![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবনের বহুমাত্রিক চেতনাই, জ্ঞান ও মূল্যবোধের সামগ্রিক পরিমাত্রা।
স্বজনদের চোখের জল কি হত্যাকারীদের আহত করে....
নারায়ণগঞ্জের সাতজন গত রোববার দুপুরে আপহরনের শিকার হলেন। অপহৃতদের পক্ষে কিছু
মানুষের ব্যর্থ চেষ্টা- রাস্তা অবরোধ, সমাবেশ কদিন ধরে চোখে পড়ছিল। তাদের স্বজনদের
আহাজারি আর চোখের জলে আমিও কখন যেন সহানুভুতিশীল হয়ে পড়েছিলাম। প্রতিদিন
চারপাশে কত নিষ্ঠুর ঘটনা ঘটছে। শত ব্যস্ততার মধ্যে সব ঘটনা নিয়ে হয়তো ভাবার সময়ই
হয়না । কলেজে শিক্ষকতা, জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় সাংবাদিকতা, সভা সমাবেশ ,সাংসারিকতা
সব দায়িত্ব সেরে হাতে আর সময় থকেনা । তার পরেও ঘরে ফিরে অন লাইনে চোখ বুলিয়ে
নেয়াটা এখন নতুন নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে । অনলাইনে জাতীয় দৈনিকে চোখ বুলানো , ব্লগ পড়া ও ব্লগে লেখা লেখি করা তারপর মাঝ রাতের পরে বিছানায় ফেরা এই বর্তমানের রুটিনে পরিনত
হয়েছে । তাই এখন যেন কোন ঘটনাই আর খুব বেশি পীড়িত করেনা । কিন্তু সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের
এই লোমহর্ষক , প্রকাশ্য দিবালোকে সংঘটিত অপহরণের ঘটনাটি কেমন যেন রহস্যময় মনে
হচ্ছিল । কেন যেন মনে হচ্ছিল কেউ দুষ্টামি করে কোন বিশেষ কারনে এই কাজটি করেছে।
গন মানুষের দাবী ও স্বজনদের চোখের জলে হয়তো অপহরণকারীদের মন গলবে। অসহায়
সন্তানেরা তদের পিতাকে , হতভাগ্য স্ত্রী তার স্বামী ও স্বজনেরা তাদের আপনজনকে আবার
ফিরে পাবে । আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন অথবা সরকার কেউ না কেউ
দিবালোকে সংঘটিত এই সাতটি প্রাপ্ত বয়স্ক অপহৃত ব্যক্তিকে খুজে বের করে পেশাগত
দক্ষতার ক্ষেত্রে নজীর সৃষ্টি করবে । যা উদ্ধার কারীদের পেশাগত ক্ষেত্রে সুনামও সাফল্যকে
অনেক উচ্চতায় পৌছে দেবে । কিন্তু সে সব কিছুই হোল না। তিনদিন পর শীতলক্ষার বুকে
ছয়টি ভাসমান ফুলে উঠা লাশ সব প্রশ্নের সমাধান এনে দিলো । গ্রামবাসীদের দেয়া তথ্য
মতে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠালো । একজন জন প্রতিনিধি ও একজন বর্ষীয়ান
অজাতশত্রু আইনজীবি সহ সাতটি সক্ষম মানুষকে আমরা হারিয়ে ফেললাম । আগেই বলেছি
সব মৃত্যু নিয়ে ভাবনা করা বা চোখের জল ফেলার মত সময় নেই । কিন্তু এই ঘটনাটা নিয়ে
একটু যেন কেমন হয়ে পড়েছিলাম । ঘটনার শিকার মানুষগুলো হতভাগ্যদের কেউ না কেউ ,
আর আমরা এসবের নীরব দর্শক এটাই মানবিক যন্ত্রনা । হত্যাকারীরা কি মানুষ নয় , তারা
কি কখনও ভাবেনা এর চেয়েও করুন মৃত্যু তাদের জন্য অপেক্ষা করছে। শীতলক্ষা পাড়ের
আজকের যে কান্না তা হয়তো একদিন থেমে যাবে। আজ নিহতদের জানাজায় যে হাজার
হাজার মানুষ সৃষ্টিকর্তার কাছে দুহাত তুলে ফরিয়াদ করছে, মোনাজাত করছে , কান্নাকাটি
করছে। হত্যাকারীদের ওপরে এর একটা প্রভাব নিশ্চয়ই পড়বে। প্রতিদিন এত মৃত্যু ,এত
শোক ,স্বজনদের এত চোখের জল হত্যাকারীদের কি আহত করেনা । মানুষের ষড়যন্ত্র,
দায়িত্বহীনতা, শ্ত্রুতা যদি কারও জীবন কেড়ে নেয় সে দায় তো মানুষকে নিতে হবে । অপহরণ
যেমন আইনের চোখে আপরাধ, মৃত্যু ও তেমনি মহা আপরাধের সমতুল্য, তাই মৃত্যু শেষ
কথা নয় । হত্যাকারীদের সঠিক বিচার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি হলে নিহতদের আত্মা শান্তি
পাবে ।দেশবাসী আইনের শাসন পাবে, এটাই শেষ প্রত্যাশা ।
সাতক্ষীরা-৪.০৫.১৪
©somewhere in net ltd.