসা যে এবারে বৈশাখের জামাই আদর পাবে কে জানতো।
.
মফিজের মুখে লজ্জা।দু হাতে দুই ব্যাগ নিয়া গাড়িওয়ালাকে ভাড়া দিয়া পাঠাই দিল।চোখ রাস্তার দিকে।মানে নিচের দিকে তাকাইয়া হাঁটতে লাগলো।দরজার সামনে দাঁড়াইয়া আছে মফিজের শ্বশুরআব্বা,শ্বাশুড়িআম্মা।বাকি ঘরের সবাই রান্নাঘরে।অনেক দিন পরে জামাইরে পাইছে।এমনি এমনি ছাইড়া দিবে না।বাধ্য জামাইয়ের মত ব্যাগ মাটিতে রেখে শ্বশুর আর শ্বাশুরির পায়ের হাত দিয়ে সালাম দিল।আহা! গর্বে উনাদের বুক উঁচু হয়ে গেলো।এত ভাল জামাই তার মেয়ের কপালে ছিল কে জানত।
.
পৌঁছাতে পৌঁছাতে বিকেল হয়ে গেছে শ্বশুরবাড়িতে। আর কি তারা আসতে দেয়।মুরগীর মাংস ভুনা আর খিচুড়ি বানাইছে জামাইয়ের জন্য।হাত মুখ ধুয়ে জামাইকে খেতে বললো।জামাই বসলো।সবাই টেবিলের পাশে দাঁড়ানো।বউকে খুঁজে পাচ্ছেনা আশেপাশে। লজ্জায় কালো মুখ বেগুনি হয়ে গেছে।রান্নাঘর থেকে একেকজন আসে আর একেকটা বাটি তরকারী,মাংস দিয়া যায়।অনেক খাইছে পারতেছেনা।বলবে যে তাও বলার উপায় নাই।অবশেষে বলল,শ্বশুরআব্বা আর পারিব না।এবারে উঠি।শ্বশুর আব্বা কয় আচ্ছা।কিন্তু আজকে থেকে যেতে হবে।বাধ্য জামাই রাতে থেকে গেলো।পিঠা থেকে শুরু করে পুরা বৈশাখের খাবার খাওয়াইছে।পরদিন সকালে জামাইয়ের জন্য দুই ব্যাগে কি কি যেন রেডি করে রাখছে।বাধ্য জামাইয়ের কাল রাত থেকেই বাড়ি যাওয়ার জন্য মন ছটফট করতেছে।অবশেষ সেই সময় আইলো।দুই হাতে ব্যাগ নিয়ে জামাই দেখলো সামনে গরুর গাড়ি আছে।বুঝিল এটাও নিশ্চয় উনার শ্বশুরআব্বা আনাইছে।শ্বশুরআব্বা,আম্মাকে আবার সালাম জানাইলো।উনারা বললো উনাদের মেয়ে উনাদের কাছে ১৫ দিন থাকবে।বউয়ের মুখের দিক তাকিয়ে গাড়িতে উঠে রওয়ানা দিল।
.
বাবারে বাবা।একদিনে জান কাহিল।কোমড় ব্যাথা।আর যা খাওয়াইছে ৩ মাস না খেলেও মনে হয় হইয়া যাবে।বেচারা মফিজ।এত বাধ্য বইলাই মনে হয় এত আদর পায়।যাক ভালো বইলা ভালো বউ ও পাইছে।কপাল ভালা ছিল মনে হয়।মানে শ্বশুরবাড়ির সবার,মফিজের আর মফিজের বউয়েরও।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:১৯
প্রবঞ্চিত যুবক বলেছেন: ধরনের গল্পে ঘটনার ঘনঘটা থাকতে হয়। তা একটু কম ছিল। তবে ব্যাঙ্গাত্মক গল্প হিসেবে ভালই হয়েছে।