নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ তার সপ্নের সমান সম্ভাবনাময় ।

দিলীপ গোস্বামী

জীবনের বহুমাত্রিক চেতনাই, জ্ঞান ও মূল্যবোধের সামগ্রিক পরিমাত্রা।

দিলীপ গোস্বামী › বিস্তারিত পোস্টঃ

একবিংশ শতাব্দীর বাংলাদেশে কোটাপদ্ধতি এক অমিমাংসিত সংকট

১২ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:৫৫



আমরা ৪৩তম স্বাধীনতা দিবস পালন করলাম। দেশ স্বাধীনের সাড়ে তিন যুগ পার করে এখন আমরা অর্ধ শতাব্দীর দোরগোড়ায় উপনীত। স্বাধীন বাংলাদেশের এই দীর্ঘ পথ চলা কখনও মসৃন ছিল না। বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের জন্য ঘটেছে নানা রাজনৈতিক পালাবদল। ঘটেছে নির্মম হত্যাকাণ্ড ,ক্যু ,সামরিক শাসন,গন অভ্যুথথান সহ বহুমাত্রিক বিবিধ ঘটন অঘটন। ক্ষমতায় এসে স্বাধীনতার পক্ষে বিপক্ষেও শাসকদের বলিষ্ঠ অবস্থান দেখেছে জাতি। বিতর্কিত করা হয়েছে স্বাধীনতার ইতিহাস, জাতির পিতা, স্বাধীনতার ঘোষক, জাতীয় সঙ্গীত, বাঙালী জাতীয়তাবাদ সহ আমাদের বহু গৌরবময় পবিত্র অর্জনকে । জাতিকে এত কিছু বিষয়ে কঠিন বিভ্রান্তির মুখোমুখি দাঁড় করালেও শাসকেরা একটি বিষয়ে কিন্তু একমত ও অনড় থেকেছেন, সেটা হলো কোটা পদ্ধতি।এর মধ্যে কোন কোন শাসক একটি স্পর্শ কাতর,জাতীয় অতি গৌরবময় খেতাব সংশ্লিষ্ট কোটা পদ্ধতির প্রয়োগ সীমা সন্তান সন্ততি থেকে নাতি নাতনী পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছেন। দেশ মাতৃকার জন্য জীবন বাজি রেখে যারা যুদ্ধ কসহীদ, শহীদহলেন তাদের বংশ পরম্পরা স্বাধীন দেশে রাষ্ট্র প্রদত্ত বিশেষ ভাতা ও সুবিধাদি ভোগ করবেন জাতি হিসেবে এটা দেশপ্রেমিক আমরা সকলেই কামনা করি। আমি নিজে সাতক্ষীরা মাগুরা যুদ্ধে নিহত শহীদ সুশীল সরকারের সম্পর্কে মামাতো ভাই, সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ সুভাষ সরকার আমার দাদু, আমার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের মধ্যে আছেন মুক্তিযোদ্ধা অতুল মণ্ডল ,মুক্তিযোদ্ধা কালিপদ মণ্ডল , রনজিত মণ্ডল সহ আরো অনেকে যাদের সকলে সরকারী তালিকাভুক্ত না হলেও একাত্তরের রনাঙ্গনের সৈনিক হিসেবে আমি প্রত্যক্ষদর্শী। পাঠক মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধাবোধের জায়গাটা খুব স্পষ্ট সে জন্য পরিচয়টা দিলাম। যাতে পরে কোন বিভ্রান্তি না ছড়ায় । কিন্তু কোটা পদ্ধতিতে সুযোগ বৃদ্ধির সাথে সাথে ভুয়া বা জাল সনদ প্ত্র তৈরি করে রাজনৈতিক ও দলীয় সুবিধা নিয়ে দেশের প্রশাসন সহ সর্বস্তরে চাকরির সুযোগ গ্রহন বন্ধকরার ব্যবস্থা কোন শাসক করেননি। দলীয় অনুগত আমলা , সরকারী কর্মকর্তা- কর্মচারী, দলীয় প্রভাবশালী নেতা কেউই এ সুযোগের স্বদ ব্যবহার করতে ছাড়েননি । রাজনৈতিক অবাধ সুযোগের ফলে অনেক রাজকারের নামও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্তম্ভে খোদিত হয়েছে । সাতক্ষীরা জেলা কালেক্টরেটের সামনের মাঠে স্থাপিত শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ও খোদিত কয়েকটি বিতর্কিত নাম মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিবাদের মুখে কাল কালি দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে । এ দেশের দেশ প্রেমিক নাগরিক হিসেবে বলছি, শাসকদের দেয়া সকল কোটা পদ্ধতির সুযোগ দলীয় অনুগতরাই ভোগ করেছে বা করছে । রাষ্ট্রের চালিকা শক্তি হিসেবে খ্যাত এ দেশের কৃষক, শ্রমিক ,কামার,কুমার,তাতি ,জেলে, মুটে ,মজুর এ কোটা পদ্ধতি কারো কোন ন্যুনতম উপকারে আসেনি । প্রত্যন্ত পল্লী থেকে বহু কষ্টে উঠে আসা কোন কৃষক বা কারখানার বস্তিতে বড় হওয়া কোন শ্রমিকের কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় পাস সন্তানের জন্য এই কোটা পদ্ধতি সরকারি কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে । তারা তাদের অসহায় দরিদ্র অভিভাবককে ক্ষোভের সুরে বলে , মুক্তিযুদ্ধের সময় কি করেলে , খানেরা ঘর বাড়ি পোড়ায়ে দিলো, মা বোনেগো ধরে নিয়ে গিয়েছিল , ভারতে সব ফেলে পলায়ে গিলে, তা মুক্তিযোদ্ধা হতি পারোনি। এদেশে মুক্তি যোদ্ধার সার্টিফিকেট ছাড়া চাকরী নেই । অসহায় প্রৌঢ়, অসুস্থ বা বৃদ্ধ পিতা এ অভিযোগের অর্থ সব টুকু না বুঝলেও এ টুকু বোঝে , তার সন্তানের জন্য রাষ্ট্র ও সরকার কোন কাজের নিশ্চয়তা দিতে পারেনি । যে স্বাধীনতার জন্য এদেশের আল বদর রাজাকার ছাড়া প্রতিটি মানুষ সব কিছু ত্যাগ করেছিলো । আজ এত বছর পরে দেশ তাকে একটা বেকার শিক্ষিত সন্তান উপহার দিলো। অথচ পাশের গ্রামের অমুকের ছেলে মুক্তি যোদ্ধার সারটিফিট নিয়ে ডাক্তারি পড়ছে ,কেউ পুলিশের অফিসার হইছে , কেউ ম্যাজিস্ট্রেট হইছে , লোকে বলাবলি করে । অনেকের বিরুদ্ধে ভুয়া সনদের অভিযোগ ওঠে ।প্রতিকার হয় না।

নেওয়ায় ৩৯ জন সরকারি কর্মকর্তার নির্দেশ দিয়েছে । বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা করার খবরটি মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে । আজ ভাবি এদেশে আসলে শুধু রাজাকারদের তালিকা হওয়া উচিত ছিল ।রাজাকার বাদ দিলে এ দেশের সবাই মুক্তি যোদ্ধা। কারন , যে পরিবার থেকে একজন মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছে , সেই পরিবারের অন্যরা কিভাবে তাড়া খেয়ে বেড়িয়েছে ,কি দুর্যোগ তাদের জীবনে নেমে এসেছে তা কেবল ভুক্তভোগীরাই জানে । আজ মুক্তি যোদ্ধা সনদ নামক লোভনীয় কাগজ পাওয়ার জন্য যে অশুভ প্রতিযোগিতা, তা দেখে দেশ প্রেমিক বাঙালি মাত্রই লজ্জিত ,বিব্রত, ,ক্ষুব্ধ । জাল সনদের ভীড়ে আসল মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচয় প্রশ্ন বিদ্ধ । সরকার ও আসল এবং নকল মুক্তি যোদ্ধাদের মধ্যে সঠিক পার্থক্য নির্ণয়ে ব্যর্থ। দেশে আজও সঠিক মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা নির্ণয় সম্ভব হয়নি। সঠিক মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা নিয়েও রয়েছে ভিন্নমত। একবিংশ শতাব্দীতে এসে এই কোটা পদ্ধতি জাতীয় জীবনে এক অমিমাংসিত সঙ্কটের সৃষ্টি করেছে। যা বঞ্চিত করেছে প্রকৃত অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে। আজও দেশে সরকার পরিবর্তন হলে মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা পরিবর্তন হয়। ভিন্ন মতের কারনে বন্ধ হয় ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা । মুক্তিযোদ্ধা সন্মাননা ক্রেস্টে ঘটে স্বর্ণ জালিয়াতির মত লজ্জাজনক ধীকৃত ঘটনা। বিদেশীদের অনেক দিন বাদে মুক্তি যুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় ভুল ব্যাখ্যা ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে মুক্তি যোদ্ধা সনদ কাছে আমাদের দেশ প্রেম হীন নিদারুন চৌর্যবৃত্তি প্রকট হয়ে ওঠে

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.