![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখক : সৌরভ সাফওয়ান
আযানের মধুর ধ্বনি শুনে মুসলিম জাতি নিদ্রা ত্যাগ করে পবিত্র হয়ে নামাজ আদায় শেষে কার্জদিবস শুরু করে। যার কন্ঠে নামাজ ও কল্যানের আহ্ববান শুনি তিনিই হচ্ছেন মুযাজ্জিন। একি সুমধুর সুর! যত শুনি ততোই ভালো লাগে। পৃথিবীতে মানুষ যত সুর তৈরি করেছে এবং তৈরি করবে সব সুর আযানের সুরের চেয়ে কখনোই ঊর্ধে হবে না, আযানের সুরের সাথে অন্য কোন সুরের তুলনা করা বোকামি। এই উচ্চমর্যাদা সম্পন্ন সুর দৈনিক পাঁচবার শুনতে পাই ।
মুসলিম সমাজের প্রত্যেকটা মসজিদে মুয়াজ্জিন রয়েছে, যার কাজ হচ্ছে দৈনিক পাঁচ বার আযান দেওয়া,ইকামাত দেওয়া এবং মসজিদ পরিষ্কার করা। এর জন্য তাকে বেতন বাবদ দেওয়া হয় তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা। পৃথিবীতে চলার জন্য প্রত্যেকের অর্থ সম্পদের প্রয়োজন। তেমনিভাবে মুয়াজ্জিনদেরও দুনিয়াই চলার জন্য কিছু অর্থের প্রয়োজন।
ধরুন, একজন মুয়াজ্জিন কে চার হাজার টাকা বেতন বাবদ দেওয়া হয়, হতে পারে তিনি পরিবারের বড় সন্তান, ঘরে তার অসুস্থ বাবা, মা এবং ছোট ভাই বোন। পরিবার তার উপর নির্ভরশীল। বাবার ঔষুধের খরচ, ভাই বোনের পড়ার খরচ এবং পরিবারের যাবতীয় সব খরচ তাকেই বহন করতে হয়। কিন্তু তিনি প্রতিমাসে বেতন হিসেবে পায় চার হাজার টাকা,এই যুগে একটা পরিবারের এক মাসের খরচ চার হাজার টাকা দিয়ে চালানো সম্ভব নয়।
হয়তো ভাবছেন, মুয়াজ্জিনের বেতন ছাড়াও প্রতিমাসে মিলাদ পড়িয়ে এবং যাকাত ও ফিতরা সহ আরও কিছু টাকা হাদিয়া স্বরূপ পায়। তার মাসিক বেতন সহ ওই টাকা গুলো একসাথে হিসেব করে দেখলে তেমন বেশি টাকা হয় না। কিন্তু এ নিয়ে তারা কোন আপত্তি করে না, তারা সব সময় হাসি খুশি থাকে,কারন টাকার জন্য নয়, তারা আল্লাহ ও তাঁর দ্বীনকে ভালোবেসে খুশি মনে এই কাজটি করে।
সকলের সাথে তারা সুন্দর ব্যাবহার করে, সহজ সরল ভাবে জীবন যাপন করে এবং যে যাই বলুক তারা কোন কথা বলে না,সেটা মাথা পেতে নেয়। তাদের এই সহজ সরল জীবন যাপন কে অনেকেই মনে করে তারা খুব বেশি বোকা, ক্ষমতাহীন, মাথা উঁচু করে কথা বলার মত সাহস তাদের নেই। যে ব্যাক্তি এসব মনে করে,তারাই আসল বোকা। তারা মানুষদের সম্মান ও আত্মমর্যাদা দিতে শিখেছে। আপনার পাড়ার একটি ছেলে এবং আপনার মসজিদের মুয়াজ্জিন, এদুজনের পার্থক্য বের করলে বুঝতে পারবেন কে মানুষকে সম্মান করে। পাড়ার ছেলে টি আপনাকে কখনও সালাম দেয় না, কিছু ছেলে ছাড়া অধিকাংশ আধুনিক ছেলেরা সালাম দিতে শিখেনি, তারা মনে করে সালাম দিলে আপনার কাছে তার ক্ষমতা ও আত্মমর্যাদা কমে যাবে। কিন্তু মসজিদের মুয়াজ্জিনের সাথে আপনার যতবার দেখা হয় ততোবারই আপনাকে সালাম দেয়। সালাম দেওয়ার মানে এই নয় যে, ক্ষমতাসীন ও সম্মানি ব্যাক্তি ভেবেই আপনাকে সালাম দিয়েছে। সালাম দেওয়া সুন্নত, যে সালাম দিবে তার পুণ্য বেশি।
সাধারন মানুষের চেয়ে তাদের মর্যাদা অনেক বেশি, ফজরের নামযের পর মোক্তবে ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের কুরআন পাঠ দান করায় এবং নামায শিক্ষা সহ ইসলামী মাসালা শিক্ষা দেয় যেগুলো মানুষের পার্থিব ও পরকালের জন্য গুরুত্বপুর্ন। এবং প্রত্যেহ মসজিদ পরিষ্কার করেন। সেই তো ভাগ্যবান ব্যাক্তি, দ্বীনি ইলেম শিক্ষা দেয়া, নামাজের জন্য দৈনিক পাঁচবান মানুষদের আহবান করা এবং আল্লাহর ঘর পরিষ্কার করার সুযোগ সবার হয়ে উঠে না। এসকল কাজ কোন ছোট কাজ নয় এবং কোন লজ্জার কাজ নয়, এটা একটা সম্মানিত কাজ, এই কাজের প্রতিদান অবশ্যই তারা পাবে, এই সম্মানিত কাজ গুলো মুয়াজ্জিনরাই করে থাকে।
তাদের আযানের সুর আল্লাহ তায়ালার আরশ পর্যন্ত পৌছায়। তারা উচ্চ মর্যাদাবান। অসম্মান করে করে কথা বলবেন না। সম্মান দিতে শিখুন, ভালোবাসতে শিখুন, নিঃসন্দেহে এর প্রতিদান আপনি পাবেন
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ২:৪৫
সৌরভ সাফওয়ান বলেছেন: আপনার মন্তব্য খুব ভালো হয়েছে, ধন্যবাদ মন্তব্য ও অনুপ্রেরণার জন্য
২| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১০:৫২
ওমেরা বলেছেন: কোলাহাল মুক্ত ভোর রাতে মোআজ্জিনের আজানের সুমধুর সুরে আমার ঘুম ভাঙ্গত , আজানের সরে এক অনাবিল ভালোলাগায় আমার মন ভরে যেন ।
ভালো লাগল আপনার লিখা, ধন্যবাদ।
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ২:৪৬
সৌরভ সাফওয়ান বলেছেন: এই ভালো লাগা যেন সব সময় থাকে, দোয়া করি
৩| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১২:২৪
মা.হাসান বলেছেন: মানুষকে সম্মান দিলে নিজের সম্মান কমে না।
কাজেই মুয়াজ্জিন, ইমাম বা মসজিদের খাদেম সকলের সঙ্গেই সৌজন্য সূচক ব্যবহার করা উচিৎ ।
তবে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাও এমন হওয়া উচিৎ যে লেখা পড়া শেষ করে যেন মুয়াজ্জিনের চাকরি ছাড়াও অন্য কিছু করতে পারি।
মুয়াজ্জিনের কাজ করলে তা ভালোবাসা থেকে আসলেই বেশি ভালো।
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ২:৪০
সৌরভ সাফওয়ান বলেছেন: ভালো বলেছেন ভাই❤ ধন্যবাদ
৪| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ২:৫৯
রাজীব নুর বলেছেন: সমাজের প্রতি প্রতিটা মোয়াজ্জিনের অনেক দায় দায়িত্ব আছে। অথচ কোনো মসজিদের মোয়াজ্জিনকে তাদের দায়িত্ব পালন করতে দেখি না।
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ২:৪৩
সৌরভ সাফওয়ান বলেছেন: ভাই তাদের দায়িত্ব তারা যথাযথ পালন করা চেষ্টা করে, কিন্তু সমাজের এবং যারা কমিটির দায়িত্বে থাকে তাদের জন্য সব দায়িত্ব পালন না করতে বাধ্য হয়
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৯:৫৭
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনার লেখার বিষয় সুন্দর। মুআজ্জিনগন আমাদের সমাজের অবহেলিত শ্রেনির মানুষ। তাদের সামাজিক মর্যাদা যা-ই থাকুক, অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা অধিকাংশের নেই বললেই চলে। অনেকে মুআজ্জিনকে খাটো চোখে দেখে থাকেন। এক মসজিদের মুতাওয়াল্লীকে দেখেছি, মুআজ্জিনকে দিয়ে তার পারিবারিক সকল কাজ কর্ম করাতে। লাকড়ি চিড়াই, বাজার ঘাট করা থেকে শুরু করে হেন কাজ নেই যা এই ব্যক্তি মুআজ্জিন হাফেজে কুরআনকে দিয়ে করায়নি। কাজ না করলেও বিপদ। বকাবকি তো আছেই। চাকরি থেকে বাদ দেয়ারও হুমকি ছিল। হঠাত করে সে চাকরি পাবে কোথায়? পেটের দায়ে সকল অত্যাচার সয়ে বেচারা চাকরিটা টিকিয়ে রাখতে বাধ্য হয়েছে। যাক, শেষ পর্যন্ত হাফেজ সাহেবের মুক্তি মিলেছে। মুতাওয়াল্লী ভদ্রলোক পরলোকে গত হয়েছেন। বছর দেড়েক পূর্বে। এখন আর আগের মত কলুর বলদ হতে হয় না তাকে। ----এসব মোটেই ঠিক নয়। হাদিসের আলোকে মুআজ্জিনগন পরকালে উঁচু মর্যাদার অধিকারী হবেন। তাদের সম্মানিত করবেন মহান আল্লাহ পাক। তো, আল্লাহ পাক যাদের সম্মান বৃদ্ধি করে দিবেন, হে মানুষ, আপনি কেন তাকে হেয় চোখে দেখতে পছন্দ করেন? আপনিও তাকে সম্মান করুন, আপনার সম্মান আরও বাড়িয়ে দিবেন আল্লাহ পাক।
আশা করছি, লেখার মান বাড়াতে আরও সচেষ্ট হবেন। ধন্যবাদ।