নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"আমি আমার দেশ, সংস্কৃতি, পরিবেশ ও ধর্ম নিয়ে লিখি—সত্য ও সৌন্দর্যের সন্ধানে। আমার লেখাগুলোতে খুঁজে পাবেন বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি, অনুভূতির স্পর্শ ও চিন্তার খোরাক। আসুন, একসঙ্গে শেকড়ের সন্ধান করি, বর্তমানকে বুঝি এবং ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাই।\"

পোয়ালী

পোয়ালী › বিস্তারিত পোস্টঃ

### আর্টিকেল ৩৭০: ভারতের বিশেষ সাংবিধানিক ধারা

০৯ ই জুন, ২০২৪ রাত ১১:৩১


#### পরিচিতি

ভারতীয় সংবিধানের আর্টিকেল ৩৭০ জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে বিশেষ স্বায়ত্তশাসন প্রদান করে। এটি ১৯৪৯ সালে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং এটি জম্মু ও কাশ্মীরকে অন্য ভারতীয় রাজ্যের থেকে আলাদা মর্যাদা প্রদান করে। তবে, ২০১৯ সালে এই ধারা বাতিল করা হয়, যা দেশজুড়ে এবং আন্তর্জাতিক স্তরে আলোড়ন সৃষ্টি করে।

#### আর্টিকেল ৩৭০ এর ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট

জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান বিভাজনের পরবর্তী সময়ে উদ্ভূত হয়। মহারাজা হরি সিং, তখনকার শাসক, ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে নিরপেক্ষ থাকতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পাকিস্তানি উপজাতিদের আক্রমণের পর মহারাজা ভারতের সাথে সংযুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ভারতের সাথে সংযুক্তির সময় শর্ত ছিল যে, কাশ্মীরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে স্বায়ত্তশাসন থাকবে, যা পরবর্তীতে আর্টিকেল ৩৭০ দ্বারা সংরক্ষিত হয়।

#### আর্টিকেল ৩৭০ এর প্রধান বৈশিষ্ট্য

1. **স্বায়ত্তশাসন**: জম্মু ও কাশ্মীরের নিজস্ব সংবিধান ছিল এবং তার নিজস্ব আইন প্রণয়ন করতে পারত। ভারতের সংসদের অধিকাংশ আইন সেখানে প্রযোজ্য হতো না।
2. **বিশেষ অধিকার**: শুধুমাত্র রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দারা জম্মু ও কাশ্মীরে সম্পত্তি অধিকার করতে পারত এবং রাজ্য সরকারের চাকরিতে নিযুক্ত হতে পারত।
3. **প্রতিরক্ষা, বিদেশী সম্পর্ক, এবং যোগাযোগ**: এই তিনটি বিষয়ে ভারতের কেন্দ্র সরকার নিয়ন্ত্রণ রাখত, বাকি সব বিষয়ে রাজ্য সরকার স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারত।

#### আর্টিকেল ৩৭০ এর বাতিলকরণ

৫ আগস্ট ২০১৯ তারিখে, ভারতীয় সরকার আর্টিকেল ৩৭০ বাতিল করার ঘোষণা দেয়। এর ফলে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপিত হয় এবং রাজ্যটি দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত হয়: জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ।

#### প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

1. **রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া**: আর্টিকেল ৩৭০ এর বাতিলকরণ ভারতের রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। কেন্দ্র সরকার এবং তাদের সমর্থকরা এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেন এটি জাতীয় ঐক্য ও সংহতির জন্য প্রয়োজনীয় ছিল। অন্যদিকে, বিরোধী দলগুলি এবং কাশ্মীরের স্থানীয় নেতারা এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেন।

2. **সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব**: আর্টিকেল ৩৭০ এর বিলোপনের ফলে জম্মু ও কাশ্মীরে বিনিয়োগের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়। তবে, এই পরিবর্তন স্থানীয় জনগণের মধ্যে উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা তৈরি করে।

3. **আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া**: পাকিস্তানসহ কয়েকটি দেশ এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করে এবং আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের সমালোচনা করে। তবে অনেক দেশ এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে উল্লেখ করে নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করে।

#### উপসংহার

আর্টিকেল ৩৭০ এর বিলোপ ভারতের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এটি জম্মু ও কাশ্মীরের ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলবে। ভারতের সংবিধান ও রাজনীতির ক্ষেত্রে এটি একটি মাইলফলক, যা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং সম্পর্কের নতুন পথ উন্মোচন করেছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.