![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখক: সৌরভ সাফওয়ান
রাস্তার পাশে এক টুকরো কুচকানো ময়লা কাগজ চোখে পড়লো। কাগজ খানা বাম হস্তে নিলাম। কয়লার মত কালো কিছু তরল পদার্থের একটা নল ছিল পকেটে, এই নল খানা বের করে ডান হস্তে নিলাম এবং আঙ্গুলের সাহায্যে কুচকানো ময়লা কাগজের উপর কিছু দাগ টেনে দিলাম, ময়লা কাগজের গায়ে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু একটা লিখেছি।
আসলে লেখা গুলো ছিল নিজের সম্পর্কে। কাগজের লিখাটা ছিল এমন- তোমার মত আমার জীবন কুচকানো ময়লার ন্যায়। আজ থেকে জীবন পরিবর্তনের যুদ্ধে নেমেছি। হাজারো ঝড় তুপানেও পিছ পা হবো না। ইচ্ছে শক্তি আর মনোবল অটুট থাকবে, তুমি সাক্ষী।
অবাক কান্ড, কাগজ খানা অতি সহজেই কালি গুলোকে নিজের মধ্যে গ্রহণ করে নিয়েছে! আমার মত কুচকানো আর ময়লা ভরপুর ছিলো তাই অতি সহজে লেখা গুলো গ্রহণ করেছে সম্ভবত। সে আমার মতই তাই সহজেই বুঝেছে আমার কষ্টের কথা, আমার কষ্ট আর ইচ্ছে গুলো নিজের মাঝে গ্রহণ করেছে। অতি ক্ষুদ্র সময়ে আমার দুঃখ আর ইচ্ছে গুলোকে নিজের মধ্যে গ্রহণ করে খুব কাছের বন্ধু হয়েছে সে। অসময়ের বন্ধু হয়ে গেল এই ময়লা কাগজ খানা।
আমি আর এখন একা না, আমরা দুই বন্ধু, কুচকানো ময়লা কাগজ আর কুচকানো ময়লা জীবন, মানে আমি নিজেই। ওহ এত আবেগী হয়ে গেলাম যে আরেক বন্ধুর কথাই বলা হয়নি। আমাদের দু বন্ধুর বন্ধন যে গড়িয়ে দিল তার কথাটাই বলা হলো না।
আমরা এত সার্থপর আর আবেগী প্রাণী যে কিছু পাওয়ার পর সেটা নিয়েই পড়ে থাকি অথচ যার মাধ্যমে পেয়ে থাকি তাকেই ভুলে যাই। নাহ এতটা নীচু প্রাণীতে পরিনত হতে চাই না। দুই বন্ধু না, আমরা তিন বন্ধু। কুচকানো ময়লা কাগজ, কয়লার মত কালো তরল পদার্থের নল খানা আর আমি, মানে কুচকানো ময়লা জীবন।
কষ্টের ভুবনে এরাই সঙ্গী, এদের সাথে আমার যত ভালোবাসা রাগ ও অভিমান। সকল কষ্টের সাক্ষী।
কালের বিবর্তনে সময়ের স্রোতে কষ্ট গুলোও দূরীভূত হতে লাগলো। আমি এখন অনেক ভালো আছি, নেই কোন কষ্ট দুঃখ বেদনা। জীবনটাকে বেশ উপভোগ করছি এখন, বিশ্বাস করুন বিন্দু মাত্র কষ্টের আভাস নেই আমার মাঝে। ভাবতে পারিনি আমার মাঝে এত সুখ আসবে, এতটা আনন্দে কাটবে সময় গুলো। সুন্দর একটা নতুন জীবন পেলাম। আর কুচকানো সেই ময়লা কাগজ আর কালি নল খানাও ধীরে ধীরে আমার পর হতে লাগলো। আমি টেরই পেলাম না কখন যে এরা আমার থেকে অনেক দূরে সরে গেল। যাই হউক তাতে আমার কিছু যায় আসে না।
হঠাৎ একদিন সুখের কথা ভাবতে ভাবতেই কেমন যেন উদাসীনতা কাজ করছে আমার মাঝে। কি যেন অনুভব হচ্ছে মনের গহীনে। মনে হচ্ছে কি যেন হারিয়ে ফেলেছি, কি যেন নেই আমার মাঝে। সুখেই তো ছিলাম, আনন্দের মাঝেই তো ছিলাম। কি দরকার ছিল এই সুখ নিয়ে ভাবার! সুখের কথা ভাবতে গিয়ে মনের গহীনে কিছু একটা অনুভব হচ্ছে। নাহ, সুখ নিয়ে ভাবনার কোন দরকার নাই, এটা নিয়ে ভাবলেই উদাস হয়ে যাবো আবার।
হায়, এতটা সার্থপরের মত কেন বলছি! শুধু সুখ মানেই তো জীবন নয়। সুখ দুঃখ সব কিছু নিয়েই আমাদের জীবন। সার্থপরের মত কাজ করা একদমই উচিৎ হবে না৷ উদাসিনতার কারন খুজে বের করতে হবে, তাহলেই সুখ পূর্ণতা পাবে।
ভাবনার জগতে হারিয়ে গেলাম, ভেবেই যাচ্ছি কিন্তু উদাসীনতার কারন খুজে পাই না। এই উদাসিনতার ঘোরে সকল সুখ আনন্দকে হারিয়ে ফেললাম। উদাস মানব হয়ে একা একা হাটছি রাস্তার পাশে। চোখ পড়লো এক খানা কুচকানো ময়লা কাগজে।
কাগজটা হাতে নিয়ে বুঝতে আর বাকি রইলো না, এই কাগজ খানা সেই কাগজ যে আমার কষ্ট গুলোকে তার মাঝে ধারন করে নিয়েছিল, যে আমার কষ্টের সঙ্গী হয়েছিল। যার দিকে তাকালেই প্রতিনিয়ত মনে করিয়ে দিত আমার জীবনের দুঃখ আর সুন্দর ভবিষ্যতের কথা। যার কারনে কষ্টের জাল থেকে বের হয়ে সুখের নিবাসে বাস করি।
দুঃখের সময়ের সঙ্গীকে সুখের মেলায় হারিয়ে ফেলেছিলাম। কি নিষ্ঠুর প্রানী আমরা!
সেই কথা টা আরেকবার মনে পড়ে গেল- আমরা এত সার্থপর আর আবেগী প্রাণী যে কিছু পাওয়ার পর সেটা নিয়েই পড়ে থাকি অথচ যার মাধ্যমে পেয়ে থাকি তাকেই ভুলে যাই। আসলেই আমরা এমন প্রাণী, দুঃখের সময়ের বন্ধু হচ্ছে আসল বন্ধু অথচ সুখের সময় আসলে মনে পড়েনা সেই বন্ধুদের। ঠিক তেমনি ভাবে সুখের সময়ে আমি আমার এই বন্ধুটাকে হারিয়ে ফেলেছিলাম।
এই সুখের সময়ে আরেক বন্ধুকেও হারিয়েছি। দুঃখের সময়ে বলেছিলাম আমরা তিন বন্ধু, কয়লার মত কালো তরল পদার্থের একখানা নল, কুচকানো ময়লা কাগজ আর আমি, মানে কুচকানো ময়লা জীবন।
ওহ আমি এখন কুচকানো ময়লা জীবন নয়। আমার জীবনে এখন অনেক সুখ। এই দুই বন্ধুর কারনেই আমার জীবনে এত পরিবর্তন অথচ এদেরকেই ভুলে গিয়েছি। নিজেকে খুব নিম্ন মানের প্রাণী মনে হচ্ছে। ভুল বুঝতে পেরেছি নিজেকে ঠিক করে নেব এবার। কিন্তু নিজেকে ঠিক করলেই কি আমি আমার আরেক বন্ধুকে ফিরে পাবো? হয়তোবা পাবো না। এই ভাবনা টা আমার সুখের সময় ভাবা উচিৎ ছিল, কিন্তু তখন ভাবিনি। আর এখন ভেবেও লাভ নেই।
এই ভুল টা অনেক সময় তাড়া করবে। কিন্তু অতীতের ভুল নিয়ে পড়ে থাকলে আবার সকল কিছুই হারাতে হবে। সুতরাং অতীতের ভুলের কষ্টকে নিজের আয়ত্বের মাঝে এনে সুখে থাকার চেষ্টা করতে হবে। আরেকটা কথা, অতীতের জীবন এবং অতীতের সঙ্গীদের ভুলে যাওয়ার এই ভুলটা আর করা যাবে না।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১:১৮
সৌরভ সাফওয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য
২| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:৫০
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: অতীতকে ভুলে যান কোন দুঃখবোধ ছাড়া,বর্তমানকে গ্রহন করুন সাহসিকতার সাথে আর ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হোন আত্মবিশ্বাস নিয়ে।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১:২১
সৌরভ সাফওয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ ও ভালোবাসা মূল্যবান মন্তব্যের জন্য
৩| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:৫৯
মেহেদী হাসান হাসিব বলেছেন: অতীতের মন্দ ক্ষণ ভুলে যান।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১:২২
সৌরভ সাফওয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ ও ভালোবাসা
৪| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৭:৪৭
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য
ভালো থাকুন।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:৪১
রাজীব নুর বলেছেন: কিছু অতীত ভুলে যাওয়াই ভালো।