নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর সবার আমি ছাত্র, নানান ভাবে নতুন জিনিস শিখছি দিবা রাত্র\"

সোনামণি

আমার আমিকে এখনো চিনতেই পারিনি। এই আমি নই সেই আমি।

সোনামণি › বিস্তারিত পোস্টঃ

এক বৃষ্টির দিনে কিছুক্ষণ

২২ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:২০


আকাশ থেকে বৃষ্টি ঝড়ছে। কালো মেঘে আকাশ ঢেকে গেছে। আমি রুমে বসে বৃষ্টির গান শুনছি আর জানালার পাশ থেকে বাহির টা দেখছি। আমি অনেক বার না করা সত্তেও মিতুল আসছে দেখা করতে। এতক্ষণ বোধহয় অর্ধেক রাস্তা এসে গেছে। আজ ওর জন্মদিন, আমার ওর কাছে যাওয়া দরকার কিন্তু আমি আমার রুমেই বসে আছি। বৃষ্টিতে খুব ভিজতে ইচ্ছে করছে, মিতুল আসার অপেক্ষার করছি, ও এলেই ভিজব। হঠাৎ মিতুল ফোন দিল। ফোন রিসিভ করলাম।
"হ্যালো মিতুল কোথায় তুমি?
"আমি তোমাদের বাসার সামনে, তুমি রেডি হয়ে বেড়িয়ে আসো, আমি অপেক্ষা করছি নিচে।
"তোমার সাথে কি ছাতা আছে?
"না নেই। তোমার কাছে ছাতা থাকলে নিয়ে আসো।
"ওকে। তুমি নিচে অপেক্ষা কর, আমি আসছি।

রেডি হয়ে নিচে আসলাম। বাসার নিচে বসার কোন ব্যাবস্থা নেই, দাঁড়িয়ে থাকার মত ছোট বারান্দা আছে। মিতুলকে দেখে আমার ভীষণ হাসি পেল। এর আগে ওকে এমন অবস্থায় কখনো দেখিনি। বৃষ্টিতে ভিজে পুরো গোসল করে ফেলেছে। সার্ট ভিজে একাকার, প্যান্টও ভিজে গেছে। আমাকে দেখে মুচকি হাসতে শুরু করেছে।
"এই যে মশাই মুচকি হাসার মানে কি?
"মানে বাদ দাও, চলো এখন কোথাও গিয়ে দাঁড়াই
"চলো তাহলে।

এক লাইব্রেরীর সামনে এসে দাঁড়ালাম আমরা। লাইব্রেরী থেকে একটা অল্প বয়সের ছেলে আমাদের দিকে তাকাচ্ছে আর হাসছে। বুঝতে পারলাম, ছেলেটা হয়তো ভেজা মিতুল কে দেখে হাসছে। মিতুলের সাথে আমার যখন পরিচয় তখন ও আর আমি দুজনেই ছোট, কেবল স্কুল পাশ করেছি তখন। আমরা খুব ভাল বন্ধু ছিলাম সেখান থেকেই প্রেম। দুজনের কেউ কখনো ভাবিনী আমাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠবে। মানুষের মুখে শুনেছি খাঁটি প্রেম-ভালোবাসা কখন যে হয়ে যায় সেটা কেউ বলতে পারে না। আমাদের ভালোবাসা খাঁটি ভালোবাসা বলে আমি জানি। কেউ কাউকে ছাড়া থাকতে পারিনা, কথা না বললে অস্তির লাগে। খাঁটি ভালোবাসা না হলে হয়তো এমন হত না।

বৃষ্টির মাত্রা আরো বাড়তে লাগল। দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে পায়ে ব্যাথা হচ্ছে। মিতুল বলল, 'চলো টি এস সি তে যাই।' মিতুলের হাত ধরে ওর সাথে যাচ্ছি। এক ছাতার নিচে দুজন খুব কষ্টেই হাঁটছি। ছাতাটা আবার আমার না আমার রুমমেট দিয়েছে বাহিরে যাচ্ছি বলে। মিতুল তো আগে থেকেই ভিজে ছিল এবার আমার ভেজার পালা। কিছুক্ষণ আগেই খুব ভিজতে ইচ্ছে হচ্ছিল কিন্তু এখন আর হচ্ছে না। ভিজতে না চাইলেও ভিজে যাচ্ছি। বৃষ্টি আগের থেকে একটু কমেছে তবে খুব বেশি কমেনি। বৃষ্টির মধ্যে দুজন হাঁটছি, তাও আবার হাত ধরে; অনেক রোমান্টিক মোমেন্ট। শাহবাগে রাস্তার পাশে অনেক গুলো ফুলের দোকান আছে। সেখান থেকে মিতুল আমার জন্য ২ টা রজনীগন্ধা স্টিক কিনল। আবার হাঁটছি। বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাট ফাঁকা, তেমন লোকজন নেই। আমাদের যাওয়ার কথা টি এস সি তে কিন্তু সেখানে না গিয়ে রমনা পার্কের পাশে গিয়ে এক বেঞ্চিতে বসলাম। মিতুল আমার দিকে তাকিয়ে এক নজরে দেখে যাচ্ছে আর বলছে, 'মেয়েরা এত সুন্দরী হয় তা তোমাকে না দেখলে বোঝাই যেত না।' আমি একটু লজ্জা পেলাম ওর কথা শুনে। আমি ওতটাও সুন্দর নই যে কেউ আমাকে সুন্দরী বলবে।

আজ মিতুলের জন্মদিন। আমার কাছে ও কোন গিফট না চাইলেও আমার একটা কিছু দেয়া দরকার কিন্তু আমি দিতে পারছিনা। আমার কাছে কোন টাকা নেই। বেচারা হয়তো মন খারাপ করবে আমার কাছ থেকে গিফট না পেয়ে কিন্তু আমার যে কিছুই করার নেই। রুমমেট এর কাছে টাকা চেয়েছিলাম কিন্তু ওর কাছেও টাকা নেই। বসে বসে ভাবছি কি করে মিতুল কে জন্মদিনের উপহার দিব। মিতুল কথা বলেই যাচ্ছে আর আমি ওর দিকে তাকিয়ে শুনেই যাচ্ছি। বসে থাকতে থাকতে বিকেল হয়ে গেল। মিতুল যেখানে থাকে ওখানে যেতে বাসে ১ ঘন্টা লাগে। আমি মিতুল কে বললাম, 'বিকেল তো হয়ে গেল, তুমি তো ভিজে গেছ বাসায় চলে যাও। মিতুল বলল, 'চলো তোমাকে বাসায় রেখে আসি তারপর যাব।

হেঁটে হেঁটে বাসার সামনে চলে আসলাম। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছে। মিতুল তাকিয়ে আমাকে দেখছে। বাসায় চলে যাবে বলে ওর মন খারাপ হচ্ছিল। বাসায় গেলেই তো আর আমাকে দেখতে পাবে না। আবার কবে দেখা হবে তাও কেউ জানিনা। আমারও খুব খারাপ হচ্ছে। বুকের ভেতর কেমন যেন যন্ত্রণা হচ্ছে। মিতুল কে বললাম, 'চোখ বন্ধ কর তো'। বাধ্য ছেলের মত চোখ বন্ধ করল। আমি এগিয়ে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলাম আর বললাম, আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি মিতুল, কখনো আমাকে একা রেখে যেও না। তারপর ওর কপালে আর গালে আলতো করে অনেক গুলো চুমু খেলাম। খুব ইমোশনাল হয়ে যাচ্ছিলাম। মিতুল আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো, পাগলির মত করবা না একদম। আমি তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি, তোমাকে ছেড়ে থাকা তো দূরে থাক, একথা ভাবতেও পারিনা। মিতুল আমাকে বাসায় রেখে চলে গেল। আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে ওর চলে যাওয়া দেখলাম। যতক্ষণ দেখা গেল ততক্ষণ তাকিয়েই রইলাম।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ৯:১৫

বিলিয়ার রহমান বলেছেন: সোনামণি আপনার নামটা মিতুল নামের আর একটা নামের কারনে আমার খুব পরিচিত!


আপনার গল্পের মিতুল কি আপনার পরিচিত কেউ????

৩০ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:২৯

সোনামণি বলেছেন: হুম! পরিচিত। আচ্ছা ভাইয়া আমার লেখা প্রথম পাতায় যায় না কেন?

২| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৩৪

বিলিয়ার রহমান বলেছেন: আপনাকে এখনো প্রথম পাতায় পোস্ট করার অনুমতি দেয়া হয়নি! তাই হয়তো আপনার পোস্ট প্রথম পাতায় যাচ্ছে না!:)


মডারেটরদের মেইল করে বিষয়টি মনে করিয়ে দিতে পারেন!:)

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:৩৭

সোনামণি বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:৫৩

মানবী বলেছেন: ঝুম বৃষ্টিতে ভেজা ভালোবাসার গল্প ভালো লেগেছে পড়ে।
ধন্যবাদ সোনামনি।

৩০ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:৩৪

সোনামণি বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.