নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সপ্রসন্ন

সপ্রসন্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রেম ও প্রার্থনার গল্প - সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের ছোটগল্প বিশ্লেষণ

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৩২



বইটি পড়ে লেখকের গল্প বলার ধরন আমাকে বেশ মুগ্ধ করে। তারই প্রেক্ষিতে ইচ্ছে হয়, তার লেখার একটি নৈবর্ক্তিক বিশ্লেষণ করতে। যদিও আমি জানি, তার একটা বই হয়তো এপর্যন্ত লেখা সকল গল্পের ধরনকে বিচার করে না। কিন্তু তা সত্বেও ধরে নেয়া যায়, পুরস্কারপ্রাপ্ত এই বইয়ের উনিশটি গল্পের মধ্যেই নিহিত আছে সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের গল্পের মূল কিছু বৈশিষ্ট্য।

*গল্পের বিষয়
বিচিত্র বিষয় নিয়ে গল্প তার এই বইয়ের মূল আকর্ষণ। সমকালীন বিভিন্ন ঘটনাবলি যেমন এসেছে তেমনি মানব্জীবনের নানা কোণও তার লেখায় মূল বিষয় হয়েছে। গার্মেন্টস বিদ্রোহ, ভূমিকম্পের ভয়, বন্যার কথা, টাকা জালনোট করা, টাকা প্রতারণা করা, হরতালে বোমা তৈরি করা, গৃহকর্মী নির্যাতন, গ্রামে কবর ব্যবসা, হারিয়ে যাওয়া মেয়ে- এরকম বিভিন্ন ও বিচিত্র বিষয়। এসব দিকে হঠাত আলোকপাত করলে যে প্রশ্ন খালি চোখে ধরা পড়ে তা হলঃ প্রতিদিনকার খবরের কাগজের রসকষহীন বক্তব্য কিনা? কিন্তু আদতে এসব রসকষহীন বক্তব্যই লেখকের গল্পে প্রধান থিম হয়ে নানা ঘটনার সমাহারে একেকটি চমৎকার গল্পের আদল পায়! তার ভাষায়ঃ “খবরের কাগজে, পরিচিত অপরিচিতদের মুখে কত গল্প থাকে, সেগুলো থেকে মালমসলা নিতে হবে” বইটির উনিশটি গল্প পড়লে তার বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া যায়।

*গল্পের বিষয়টিই কি মুল গল্প?
উত্তর হল না। এই যে বইটির বন্যার কথা, গার্মেন্টস বিদ্রোহ ইত্যাদি গল্পের মূল কাঠামোকে তৈরি করলেও তার গল্পের যে অন্তর্নিহিত বক্তব্য এসব নয়। এসকল রাজনৈতিক, সামাজিক বা প্রাকৃতিক ঘটনাকে আপাতদৃষ্টিতে প্রধান মনে হলেও, গল্পের শেষে পাঠক বিস্ময়ে আবিষ্কার করে, গল্পটির মূল বক্তব্য আসলে মানবজীবনের সংবেদনশীল নানান রকম পর্ব। যেসব পর্ব আমাদের অগোচরেই ঘটে যায়। লেখক তার গল্পের মধ্য দিয়ে এসব বাস্তবতার পর্বকেই মূল আলো দিয়েছেন।
যেমন ‘আইবেক বংশের উত্থান ও পতন’ গল্পের কথা বলা যায়। এ গল্পের অনেক ঘটনাবলির সমাহার ঘটে ও শেষে আসে গল্পের মূল বিষয় যা আগে অনুমান করা কষ্টকর। ভূমিকম্প নিয়ে মানবভয়ের আড়ালে উপসংহারে আমরা দেখি, আইবেক ঘরের বউকেই এক ডাক্তার নিয়ে পালিয়ে যায়, ভালোবাসার টানে।

গল্পের বৈশিষ্ট্যঃ
বড় পটভূমিতে ও অনেকগুলো অনুচ্ছেদে গল্প লিখে যাওয়া সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের গল্পের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। গল্পে ঘটনার মাত্রা এত বেশি যেন তা অনেকটা বিস্তৃত উপন্যাস এর মতন। প্রত্যেক গল্পেই অনিবার্যভাবে এসেছে মানবজীবনের ভালোবাসা কিংবা প্রেম সংক্রান্ত গল্প। অথবা আরো ভালভাবে বলা যায়, মানব-মানবীর সম্পর্কের গল্প, যে সম্পর্কে আছে অন্তরঙ্গতা, লোলুপতা, অভিমান কিংবা সর্বোপরি প্রেমময়তা। গল্পের মূল উপজীব্যতে সরাসরি প্রেম না এলেও তবে গল্পের ঘটনাপ্রবাহের নানা প্রান্তে প্রেম আসে অনিবার্য হয়ে। যেন এটাই তার বইয়ের নামকরণের অন্যতম সার্থকতা।

গল্প বলা না গল্প লেখা?
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম পছন্দ করেন গল্প বলতে। নিজেকে কথাসাহিত্যিক পরিচয় দেবার চেয়ে গল্পকথক বলে পরিচয় দিতে চান। তার এ চাওয়ার সাথে পাঠকের পাওয়া হিসেবে মিলে যায় গল্পগুলো। তিনি যতটা গল্প লিখতে চান, তার চেয়ে বেশি চান পাঠকের সাথে গল্পের সরাসরি সংযোগ স্থাপন করতে।
গল্পের চরিত্রের পরিচয় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নয়, যেন গল্প শুনিয়েদের কৌতূহল মেটাতে তিনি প্রায়শই বলেন, ‘যদি জানতে চান, অমুক চরিত্রের পরিচয় এই...’। অথবা গল্পের অন্য পরিণতির সম্ভাবনা দেখিয়ে তার শ্রোতাদের জানান এই বলে, 'গল্পের নায়ক যদি অমুক হত...' বা 'এই গল্পে তার ভূমিকা নেই, কি করব বলুন' অথবা 'কষ্ট লাঘব এই গল্পের একটি জরুরি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে' এবং এরকম আরো অনেক।

জাদুবাস্তবতা নাকি রূপকথা?
বিভিন্ন ফ্যান্টাসি কিংবা অতিপ্রাকৃত বিষয়কে বাস্তবতার মোড়কে তুলে ধরা তার গল্পের আরেক বৈশিষ্ট্য। তাঁর ভাষায় বলতে গেলে, “...একটু যাদুর ছোঁয়া দেয়ার চেষ্টা করেছি। আমাদের ব্যাঙ্গমা-ব্যাঙ্গমির মতো। বা আমাদের রাজপুত্র চলে যাচ্ছেন আকাশে একটা ঘোড়া চড়িয়ে। এখানে তো আসলে, বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে একেবারে ভুল। কিন্তু কল্পনার দৃষ্টিতে অত্যন্ত সহজ। এই বিষয়টি আমি আমার গল্পে রেখেছি।’’
তারই ছাপ পাওয়া যায় ‘ঈশ্বর কৃপা এক্সপ্রেস’ এর অলৌকিক মাইক্রোবাসে, ‘জলপুরুষের প্রার্থনা’ গল্পে জনৈকা জলকন্যার আগমনে, ‘জিন্দালাশ’ গল্পে আহমদউল্লাহর প্রায় মৃতাবস্থা থেকে প্রায় জীবিতাবস্থায় রূপান্তরিত হওয়ায়, ‘তিন টাকার নোট’ গল্পে এই অবাস্তব নোট নিয়েই সকলের বাস্তবিক উল্লম্ফন দেখে, ‘প্লাবন’ গল্পে ফুলপুর গ্রামবাসীর পুনরায় স্বর্গে গ্রাম আবিষ্কার করা এবং এরকম আরো অনেক গল্পে।
আপাতদৃষ্টিতে অসংলগ্ন হলেও লেখক বাস্তবতার মিশেলে সমরূপতায় হাজির করেন এসকল জাদুবাস্তবতা, যা প্রাসঙ্গিকতা পায় এসকল গল্পের কাহিনিতে।

ঐতিহাসিক চরিত্রে আশ্রয় নাকি বর্তমানের প্রতীকী চরিত্র?
কতিপয় গল্পে ঐতিহাসিক চরিত্র বা ঘটনা অবলম্বন করা তাঁর লেখার আরেকটি বৈশিষ্ট্য। এক্ষেত্রেও তাঁর ফরম্যাট জাদুবাস্তবতার মতই। বাস্তবতার মাটিতে নামিয়ে আনেন প্রতিটি ঐতিহাসিক চরিত্র কিংবা ঘটনাকে, বস্তুত যা গল্পের শেষে একেকটি প্রতীকী চরিত্রের রূপ পায়। পাঠক আবিষ্কার করে, এসকল চরিত্র তো এখনো বিদ্যমান আমাদের সমাজে, আমাদের দেশে!
রবার্ট ক্লাইভের সময়কার ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনামলে দেশীয় তস্করদের সহায়তায় গ্যাসক্ষেত্র বিদেশে পাচার করার কথা উল্লিখিত হয় ‘ইস্ট ইন্ডীয়া কোম্পানির ক্রয় বিক্রয়’ গল্পে। কুতুবউদ্দীন আইবেক ও তাঁর পরিবারের কথায় আসে বর্তমান নগরজীবনে অবিরত সুউচ্চ ইটকাঠের খাঁচা তৈরি করে যাবার কথা, ঠিক যেমন দিল্লীর কুতুবউদ্দিন আইবেক নির্মাণ করেছিলেন সুউচ্চ কুতুব মিনার। ‘ইবনে বতুতার দিনপঞ্জি; গল্পে পাই দিনলিপি আবিষ্কারকের অতীতের অংশ হয়ে যাওয়া আর বতুতার দেখা মেয়ে আশুরার কথা। ‘তারা ভাবে তারা সাপ, আসলে তারা রজ্জু’ গল্পে প্লেটোর দার্শনিক সংলাপের মাঝে চলে আসে বর্তমান সময়ের রাজনীতিকদের দুরাচারের কথা। ‘ডীডেলাসের ঘুড়ি’ গল্পে গ্রীক পুরাণের আশ্রয়ে নির্মিত হয় অতি বাস্তব এবং একটি সম্পূর্ণ বাংলাদেশি পটভূমির কাহিনি।

কাকতালীয় নাকি সত্যি ঘটনা?
লেখক কিছু গল্পে কাকতালীয় ঘটনার সমাবেশ এনেছেন। আমাদের জীবনেও অনেক কাকতাল ঘটনা ঘটে। ‘যে জীবন দোয়েলের ফড়িং এর, তার সাথে মানুষের হয় নাকো দেখা’ কিন্তু এই গল্পে আমরা এসব সাধারণ কিন্তু কাকতালীয় ঘটনাকে দেখি নানা আবরণে।
‘রেশমি রুমাল’, ‘ভবিষ্যৎ থেকে ফেরা’ কিংবা ‘ডীডেলাদের ঘুড়ি’ এসকল গল্পে তিনি বাস্তব জীবনে কদাচ ঘটে যাওয়া যাবতীয় কাকতালের সন্ধান করেছেন।

মনজুরুলীয় ট্রেডমার্কগুলো?
*গল্পের ভাষা এবং বর্ণনাভঙ্গিতে আছে তাঁর নিজস্ব কিছু ছক, যার ভেতরে তিনি আবদ্ধ থেকে গল্পগুলোকে একান্তই তাঁর গল্পের আকৃতি দিয়েছেন। তার একটি হল কথার প্যাচ কিংবা কৌশল। এরকম কিছু বাক্যঃ
'একটা নোট-বস্তুত একমাত্র''মেঘনা পাড়ের (মধ্যের) ছেলে'
'হতবুদ্ধি করল। বুদ্ধি ফিরে এলে সে জিগ্যেস করল'
'হাটুর জয়েন্ট আলগা হল, তাই সে পড়ে গেল'
'ভাবলেই জানা যায়। ভাবার সময় নিতে তিনি বাথরুমে গেলেন।'
'পুরোদিন হরতাল ছিল, কিংবা আধা দিন। তা গুরুত্ব নয়। গুরুত্বপূর্ণ যা তা হল..'

*বিচিত্র ধরনের সম্বোধন পদ নিয়ে আসাও একেবারে ইউনিক বলা যায়। যেমনঃ হঠাত আসা লোককে সম্বোধন করা ‘দৈব’ নামে। কিংবা এরকম ‘মহাগুরুত্বপূর্ণ নং ১,২’, ‘একটি না হলে অন্য- অন্য না হলে অন্য-অন্যটি'

*একটি লাইনে একটি শব্দ ব্যবহার করা চোখে পড়ে জহির রায়হানের অনেক গল্পে। এ বিষয়টি চোখে পড়ে তাঁর গল্পেও। তবে তিনি পছন্দ করেন নানা রকম অব্যয়সূচক শব্দ ব্যাবহার করতে।
হা, হায়, আহা, মাগো, ওহো ইত্যাদি অব্যয় তার গল্পে এক লাইনে একটি স্বাধীন বাক্য হিসেবে প্রায়ই আসে। যেন পাঠককে চরিত্রদের আবেগি অবস্থার সাথে ধাতস্থ হবার সময়টুকু দেয়া হয় ঐ এক লাইনের এক বাক্যে।
তাইতো, বেচারা, অবাক, তা বটে, ইত্যাদি- এসকল শব্দও এক লাইনে এক বাক্য হিসেবে চলে আসে।

*সে খুব ভাল। কিংবা সে খুব সুন্দর। আমরা এভাবেই একটা জিনিস লিখে বুঝাই। কিন্তু লেখক লিখেন এভাবে, ‘সে খুব ভাল/চমৎকার/সুন্দর' । এরকম অবলিক বা অথবা চিহ্ন দিয়ে কারো চরিত্র প্রকাশ করা একটু ইউনিকই বটে।

* ধরা যাক, একজন সাতার জানে না, সে পানিতে ডুবে গেল। এক্ষেত্রে যে কেউ লিখবে পানিতে ডুবে সে মারা গেল। কিন্তু লেখক লিখেন অন্যভাবে, একটু ঘুরিয়ে। চরিত্রটি মারা গেল এর পরিবর্তে তিনি লেখেন, 'যা হবার তাই হল/এরকম ক্ষেত্রে যা হয় আর কি' যা পাঠককে কিছু সময়ের জন্য ভাবিয়ে তোলে, কী হল চরিত্রটির?

*গল্পে আগ্রহ ধরে রাখা তার গল্পের একটি বড় ট্রেডমার্ক। একটি চরিত্রের সবিষয় বর্ণনা দিয়ে তিনি পাঠককে জানান না সেই চরিত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরবর্তীতে গল্পের প্রসঙ্গ ধরে সেই চরিত্রের কাহিনি আসবে এই বলে তিনি আপাতসমাপ্তি টানেন, ‘সে কথা যথাসময়ে হবে’

* গল্পে রসিকতা করা কিংবা বিদ্রূপাত্মক বাক্যে পাঠকের মনে হাস্যরস তৈরি করা- এই প্রবণতা তাঁর প্রতি গল্পে।

*গল্পের শেষে পাঠককে প্রশ্নবিদ্ধ রাখা তার গল্পের আরেকটি বৈশিষ্ট্য। 'হয়তো’, ‘কে জানে’, ‘এতই এমন হবে যে...?’ ‘বলুন?’ ‘ইত্যাদি'- এসব বলে তিনি বস্তুত তার বলা বক্তব্যই অনুসরণ করেন,

"ছোটগল্পের পরিধি ছোট, অভিঘাতটা বড়, অনেক অনেক বড়। এর কায়া সীমিত, ছায়াটা দীর্ঘ, শেষ বিকেলের রোদে একটা তালগাছের ছায়া যেমন হয়।’’


বইয়ের নামঃ প্রেম ও প্রার্থনার গল্প,
লেখকঃ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম,
প্রথম প্রকাশঃ ২০০৫
প্রকাশনীঃ অন্যপ্রকাশ,
পুরস্কারঃ প্রথম আলো সাহিত্য পুরস্কার ১৪১১, সৃজনশীল শাখা

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৪১

হাতুড়ে লেখক বলেছেন: সংগ্রহ করতে হবে। প্রত্যেকটা লেখকই সৃজনশীল তবুও আপতত দৃষ্টিতে এর স্বাক্ষর তেমন চোখে পড়ে না। আপনার বর্ণনার তিনভাগের দুইভাগও যদি যদি লেখক উপস্থাপন করে থাকেন তবে বইটি অবশ্যই প্রেরণা যোগাবে আমাদের। শুভ কামনা।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৫৩

সপ্রসন্ন বলেছেন: প্রত্যেক লেখকই সৃজনশীল- আপনার উপলব্ধির সাথে একমত। বইটিতে এরকম সৃজনশীলতার নমুনা পাবেন আশা করি।
শুভকামনা রইল!

২| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৪

রাজীব হাসান শোলক বলেছেন: যারা এখন ছোটগল্প লিখছেন, তাদের মধ্যে সৈয়দ মনজুরুল ইসলামই সেরা; এটা অবশ্য আমার নিজের অভিমত! তার লেখাতে গতি আছে, মাদকতা আছে, চিন্তা করার খোরাক আছে।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৫০

সপ্রসন্ন বলেছেন: সুন্দর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁর লেখা নিঃসন্দেহে বাংলা ছোটগল্প সাহিত্যে নতুন সংযোজন।
ভাল থাকবেন!

৩| ১৩ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ১০:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্ট টি পড়ে ভালো লাগলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.