| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বর পাহাড়ী সন্ত্রাসী সংগঠন ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ভেঙ্গে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) গঠিত হলে পাহাড়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম আশংকাজনক ভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে। গত ছয় মাসে পাহাড়ী সন্ত্রাসী সংগঠন কর্তৃক জনপ্রতিনিধি সহ অন্তত ২০ জন নিহত হয়। এছাড়াও আনুমানিক ২০০ জন ব্যক্তিকে অপহরণ, অসংখ্য বাড়িঘর ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ এবং গুলি বিনিময়ের ঘটনা পাহাড়কে অশান্ত করে তুলেছে। আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর মধ্যে জেএসএস (মূল), জেএসএস (সংস্কার), ইউপিডিএফ (মূল), ইউপিডিএফ (গনতান্ত্রিক) এই ৪টি সংগঠনই তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পর হতে এ পর্যন্ত প্রায় ৮০০ জনের প্রানহানি ঘটেছে-রক্তাক্ত হয়েছে পাহাড়ী জনপদ। শান্তি চুক্তির মাধ্যমে অস্ত্র সমর্পনের কথা থাকলেও সকল অস্ত্র সমর্পন হয়নি বলে প্রতীয়মান হয়। সন্তু লারমার দল জেএসএস এবং ইউপিডিএফ অস্ত্র সমর্পন না করে চুক্তি ভঙ্গ করেছে, যা আজ প্রমানিত। ফলশ্রুতিতে পাহাড়ে বিরাজ করছে অশান্তি এবং এটি সরকারের জন্য একটি অশনি সংকেত।
১৯৯৭ সালের ০২ ডিসেম্বর শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবার পর শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সরকার যখন বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করছে, পাহাড়ে সববাসকারী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়নে চেষ্টা যখন অব্যাহত রেখেছে, ঠিক তখনই জেএসএস ও ইউপিডিএফের মত সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো বাধা হয়ে দাড়িয়েছে। সয়ংক্রিয় অস্ত্রের মহড়া, গোলাগুলি, অপহরণ, চাঁদাবাজি, মুক্তিপন আদায়সহ নানা ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে আঞ্চলিক ও সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো শান্তি চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নের পথকে সংকুচিত করে রেখেছে। জিম্মি করে রেখেছে পাহাড়ে বাসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর শান্তিপ্রিয় মানুষ আর নিরীহ বাঙালিদেরকে।
জেএসএস এবং ইউপিডিএফ এর কার্যক্রমকে বিশ্লেষণ করলে স্পষ্টই দেখা যায় যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের দলগুলো আঞ্চলিক রাজনীতিতে আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টা, চাঁদাবাজি ও মুক্তিপন আদায়ের মাধ্যমে বিপুল পরিমান অর্থ উপার্জন (বছরে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা), চাঁদার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে লিপ্ত রয়েছে। মূলধারার রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিজেদের সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত লাভে সক্ষম হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী যখনই তাদের এ সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তখনই এ সংগঠনগুলো এবং কিছু চিহিুত বুদ্ধিজীবি সেনাবাহিনীর বিপক্ষে অপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনের ব্যানারে এ সকল সন্ত্রাসী দলগুলোই পার্বত্য অঞ্চলে মোতায়েনকৃত সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার এবং তাদের প্রত্যাহা¬রের জন্য সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি অব্যাহত রেখেছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হলে উ¬¬ল্লখিত সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা আরও সহজতর হবে। অপপ্রচারের মাধ্যমে ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হলে সেনাবাহিনীর সক্ষমতা হ্রাস পাবে এবং সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তার লাভ করবে যা সরকারের বিপক্ষে মুখোমুখি অবস্থান তৈরীতে সহায়তা করবে। বাংলাদেশের অখন্ডতা পুনরায় হুমকির সম্মখুীন হবে।
অন্যদিকে, শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবার পর পার্বত্য অঞ্চলে আঞ্চলিক রাজনীতির নতুন মেরুকরণ দেশের মূলধারার রাজনীতিকে তুলনামূলক ভাবে দূর্বল করে ফেলেছে। এছাড়া, ১৭/১৮ বছরের অনির্বাচিত আঞ্চলিক পরিষদ ক্রমশই অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হওয়ায় প্রশাসনিক কার্যক্রম বহুলাংশে ব্যহত হচ্ছে এবং সন্ত্রাসীরাই উৎসাহিত হচ্ছে। অস্ত্র যোগান এবং ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধিই পাচ্ছে যা পাহাড়ে শান্তি বিনষ্টের অন্যতম প্রধান কারণ।
আলোচ্য ৪টি সন্ত্রাসী সংগঠনের কার্যক্রমে একটি বিষয় খুবই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, তারা কোন নিয়মতান্ত্রিক আন্দলনের সাথে সংশ্লিষ্ট নয়। তারা পাহাড়ী জন¬গোষ্ঠীর উন্নয়নে কোন ভূমিকাও পালন কর¬ছে না। তারা শুধুমাত্র ব্যক্তি স্বার্থ চরিচার্থ করার জন্যই হানাহানিতে লিপ্ত রয়েছে এবং পাহাড়ের শান্তি বিনষ্ট করছে। দিন দিন তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপে ভুলুণ্ঠিত হচ্ছে পাহাড়ের মানবতা, সুখ শান্তি। জিম্মি হয়ে পড়েছে পাহাড়ের নিরীহ জনগোষ্ঠী।
একের পর এক খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজি, মুক্তিপন আদায়, অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের ঘটনায় পাহাড়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কোন দল-কোন দলকে ছাড় দিচ্ছে না, চলছে অস্ত্রের মহড়া। সাম্প্রতিক কালে সংগঠিত ঘটনা সমূহের বিষয়ে সন্তু লারমা, রাজা দেবাশীষ রায়, তার পত্নী রানী ইয়েন ইয়েন, সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল কেউই কোন মন্তব্য করেননি। কিন্তু ইতোপূর্বে উল্লেখিত ব্যক্তিগণ নিরাপত্তা বাহিনীর বিপক্ষে মিথ্যাচার করতে কুণ্ঠিত হননি। পাহাড়ে বসবাসকৃত বাঙালিদের উচ্ছেদ করতেও নানা রকম ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন। আজ তাদেরই সমর্থনপুষ্ঠ সন্ত্রাসীদের তান্ডবে পাহাড় যখন রক্তে লাল তখন তারা মুখ বন্ধ করে বসে আছেন। এ থেকেই বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও সরকারের প্রতি তাদের ষড়যন্ত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃ-¬গোষ্ঠী এবং বাঙালি সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণ এ মূহুর্তে সরকারের প্রধান কর্তব্য। পাহাড়ে বসবাসকৃত সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত কর¬তে সরকা¬রের পক্ষ হ¬তে এখনই কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে। তন্মধ্যে পার্বত্য অঞ্চলের সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস (মূল), জেএসএস (সংস্কার), ইউপিডিএফ (মূল) এবং ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক)কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা, উক্ত সংগঠনগুলোর অধ্যুষিত এলাকায় সেনা ক্যাম্প সম্প্রসারণ, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক নিয়মিত বি¬শেষ অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করা, পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা, সন্ত্রাসীদের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট ধরি¬য়ে দি¬তে সামাজিক স¬চেতনতা বৃদ্ধি করা, পাহাড়ী অঞ্চ¬লে বাংলা¬দে¬শের মূলধারার রাজনীতি সম্প্রসারণ করা ও সাধারণ মানু¬¬ষর রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা বৃদ্ধি করা, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে আঞ্চলিক পরিষদ পরিচালনা করা, পাহাড়ে বসবাসকৃত ক্ষুদ্র নৃ-¬গোষ্ঠী ও বাঙালিদের স্বার্থ সমানভাবে রক্ষা করা।
রাজনৈতিক দৃঢ়তা এবং একটি শক্তিশালী প্রশাসনিক কাঠামোই পারে সমালোচনার উর্দ্ধে উঠে সন্ত্রাসীদের নির্মূল করে পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে দিতে। অন্যথায়, পাহাড়ের অশান্তি সরকারকে বড় কোন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাড় করাতে পারে এবং যা দেশ ও জাতির জন্য হবে অকল্যানকর।
০৭ ই জুন, ২০১৮ সকাল ৯:০৬
সোহেল আহমেদ নাসিম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে
২|
০৭ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১০:৪৩
লাবণ্য ২ বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।শুভকামনা রইলো।
০৭ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১১:৩১
সোহেল আহমেদ নাসিম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে
৩|
২০ শে জুন, ২০১৮ সকাল ১১:৪৫
রাজীব নুর বলেছেন: এই লেখাটা আগে কোথায় যেন পড়েছি।
২০ শে জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:২৯
সোহেল আহমেদ নাসিম বলেছেন: এই লেখাটি এর আগে কোথাও প্রকাশিত হয়নি
৪|
২৯ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৮:৫৯
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ভালো পোষ্ট। শুভ ব্লগিং
পাহাড়ের অবস্থা তাহলেতো অত্যন্ত জটিল। জনজীবনও তেমনি যথেষ্ট ভীতিপ্রদ।
এর আশু সমাধান দরকার।
শুভকামনা রইল।
২৯ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৯:১০
সোহেল আহমেদ নাসিম বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই জুন, ২০১৮ রাত ১২:৩৩
শামচুল হক বলেছেন: সুন্দর লেখা