![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দুচোখ ভরিয়া আছে আঁখি জল কেহ নাই মুছিবার, হৃদয় ভরিয়া কথার কাকলি কেহ নাই শুনিবার ......।
মোবাইলের স্ক্রিনে নাম্বারটা দেখে মুহুর্তে আমার ঘুম উবে গেল । কাঁপা হাতে রিসিভ করতে গিয়েও পারলাম না । টাইম আউট । কেটে গেছে কল । আজ পর্যন্ত কেন জানি কোনদিন এই নাম্বারের কল একবারে রিসিভ করতে পারি নাই । কি এক ভয় পেয়ে বসে সব সময় । আমার বাবা, ছোট খাট এই মানুষটাকে কেন যে আমি এত ভয় পাই তা আজো ঠিক বুঝে উঠতে পারি না । সেই ছোটবেলা থেকেই কড়া শাসনের মাঝে মানুষ হয়েছি আমি । বাবার চোখে তাকিয়ে আজো কোন কথা বলতে পারিনা । কেনো জানি সব গুলিয়ে যায় । তাই আম্মাই ছিল আমার সব আব্দারের যোগানদাত্রী । আমাদের সমাজে বাবাকে ভয় পায় না এমন ছেলের সংখ্যা নেহাত কম না । আমার ক্ষেত্রে এই ভয়টা অবশ্য পাগলামি পর্যায়ের । তাঁর সাথে মোবাইলে কথা বলতেও আমার পা কাঁপে । অনার্স মাস্টার্স কমপ্লিট করে সাত মাস হয়ে গেল একটা চাকরি করছি । এই অবস্থায় হয়ত বাবাকে এতটা ভয় পাওয়া ভাল দেখায় না । তাই কিছুদিন থেকেই ভাবছি কোন সাইক্রিয়াটিস্টের সাথে কথা বলব । সময়ের অভাবেই হোক আর যেকারনেই হোক যাওয়া হয়ে উঠেনি । কিছুক্ষনের মাঝেই আবার বেজে উঠল মোবাইল । গলাটা যথাসম্ভব পরিষ্কার করে রিসিভ করলাম কল । ত্রিশ সেকেন্ডের মাঝে যে কথা হল তার সারমর্ম হল, আমার দাদার শরীরটা কিছুদিন যাবত ভাল যাচ্ছে না । আমি যেন আজ না পারলেও কালকের মধ্যে ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে আসি ।
পরের দিন সকাল
বাসে উঠলেই আমার কেমন একটা ঝিমুনীতে পেয়ে বসে, আজও তার ব্যতিক্রম হল না । বাসে যাত্রী তেমন নেই, ড্রাইভারও তাই কেমন জানি আস্তে আস্তে চালাচ্ছে গাড়ি আর যেখানে সেখানে যাত্রী তুলছে । ধুত্তরি বলে পাশের খালি সিটে পা তুলে একটা আরামের ঘুম দিলাম । কতক্ষন এমন ঘুমিয়ে ছিলাম মনে নাই । ঘুম ভাংলো হেল্পারের ধাক্কায় । আমার পাশের সিটের জন্য একজন যাত্রী উঠেছে, তাকে জায়গা ছেড়ে দিতে হবে ।কিছুটা বিরক্তি নিয়েই আমার সিটে বসলাম । আমার পাশের সিটের সহযাত্রীকে দেখে মুহুর্তে আমার বিরক্তি আনন্দে পরিনত হয়ে গেল । মেয়েটাকে সুন্দরী বলা যাবে না, তবে অসুন্দরও বলা যাবে না । কেমন একটা মায়াময় চেহারা, টানাটান চোখ । দেখলেই মনে হবে কোথায় যেন দেখেছি । তবে সুন্দরীর একটাই সমস্যা । প্লাগ করার ভ্রুর নিচে দুই ইঞ্ছির মত একটা কাটা দাগ । সম্ভবত দুই একটা সেলাইও দেয়া হয়েছিল । ভাববেন না আমি একবারেই এত কিছু দেখে ফেলেছি । গত দশ মিনিতে অন্তত কুড়ি বার তাকিয়েছি মেয়েটার দিকে । মেয়েটাও মনে হয় বুঝতে পেরেছে ব্যাপারটা । কেমন অহংকারী একটা ভাব নিয়ে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে । ভার্সিটি লাইফ থেকেই একটা কথা জেনে এসেছি, কোন মেয়েকে তুমি যত বেশি বেল দিবে, সে তত বেশি ভাব নিবে । হুহ, এমন সুন্দরী কত দেখেছি, এমন একটা ভাব নিয়ে তাই আমিও আর না তাকানোর প্রতিজ্ঞা করলাম । কিন্তু হায়, আমার এতোদিনের সন্ন্যাসী মন দুই মিনিটও ধরে রাখতে পারল না আমার অবাধ্য চোখকে । কিছুক্ষনের মাঝেই আবার তাকালাম । আর বুঝলাম পৃথিবীর সব থেকে বড় ভুল্টা করে বসেছি । সুন্দরী এই সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিল । আমাকে তাকাতে দেখে প্রশ্নভরা চোখে আমার দিকে তাকাল । ধরাপড়া চোরের মত আমতা আমতা করে শেষ চেষ্টা হিসাবে বলেই ফেললাম, আপনাকে কেমন জানি চেনা চেনা লাগছে । কোথায় জানি...... ?? সুন্দরী কটমট করে জবাব দিল, ও আচ্ছা, সেই কারনে বারবার তাকাচ্ছিলেন । লং জার্নিতে পাশের সিটে বসা মেয়েদের দিকে তাকালে সবারই চেনা চেনা লাগে । চুপসে যাওয়া বেলুনের মত মুখটা গোমড়া করে চোখ ফেরালাম, আর মনে মনে একশ একটা অশ্রাব্য গালি দিলাম নিজেকে । আমার এই অবস্থা দেখে সুন্দরী বেশ মজা পেয়েছে বুঝলাম । কেমন ঠোট বাকিয়ে হাসছে । দ্বিতীয় বারের মত ভুল করে বসলাম । আবার তাকালাম মেয়েটার দিকে । আজব ব্যাপারটা হল এবার সত্যি সত্যি মেয়েটাকে চেনা চেনা লাগছে । মায়াকাড়া এই চোখ, ঠোট, ভ্রুয়ের নিচের কাটা দাগ সব কেমন জানি চেনা মনে হচ্ছে । আমাকে অবাক করে দিয়ে মেয়েটা হেসে উঠল । তার সেই হাসির শব্দ আমার বুকের কোথায় গিয়ে জানি একটা ধাক্কা মারলো । আমার বুকের মাঝের একটা রঙ্গিন প্রজাপতির উড়াউড়ি স্পষ্ট দেখতে পেলাম । এইতো সেই মেয়ে, যাকে ভেবে ভেবে কত রাত চোখের পাতা এক করতে পারিনি । বুকে সাহস যোগার করে বলেই ফেললাম, আপনি মানে তুমি মৃদুলা না ? মৃদুলা হাসতে হাসতে জবাব দিলো, তাহলে মনে পড়েছে কোথায় দেখেছিলেন ? এতো ভয় পাচ্ছিলেন কেন ?
মৃদুলা, আমাদের পাশের গ্রামের মোহাইমেন আংকেলের মেয়ে । আমার কৈশরের প্রেম, যাকে কখনো বলতে পারিনি ভালবাসার কথা । আজ যেন নিয়তিই তাকে আমার কাছে এনে দিল । মেঘ না চাইতেই যে তুফান উঠল তাতে ধিরে ধিরে ভেঙ্গে পড়তে লাগল আমার সব জড়তা আর ভয় ।
সারাটা পথ অনেক কথা হল । আকারে ইঙ্গিতে বুঝাতে লাগলাম আমার ভালবাসার কথা । কেন জানি মনে হচ্ছিল আজ যদি এই মেয়েকে আমি না বলতে পারি আর কোন দিন আমি বলতে পারব না । হয়ত এই ভয়ে একটু বেশিই নিজেকে প্রকাশ করে ফেলেছিলাম । মৃদুলাও নীরব চোখের ভাষায় বুঝিয়েছিল তার সম্মতির কথা । কিন্তু, আমার প্রথম প্রেমের যে এখানেই অপমৃত্যু হবে তা কল্পনাতেও ভাবতে পারিনি । মনে অনেক আনন্দ নিয়েই বাড়ি ফিরেছিলাম । রাতের খাবারের সময় বুঝতে পারলাম কেন আমাকে এমন করে ডেকে আনা হয়েছে । দাদুর শরীর দিন দিন খারাপ হচ্ছে, তাঁর খুব ইচ্ছে তাঁর একমাত্র নাতির বউ দেখে যাবে । তাই বাবা আমার জন্য মেয়ে ঠিক করেছে, কালকেই তারা মেয়ে দেখতে যাবে আমাকে নিয়ে । সবঠিক থাকলে কালকেই বিয়ে । আগেই বলেছি, বাবার সামনে আমি ইদুরের মত হয়ে যাই । আজকেও কিছু বলতে পারলাম না । শুধু মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানিয়ে ঘরে ফিরে আসলাম । এখন আমার একমাত্র আশ্রয় আম্মা । কিন্তু, অনেক বুঝানোর পরও আম্মা তেমন কিছুই বললেন না, শুধু কেদে কেদে বললেন, তোর দাদুর শরীর খুব খারাপ । কখন কি হয় বলা যায় না । বুঝলাম, এবার আমার কয়েক ঘন্টার প্রেমকে কুরবানী করতে হবে । পরের দিন বিকালে আমার জীবনের প্রথম এবং একমাত্র প্রেমকে কুরবানি দিয়ে বিয়ে করতে গেলাম সবাইকে সাথে নিয়ে । আমার কপালকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দাদু পুরাই সুস্থ মানুষের মত আমার সাথে মশকরা করতে করতে চলল ।।
[বিয়ের তিনদিন পর আজ আমার কর্মস্থলে ফিরছি বউকে নিয়ে । পুরাপুরি আদুরে স্বামীর মত গলা করে বউকে বললাম, আজ আমার সাথে চল না, আমার ঘরটা ভাল করে গুছিয়ে দিয়ে আসবে । আমার বউ মুচকি হেসে কটমট করে বলল, না, আমি ভার্সিটির গেটে নেমে যাব । পরশু আমার পরীক্ষা । পরীক্ষা শেষ হলে গিয়ে গুছিয়ে দিয়ে আসব,কেমন ?? কিছুই বললাম না । শুধু দুখি দুখি চোখে চেয়ে থাকলাম তার ভ্রুয়ের নিচের কাটা দাগটার দিকে, সেখানে সম্ভবত দুইটা সেলাই দেয়া হয়েছিল ।]
০২ রা এপ্রিল, ২০১২ রাত ৮:১০
বাউন্ডুলে শিকু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে
২| ০২ রা এপ্রিল, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৪০
নিশি কথক বলেছেন: অসাধারণ!!!!!!
০২ রা এপ্রিল, ২০১২ রাত ৮:১১
বাউন্ডুলে শিকু বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ কষ্ট করে পড়ার জন্য
৩| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১২ রাত ৯:০৭
ইশতিয়াক আহমেদ চয়ন বলেছেন: দারুণ লাগল!!নাটকীয় কাহিনী তবে কটমটে মেয়ে এরকম অনেক আছে কিন্তু
০৫ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ১২:৫৩
বাউন্ডুলে শিকু বলেছেন: তাই নাকি ??
আমি ভাই এই রকম একটা কটমটে মেয়ের অপেক্ষায় আছি .।
পাইলে খোঁজ দিয়েন ।
৪| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১২ রাত ৯:০৮
ঈষাম বলেছেন: দারুণ হয়েছে!
০৫ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ১২:৫৬
বাউন্ডুলে শিকু বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা
৫| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ১:৩৪
মাহ্মুদুল হাসান । বলেছেন: শুভ সমাপ্তি!
০৫ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ২:০২
বাউন্ডুলে শিকু বলেছেন: সবাই শুভ সমাপ্তি আশা করে, তাই ।
৬| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ১:৪৪
হিবিজিবি বলেছেন: দারুন!!
০৫ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ২:০৩
বাউন্ডুলে শিকু বলেছেন: ধন্যবাদ
৭| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ১:৫৩
রাতুল_শাহ বলেছেন: পিসিতে সেভ করে রাখলাম। পরে পড়ব।
০৫ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ২:০৫
বাউন্ডুলে শিকু বলেছেন: ইনশাল্লাহ বলেন ভাই
৮| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ২:১৬
কখনো মেঘ, কখনো বৃষ্টি বলেছেন: কি সুন্দর প্রেম-ভালোবাসা
বেশি কটমটে যে মেয়ে তার মধ্যেও কিন্তু গভীর ভালোবাসা লুকানো থাকে।
০৫ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ২:২০
বাউন্ডুলে শিকু বলেছেন: ভাই, কানে কানে বলি, আমিও এই রকম একটা কটমটে মাইয়া খুজতেছি
কাউরে কইয়েন না
৯| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ৩:২৭
কখনো মেঘ, কখনো বৃষ্টি বলেছেন: আমার পেটে কথা থাকে না! গোপন রাখতে গেলে কথা, পরে আবার পেট খারাপ হইবেক!
০৫ ই এপ্রিল, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫৮
বাউন্ডুলে শিকু বলেছেন: ভ্রাতা, আপনার জন্য টেস্টি হজমী আনতেছি, টক মিষ্টি ঝাল
ঝাল ।।
১০| ১০ ই এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ১:১০
আরজু পনি বলেছেন:
আপনার হৃদয় ভরা কথার কাকলি শুনতে এলাম
বলতে থাকুন
১০ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ৯:৪২
বাউন্ডুলে শিকু বলেছেন: জোরে জোরে বলব, নাকি কানে কানে বলব
১১| ১০ ই এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ১:২৭
আহমেদ সাব্বির পল্লব বলেছেন: গুড হইছে গল্প.....।
১০ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ৯:৪৩
বাউন্ডুলে শিকু বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।
১২| ০৪ ঠা মে, ২০১২ রাত ৩:৩৬
নোমান নমি বলেছেন: হ্যাপি এন্ডিং।বুঝে নিয়েছিলাম এরকম কিছু হবে।তবুও ভাল।
০৫ ই মে, ২০১২ রাত ৯:২৭
বাউন্ডুলে শিকু বলেছেন: হে হে হে, ধন্যবাদ ।
১৩| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:১০
সুদীপ্ত কর বলেছেন: ডেন্জারাস মেয়ে
ভালো লাগলো
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:০১
বাউন্ডুলে শিকু বলেছেন: হুম, সহজ সরল ছেলে ।
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা এপ্রিল, ২০১২ ভোর ৬:১৮
দুঃখ বিলাসি বলেছেন: ভাল লাগলো।
++++