নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সংক্রান্তির সলতে। লেখক সম্পাদক ওয়েব প্রকাশক

শ্রীশুভ্র

ফ্রীল্যান্স লেখক

শ্রীশুভ্র › বিস্তারিত পোস্টঃ

বুদ্ধিজীবীদের গোত্রান্তর

০৩ রা আগস্ট, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬



বুদ্ধিজীবীরা সাফল্যের শিখরে উঠে যত বেশি আখের গুছিয়ে নিতে পারে, তত বেশি করে এক একজন জাফর ইকবাল হয়ে যায়! কথাটা উঠছে এই কারণেই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হওয়া 'মুক্তিযুদ্ধা কোটা" বিরোধী আন্দোলনে সামিল হওয়া পড়ুয়াদেরকে স্বনামধন্য লেখক অধ্যাপক বুদ্ধিজীবী জাফর ইকবালের 'রাজাকার' বলে মনে হচ্ছে। তিনি হয়তো খেয়াল করেননি। সালটা ১৯৭২-১৯৯৯ নয়। সালটা ২০২৪। আমরা এখন একুশ শতকের প্রায় এক চতুর্থাংশ কাল কাটিয়ে ফেলেছি। আজকে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের সকলেরই জন্ম এই শতকেই। আজকে বাংলাদেশের কর্মপ্রার্থীদের বেশিরভাগই এই শতকেই জন্মেছে। তাঁদের কেউই জাফর ইকবালদের সময়ে জন্মগ্রহণ করেনি। জাফর ইকবাল সম্ভবত এখনো বিগত শতকের সপ্তম দশকেই পড়ে রয়েছেন। সেই সময় সদ্য স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশে মুক্তিযেদ্ধা কোটা বিরোধী আন্দোলন হলে, অবশ্যই তিনি আন্দোলনকারীদের রাজাকার বলে চিহ্নিত করতে পারতেন। রাজাকার বাদে কেউ তাঁর কথার বিরোধীতা করতো এগিয়ে আসতো না। কিন্তু ইতিমধ্যে বাহান্ন বছর চলে গিয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পেড়িয়ে এসেছে অর্ধ শতাব্দী। স্থান কাল পাত্র এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে না কখনোই। কিন্তু জাফর ইকবাল দাঁড়িয়ে গিয়েছেন। তাই হয়তো তাঁর সমস্যা হচ্ছে। সর্বত্র রাজাকার দেখার ভুত তাঁকে এখনো ছেড়ে যায়নি। এমনটাই যদি হয়। তবে সে কোন বড়ো সমস্যা নয়। সে সমস্যা ব্যক্তি জাফর ইকবালের। নিজের চোখে ছানি পড়লে। ভুক্তভুগীকেই চিকিৎসকের দুয়ারে গিয়ে কড়া নাড়তে হয়। কারণ সমস্যা তাঁর নিজের। ছানিপড়া চোখের রুগী কি দেখতে কি দেখছেন। কাকে দেখতে কাকে ভাবছেন। তাই নিয়ে পাড়া প্রতিবেশীর কোন সমস্যা হয় না। সমস্যা হয় রুগীর নিজের। এবং তাঁর কাছের স্বজন পরিজনদের। কিন্তু ঘটনা যদি তা না হয়। তবে সমস্যা কিন্তু জাফর ইকবালের নয়। সমস্যা সমগ্র বাংলাদেশের নাগরিকের। আরও একটু গভীরে গেলে। সমস্যা বাঙালি জাতিরই।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রাণ দেওয়া প্রায় ত্রিশ লক্ষ্য বাঙালির রক্তের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা প্রাপ্তি। তাতে সেই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধার অবদান রয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশ তাঁদের প্রত্যেকের অবদানকে স্বীকৃতি দিতেই এক কোটা সিস্টেম প্রবর্তন করেছিল। একমাত্র রাজাকার বাদে এই কোটা সিস্টেমের বিরুদ্ধে সেদিনের বাংলাদেশের নাগরিকদের কোন বিরুদ্ধতা ছিল না। কিন্তু সমগ্র দেশের জনসংখ্যার অনুপাতে রাজাকাদের সংখ্যা নিশ্চয় খুব বেশি ছিল না। আমরা অনুপাতের কথা বলছি। স্বাধীনতার পর অর্ধশতক পার করা আজকের বাংলাদেশে সেই অনুপাত নিশ্চয় আরও নগন্য হয়েছে। না হলে দেশটা আজকে যতটুকু এগিয়েছে্। নিশ্চিত করে বলা যেতে পারে, ততটুকু এগোতে সফল হতো না নিশ্চয়। এদিকে ইতিমধ্যেই বিগত অর্ধশতক ধরে মুক্তিযোদ্ধাদের অধিকাংশ পরিবারই এই কোটা সিস্টেমের সুফল ভোগ করে এতদিনে একটা জায়গা মতো অবস্থানে এসে পৌঁছিয়েছেন। কেননা কোটা সিস্টেমের উদ্দেশ্যই তো সেইটি। ফলে আজ এই একুশ শতকের এক চতুর্থাংশ কাল অতিক্রম করে সেই সেই মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের আর তো কোন কোটা সিস্টেমের মুখাপেক্ষী থাকার কথা নয়। তাঁরা বিগত অর্ধশতক ধরে এর সুফল ভোগ করে এসেছেন। এখন তাঁদের বর্তমান প্রজন্ম সমগ্র দেশের সাথে বিনা কোটা সিস্টেমে একটা লেভেল-প্লেয়িং ফিল্ডে দাঁড়িয়ে নিজেদের যোগ্যতায় এগিয়ে যাবে। তেমনটাই অভিপ্রেত। আর সেটাকেই কোটা সিস্টেমের সাফল্য হিসাবে ধরে নতুন শতকের এই সন্ধিক্ষণে কোটা সিস্টেম তুলে দেওয়াটাই দেশের পক্ষে সর্বদিক দিয়ে শুভ।

একটা দেশের উন্নতির পিছনে প্রয়োজন যোগ্যতম জনসম্পদের। কোন কোটা সিস্টেমই সেই যোগ্যতম জনসম্পদ গড়ে তোলা বা জোগান দেওয়া নিশ্চিত করতে পারে না। উল্টে বহুক্ষেত্রেই দুর্বলতম এবং অযোগ্য মানুষদের হাতে সমাজের বহুক্ষেত্রের স্টিয়ারিং চলে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু যতদিন সেই কোটা সিস্টেমের প্রয়োজন ছিল, দেশ কিছুটা ক্ষতি মেনে নিয়েও এগিয়ে চলার চেষ্টা করেছে। তাতে যত দ্রুত এগোনোর কথা। তত দ্রুত ততটা এগোনো হয় না। না হলেও, কিছুদিনের জন্য দেশের সমাজের দিকে তাকিয়ে সেই ক্ষতিটুকু মেনে নিতেই হয়। শরীর খারাপ হলে প্রয়োজনে স্যালাইন দিতে হয় যেমন ঠিক। তেমনই শরীর একটু স্টেবল হলে সেই স্যালাইন দেওয়াও বন্ধ করা, সুচিকিৎসারই লক্ষ্মণ। কিন্তু কোন রুগীই শরীরে কিছুটা বল পেয়ে গেলে আরও স্যালাইন দিতে হবে বলে যেমন দাবি করে না। ঠিক তেমনই একটা দেশের কোটার সুবিধে প্রাপ্ত অংশ পঞ্চাশ বছরে কিছুটা পরিমাণে হলেও মোটামুটি নিজের পায়ে দঁড়িয়ে স্বাধীন ভাবে হেঁটে চলে বেড়াতে পারলে, তাদের পক্ষেও আর মুক্তিযোদ্ধা কোটা সিস্টেমের উপরে নির্ভর করা শোভা পায় না। কিন্তু তারপরেও যদি কেউ কোটা সিস্টেম ধরে রাখার বিষয়ে সওয়াল করেন। বুঝতে হবে তাঁর মানসিক সুস্থতার বিষয়টাই সন্দেহজনক।

ফলে কালের নিয়মেই আজকের প্রজন্ম বাংলাদেশে এই মুক্তিযোদ্ধা কোটা তুলে দেওয়ার দাবি জানাবে। সেটাই সমগ্র বাংলাদেশের পক্ষে শুভ লক্ষ্মণ। বাঙালির পক্ষেও গৌরবের বিষয়। এতদিন বাদেও একটি শ্রেণী বংশ পরম্পরায় কোটা সিস্টেমের সুযোগ নিয়ে প্রজন্মের পর প্রজন্ম প্রায় ফোকটে আখের গুছিয়ে নিতেই থাকবে। আর সমাজের বাকি অংশ নিজেদের মধ্যে অসম প্রতিযোগিতার ভিতর দিয়ে যেতে বাধ্য হবে। এমটা সত্যিই কোনরকম শুভ বুদ্ধিতে মেনে নেওয়া যায় না। হ্যাঁ আর্থিক ভাবে দারিদ্রসীমার নীচে থাকা অংশের মানুষদের জন্য কোটা সিস্টেম চালু থাকুক। সমাজে সমাজিক ভাবে পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা সিস্টেম চালু থাকুক। সে এক কথা। কিন্তু সামাজিক ভাবে অগ্রসর, আর্থিক ভাবে স্বচ্ছলদেরকেও ঐতিহাসিক ভাবাবেগে শুধুমাত্র বংশকৌলীন্যের ভিত্তিতে অর্ধ শতাব্দী পরেও একটা কোটা সিস্টেমের সুবিধে দিতে হবে। এ কেমন কথা। এতো একটা দেশের পক্ষে, একটা জাতির পক্ষে নিজের পায়ে নিজেই কুড়ুল মারার মতো বিষয়।

আনন্দের কথা। আজকের বাংলাদেশের পড়ুয়াদের একটা বড়ো অংশই এই সার কথটুকু অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছে। তাই তারা একটি অত্যন্ত ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনে সামিল হয়েছে। তাঁদের দাবি কিন্তু সময়ে দাবি। কালের লিখন। সেই দাবিকে যাঁরা দাবিয়ে দিতে চান। সমাজের পক্ষে তাঁরা আর কিন্তু শুভ নন। দেশের পক্ষে তাঁরা অত্যন্ত বিপদজনক। ফলে আজকে যদি তাঁদের কেউ কেউ এই ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনরত পড়ুয়াদেরকে দেখে রাজাকার বলে মনে করতে থাকেন। তবে সাধু সাবধান।

আজকের বাংলায় দুঃখজনক ভাবে কাঁটাতারে দুই পারেই একটা বিষয় সমান ভাবেই লক্ষ্মণীয়। বুদ্ধিজীবী শ্রেণীর নৈতিক অধঃপতন। জাতি হিসাবে বাঙালির এমন দুর্যোগ কালে কালে অনেক বারই এসেছিল আগে। সমগ্র জাতিকেই তাঁর সুদে আসলে দাম দিতে হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতিক প্রায় দুইশত বছরে এমন দুর্যোগ কিন্তু আর দেখা যায়নি। যায়নি বলেই ব্রিটিশের শাসনের অবসান ঘটেছিল। যায়নি বলেই পাক হানাদার মুক্ত হয়ে আজকের বাংলাদেশরও জন্ম হয়েছিল। যায়নি বলেই একদিন প্রবল পরাক্রান্ত স্বৈরাচারী শাসক এরশাদেরও পতন ঘটেছিল। আর এই সব কিছুর পিছনেই অন্যতম প্রধান ভুমিকা নিয়েছিল বাঙালির ছাত্রসমাজ। সেই ছাত্রসমাজের বিরুদ্ধেই একজন জাফর ইকবাল যে আক্রমণটা শানালেন। দেখতে হবে তার পিছনের সমীকরণগুলি ঠিক কী কী।

আমরা এমন একটা সময়ের ভিতর দিয়ে চলেছি। যে সময়ের একটা বিশেষ ধর্ম বিশ্বের অধিকাংশ অঞ্চলেই প্রকট ভাবে ফুটে উঠেছে। উঠেছে তার একটাই কারণ। পুঁজিবাদের অপ্রতিহত গতি। পুঁজিই এখন সবকিছুর শেষ কথা বলছে। পুঁজিই এখন রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিয়ে নিয়েছে। পুঁজির হাতে অশেষ ক্ষমতা। আর পুঁজির মালিকের স্বার্থেই সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রীত হয়ে চলেছে। ইউরোপ আমেরিকা থেকে শুরু করে আমাদের উপমহাদেশ। পুঁজির মালিকপক্ষের স্বার্থই শেষ কথা বলছে। শেষ কথা বলবে। ফলে তারাই ঠিক করে দিচ্ছে জনগণ কাদেরকে শাসন ক্ষমতায় বসাবে। আর দরকারে ইউক্রেনের মতো হুজ্জুতি করে কাদেরকে শাসন ক্ষমতা থেকে ফেলে দেবে। মিডিয়ার নিয়ন্ত্রণ পুঁজির হাতে। ফলে পুঁজিপতিদের স্বার্থেই মিডিয়া শাসকের পক্ষ নিয়ে ক্রমাগত শাসকবন্দনার ঢোল বাজিয়ে চলেছে। ইউরোপ থেকে আমেরিকা। ভারত থেকে বাংলাদেশ। বাংলার বুদ্ধিজীবী শ্রেণীই শুধু নয়। ইউরোপ আমেরিকার বুদ্ধিজীবীরাও এই সার সত্যটি বুঝে গিয়েছে। তাঁরা বুঝে গিয়েছে পুঁজির স্বার্থের লেজে পা দেওয়া বিপদজনক। ফলে যেখানে যেখানে শাসকগোষ্ঠী পুঁজিপতিদের হাতের পুতুল। সেখানে সেখানেই এই সকল বুদ্ধিজীবীরাও মিডিয়ার মতোনই শাসকের স্বার্থে ঢাক ও ঢোল বাজাতে উঠে পড়ে লেগে গিয়েছে। লক্ষ্য তাঁদের একটিই। দেশ গোল্লায় যাক। জাতি অধঃপতনে যাক। পুঁজিপতিদের গুডবুকে থেকে তাঁদের নির্ধারিত শাসকগোষ্ঠীর পক্ষ নিয়ে ক্রমাগত ভাবে জনতাকে বিভ্রান্ত করে যাওয়া। এবং এই কাজে পুঁজিপতিদের নির্দেশে শাসকগোষ্ঠী এইসব বুদ্ধিজীবীদেরকেও ধান্দায় লাগিয়ে দেয়। ফলে বুদ্ধিজীবীরাও যেমন শাসকশ্রেণীর দিকে হাত বাড়িয়ে রাখে। শাসকশ্রেণীও তেমনই বুদ্ধিজীবীদের ক্রমাগত নিজেদের আওতায় নিয়ে আসার জন্য পুঁজির বলে বলীয়ান হয়ে ক্রমাগত নানারকম টোপ দিয়ে যেতে থাকে। এদিকে কালের নিয়মে সেই টোপ গিলবার জন্য আজ বুদ্ধিজীবীদের লাইন লেগে গিয়েছে। কাঁটাতারের দুইপারেই। ফলে একদিকে পুঁজিপতিদের হাতে থাকা মিডিয়া। আর একদিকে শাসকগোষ্ঠীর হাতে থাকা বুদ্ধিজীবী। ২৪ঘন্টাই এই দুই পক্ষই শাসকশ্রেণীর বন্দনাগীতে জনতাকে ক্রমাগত বিভ্রান্ত করে রাখে। অন্যদিকে পুঁজি দুইবেলা জনতার পকেট কেটে চলে।

ঠিক এই প্রেক্ষাপটেই আজকে জাফর ইকবালদের কথাগুলিকে। জাফর ইকবালদের কাজগুলিকে বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। নয়তো কুনজরকে চোখের ছানিজনিত শারীরীক সমস্যা বলে ভ্রম হতে পারে। জাফর ইকবালরা কেউ বিচ্ছিন্ন নন। বস্তুত বাঙালি বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়। নিজের মেধাবলে, বুদ্ধিবলে এবং নিরন্তর পরিশ্রমলব্ধ সাফল্যের উপরে দাঁড়িয়ে একবার যদি কোনভাবে জনপ্রিয়তা পেয়ে যান। তবে সেই জনপ্রিয়তাকে ভাঙিয়ে তাঁরা পরবর্তী চৌদ্দ পুরুষের আখের গুছিয়ে নিতে গোত্রান্তর ঘটিয়ে শাসক-পুঁজিপতি বৃত্তে ঢুকে পড়ার লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েন। দুই পক্ষেই একেবারে উইন উইন সিচ্যুয়েশন। আজকের পশ্চিমবঙ্গ তো এই বিষয়ের একটা বড়ো ল্যাবরেটরিতে পরিণত হয়ে গিয়েছে। একই রকম ঘটনা ঘটছে বাংলাদেশেও। ফলে জাফর ইকবাল কোন দলছুট ব্যাতিক্রমী মানুষ নন। বরং তিনি একেবারেই ঝাঁকের কই। সাফল্যই বাঙালি বুদ্ধিজীবীদেরকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে। শাসকবন্দনাগীতে নিজেদেরকে উজার করে দিতে হবে। শাসকের স্বার্থে কোনরকম আঘাত এলে। সেই আঘাত প্রতিহত করতে জনতাকে সর্বতোভাবে বিভ্রান্ত করে রাখতে হবে। আর সেই কাজের দোসর, মিডিয়ার সাহায্য তো সাথে রয়েইছে। ফলে বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের এখন পৌষমাস। আর সেটাই বাংলা ও বাঙালির সর্বনাশ।

যে কোন জাতি ঠিক ততটাই বড়ো। তার বুদ্ধিজীবীরা যতখানি বড়ো। সেই বুদ্ধিজীবীরাই যদি ক্রমাগত নিজেরা অধঃপতনের দিকে এগিয়ে চলতে থাকেন। তবে সেই জাতির দুঃখের তিমির পার করা কঠিন কাজ। যে কোন শুভবুদ্ধির বাঙালিই মুক্তিযোদ্ধা কোটা তুলে দেওয়ার আশু প্রয়োজনের গুরুত্ব বুঝতে সক্ষম। আর স্বনামধন্য বাংলার গৌরব জাফর ইকবাল সেই সহজ বিষয়টুকু সোজা ভাবে বুঝতে পারছেন না। এমনটা তো হতে পারে না। আসলে সাফল্যের চাকচিক্যে তাঁর গোত্রান্তর ঘটে গিয়েছে। জীবন শুরু করেছিলেন মানুষের পক্ষ নিয়ে। মানুষের জন্য কাজ করতে। আজকে তাঁরাই পুঁজির পক্ষ নিয়ে পুঁজির স্বার্থরক্ষায় নিয়োজিত শাসকগোষ্ঠীর হয়ে কাজ করতে লেগে গিয়েছেন। এই গোত্রান্তর ঘটে চলেছে দুই বাংলাতেই। বুদ্ধিজীবীরা আর জনতার দিকে নেই। তাঁরা আর মানুষের পক্ষ নিতে পারেন না। তাঁদের টিকি যে যে খুঁটিতে বাঁধা। সেই সেই খুঁটির বাঁধাগৎ আউড়ানোই তাঁদের রুটিন কাজ আজকে। সেটাই তাঁদের দায়িত্ব। সেই কর্তব্যেই অবিচল তাঁরা আজ। একজন জাফর ইকবাল সেই ঘরনারই অন্যতম মুখ। সজ্ঞানে, সচেতনে।

©শ্রীশুভ্র ১৭ই জুলাই ২০২৪।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা আগস্ট, ২০২৪ রাত ৮:১০

কামাল১৮ বলেছেন: এখ কি ৫পারসেন্ট বাদ দিতে বলছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.