নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Writer & Director

সৌরভ সাফওয়ান

পিপাসিত এক ক্ষুদ্র লেখক

সৌরভ সাফওয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

কুসুম কলি

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:৪২


লেখক: সৌরভ সাফওয়ান

নারী তুমি অনেকেরই জান্নাত। তোমায় মর্যাদা ও গুরুত্ব দিয়েছেন স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ ও শ্রেষ্ঠ ধর্মপ্রবক্তা হযরত মুহাম্মাদ (সা)। হও তুমি কালো অথবা সাদা চামড়ার অধিকারী, সৃষ্টিকর্তার কাছে নেই কোন ভেদাভেদ। যখন জাহেলি যুগে তুমি ছিলে দুনিয়ার মানুষের কাছে বোঝা, ঠিক তখনই আলোকিত মানব দুনিয়ায় এসে, অন্ধের চোখে আলো দিয়ে তোমাকে করেছেন অধিক মর্যাদাবান। সেই থেকে তোমার মর্যাদা ও গুরুত্ব অধিক। তুমি দেখতে যেমনি হওনা কেন, কারো মেয়ে হয়ে জান্নাত আর কারোবা মা হয়ে তোমার চরণ তলে নিচে সন্তানের জান্নাত। তোমার মর্যাদা অধিক, যা বিবরণ দিয়ে শেষ করার মত নয়।
একটা সময় মানুষের মধ্যে সাদা ও কালোর ভেদাভেদ থাকলেও সেটা এখন আর নেই। এখন এই কথাটি সবাই জানে ও বিশ্বাস করে।

তবে সত্যিই কি সাদা ও কালোর মাঝে ভেদাভেদ নাই? নাকি কথাটি সত্যের আবরণে মোড়ানো মিথ্যে! যদি সাদা কালোর ভেদাভেদ না থাকে তাহলে কেন জলিল মিয়ার গরিব ঘরে কলি হয়ে জন্মানো কালো রঙের কুসুম কলি নামের মেয়েটির আজো বিয়ে হয়নি? কেন তার বয়স ত্রিশ পার হয়ে গেল? কেনই বা কুসুম কলির বাবা চিন্তায় দিনে দিনে রুগ্ন হচ্ছেন? আপনার সাথে একমত হতে পারছি না বলে আমি দুঃখিত, আপনার কাছে যা শুনেছি সব মিথ্যে। সাদা কালোর ভেদাভেদ এখনও রয়েছে। যদি কালো সাদার ভেদাভেদ না থাকতো তাহলে হয়তো আজ কুসুম কলি স্বামীর সংসার সামলানোর কাজে ব্যস্ত থাকতো। কিন্তু এখন সে বাপের সংসারে বোঝা হয়ে পড়ে আছে, আর পাড়ার লোকেদের নিয়মিত কানাঘেঁষা তো চলছেই। কুসুম কলির এই পরিস্থিতির জন্য আপনি কাকে দোষারোপ করবেন? সৃষ্টিকর্তাকে? কুসুম কলিকে? নাকি তার গরিব বাবাকে? লেখাটি পড়ার পর এরকম প্রশ্ন অনেকেরই মনে জাগতে পারে।

সৃষ্টিকর্তাকে দোষারোপ করার কোন সুযোগ নেই। এর সম্পূর্ণ দায়ভার আমাদেরই, আমরাই এরকম অনিয়মকে নিয়মে রূপান্তরিত করেছি। কারণ তিনি সাদা-কালো দুটোকে সমান মর্যাদা দিয়েছেন, যা আমি শুরুতেই লিখেছি। এখন আপনি যদি ভেবে থাকেন কালো সাদার নয় সৃষ্টিকর্তা তাকে গরিব ঘরে পাঠিয়ে ভুল করেছেন। গরিব ঘরে না হয়ে ধনীর ঘরে জন্ম নিলে কালো হলেও অনেক আগেই তার বিয়ে হতো। তাহলে বাবা মেয়েকে নিয়ে কোন চিন্তা করার প্রয়োজন হতো না। আমি বলবো আপনার এই ভাবনাটিও ভুল। যদি কুসুম কলির বাপ অঢেল ধনসম্পদের অধিকারী হতো তাহলে খুব সহজেই তার বিয়ে হতো এটা সত্য কথা। হয়তোবা তখন স্বামী ধন সম্পদের লোভে কুসুম কলিকে বিয়ে করতো, তাকে ভালো না বেসে তার বাপের সম্পদকে ভালোবাসতো। এতে তো তার জীবনে সুখ নয়; বঞ্চনাই বেশি হতো।

তা ছাড়া সৃষ্টিকর্তাকে দোষারোপ দেওয়া ঠিক হবে না। কারন, তিনি মানুষকে পৃথিবীতে পাঠানোর সময় সথে তিনটি জিনিস দিয়ে পাঠিয়েছেন, তার মধ্যে একটি হল বিবেক। বিবেককে খাটিয়ে মানুষ নিজের ভাগ্যকে পরিবর্তন করতে পারে।
আমার কথা গুলো পড়ে হয়তো এতক্ষণে আপনি বুঝতে পেরেছেন আমি কাদের দোষারোপ করছি। হ্যাঁ আপনার এই ধারণাটি সঠিক। কুসুম কলির দুরবস্থার জন্য দায়ী তার বাবা অথবা সে নিজেই। কুসুম কলি, কলি থেকে ফুল হয়ে ফুটতে পারেনি। পঞ্চম শ্রেণি পাসের পর সে এবং তার পরিবার পড়াশোনাকে আর প্রয়োজন মনে করেনি। হয়তোবা ভেবেছে এত পড়াশোনা করার কি প্রয়োজন, কুসুম কলি তো এখন সব লিখতে ও পড়তে শিখেছে, এটাই যথেষ্ট। কিন্তু ইচ্ছে করলেই সে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারতো। কেননা বর্তমান যুগে সরকারি খরচে পড়াশোনার জন্য সুব্যবস্থা রয়েছে। কুসুম কলি পড়াশোনা করে যদি নিজের পায়ে দাঁড়াতো তাহলে আজ তাকে এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হতো না। নিজের পায়ে শুধু ছেলেরা নয়, মেয়েরাও দাঁড়াতে পারে। এখন মেয়েদের আর কোন বাঁধা নেই, ছেলেদের মত মেয়েরাও সমাজের উজ্জ্বল নক্ষত্র হচ্ছে, তবে এর জন্য প্রয়োজন ইচ্ছে শক্তি ও প্রচেষ্টা। ইচ্ছে শক্তি থাকলেই সব কিছুই করা সম্ভব।

কুসুম কলি শুধু একটি কাল্পনিক চরিত্র। কিন্তু আমাদের দেশে হাজারো কুসুম কলি রয়েছে, বিশেষ করে গ্রামে, যারা কলি থেকে ফুল হয়ে ফোটার আগে ঝরে পড়েছে শুধু তাদের ভুল ধারণা এবং সঠিক সময়ে ভুল সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণে।
অন্যান্য মানুষ যদি সমাজে, দেশে, পৃথিবীতে নক্ষত্র হতে পারে তাহলে তুমি কেন পারবে না? তুমিও তো তাদের মতো রক্ত মাংসে গড়া মানুষ, তাদের মতো তোমারও রয়েছে বিবেক ও চিন্তাশক্তি! মনোবল ও ইচ্ছে শক্তি হারিয়ে ফেল বলেই তুমি অবহেলিত। দেখতে যতই কালো হওনা কেন, যদি মনোবল ও ইচ্ছাশক্তি থাকে এবং সফলতার জন্য প্রচেষ্টা কর, তাহলে এই ইচ্ছে শক্তি ও প্রচেষ্টা তোমার জীবনে সফলতা বয়ে আনবে। আর এই সফলতাই তোমার সুখ ও মর্যাদা বাড়িয়ে দেবে। তখন দেখবে মানুষ তোমার চেহারা এবং এবং সম্পদের চেয়ে সফলতাকেই বেশি গুরুত্ব দেবে এবং মর্যাদাবানদের কাতারে রাখবে তোমাকে। তখন দেখবে তোমাকে ভালোবাসার জন্য এই পৃথিবীতে মানুষের অভাব হবে না। পূর্বে যারা তোমাকে ঘৃণার পাত্রী হিসেবে দেখত, এখন তারাই তোমাকে নিয়ে না পাওয়ার আফসোস করবে।

আমি বলছি না তুমি পর্দা ত্যাগ করে সফলতা অর্জন কর, সফলতার জন্য বেপর্দা হওয়া লাগে না। বেপর্দা হওয়া ছাড়াও পর্দায় থেকে তুমি সমাজে উজ্জ্বল নক্ষত্র হতে পারো। পর্দা কখনও তোমাকে বাঁধা দেবে না, যদি তুমি সঠিক পন্থা অবলম্বন কর। আর এজন্য প্রয়োজন চিন্তা চেতনা, সংকল্প ও নিজের প্রতি দৃঢ় আত্মবিশ্বাস। চিন্তা চেতনাকে যত প্রসারিত হবে, সফলতা ততই নিকটবর্তী হবে। সফলতা অর্জনের মাঝ পথে বহু বাঁধার সম্মুখীন হতে হবে তোমাকে। নিজের প্রতি দৃঢ় আত্মবিশ্বাস রেখে এগিয়ে যাও, সফলতা নিশ্চিত। দুদিনের দুনিয়াই কোন রকম খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার জন্য সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টি করেনি তোমাকে। জীবনকে উজ্জ্বল নক্ষত্রের ন্যায় আলোকিত করো যাতে সকলে তোমার গুণগান গাইতে বাধ্য হয়। এমন কিছু করে যেতে হবে তোমাকে যাতে দুনিয়ার শেষ দিন পর্যন্ত মানুষ তোমার নাম মনে রাখে।
কুসুম কলি, এখনইতো শ্রেষ্ঠ সময় পুষ্পিত হওয়ার, জাগ্রত করো ঘুমন্ত মনোবল। কলি থেকে পুষ্পিত হও, সুভাসে সুশোভিত করো বিশ্বদরবার।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩৬

ওমেরা বলেছেন: লিখছেন ভালই কিন্ত !!

০২ রা মার্চ, ২০১৯ রাত ২:০৫

সৌরভ সাফওয়ান বলেছেন: কিন্তু কি , বলুন :)

২| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৩১

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: চরিত্রহীনা নারী চরিত্রহীন পুরুষের জন্য, আর চরিত্রহীন পুরুষ চরিত্রহীনা নারীর জন্য। সৎ চরিত্রবতী নারী সৎ চরিত্রবান পুরুষের জন্য, আর সৎ চরিত্রবান পুরুষ সৎ চরিত্রবতী নারীর জন্য।

০২ রা মার্চ, ২০১৯ রাত ২:০৬

সৌরভ সাফওয়ান বলেছেন: হ্যা সেটাও ঠিক

৩| ০১ লা মার্চ, ২০১৯ দুপুর ২:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: নারীদের সম্মান করা উচিত। তবে সমাজে অনেক দুষ্ট নারী আছে তাদের কাছ থেকে দূরে থাকা উচিত।

০২ রা মার্চ, ২০১৯ রাত ২:০৭

সৌরভ সাফওয়ান বলেছেন: ঠিক বলেছেন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.