![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি সাংবাদিক ও ক্ষুদ্রলেখক। সত্য তুলে ধরাই আমার লক্ষ্য।
আমি বাংলাদেশ বেতাল বলছি। ওয়েট, শুরুতে একটা ফোন কল রিসিভ করি। প্রিয় শ্রোতা, কে বলছেন, কোথা থেকে বলছেন?
: জি, আমি রুমি বলছি, পুরান ঢাকা থেকে। কিছুক্ষণ আগে আমি রাস্তায় একটি অর্থপূর্ণ মানিব্যাগ কুড়িয়ে পেয়েছি!
: ওয়াও, আপনার সততা দেখে আমরা মুগ্ধ! আপনি কি এখন এই মানিব্যাগের মালিককে আমাদের রেডিও স্টেশনের মাধ্যমে খুঁজতে চাচ্ছেন?
: জি না, আমি তাকে একটা গান ডেডিকেট করতে চাচ্ছি!
: বাহ্, বাহ্! মানুষ তো মানুষের জন্যই। আমার শ্রোতাদের এমন মহানুভবতা দেখে আমি মুগ্ধ। না, দুঃখিত, আমি তো আর দেখিনি, শ্রোতাও আমাকে দেখেনি। আমাদের সম্পর্ক হলো শোনার!
প্রিয় শ্রোতা, এবার তাই আপনাদের জন্য গান, ‘সোনা সোনা সোনা, লোকে বলে সোনা। সোনা নয় তত খাঁটি...!’
একদিন হলো কি, আমার কাছে একটা চিঠি এল, ‘প্রিয় রেডিও স্টেশন, তোমার জানা উচিত, ১০-১৫টা নয়, পৃথিবীতে আরও অনেক বাংলা গান আছে!’
আজকালকার ছেলেমেয়েরা এমনই বেয়াদব। শুনেছি, এই প্রজন্ম নাকি রেডিও নয়, আইপ্যাড কিংবা আইপডের জন্য কান্নাকাটি করে। ভাবা যায়? কোথায় রেডিও আর কোথায় আইপড! তারা কি একবারও ভেবে দেখে না, রেডিও না পেলে তাদের মা–বাবাদের অনেকেরই বিয়ে ভেঙে যেত! আমার অপরিসীম গুরুত্ব সম্পর্কে কে বোঝাবে এই অর্বাচীন বালক–বালিকাদের!
অপমানজনক! অত্যন্ত অপমানজনক! ভাবছেন এগুলো আমি দেখলাম কী করে? দেখলাম, কেননা, রেডিওতে কোনো পর্দা নেই। পর্দা না থাকলে তো সব দেখা যাবেই! আমার বিরুদ্ধে অনেক শ্রোতাবন্ধুরই একই অভিযোগ। তাদের যখন টয়লেটে যাওয়ার সময় হয়, পরীক্ষার জন্য বের হতে হয় কিংবা গাড়ি থেকে রেডিও বন্ধ করে নেমে যাওয়ার সময়টা আসে, ঠিক তখনই নাকি আমি দিনের সেরা গানগুলো বাজাই।
আমাকে নিয়ে ফাজলামি করলে আমিও আবুল হোসেনের মতোই কষ্ট পাই। আমারও তখন বই লিখতে ইচ্ছে করে, ‘আমি এবং আমার কৈফিয়ত সমগ্র’! আশপাশে কিছু না থাকলে তরুণ–তরুণীরা রেডিও শোনে। আর শোনার মতো অন্য কোনো এফএম রেডিও চ্যানেল না থাকলে তবেই নাকি বাংলাদেশ বেতাল শোনে! কী নিদারুণ দুঃখের কথা। অথচ আমাদের আছে সুদীর্ঘ ইতিহাস এবং ঐতিহ্য। এক ফাজিল ছেলে এটা শুনে বলে, ‘ইতিহাস আছে, ঐতিহ্য আছে, কিন্তু বর্তমান নেই—এমন জিনিস জাদুঘরেই ভালো মানায়!’ যাঁরা মনে করেন বাংলাদেশ বেতালের আর কোনো প্রয়োজন নেই, দীর্ঘ বিজ্ঞাপন বিরতির আগে নিচের গল্পটি কেবল তাঁদের জন্যই।
এক আদিবাসী কখনো আধুনিক জীবনের স্বাদ পাননি। একদিন এক ভ্রমণকারীর সঙ্গে দেখা হলো তাঁর। ভ্রমণকারী ভদ্রলোক তাঁকে পরিষ্কার বাংলায় প্রশ্ন করলেন, ‘আপনি কেমন আছেন?’
আদিবাসী বললেন, ‘টুউউট, খসসস... পিইইইপ... যযযয, এই তো, ভালোই আছি, টুউউট, খসসস... পিইইইপ... যযযয...। আপনি কেমন আছেন?’
ভ্রমণকারী বললেন, ‘তা আপনি এত সুন্দর বাংলা শিখলেন কীভাবে?’
আদিবাসীর জবাব, ‘টুউউট, খসসস... পিইইইপ... যযযয... কোথা থেকে আবার, বাংলাদেশ বেতাল থেকে!’
খবর: বাংলাদেশ বেতার যা আয় করে, খরচ করে তার ১০ গুণ।
এক যুগ আগেও বিজ্ঞাপন খাতে আয় ছিল ২২ কোটি টাকা, এখন ১০ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। বছরে সরকার দেয় ১০৫ কোটি টাকা। (প্রথম আলো, ১২ নভেম্বর ২০১৪)
২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৫
কলমের কালি শেষ বলেছেন: হুম ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:০৫
সামসুন নাহার বলেছেন: খরচ করে না ছাই। শুধু বাজেট হয়। আর বেশির ভাগ ছাগল আছে ওখানে। ওগুলোকে বাদ দিয়ে মানুষ ঢুকানো উচিত। তাহলে বাংলাদেশ বেতাল আর থাকবে না। আগের মত বাংলাদেশ বেতার হয়ে যাবে।