নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

রোকসানা লেইস

প্রকৃতি আমার হৃদয়

রোকসানা লেইস › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিশুকে মানুষ করে গড়ে তোলার দায়িত্ব অভিভাবকের

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:২১





ভিক্টোরিয়া নামের এই শিক্ষক নিজের জীবন দিলেন আর বাঁচিয়ে গেলেন ফুলের মতন শিশুদের। তার প্রতি আমার শ্রদ্ধা আর ওই ইবলিশ যে বিখ্যাত হতে চায় বিভৎসতার মধ্য দিয়ে তার প্রতি ঘৃণা।

ভিক্টোরিয়ার মতন একজন মানুষ সুন্দর একটি পরিবার থেকেই আসতে পারে আর অসুস্থ পরিবার তৈরী করে হত্যাকারী খুনি অমানবিক মানুষ।

প্রতিটি অভিভাবক একজন মানবিক মানুষ গড়ার শিক্ষক। শিশুর জন্মদান শুরুর প্রক্রিয়া থেকে তাদের শিক্ষকতার কাজ অত্যন্ত ধৈর্য সহকারে ভালোবাসার মাধ্যমে করা উচিৎ। শুধু বাচ্চার জন্ম দিয়ে পিতা মাতা হলেই হলো না। অনেকে আবার মনে করেন বাচ্চা দেখাশোনার কাজ কেবল মা করবে। এটাও ভুল ধারনা। বাবার যথেষ্ট দায়িত্ব থাকে একটি বাচ্চার জন্য।



আপনার বাচ্চা কে যদি জিজ্ঞেস করেন। তুমি কাকে বেশী ভালোবাস বাবাকে না মাকে? বাচ্চার মনের উপর ভীষণ রকম চাপ পরার মতন একটি প্রশ্ন। বাচ্চা কিছুতেই বলতে চায় না। কাকে বেশী ভালোবাসে কিন্তু জোর করে কথাটা শুনতে ইচ্ছুক বাবা বা মা। আমাকে একটু বেশী ভালোবাসুক অন্যজনের চেয়ে এমনটা চান। আমরা খুব আমিকে পছন্দ করি। আমার সব কিছু অনেক ভালো, সবার উপরে। এই ভাবনায় বাচ্চাকে আমাদের নিজেস্ব সম্পত্তি ভাবি। সে একটা আলাদা ব্যাক্তি। নিজের সন্তান আপন ইচ্ছা অনিচ্ছার 'আমি' এটা ভাবতে বা মানতে বড় কষ্ট হয়। মানি না, জানিও না অনেক সময়।

কিছু হলেই ইচ্ছে মতন বকা মার দিতে এতটুকু কাপর্ণ্য করা হয় না। কিন্তু কখনও কি ভেবে দেখেছেন। কতটা প্রভাব এতে বাচ্চার মনের উপর পরে। নিজের ছোটবেলার কথা ভেবে দেখুন। উন্নত দেশগুলোতে বাচ্চাকে না মারার জন্য আইন আছে। অনুন্নত দেশের অভিভাবক উন্নত দেশে এসে নানা রকম বিপত্তির মধ্যে পরেন নিজের সন্তানকে মারার কারণে পুলিশ ধরে নিয়ে যায় অনেক সময়। জেলে থাকতে হয়। বাচ্চারা জানে তাদের সাহায্যের জন্য স্কুলে শিক্ষককে বলতে পারে বা জরুরী বিভাগে ফোন করে সাহায্য পেতে পারে।

তবে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে বাচ্চারা সহ্য করে যায় বাবা মা এর বকাঝকা, মার। বাবা মার বিরুদ্ধে সচরাচর তারা নালিশ করতে চায় না। এটা খুব ভেবে চিন্তে তারা করে না, তাদের ছোট্ট মনে কিভাবে যেন এই অনুভুতির জন্ম হয় তারা বাবা মাকে ভালবাসে। কিন্তু অনেক সময় বাচ্চার গায়ে মারের দাগ দেখে শিক্ষক বাচ্চার কাছ থেকে জানার চেষ্টা করেন।

তবে ছোট মনে প্রতিক্রিয়া গুলো জমতে থাকে পলির পরে পলি পরে। তারা সুযোগ পেলে নিজেদের উপর অত্যাচারের প্রতিফলন ঘটায় ছোট ভাই বোন থেকে কাজের লোক যারা চিরকাল অবহেলিত তাদের থেকে বন্ধুবান্ধবের উপর ধীরে ধীরে স্বভাবটা মজ্জাগত হয়ে উঠে বিস্তার বাড়তে থাকে অত্যাচার করার।

যদি অভিবাবক সঠিক ভাবে সঠিক সময়ে সেদিকে নজর না দেন।

বাবা মা দুজন যখন ঝগড়া করেন। তার এক বিশাল প্রতিক্রিয়াও বাচ্চাদের মনজগতে বাসা বাঁধে। তারা অসহায় হয়ে উঠে মনে মনে। এবং নিজেরাও অবচেতন ভাবে ঝগড়া করার বিষয়টি শিখে যায়।

মনের মধ্যে পরিসুদ্ধ হওয়ার মানবিক ফিলটার সব সময় মানুষ হওয়ার পথে এগিয়ে নিয়ে যায় কিন্তু পরিবেশের প্রভাব সেই পরিশুদ্ধিকরণ প্রথা অকেজো করে ফেলে। ভয়ংকর বিভৎস চিন্তায় নিমজ্জিত করে ফেলে। যার ফলে এক সময় তার প্রকাশ হয় ভয়াবহ ভাবে। আর ভালোবেসে বাচ্চাদের হাতে যুদ্ধ খেলা (ফাইটিং গেইম), বন্দুক ইত্যাদি তুলে দিয়েও তাদের ভয়ঙ্কর হওয়ার অনুপ্রেরণা দেয়া হয় অবচেতন ভাবে অনেক সময়।

আপনার বাচ্চাকে কি প্রচলিত প্রথার গড্ডালিকায় ভেসে যেতে দিবেন নাকি তাকে সুস্থতার চিন্তা চেতনার বিকাশ হওয়ার সুযোগ দিবেন। তা বাচ্চা জন্ম দেয়ার আগেই ভাবুন। নয়তো শুধু বাবা মা হওয়ার জন্য বাচ্চা জন্ম না দেয়াই ভালো।

গতরাতেই আমরা কিছু বন্ধ যখন কথা বলছিলাম তখন জানলাম প্রতিবেশী একটি পরিবারের কথা। বৃদ্ধলোকটি অসহায় একা হয়ে আছে কিন্তু তার জীবনে বারবার ঘুরে ফিরে এসেছে পরিবারের মানুষের দেয়া দূর্যোগ। সে সুন্দর একটি পরিবার গড়তে পারে নাই। একটি মেয়ে যে দুটি অবুঝ বাচ্চাকে মেরে নিজেকে গুলি করে মেরে ফেলে। তার জীবনে ছিল ছোটবেলা মাকে এমন ভাবে মৃত্যু বরণ করতে দেখার ভয়াবহ স্মৃতি।

যে বাচ্চাগুলো শিক্ষকের মৃত্যু দেখল ক্লোজটে লুকিয়ে থেকে তাদের সারা জীবনের জন্য স্কুল এক আতংকের জায়গা হয়ে রইল। এই স্মৃতি কাটানোর জন্য মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন পরতে পারে অনেকের। প্রয়োজন ভালোবাসায় ভুলিয়ে আতংক দূর করার চেষ্টা নিতে হবে অভিভাবকদের।

আমার নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলি। আমার ছোটবোনটা আমার অনেক ছোট। ওর জীবনে শিক্ষা চেতনা বিকাশের এক বিরাট ভূমিকা আমার। না জেনেই আমি সে দ্বায়িত্ব পালন করেছিলাম সে সময় ছোট পুতুলের মতন শিখতে চাওয়া মানুষটাকে শিখানোর আনন্দে। পরে জেনেছি বই পড়ে বাচ্চারা শিখে ফেলে পাঁচ বছর পর্যন্ত অনেক দ্রুত সব কিছু। তাইতো বিরাট কবিতা ইংলিশ বাংলা সে শিখে ফেলেছিল কথা বলার সাথেই আর আগ্রহ জন্মে গিয়েছিল শিখার যা এখনও তেমনি আটুট আছে। আবার প্রচণ্ড সাহসী ছোট্ মেয়েটার মনে একটা আতংক আমি ঢুকিয়ে দিয়েছি না জেনে সেই ছোট বয়সে।

বারবার দৌড়ে চলে যেত ছোট ছোট পায়ে যেখানে সেখানে। আমি তাকে ভয় দেখালাম ওখানে যাস না। মাকড়শা আসবে। সেই যে মাকড়শা ভীতি ওর মাঝে ঢুকে গেল। অনেক কিছু বেশী বুঝলেও মাকড়শা ভীতি আজও কাটিয়ে উঠতে পারেনি।

তাই বাচ্চাদের মনে কখন কোনটার প্রভাব কিভাবে পরে সেদিকে প্রখর খেয়াল রাখা দরকার অভিবাবকের।

বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে সব বাচ্চারা অযত্নে অবহেলায় বড় হয় তাদের মধ্যে নানান রকম বিকৃত মনোভাব। অন্য বাচ্চাদের অবদমন করার চেষ্টা, রাগ, বদরাগ, বা অবদমিত প্রতিহিংসা নিয়ে বড় হয়।

বাচ্চাদের ভালোবাসা মানে বাচ্চাদের খেলনা, কাপড়, খাওয়া যখন যা চাইল তা দিয়ে স্পয়েলড করাটাও ঠিক না আপনার আছে বলেই। অনেক অভিভাবক আবার আছে বলে দেখানোর জন্য বা না বুঝেই এমন অনেক কিছু দিয়ে বাচ্চাদের মাথায় বড়াই অহংবোধ ঢুকিয়ে দেন।

আপনি যখন গল্প করছেন বন্ধুর সাথে বা অন্য কারো সাথে দেখবেন বাচ্চা অনেক বেশী তখন আপনাকে ডাকছে। আপনি বলবেন বড্ড বিরক্ত করছে সে কিন্তু আসলে অসহায় অনুভব করছে আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করছে। বাচ্চা বড় করে তুলার সময়টায় নিজের অনেক বিষয় আসলে বাদ দিয়ে বাচ্চার জন্য সময় করতে হবে। অনেকে আবার টিভি চালিয়ে দিয়ে বাচ্চা বসিয়ে রাখেন সেই ছবি মনে কি প্রতিক্রিয়া করছে তার খবর নিয়ে দেখেছেন?

সবচেয়ে বড় কথা হলো আপনি যাই করুন বাচ্চাদের জন্য সময় বের করুন। তাদের সাথে নানান বিষয়ে কথা বলুন। বাচ্চাদের অসংখ্য কৌতুহলগুলো ভালোবাসা দিয়ে মিটান। গল্প বলেন। ইতিহাস, সংস্কৃতি, পৃথিবী নিয়ে তাদের জ্ঞানের সীমা বাড়িয়ে দেন যেন তারা মানবতায় ভালোবাসায় মানবিক হয়ে উঠতে পারে। যতদিন সম্ভব বাচ্চার সাথে সময় কাটান তাদের মানুষ করে তুলতে। এক সময় সময়ের প্রয়োজনে তারা দূরে চলে যাবে কিন্তু আপনার ভালোবাসা তাদের ঠিক আপনার কাছে রাখবে আর তাদের সফলতা আপনাকে দিবে আনন্দ্। হবেন সার্থক পিতামাতা।





মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:৩৬

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: পড়ে খুব ভাল লাগলো । পোস্টে প্লাস ।

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৫৯

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ গিয়াসলিটন
নিজের জীবনে চর্চা করার চেষ্টা করো আসেপাশের মানুষকেও সচেতন করে তোল ।
শুভকামনা

২| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:৪৩

তোমোদাচি বলেছেন: বাচ্চাদের নিয়ে আপনার লেখা লেখি খুব ভাল লাগে!

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:২৩

রোকসানা লেইস বলেছেন: বাচ্চারা তো জীবনের প্রাণ নতুন ভবিষ্যত ওদের ভালবাসায় পৃথিবীর পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব আমাদের।

শুধু ভালোলাগা নয় চর্চা চলুক
শুভকামনা তোমোদাচি

৩| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১২ ভোর ৫:৫৮

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: অনেক ভালো লিখেছেন +++++++++


শুভকামনা রইল ।

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১:২৪

রোকসানা লেইস বলেছেন: শুভকামনা অপূর্ণ

৪| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১২ ভোর ৪:৪৮

জাতির শ্বশুর বলেছেন: ভালো লাগলো+++++

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:১০

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ

৫| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:৫৪

নীলপথিক বলেছেন: কিছু বিষয়ের সাথে একমত হতে পারছি না। তবে শেখার আছে অনেক কিছু। আপনার পোস্ট পড়ে শিখলাম।

আমার ২২ মাস বয়সি ছানাটাকে আমি পিঁপড়া আর মশার ভয় দেখাই। মনে হয় একটু বড় হলে খুব সহজেই ব্যাপারটাকে সে ট্যাকল করতে পারবে। তবে তেলাপোকার ভয় দেখানো ছেড়ে দিয়েছি। ভয় না দেখালে সে মোটেও ঘুমোতে যেতে চায় না।

৬| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৫১

রোকসানা লেইস বলেছেন: ঠিক কোন বিষয়ের সাথে একমত হতে পারলেন না জানলে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করতাম।
ক দিন ধরে একটা কথা মনে আসছে কেন যেন সেটাই বলে দেই..."গ্যালিলীয়" কে ধর্ম ভীরু শাসক ধরে নিয়ে বন্দী করল, অনেক অত্যাচার করল, অত্যাচারে জর্জরিত হয়েও বিড়বিড় করে বলে যাচ্ছিল," তোমরা যাই বলো, আমাকে যতই অত্যাচার করো কিন্তু আমি জানি, সূর্য ঘুরে না, পৃথিবীই সূর্যের চারপাশে ঘুরে।" অভ্যস্থ বিষয়গুলো থেকে সহজে বেড়িয়ে আসা যায় না।
ট্যাকেল করতে পারবে কিনা সেটা ভবিষ্যত বলতে পারবে। কেউ কাটিয়ে উঠতে পারে কেউ পারে না। তবে গাইড করা আর শাসনে রাখা দুই রকম বিষয়। ভালোবাসা দিয়ে বোঝান আর ধমক দিয়ে একটা কথা বলে দেখেন কোনটা কাজ করে। আমরা মনে করি ধমক কিন্তু ভালোবাসার শক্তি অনেক বেশী। যার চর্চা দূরে সরিয়ে রাখা হয়।
খিদা আর ঘুম শরীরের প্রয়োজনে আসবে আপনাকে অভ্যাস করাতে হবে।

৭| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০৩

নীলপথিক বলেছেন: ঘুমের অভ্যেস করাবার জন্যই কিন্তু পিঁপড়া আর মশার ভয় দেখানো। অভ্যস্ত হয়ে গেলে আর ভয় দেখাবার প্রশ্নই আসতো না। আর বাঙ্গালী ছেলে তো? পিঁপড়া আর মশা ভয় পাবে এমনটা ভাবা অতিকল্পনা হয়ে যায়।

উন্নত দেশগুলোতে বাচ্চা-কাচ্চাদের ব্যাপারে যা আইন থাকুক সেটা আমাদের বিবেচ্য বিষয় হওয়া উচিৎ নয়। একটু বুঝিয়ে বলি। মার-ধোর ব্যাপারটা কোনক্রমেই গ্রহনযোগ্য নয় কিন্তু আমি যদি আমার বাচ্চাকে কোনভাবে আঘাত করেও থাকি আমাকে নিশ্চিত করতে হবে সেটা তাকে মানসিকভাবে যেন কোনক্রমেই আহত না করে। এখন এ ব্যাপারে যদি রাষ্ট্রের আইন আমার বিপক্ষে যায় তাহলে এমন আইন মানুষের কল্যানের জন্য নয়। আপনি ধার্মিক হয়ে থাকলে দেখবেন সৃষ্টিকর্তা সাবালকদের প্রার্থনার জন্য প্রয়োজনে তাদের পিতা-মাতাদের মৃদু প্রহার করতেও বলেছেন। আপনি নাস্তিক হয়ে থাকলেও আপত্তি নেই। আপনার সন্তানের ভালো-মন্দ আপনার চেয়ে আইনের বেশী বোঝার কথা নয়। আইন এখানে বাচ্চাদের অহেতুক এমন ক্ষমতা দিচ্ছে যার অপব্যবহার বাচ্চারা হরদম করে যাচ্ছে। আমার নিজের আত্নীয়রাই এর শিকার।
নিউইয়র্ক প্রবাসী আমার এক পরিচিতা তার সন্তানদের নিয়ে বিপদে পড়েছেন। ষোলতেই তার কন্যা ডেটিং-এ যাচ্ছে প্রতি হপ্তায়ই বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে। চৌদ্দ বছরে তার প্রথম গর্ভপাত করা হয়। ব্যাপারটা আইনতঃ দন্ডনীয় হলেও দায়ী ছেলেটিও আঠারোর নীচে। ভাবুন অবস্থা!
আদতে এ ধরনের আইন করে শিশুদের হাতে স্বাধীনতা তুলে নিয়ে আমরা নিজেদের থেকেই আমাদের শিশুদের দূরে ঠেলে দিচ্ছি। ভালোবাসা অবশ্যই ভালো, কিন্তু ভালোবাসাতে সব সমাধান নেই। আমার নিজের ছোটবোনই তার উদাহরণ। এখনও তাকে যথেষ্ট ভালোবাসলেও সে কখনোই তার মূল্যায়ন করেনি। কিছুদিন পরেই তার বিয়ে হবে কিন্তু দেখুন বড়দের সন্মান ব্যাপারটা তার ধাতে নেই। শাসন না করবার কু-ফল? কি জানি? হতেও পারে।

শিশুদের আমাদের থেকে দূরে ঠেলে দিয়ে আমরা কি করছি? তাদের ভেতরের মানবিক মুল্যবোধের যে চর্চা প্রয়োজন তার কতটুকু অগ্রগতি তার কোন খবরই নেই আমাদের। এত উন্নত দেশ, এত ভালো আইন তারপরেও দেখুন নায়াগ্রার পাওয়ার ফল করলে কি ঘটলো? লুট-পাট, দাঙ্গা হাঙ্গামা ছড়িয়ে পড়লো মিশিগান, ডেট্রয়েট এসব জায়গায়। যারা লুটতরাজে অংশগ্রহন করলো তারা কেউই দাগী আসামি নয়। আমার আপনার মতোই সাধারন মানুষ। আইন যাদের বাবা-মায়ের শাসন থেকে সবসময় মুক্ত রেখে মুক্ত চিন্তা করা শিখিয়েছে। মারধোরও ভালো কিছু বয়ে আনে না। কারণ, বেশিরভাগ সময়েই আমরা বাচ্চাদের গায়ে হাত তুলি শেখানোর থেকে নিজের রাগের ঝালটা মেটাবার উদ্দেশ্যেই। মোদ্দাকথা, আপনার নিজের অবস্থার কথা চিন্তা করে আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কোন ছাঁচে ফেলে বাচ্চা মানুষ করা যায় বলে মনে হয় না। প্রতিটি মানুষই ভিন্ন, কাজেই কার জন্য কি করতে হবে মা-রাই ভালো বুঝবেন।

৮| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৫:৩৩

রোকসানা লেইস বলেছেন: বিষয়টা আপনি অনেক বেশী গুরুত্ব দিচ্ছেন দেখে ভালোলাগল।
আসলে সকল প্রশ্নের জন্য আরো বিশাল একটা লিখা লিখতে হয় বিস্তারীত ভাবে।
আপাতত: বলি, আমি ধর্ম নিয়ম, প্রাচ্য এবং পশ্চাত্যের বিষয়গুলো অনেক অবলোকন করে বাস্তবতার মধ্যে দিয়ে আজকের ধারণায় অবতির্ণ হয়েছি বলতে পারেন। আমার জন্য যা কাজ করেছে আপনার জন্য তা নাও করতে পারে।
আসলে আমরা নিয়মের মাধ্যমে মানুষের চরিত্র বেধে ফেলতে চাই।
কিন্তু আমার মনে হয় প্রতিটি মানুষ একটা ভিন্ন সত্ত্বা। অভিভাবক শুধু বড় করে দিয়ে যাচ্ছেন। একই পরিবারের কয়েকটি সন্তানের ভিন্ন আচরণ খেয়াল করে দেখবেন। কহলিল জীব্রানের 'সন্তান' কবিতাটাই মনে হয় ঠিক। শুধু বড় করে দেয়ার দায়িত্ব। তারপর তারা তাদের পথে চলে যাবে।
অনেক আগে যে নিয়ম মেনে চলতে হতো আমাদের আব্বাস উদ্দিন বা আব্দুল আলীম, জয়নাল আবেদিন, তাদের প্রবিত্তির তাড়নায় শিল্পী হয়ে উঠেছেন পারিবারিক সকল বাঁধার পর ও। পারিবারিক নিয়ম মেনে চললে তাদের আমরা পেতাম না হতেন সাধারন মানুষ।
বিদেশী মানেই যথেচ্ছে দৈহিক মিলনে জীবন কাটায় এই ধারণাটা সম্পূর্ণ ভুল। আমি এখানে অনেক সাদা কালো, হলুদ বাদামী সন্তানদের আমার চোখের সামনে বড় হয়ে উঠতে দেখেছি যারা আনন্দ ফূর্তি করে কিন্তু ভেসে যায় না দৈহিক মিলনে। আবার আমাদের কঠিন নিয়মে থাকা অনেক পুরুষ মহিলা এখন সুযোগ পেলেই যা খুশী তা করে বেড়াচ্ছে। যদি নিয়ম মেনে চলি তা হলে এগুলো বড় চোখে লাগে।
বেশী কড়া শাসনের পরিবারের ছেলে মেয়েরা বা যে সকল অভিভাবক সন্তানদের সাথে মানসিক ভাবে যুক্ত নন শুধুই কড়া শাসন করে ভাবেন সন্তান ভালো হবে কিন্তু জানেন না তাদের মনের মতিগতি তাদের সন্তানরাই অমন কিছু করে থাকে। আর প্রতিটি বিষয়ের মূল্যায়ণ সে ভাবেই করতে হবে। একের সাথে অন্যেরটা মিলালে চলবে না। কেইস হিস্ট্রি আলাদা আলাদা।
আপনার বাচ্চাকে একদিন সারারাত জাগিয়ে রাখার চেষ্টা করে দেখেন না, পারে কিনা রাত জাগতে।
রাতের খাবার পরে খানিক খেলাধূলা করুন বাচ্চার সাথে তারপর উষ্ণ পানিতে একটা গোসল দিয়ে দিন দেখুন কোন ভয় না দেখানোর পরও কেমন ঘুমিয়ে পরে। আর ভয়ের পিঁপড়াযে রাতের বেলা ওকে কামড়াতে আসেনা সে কথা কি কখনও বলেছে আপনাকে বা বোঝার চেষ্টা করে দেখেছেন?
মা' নয় শুধু বাবাদের ও বোঝতে হবে সন্তানদের।
আপনার ঐ অতটুকু ছোট বাচ্চাকে মারতে কষ্ট লাগবে না আপনার? আর মারের ফলে কতটুকু ক্ষতি ওর শরীরের মধ্যে হলো মনের মধ্যে প্রভাব পরল সে বিষয়টাও বোঝার চেষ্টা করে দেখুন।
শুভকামনা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.