| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
...... খরগোশ ও কচ্ছপের প্রতিযোগিতার কথা সবাই জানি। কিন্তু আমাদের জানাটা অসম্পূর্ণ। পুরোটা আমরা জানি না।
-তাহলে পুরোটা কী?
-বলছি!
.
প্রথম গল্প!
কচ্ছপ আর খরগোশের মধ্যে জোর বিতর্ক! কে বেশি দ্রুতগামী! শেষে ঠিক হলো দু’জনে একটা দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিবে।
.
খরগোশ তীর বেগে ছোটা শুরু করলো। অনেকদূর যাওয়ার পর দেখলো, কচ্ছপ এখনো বহু দূউউরে! ঠিক আছে, তার আসতে অনেক সময় লেগে যাবে। এই ফাঁকে, গাছের ঝিরিঝিরি শীতল ছায়ায় একটু ঘুমিয়ে নিই। সে কাছাকাছি এলেই একছুটে বাকি পথটুকু পেরোনো যাবে!
.
খরগোশ ঘুমিয়ে পড়লো। ঘুম থেকে জেগে দেখে, সে প্রতিযোগিতায় হেরে গেছে। কচ্ছপ গন্তব্যে গিয়ে বসে আছে!
.
গল্পের শিক্ষা:
ধীরগামী ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞরাই প্রতিযোগিতায় জেতে!
.
এটা ছিল সবার জানা গল্প। আমাদের গল্প কিন্তু এখনো শেষ হয় নি।
.
দ্বিতীয় পর্যায়!
খরগোশের ভীষণ মন খারাপ। ইশ! অলসতা অবহেলা না করে, দৌড় অব্যাহত রাখলে, এখন বসে বসে আঙুল কামড়াতে হতো না। আমার হারের কারণ কী?
-হ্যাঁ, অতি আত্মবিশ্বাসই আমাকে ডুবিয়েছে। আমি প্রতিপক্ষকে ‘আন্ডার এস্টিমেট’ অবমূল্যয়ন করেছি। আমার দৌড়শক্তি আমাকে অহংকারে ফেলেছে! এখন কী করা যায়? হেরে যাবো? উঁহু! হতেই পারে না! তাহলে কি কচ্ছপকে আবার প্রতিযোগিতার প্রস্তাব দেয়া যায়? সে মানবে? দিয়েই দেখি না!
.
কচ্ছপ এককথায় রাজি! শুরু হলো দৌড়। খরগোশ বিদ্যুত বেগে দৌড় শুরু করলো। কোথায় থামাথামি নেই। এক্কেবারে লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। এবার জেতা গেছে! আহ! প্রথমবারও যদি এভাবে একটানা চালিয়ে যেতাম!
.
গল্পের শিক্ষা
যারা দ্রুতগতিতে আর একটানা দৌড়ুতে পারে, তারাই জিততে পারে। ধীরগামী আর দৃঢ়প্রতিজ্ঞরাও তখন পিছিয়ে পড়তে বাধ্য হয়!
.
হাঁ, ধীরগামী আর দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হওয়া প্রশংসনীয়! তবে এর পাশাপাশি কাজের প্রয়োজনের সময় দ্রুতগামী আর নির্ভরযোগ্য হওয়া যায়, আরও বেশি ভাল!
.
গল্প আরও বাকী আছে। কচ্ছপ হেরে যাওয়ার পর, বুঝতে পারলো, বর্তমান ‘ফরম্যাটে’ খরগোশের সাথে পেরে ওঠা যাবে না। ভিন্ন কোনও পন্থায় বা অন্য কোনও রাস্তায় প্রতিযোগিতায় নামতে হবে! খরগোশ নতুন পথে দৌড়ে নামতে রাজি হলো। শুরু হলো দৌড়। সাঁই করে খরগোশ বেরিয়ে গেলো। জেতার সূত্র তার জানা হয়ে গেছে: দ্রতগামিতা আর নিরবিচ্ছিন্নতা!
.
মাঝপথে গিয়েই খরগোশকে হার্ডব্রেক কষে দাঁড়াতে হলো। সামনেই দৌড়পথকে আড়াআড়ি বিচ্ছিন্ন করে, একটা খর¯্রােতা নদী বয়ে চলছে! হায় হায়! আগে এসে একবার পথটা দেখে গেলাম না কেন? এখন কী হবে? এসব ভাবতে ভাবতেই, কচ্ছপ তাকে পাশ কাটিয়ে নদী পার হয়ে ওপারে গেলো। দৃষ্টিসীমার বাইরে!
.
গল্পের শিক্ষা
আগে নিজের যোগ্যতার সীমা যাচাই করে নেয়া চাই। নিজের সামর্থের দৌড় সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা চাই! তারপর সে অনুযায়ী দৌড়ক্ষেত্র বাছাই করা চাই! না জেনে, না বুঝে, খোঁজ-খবর না নিয়েই নেমে পড়া ঠিক নয়।
.
গল্প শেষ হয়নি। তবে শেষ পর্যায়ে এসে গেছি। কচ্ছপ বুঝতে পারলো, এবারের প্রতিযোগিতাটা অসম হয়ে গেছে। কিছুটা ভারসাম্যও হারিয়েছে। নিজের অপরাধবোধ থেকেই, যেচে গিয়ে খরগোশের সাথে কথা বললো। দু‘জনের মাঝে বন্ধুত্ব গড়ে উঠতেও সময় লাগলো না। তবে যৌথসিদ্ধান্ত হলো:
আমরা আবার দৌড়–বো। এবার হবে দলবদ্ধ দৌড়। দু’জনে একটা দল হয়ে।
.
চতুর্থ পর্যায়
শুরু হলো। একসাথে তীরে পৌঁছল। কচ্ছপ তার পিঠ চড়িয়ে খরগোশকে পার করে দিল। নদীর অপর পাড়ে গিয়ে, খরগোশ কচ্ছপে পিঠে চড়িয়ে নিল। এক ভোঁ দৌড়ে বাকি পথটুকু শেষ করলো।
উভয়েই বেজায় খুশি! মনে দারুন আনন্দ। হৃদয়ে তৃপ্তি। কেউ হারেনি। দু’জনেই জিতেছে! এত ভালো আগে আর কখনো লাগে নি!
.
গল্পের শিক্ষা
এক: ব্যক্তিগতভাবে মেধাবী হওয়া, যোগ্য হওয়া ভাল। কিন্তু দলবদ্ধ হয়ে কাজ করলে, অনেক বেশি ফলোদয় হয়। কারণ, কখনো কখনো এমন পরিস্থিতি দেখা দেয়, যা আমার পক্ষে সামাল দেয়া অসম্ভব! কিন্তু দলের কারো না কারো কাছে সেটা ডালভাত!
.
দুই: দলবদ্ধ কাজের অনেক উপকারিতা:
ক: অল্প সময়ে অনেক কাজ হয়।
খ: বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে, উপযুক্ত ব্যক্তিকে নেতৃত্বের জন্যে খুঁজে বের করে আনে।
গ: কাজের গতি সব সময় সচল থাকে।
©somewhere in net ltd.