![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখক: সৌরভ সাফওয়ান
নরেশ কুমার আমার নাম। গ্রামের সকলে নরেশ বলেই ডাকে, আর পরিবারের সকলে আদর করে নরু ডাকে। পরিবারের কাছে খুব আদরের আমি। কারন বাবা মায়ের চার সন্তানের মধ্যে এক মাত্র ছেলে আমি। দিদিরা সকলেই আমার বড়। দিদিদের বিয়ে হয়ে গেছে, যে যার সংসার নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে, আমারও পড়াশোনা নিয়ে মোটামুটি ব্যস্ততায় কাটছে সময়।
দেখতে না দেখতে অনেক সময় পার করে দিলাম, সময়ের স্রোত থেমে নেই, সময়ের সাথে জীবনের স্রোতও কম গড়ায়নি। বয়স টা পঁচিশ পেরিয়ে ছাব্বিশে পা দিয়েছি।
এদিকে বাবা মাও বৃদ্ধ হয়ে পড়েছে, বার্ধক্য রোজগার এর বাধা হয়ে দাঁড়ালো। রোজগারের এক মাত্র ব্যক্তি ছিল আমার বাবা। বাবার বয়সের কারনে এখন আর কর্ম করতে পারে না। এদিকে আমার পড়াশোনাটাও শেষ হল না। বাবারা সন্তানদের জন্য ভগবান থেকে পাওয়া বিশাল এক ছায়া। গাছের পাতা যত দিন থাকে ততদিন গাছের ছায়া থাকে যখন গাছের পাতা ঝরে যায় তখন আর গাছ ছায়া দিতে পারে না।
ছায়া চাইলেও বেশিদিন থাকে না, একটা সময় না চাইতেও ভগবানের দেয়া সেই ছায়া ভগবান নিয়ে যায়।
মাথার উপরের ছায়া টুকু ভগবান কেড়ে নিয়েছে। এটাই নিয়ম, একদিন সবাইকে এই রঙ্গমঞ্চ ত্যাগ করতে হবে, আমিও থাকবো না এই মঞ্চ থেকে আমাকেও যেতে হবে একটা সময়। কখন যাবো সেই সময় টুকু ভগবান ছাড়া কেউ জানে না। হয়তো বাবার মত আমিও কারো ছায়া হওয়ার পর তার ছায়া টাকে ভগবান নিয়ে যাবে, আর না হয় কারো ছায়া হওয়ার আগেই নিয়ে যাবে এই রঙ্গমঞ্চ থেকে।
দুনিয়া টা রঙ্গমঞ্চ হলেও এটা এখন আমার জন্য নরক। এর মাঝে কোন রঙ্গঢং নেই, কোথাও শ্রী খুজে পাই না, দেখি শুধু অশান্তি আর হতাশা।
যত দিন যায় ততই মাকড়সার মত জালের মত বৃদ্ধি হচ্ছে নিজের মাঝে থাকা হাজারো রকমের হতাশা। মাকড়সা তার জাল বসবাসের যোগ্য করে তুলে এবং সেখানে জন্ম গ্রহণ করে তার নিজের অনেক গুলো বাচ্চা। অবশেষে যে জাল তৈরি করে সেই জালেই নিজের প্রাণ হারাতে হয়। মানুষ নিজেকে হতাশায় বন্দি করে ধীরে ধীরে নিজেকে শেষ করে দেয়। একই ভাবে আমিও নিজেকে শেষ করে দিচ্ছি হতাশায় মোড়ানো জালে বন্দী হয়ে।
বয়স ছাব্বিশ হওয়া মানেই যুবক, না চাইতেও অনেক দায়িত্ব কাদে আসা শুরু করে এই বয়সে। এখন আর অতীত নিয়ে ভাবার কোন সুযোগ নেই, ভাবতে হবে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে। এ সকল ভাবনা হচ্ছে হতাশার জাল বুনার প্রথম ধাপ। যেদিন থেকে হতাশা শুরু সেইদিনই অন্ধকার নেমে আসে নিজের মাঝে। সূর্যের আলো থাকা সত্ত্বেও মনে হয় সব কিছুই অন্ধকার।
শুধু বাবার মৃত্যুর কারনে হতাশা তৈরি হয়নি, হতাশা কয়েক বছর আগে থেকেই শুরু হয়েছিল। এর কারন হিসেবে রয়েছে পরিবার, সমাজ, ধর্ম ও রাজনীতি।
রাজনীতি শুধু রাষ্ট্রীয় দল বল নয়, পরিবার সমাজ ধর্ম গোষ্ঠী সহ সকল কিছুতেই রাজনীতি রয়েছে৷ এসকল রাজনীতির প্রভাবে একজন যুবককে মানসিক ভাবে বিকলাঙ্গ করে ফেলে। শেষ করে ফেলে তার প্রবল ইচ্ছে শক্তি, বিশ্বাস, নৈতিকতা, ও আত্তবোধ।
কি করে একটা সমাজ, গোষ্ঠী, রাষ্ট্র উন্নত হবে! কি করে নিজেদের পরিবর্তন করে সাদা মনের মানুষে পরিণত করবে! এর কোন সুযোগ নেই। ছোট বেলা থেকে শিশুরা পরিবারে সমাজে সকলের থেকে অনিয়ম দেখে বড় হচ্ছে। সেই শিশু গুলো কিশোর বয়সে পা দিয়ে আরো বেশি অনিয়ম দেখে। সকল অনিয়ম তাদের মাঝে নিয়মে পরনিত হয়, সকল অনিয়ম তাদের ভালো লাগা শুরু হয়। অনিয়ম গুলোর মধ্যে একটা অনিয়ম কিশোরদের খুব বেশি ভালো লাগে এবং নিজেই সেই অনিয়মকে হাতিয়ার হিসেবে নিজের মধ্যে ধারণ করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে। সেই অনিয়ম হচ্ছে ক্ষমতার অপব্যবহার। সব মহল্লায় ক্ষমতাসীন কিছু ব্যক্তিবর্গ থাকে যারা সর্বদা ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজেদের অন্যায় কে ন্যায়ে পরিনত করে। এধরনের পরিবারের অধিকাংশ কিশোররা বড়দের থেকে এই ক্ষমতার অপব্যবহারের পন্থা নিজের মধ্যে ধারন করে নেয়। শুধু নিজের পরিবারের নয় এদের আত্মীয় পরিজন সহ এদের দূরসম্পর্কের যত লেজ, লতাপাতা আছে এদের অনেকেই ক্ষমতার অপব্যবহার নিজের মধ্যে ধারন করে। এরাই বড় হলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে, অরাজগতা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে সব স্তরে।
ক্ষমতাসীনদের দেখে কিছু কিশোর অনুপ্রাণিত হয়। ইস এর মত যদি হতে পারতাম তাহলে সবাই আমাকে ভয় করবে, এর সাথে যদি ভালো সম্পর্ক করতে পারতাম তাহলে মহল্লায় আমারও ক্ষমতা থাকতো। তারপর নিজেকে ঠেলে দেয় এই পথে। এই ধরনের কিশোররা যখন যুবকে পরিনর হয় তখন নিজের চাওয়া সেই স্থানে পৌছায়। তখন ভাবে তাকে সবাই ভয় পায়, নিজের ক্ষমতার জায়গা তৈরি করে নিয়েছে সে। আসলে এদের শেষ পরিনতি হয় টোকাই এর কাতারে, এরা সমাজের জন্য বিষাক্ত কীটপতঙ্গ। এদেরকে মানুষ সর্বদা ঘৃণার চোখে দেখে। সামনে কিছু না বললে পিছনে ঠিকই গালি দেয়।
আর ক্ষমতাসীনরা এদেরকে প্রয়োজনে ব্যবহার করে, প্রয়োজন পুরিয়ে গেলে টিস্যু পেপার এর মত ছুড়ে ফেলে দেয়। আমার দেখা অতীতের কিশোর যারা বর্তমানে যুবক, তাদের জীবন এই গণ্ডিতে পড়েছে।
আমি এদের মত নয়, কিশোর বয়সে আমার মাঝে এরকম কোন অনিয়ম চাওয়া পাওয়া ছিল না...
চলবে.....।
০২ রা মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৩:৫৩
সৌরভ সাফওয়ান বলেছেন: কিন্তু এই গল্পের নাম শ্রী নরক
২| ০২ রা মার্চ, ২০১৯ সকাল ১১:৩৭
নীল আকাশ বলেছেন: আপনি কি গল্প লিখছেন না প্রবন্ধ লিখছেন?
যদি এটা গল্প লিখে থাকেন তাহলে এটা গল্পের কিছুই হয় নি!
উপরের শুরুর সাথে নীচের লেখার কি মিল আছে ভালো করে দেখুন? অনেক গুলি লাইন টেনে টেনে শুধুই বড় করেছেন।
ধন্যবাদ!
০২ রা মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৩:৫২
সৌরভ সাফওয়ান বলেছেন: এই গল্পে সমাজের বাস্তব চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করছি, গল্পের একাংশ পোস্ট করেছি, ক্রমান্বয়ে পুরো গল্প পড়লে বুঝবেন আশা করি।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য
৩| ০২ রা মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৪:০১
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: আরও ভালো লিখার চেষ্টা করুন।ভালো লিখতেই হবে আপনাকে।
০৩ রা মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৫:১৫
সৌরভ সাফওয়ান বলেছেন: চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ প্রিয় ভাই
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা মার্চ, ২০১৯ সকাল ৭:২৮
রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের গ্রামের থানার নাম শ্রী নগর থানা।