নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিখতে ভালো লাগে তাই লিখি।

সুদীপ কুমার

মন যা চায়।

সুদীপ কুমার › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালোবাসি যাকে ( তৃতীয় পর্ব)

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:০১



করিডরে ইলোরার সাথে জয়ন্তর দেখা হয়।ইলোরা দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসছে।ক্লাসে যেতে লেট হয়েছে তার।শিক্ষকদের ডরমেটরি হতে ওদের ফ্যাকাল্টি অনেক দূর হয়ে যায়।আর ইলোরা যে সময় বেরোয় সেই সময় রিক্সা পাওয়া খুব কঠিন।রোদে হেঁটে এসেছে,তাই ইলোরার ফর্সা পানপাতা মুখটি লাল হয়ে আছে।জয়ন্ত মুগ্ধ হয়ে ইলোরাকে দেখতে থাকে।দু’জনের চোখাচোখি হয়।কেউ কোন কথা বলেনা।যে যার গন্তব্য স্থলে চলে যায়।
রেণু দোতলায় দাঁড়িয়ে ছিল।সাথে কয়েকজন বন্ধু।দোতালা থেকে রেণু জয়ন্তকে লক্ষ্য করছিল।সে খেয়াল করে জয়ন্ত স্যার একভাবে তাকিয়ে ছিল ইলোরার দিকে।অযথাই রেণুর মন খারাপ হয়ে যায়।
-চল সবাই।বাস চলে এসেছে।জয়ন্ত স্যারও রওনা দিয়েছে।
সোহেল রেণুদের তাড়া দেয়।
-আমার আজকে যেতে ইচ্ছে করছেনা।তোরা প্র্যাক্টিক্যাল করে আয়।আমি তোদের কাছ থেকে বুঝে নেবো।
রেণু বলে।
-তুই না গেলে কি করে হবে?স্যার তো তোর জন্যে আমাদের বকবে। প্রিয় ছাত্রী বলে কথা।
মমতাজ বলে।
শেষ পর্যন্ত রেণু সবার সাথে বাসে গিয়ে উঠে।

-তোর ইলোরার সাথে লাগতে যাওয়া ঠিক হয়নি।ইলোরা ঢাকার মেয়ে।আর খুব ডেসপারেট প্রকৃতির।ভালো জুডো জানে।
বাসে যেতে যেতে মমতাজ বলে।
রেণু কোন উত্তর করেনা।ও যে কেন ইলোরার পোষাক পড়েছিল একমাত্র ওই জানে।ইলোরাকে পোষাকটি জয়ন্ত স্যার কিনে দিয়েছিল।

জয়ন্ত ব্ল্যাক বোর্ডে মুরগীর রিপ্রোডাকটিভ অঙ্গের ছবি আঁকে।এরপর সে টেবিলে গিয়ে মুরগীর পোষ্টমর্টেম করে।রেণুরা গোল হয়ে স্যারের মুরগী কাটা দেখছে।
-দেখো,এখানে একটি ডিম আটকে আছে।আর মুরগীটি গতরাতে মারা গিয়েছে।এটি হলো এগ বাউন্ড কন্ডিশন।তোমরা জেনেছো,এনার্জি ঘাটতি পড়লে মুরগীর এগ বাউন্ড কন্ডিশন হয়।এছাড়াও মাসল টোন নষ্ট হলেও ডিম আটকে যেতে পারে।ফিডে ক্যালসিয়াম আর ফসফরাসের ব্যালেন্স নষ্ট হলে মাসল টোন নষ্ট হতে পারে।
জয়ন্ত বলে।
-স্যার ক্যালসিয়াম ঘাটতি হলে ডিমের খোসা পাতলা হয় কি?
রেণু প্রশ্ন করে।
-হ্যাঁ।এছাড়াও ডিজিস কন্ডিশন,মুরগীর বয়স এগুলোর উপরও এগ সেল কন্ডিশন নির্ভরশীল।
জয়ন্ত উত্তর দেয়।
ক্লাস শেষ করে জয়ন্ত ল্যাবে চলে যায়।রেণু মমতাজকে বলে ওরা যেন বাসে করে চলে যায়।সে পরে আসবে।

ঘন্টা খানেক পর জয়ন্ত ল্যাব থেকে বেরিয়ে আসে।রেণুকে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে।
-কি তুমি এখনও যাওনি?
-বাস মিস করেছি স্যার।
রেণু অসহায়ের মত বলে।
জয়ন্ত রিক্সা দাঁড় করায়।রিক্সায় চেপে বসে।
-দাঁড়িয়ে থেকে দেখছো কি? উঠে এসো।
মূহুর্তে রেণুর সামনে লক্ষ প্রজাপতি ডানা মেলে।

ইলোরা ক্লাস রুমের জানালা দিয়ে সামনের রাস্তা দেখছিল।রিক্সা থেকে জয়ন্ত আর রেণু দিদিকে নামতে দেখে।রেণু দিদিকে খুব উচ্ছল দেখাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর ইলোরা ক্লাস থেকে বেরিয়ে আসে।বাসার দিকে রওনা দেয়।

শেষ বিকেলে জয়ন্ত বাসায় ফেরে।বাসার কলিংবেল চাপলে ইলোরা দরজা খুলে দেয়। জয়ন্ত খেয়াল করে ইলোরার মুড অফ।পড়নে জুডোর ড্রেস।সে বাসায় প্রবেশ করে নিজের ঘরে চলে যায়।ফ্রেস হয়ে সেও ইলোরার সাথে যোগ দেয়।
-দেখি কতটুকু শিখেছো?
জয়ন্ত এ কথা বলেই ইলোরাকে প্যাঁচে ফেলতে চায়।ইলোরা জয়ন্তকে ম্যাটে আছড়ে ফেলে।দ্বিতীয়বার জয়ন্ত আছড়ে ফেলে ইলোরাকে।
-মা কোথায়?
জয়ন্ত জানতে চায়।
-মাসি হাঁটতে বেরিয়েছে।রেণু দিদি তোমার রিক্সায় কেন?
ইলোরা বলে।
-কেন কি হয়েছে?
জয়ন্ত প্রশ্ন করে।
-উনার জন্যে আমি হল ছাড়া।আর উনাকে তুমি রিক্সায় নিয়ে ঘুরছো।
বেশ জোরের সাথে ইলোরা বলে উঠে।
-আরে একজন ছাত্রী শিক্ষকের রিক্সায় উঠলে সমস্যা কি?আচ্ছা বিকেলের ক্লাসে তোমাকে পেলামনা কেন?
জয়ন্ত হাসতে হাসতে বলে।
আচমকা ইলোরার মাথায় আগুন জ্বলে উঠে। সে জয়ন্তর পেটে কিক করে বসে।জয়ন্ত ব্যাপারটার জন্যে মোটেও প্রস্তুত ছিলনা।সে ছিটকে গিয়ে মেঝেতে পড়ে।ব্যাথায় কুঁকড়ে যায়।ইলোরা দৌড়ে নিজের ঘরে চলে যায়।বিছানায় উপর হয়ে পড়ে কাঁদতে শুরু করে।

কিছুক্ষণ পর জয়ন্ত ইলোরার ঘরে যায়।ওর পাশে বসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।ইলোরা ডুকরে ডুকরে কাঁদতে থাকে।জয়ন্ত ইলোরাকে বিছানা থেকে টেনে তুলে, চোখ মুছে দেয়।তারপর আলতো করে ইলোরার কপালে চুমু খায়।
-তুই এখনও সেই পাগলিই রয়ে গেলি।বড় হলিনা।যত রাগ শুধু আমার উপর।
জয়ন্ত বলে।
ইলোরা জড়িয়ে ধরে জয়ন্তকে।জয়ন্তও শক্ত করে চেপে ধরে ইলোরাকে।
-কোন মেয়েকে তোমার পাশে দেখলে আমার মাথায় আগুন ধরে যায়।আর হ্যাঁ,আমি তোমার সেই ছোট্ট খুকি নই আর যে আমাকে তুই বলবে।
এই কথা শেষ করে ইলোরা জয়ন্তকে প্রগাঢ় চুম্বন করে।আর ঠিক এই সময় কলিংবেল বেজে উঠে।

প্রথম পর্ব- (Click This Link)
দ্বিতীয় পর্ব- (Click This Link )
(চলবে)

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টের সাথে ছবিটা দেখে লেখাটা আর পড়তে ইচ্ছা হয় নি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.