নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অতঃপর আমিও একদিন মারা যাবো...

মুহাম্মদ সুমন মাহমুদ

আমি অভদ্র; কারন.......................................... ভদ্রতার মুখোশ কেনার টাকা আমার নেই!

মুহাম্মদ সুমন মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাউল সম্রাট সুফি সাধক ক্বারী আমীর উদ্দিন আহমেদ

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ২:৫৭


সিলেট বাংলাদেশের আধ্যাত্মিক হৃদয়। শ্রীভূমির মরমি মৃত্তিকা জন্ম দিয়েছে জীবন ও জগতের রহস্যসন্ধানী মানুষ, সত্যের উপাসক, সাধকদের।এই মৃত্তিকা ধন্য হয়েছে হযরত শাহজালাল (র), হযরত শাহপরান (র) এর মতো মানব প্রেমী ঈশ্বর সাধকদের বক্ষে ধারণ করে, যারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অভিনব মেলবন্ধন রচনা করেছেন উদার মানবিকতারর আদর্শের ভেতর দিয়ে।আদ্বিজ – চন্ডালকে সমপাঙক্তেয় করে নতুন ভাবের প্রেমের ধর্ম প্রচার করে যিনি সহজিয়া সাধনার গুপ্তদ্বারের সন্ধান দিয়েছেন, সেই চৈতন্যদেবের ও পিতৃভূমি এই শ্রীহট্ট (বর্তমান সিলেট)।বৌদ্ধ সহজিয়ার করণ-কারণ, সুফিমত আর বৈষ্ণবীয় তত্ত্বের সঙ্গে দেশজ লৌকিক সাধনার ধারা মিশে যে মরমি প্রেক্ষাপট রচিত হয়েছে এই অঞ্চলে, তা মূলত প্রকাশ পেয়েছে সঙ্গীতের মাধ্যমে। দীন ভবানন্দ, সৈয়দ শাহনুর, শীতালং শাহ, কালা শাহ, দৈখোরা, রাধারমণ, শাহ আব্দুল লতিফ, শেখ ভানু, দীনহীন, হাছন রাজা, সহিফা বানু, সৈয়দ আসহর আলী, একলিমুর রাজা, দুর্বিন শাহ, শাহ আব্দুল করিম –এইসব মরমি মহাজন তাঁদের সঙ্গীতের সুবাদে যে মরমি ভুবন নির্মাণ করেছেন, সেই উত্তরাধিকারের ধারায় “সুফি সাধক ক্বারী আমীর উদ্দিন আহমেদ ” সাহেবের নামের উল্লেখ ও অপরিহার্য।

ক্বারী আমীর উদ্দিন আহমেদ সিলেটের মরমি আকাশের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁকে অনায়াসে বাউল, ফকির, সুফি সাধক ও বাউলার কালের দিকপাল বলে অভিহিত করা হয়। সাধনার জগতে অসাধারণ কৃতিত্ব অর্জনে যারা সাফল্যের চরম শিখরে আরোহণ করতে সক্ষম হয়েছেন ক্বারী আমীর উদ্দিন আহমেদ তাঁদেরই একজন। ১৩৪৯ বাংলার ৭ই ফাল্গুন, খ্রিষ্টীয় মতে ১৯৪৩ সালের ১৯শে ফেব্রুয়ারি বর্তমান সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানার উত্তর খুরমা ইউনিয়নের আলমপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। উনার পিতার নাম “শাহ রুস্তম আলী শেখ” ও মাতার নাম “মোছাম্মৎ আলিফজান বিবি”। ক্বারী সাহেবের পূর্ব সূরিগণ মরমি সাধক-ফকির।তাই বলা যায়, ক্বারী সাহেবের রক্তেই ছিল “ফকিরি টান”। উনার পিতামাতা উভয়ই ছিলেন সঙ্গীতনুরাগি। শৈশবে প্রায় দশ বছর বয়স থেকেই পিতামাতার প্রশ্রয়ে ও প্রেরণায় আমীর সাহেবের গান গাওয়া ও সঙ্গীত সাধনার শুরু। প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে ক্বারী সাহেব চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন উনার নিজ গ্রামের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যার বর্তমান নাম “আলমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়”। এরপর উনি ইসলামিক জ্ঞান অর্জনের মাদ্রাসায় ভর্তি হন “আসাকারচর মাদ্রাসাতে”। পরে ঘোষ গাঁও, লামাকাজি, ছাতক গণেশপুরে পড়েন। কিন্তু কোন মাদ্রাসাতেই উনি নিজেকে স্থির রাখতে পারেন নাই। যার ফলে তিনি পরবর্তীতে হাসনাবাদ মাদ্রাসায় চলে যান। সেখানে কিছুদিন পড়ে চলে যান হাউসা মাদ্রাসায়। অবশেষে সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা ও সৎপুর কামিল মাদ্রাসায় পড়াশুনা করেন।সবশেষে ফুলতলী হতে “ক্বারীয়ানা” পরীক্ষা কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন এবং তখন থেকেই নামের সাথে “ক্বারী” টাইটেল যুক্ত হয়।
আমরা আজ ক্বারী সাহেবকে “ক্বারী আমীর উদ্দিন আহমেদ ” নামে চিনি। কিন্তু উনার নাম পূর্বে ছিল “রওশন আলী”। ক্বারী সাহেব উনার গানের ছন্দে বলেন,

“আমার জন্ম তেরশত ঊনপঞ্চাশ বাংলায়
ফাল্গুন মাসের সাত তারিখ বলেন বাবা মায়
মা বলেছেন আমি যখন গর্ভে অবস্থান
স্বপনে দেখেন মায়ে ঘরের ভিতর চাঁন
নানীজানের কাছে মায়ে বলিলেন স্বপন
নানিজী আমার নাম রাখিলেন রওশন ”

ক্বারী সাহেব বাইয়্যাত হন সিলসিলায়ে ফুলতলীর অন্যতম কামিল পীর, চার তরিকার কামেল ওলী, “হযরত শাহ মুহাম্মদ আনাছ আলী (র) সাহেবের নিকট। “আমীর উদ্দিন ” উনার মুর্শিদ প্রদত্ত নাম।

পিতামাতার প্রেরণায় উনি সঙ্গীত জগতে প্রায় দশ বছর বয়সে পদার্পণ করেন।ক্বারী সাহেব শৈশব থেকেই বিভিন্ন দেশীয় বাদ্যযন্ত্র যথা: বাঁশি, কাসি, মৃদঙ্গ, ঢোল, তবলা, একতারা, দোতরা, বেহালা, হারমোনিয়াম সহ সকল প্রাথমিক বাদ্যযন্ত্র ব্যবহারে ছিলেন সুদক্ষ।এছাড়া ও তিনি দেশি বিদেশী সকল প্রকার আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের সাথে ও পরিচিত। আনুমানিক ১৯৬৩ সাল হতে উনি সঙ্গীত পরিবেশন করে আসিতেছেন। ক্বারী সাহেব সর্বদাই উনার লিখা ও নিজের সুরকরা গানগুলি নিজের কন্ঠে চমৎকার ভাবে পরিবেশন করতেন। এছাড়া ও তিনি ব্যক্তিগত ভাবে শীতালং শাহ, আরকুম শাহ, জালাল উদ্দিন খাঁ, দুর্বিন শাহ, শাহ আব্দুল করিম, আশিম শাহ, লালন শাহ, ইব্রাহিম তশনা সহ প্রভৃতি মরমি কবি সাধকদের লিখা গান ও পরিবেশন করেছেন। বাংলার জাতি ও সংস্কৃতির মূলে গান, বাজনা ও পালাগানের প্রভাব অতি স্বাভাবিক। যার বর্তমান রুপ হলো “মালজোড়া”। এই মালজোড়া গানের অপ্রতিদ্বন্দ্বী বাদশা শিল্পী এবং জয়ের মালা যার কন্ঠে সর্বদাই পরিহিত হয়ে আসছে এই ক্বারী আমীর উদ্দিন। ক্বারী সাহেব সর্বপ্রথম “বাউল মাফিজ আলী” নামের এক শিল্পীর সাথে মালজোড়া গান করেন। শুরু হতে আজ পর্যন্ত কেহই হার মানাতে অক্ষম। এমন অলৌকিক মেধাশক্তি ও প্রতিভাবান এ ব্যক্তি। ক্বারী সাহেব প্রায় সাড়ে চার হাজার গানের রচয়িতা এবং কত যে গান গেয়েছেন উনি নিজে ও তা জানেন না। তাঁর সকক সৃষ্টিকর্মে গভীর দর্শনের পাশাপাশি, বিষয় বৈচিত্র্য সুন্দর ও সার্থকভাবে প্রতিভাসিত হয়েছে। সঙ্গত কারণে মননশীল পাঠক ও সংবেদনশীল শ্রোতাদের নিকট তাঁর গানের চাহিদা ও গুরুত্ব ব্যাপক। শুধু ৬৮ হাজার গ্রামের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, পৃথিবীর আনাচেকানাচে ক্বারী আমীর উদ্দিন আহমেদ একটি বহুল আলোচিত ও সুপরিচিত নাম। মানুষের মন জয়ে ক্বারী সাহেবের গান যেকোন রোগের জন্য উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কার্যকর ঔষধ স্বরুপ। নামীদামী শিল্পীরা যখন পেটেভাতে গান করতেন, ঠিক সেই ক্রান্তিলগ্নে ক্বারী আমীর উদ্দিন আহমেদ বাউল এবং বাউলার স্বাভাবিক মান মর্যাদা এবং গুরুত্বের পরিধি সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করতেঃ তাঁর স্বপ্নকে এক সময় বাস্তবতার মোহনায় নিয়ে যেতে সক্ষম হন। বাউল জগতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়।কালক্রমে দশ দিকে সাড়া পড়ে গেলে তিনি আর ঘরে থাকতে পারেন নি।অগণিত সঙ্গীত ভক্তবৃন্দের আন্তরিক আহবানে তাঁকে পৃথিবীর এক প্রান্ত অন্য প্রান্তে ছুটে যেতে হয়েছে। যার ধারাবাহিকতা এখনও বিদ্যমান রয়েছে। সঙ্গীত পীপাসুদের পিপাসস মেটাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যথাক্রমে ভারত, পাকিস্তান, দুবাই, লন্ডন, আমেরিকা,কুয়েতসহ নানান দেশে গিয়েছেন।

সুফিমতে প্রাণিত মরমী সাধক সকলেই সৃষ্টির রহস্য,সন্ধান করেছেন।একজন দেশজ সুফি সাধক ফকির হিসেবে ক্বারী আমীর উদ্দিন সাহেবের গানেও তার আভাস রয়েছে। যেমন:-

“বিশ্ব অসমতল, রেখেছ জলস্থল
শ্রেণীহীন আল্লাহ তুমি, রয়েছ একক।
অসম সাহসী’ অব্যক্ত দর্শী, যতসব সৃষ্টির ললাট লেখক।
জ্বীন ইনছান তরে’ মহা অধিষ্টায়ক, বেহেস্ত দুযখ নিয়েছ বানাইয়া”।।

কোর্ট বা আদালতে যেমন কোন মামলা মোকদ্দমা করতে আইনজীবীর সাহায্য নিতে হয়, তেমনিভাবে মানব জীবনকে সার্থক করতে পীর বা মুর্শিদের নিকট বাইয়্যাত হতে হয়। মুর্শিদ চরণ অমূল্য ধন।ক্বারী সাহেব গুরু/মুর্শিদের গুরুত্বারুপ সম্পর্কে বলেনঃ-

“গুরুর পদে যাহার মন, খাঁটি হইল মাটির তন
স্বর্গ নরক নাই প্রয়োজন, ত্রিতাপ জালা মুক্ত হয়।।

লইয়া গুরুর সুমন্ত্রণা, ভক্তিভজন কর মনা
সে বিনে’ সে পারে জানা, অতিব সঙ্কটময়।। ”

এছাড়া ও ক্বারী সাহেব মুর্শিদের উপকারিতা সম্পর্কে বলেনঃ-

“দয়াল মুর্শিদ যার সারথি, হইলরে অগতির গতি
আঁধার ঘরে জ্বলছে বাতি, নূরের জ্যোতি রাঙ্গিল
ভক্তি বিশ্বাস প্রেমের গুণে, দূরের বস্তু কাছে আনে
মুর্শিদেরই দরশনে, পরশমণি ভাসিল।।”

সুফি সাধকগণ সর্বদাই সৃষ্টির রহস্য উন্মোচন করার জন্য সাধনায় মগ্ন থাকেন। ক্বারী সাহেবের গানে তার কিছু আভাস মেলেঃ-

“কি অপূর্ব কল্পবৃক্ষ সৃষ্টি করেছে মূল তাঁর গগণে রয়েছে
চারটি ডাল চার দিকে গেছে সাতে চব্বিশ চাঁন ধরেছে।
লাহুত, নাছুত, মলকুত, জবরুত চার চাঁদে ঘেরাও দিছে।। ”

আজ যাঁর বদৌলতে এই পৃথিবীতে এসেছি, সেই দ্বীনের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা) এর গুনগান পরিচয় ইত্যাদি অতি চমৎকারভাবে ক্বারী সাহেবের গানে ফুটে উঠেছেঃ-

“রবিউল আউয়ালের বারোয়, ছুবহে ছাদেকের সময়
সত্তর হাজার রহমতে আল্লার।
উদয় হইলেন নূরীতন, দুনিয়া হইলো রুশন
সোমবারে জন্ম হয় তাঁহার’ নবিজি আমার।। ”

এছাড়া ও নবিজীর রুপ লাবণ্য সম্পর্কে অন্য একটি গানে বলেনঃ-

“নবিজির রুপ দেখিয়া, গগণের চাঁদ লাজ পেয়ে
পূর্ণ জ্যোতিঃ দিয়া গেলো, কলংক নিয়ে।
হুর পরী ফিরিস্তা গাহে, ধন্য মা আমেনার কুল।।
ছায়াহীন কায়া ধরে’ এলেন রাসুল”

দয়াল নবী বিনে কঠিন হাসর, পুলসিরাত পার হওয়া সম্ভব নয়।ক্বারী সাহেবের নবী (সা) এর প্রতি আকুল আবেদন পেশ করেন উনার ছন্দের মাধ্যমেঃ-

“(তোমায়) করি গো বিশ্বাস
তুমি বিনে কে বুঝিবে, দুঃখেরী নিশ্বাস
আমারে কইরোনা নৈরাশ, আল আমীন হাবীব আল্লার।।
দয়াল নবীজি আমারে করো পার।”

গানের ভুবনে অসীম আলোড়ন সৃষ্টিকারী বাউল ফকির ক্বারী আমীর উদ্দিন আহমেদ সাহেব বিভিন্ন ধারার গানের পাশাপাশি চমৎকার আঞ্চলিক গান রচনায়ও বেশ কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। তাঁর প্রতিটি আঞ্চলিক গানই তত্ত্ব ও তথ্যে ভরপুর।প্রসঙ্গত ফকির ক্বারী আমীর উদ্দিন সাহেবের একটি গান,

“ওগো দিলবর আলীর মামী
কার লাগি চিড়া কুট তুমি
হিদিন কইলায় আমার গেছে বাড়ীত নায় তোমার স্বামী।
মনের ঘাইল পবনের ছিয়া আসলে খুব দামী
বখাইর মায় চিরা কুটইন ডাকাইয়া ধুমধুমি
আমীর উদ্দিন কয়গো মামী হইয়াছি বদনামী।
ছিয়া ঘাইল ধান তইয়া কূটার শেব পাইলামনা আমি। ”

এখানে দিলবর আলী নামটি মন মহাজনের রুপকার্থে ব্যবহৃত হয়েছে। চিড়া কূটা হলো শ্বাস প্রশ্বাস। পল্লী গ্রামের সোনার ছেলে ক্বারী আমীর উদ্দিন আহমেদের গানে গ্রাম বাংলার চিরায়ত জীবনের বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে প্রত্যেক্ষভাবে,

“দেউড়ির মাঝে লাঙ্গল থইলাম।
অখন পাইনা কেনে, কওচাই কিতা কয় মোর মনে।।
দেউড়ির মাঝে লাঙ্গল থইলাম।

গেছে মঙ্গলবারে চুরায়, নিছিলগি কুদাল
আইজ নিছেগি লাঙ্গল আমার, কাইল নিবগি জুয়াল।
আনা জিগাই লইয়া যায়গি, মানেনি পরানে।।
কও চাই কিতা কয় মোর মনে।

লাঙ্গল যুদি না পাই আমি, কিলা বাইতাম হাল
হুইন্নাও চোরে মাতেনা, অইছে যেমন কাল।
রাইত থাকতে গরু লইয়া, পুয়া গেছে জমিনে।।
কও চাই কিতা কয় মোর মনে।

পরতি বছর ক্ষেত করি, আমি ইতা জানি
দুইদিন বাদে হুকাইজিবো, জমিনের পানি।
কইয়া নিলে নিতে পারত, কয় আমীর উদ্দিনে।
কও চাই কিতা কয় মোর মনে। ”

অভাব অনটনের আধিক্য থাকলে ও গ্রাম বাংলার মানুষের মনে সামাজিকতার বিন্দুমাত্র কমতি নেই।ঈদে পর্বে বিষয়ে আসয়ে বিয়ে শাদী শিরনী ও ধর্মীয় উৎসবে একে অন্যকে স্মরণ করে।আত্মীয় অনাত্মীয় ইত্যাদি নির্বিচারে মানুষ মিলেমিশে খায়।আনন্দ উপভোগ করে থাকে। এতে অফুরন্ত আনন্দের সাথে সীমাহীন আন্তরিকতা ও নিহিত রয়।একজনের অনুষ্ঠানে অন্যজন রীতিমত আমন্ত্রিত হয়। গ্রাম বাংলার আবহমান রেওয়াজ রুছুমের প্রেক্ষাপটে ফকির ক্বারী আমীর উদ্দিন আহমেদের একটি জনপ্রিয় এবং বহুল প্রশংসিত ও আলোচিত গান,

“কাজলী তোর বাপরে কইছ, আমরা বাড়ী যাইতা
গরু দুইটা জবেহ করমু, পেট ভরি গিয়া খাইতা।।

পুয়াইনতর আকিকা করমু, মুখ চাইয়া দাওয়াত দিমু
মাল ছামানা কিছু পাইমু, আইজ দিলে কাইল পাইতা।।

খতম মিলাদ পড়তে যাইবা, তুইও যাইছগি দেখিছ ভাইবা
পুয়াইনতর দায় আল্লারে কইবা, মান সম্মানে রইতা।।

তানে কইছ কুন্তা নিতানা, না খাইয়া কইবে আইতানা
পুবর ঘরে বৈঠক খানা, অখানে গিয়া বইতা।।

খেশ কুটুম যত ঔ গেছইন, কিছু কুন্তা লগে নিছিইন
খালি হাতে খাইতা আইছইন, মাইনষে কেনে কইতা।।

আমীর উদ্দিনর কেছেট রাখছি, উঠানো এক আলং বানছি
ভালা গায়ক দুইজন আনছি, মারফতি গান গাইতা।।
কাজলী তোর বাপরে কইছ, আমরা বাড়ী যাইতা।”

আঞ্চলিক গানে কেবল সমাজের চিত্র স্বরুপ প্রকৃতি ইত্যাদিই নয়, বিরহ বিচ্ছেদের করুণ সুর ও যথারীতি প্রতিধ্বনিত হয়ে থাকে।সুফি সাধক ক্বারী আমীর উদ্দিনের গানেও জনৈক যুবতীর একাক্বীত্বের নরক যন্ত্রণা প্রতিভাসিত হয়।যেমনঃ-

“সুন্দরী ভাবী গো আমারে উপায় বল
আমি সঙ্গী ছাড়া আর কতদিন থাকি।
বসন্তে নতুন যৌবনে প্রাণ ভরে কারে ডাকি।।”

“নামাজ বেহেস্তের চাবি ” এ কথাটি আমরা সবাই জানি।নামাজ পড়া সম্পর্কে ক্বারী সাহেব বলেন,

“আদায় করো যাকাত নামাজ
দূর করিয়া দ্বিলের কু’ কাজ
পাক কোরানে ৮২ বার প্রমাণ করে।।

নিত্য দিনের পাঞ্জেগানা
দিতে হয় তনেরই খাজনা
খুশি হবেন রাব্বানা, তোমার উপরে।।”

নশ্বর এ পৃথিবীতে সব কিছুই ধ্বংস হয়।মানুষ মরণশীল। মৃত্যুর পর তাকে তার জীবনের জবাবদিহি করতে হবে।তাই তাকে ভালো কাজ করতে হবে।কিন্তু মানুষ অবহেলায় ও দুনিয়ার মায়াজালে মজে সব ভুলে যায়। আর ক্বারী সাহেব তা মনে করিয়ে দেন তাঁর ছন্দের মাধ্যমেঃ-

“কিতার লাগি আইলে ভবে, চিন্তা করছনি
যে কাজের ওয়াদা আছিল, অউ কাজ করতে পারছ নি।।

ভাবিলে ধুন ধরবো মাথায়, মিছা নায় হাছা কথায়
কিতা লেখছো খাতার পাতায়, নিরব হইয়া পড়ছনি।।”

এছাড়া ও অন্য একটি গানে বলেন,

” পাগল মনুরায় –
চৌদ্দ পোয়া নিজ বাড়িতে, নয়ন মেলে চাও
লাইগাছে আখাঠা জঙ্গল, তাঁরে না নিংড়াও।
ছয়টা বলদ ঘরে বান্ধা, বাইনের সময় যায়
চাষ করলেনা ফসল বিনা, করবে হায়রে হায়।।”

বর্তমান বিশ্বের মানুষ নানারকম সমস্যায় জর্জরিত। ফলে বিশ্ব হতে “শান্তি” নামক শব্দ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।বর্তমান যুগের পরিস্থিতি ক্বারী সাহেব অতি চমৎকার ভাবে উনার গানে ব্যক্ত করেছেনঃ-

“জগতস্বামী নিজেরে প্রকাশ করিবার তরে
অপূর্ব কৌশলে করেছ মানুষ তৈয়ারি
এই মানুষে কেন মারামারি।। ”

বর্তমান বিশ্বের এই পরিস্থিতি হতে পরিত্রাণ পেতে হলে আমাদের সবাইকে একত্রিত হয়ে একটি সংগঠন করতে হবে এবং কাজ করতে হবে। আর এই কথাগুলো অনেক আগেই উনি তাঁর ছন্দের মাধ্যমে বলে গিয়েছেনঃ-

” আমার তো মনে লয় আমরা,মানুষ জাত যখন
একাত্মায় দেখিতে চাই এই, দুনিয়াটা কেমন।
বিশ্ব ভরা মানুষ যবে,মানুষ সংসদ গড়তে হবে
সদস্যে দস্তখত দিবে,আমীর উদ্দিন আমিরী।।”

বিভিন্ন ওলী আউলিয়ার শ্যানে ও ক্বারী সাহেব অতি চমৎকার ভাবে বিভিন্ন গান রচনা করেছেন।যা শুনে অনেকেই সব অজানা তথ্য লাভ করতে পারতেছে।যেমনঃ-

” বরকন্যা যাত্রীসহ, ঘুর্ণিঝড়ে ডুবে যায়
বার বছর পরে তোমার, হাতের ইশারায়
নতুন জীবন পেয়ে সবায়, তোমার ডাকে হয় হাজির..
গাউসুল আজম বড় পীর.

কুতুবে রাব্বানী তুমি, অতি দয়াবান
আজরাইলের কাছ হইতে, কেড়ে রাখলে অনেক প্রাণ
বুগদাদে ঘটেনা নিদান, আসিলে নেকী মনকীর..
গাউসুল আজম বড় পীর.”

মদিনাতে নবীজি (সা) এর রওজা মোবারক হওয়ায় সেখানকার নাম “মদিনা শরীফ”..আজমীরে খাজা গরীবে নেওয়াজ (রা) রওজা হওয়ায় সেখানের নাম “আজমীর শরীফ”..৩৬০ আউলিয়ার নেতা হযরত শাহজালাল (র) এর রওজা সিলেটে থাকারপরও এর নাম পরিবর্তন হয়নি। আর এই পরিবর্তনের জন্য ক্বারী সাহেব তাঁর গানে এই পরিবর্তনের জন্য ক্বারী সাহেব তাঁর গানে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেনঃ-

“এই বিশ্বের মানচিত্র দেখলে ভালো লাগে
যদি কোন খানে পাওয়া যায় আল্লার আরিফ
(আমি চাই) শাহজালালের এই পূণ্য ভুমির নাম জালাল শরীফ।।”

সিলেটের অধিকাংশ মরমী কবিদের রচনায় সুরমা নদী ও শাহজালাল (র) এর মাজার শরীফ যথাযথ মর্যাদাপ্রাপ্ত হয়েছে। ক্বারী সাহেবের সেই রকম একটি গানের অংশ-

“তিনশত ষাট আউলিয়ার প্রতিনিধি
হযরত শাহজালালের চরণ ধোয়া জল
বুকে যার সিলেটের সুরমা নদী।।

সুরমা নদীর পারে বাবায় বসাইলেন মাজার
কতো কবুতর আর পুকুর ভরা গজার
আমীর উদ্দিন বলে মাজার ভক্তের প্রেম ঔষধি।। ”

মহান আল্লার সৃষ্টির কাছে এই বিশ্ব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সর্বদাই পরাজিত। যা অতি সহজে ক্বারী সাহেবের গানের মাধ্যমে ও বোঝা যায়ঃ-

“এই বিশ্ব বিজ্ঞান পরাজিত
আজব গাড়ি কে বানায়
চৌদ্দ তলার উচু গাড়ি,
চালায় দুইজনায়, সুজন বন্ধুয়ায়..”

বর্তমান বিশ্বে ক্বারী সাহেবের মাধ্যমে আমরা আজ খুবই প্রশংসিত ও গর্বিত বোধ করি “সিলেটবাসী” হিসেবে।উদাহরণ স্বরুপ বলা যায়ঃ-

“তাইতো গাই জালালি গান, আল্লাহ কত মেহেরবান
সিলেটবাসী খ্যাতি পায়, জালালি মুসলমান।
মুক্তি পাইতে ভক্তি দিতে, আসে কত দেশ বিদেশী।।
আমরা সেই সিলেটবাসী। ”

আমাদের সমাজে নানা রকম অসংগতি রয়েছে। যা আমরা দেখতে পারি খুব সহজে কিন্তু বোঝতে পারি না।আর তা ক্বারী সাহেব ছন্দের মাধ্যমে সহজে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেনঃ-

“হাছা কথায় শরম করে,
মিছা মাতলে আরাম পাই
কি জাতের মুছল্লি আমি কইয়া যাই

খরয দেইনা সুদ না দিলে,
মুই দেইনা কেউর কুন্তা নিলে
কপালের দাগ মিটি গেলে
পাথ্বর দিয়া ঘষাই লাই”

রাধাকৃষ্ণ বিষয়ে ক্বারী সাহেবের রচনা অপূর্ব সুন্দর।কৃষ্ণের বাঁশির সুরে উতলা রাধার মানসিক প্রতিক্রিয়া :-

“ও কালারে’ শুইনে তোর বাঁশরী, সহিতে না পারি
কেমনে থাকিব ঘরে, ডাকিতেছ নাম ধরি।।
সহিতে না পারি।”

নিরুদ্দেশ কৃষ্ণ যখন রাধার কাছে ফিরে আসে তখন তাদের মধ্যে একটু সমস্যা দেখা দেয়।তখন রাধার অভিমান মিলনে বাধা হয়ে দাড়ায়:-

“সুনা বন্ধু কালারে এতদিনে
কেন রাধার কুঞ্জে আইলায়রে।

বসন্ত ফুরাইয়া গেলো, তোমার আশায় চাইয়া
আইলে না শ্যাম রইলে কোথায়
(আমার) কি দোষ জানিয়ারে।।
এতদিনে ‘ কেন রাধার কুঞ্জে আইলায়রে। ”

বর্তমান যুগ স্বার্থপরদের যুগ।মানুষ প্রয়োজন থাকলে কাছে আসে, শেষ হলে চলে যায়। মানুষ তার স্বার্থ উদ্ধারের জন্য যেকোনো করতে পারে।ক্বারী সাহেবের ভাষায় বলা যায়ঃ-

“ভাইরে ভাই…
বন্ধু ভেবে মনে প্রাণে
পেয়েছিলাম যে কয়জনে
প্রয়োজনে ধারে কাছে রয়না।
বিপদের ঝড় তুফানে, চলে যায় ফেলে নিদানে
সু’সন্ধানে উষল করে বায়না।।
এ যুগে কেউ’ বন্ধু হতে চায়না। ”

কোন কিছু অর্জন করতে হলে আমাদের কঠিন পরিশ্রম করতে হবে অর্থাৎ কঠোর সাধনা করতে হবে। এখন ‘সাধনা’ শব্দ শুধু জপলে হবে না, সাধন করতে হবে, নতুবা সাধনা হবে না। ক্বারী সাহেব বলেনঃ-

“যেমনিভাবে মন্থন ছাড়া মাখন উঠে না
সাধনার! নাম জানিলে হয় না সাধনা। ”

দমের তত্ত্ব জানতে হবে। আর এই অজানা তথ্য জানতে হলে আমাদেরকে গুরুর নিকট যেতে হবে। ক্বারী সাহেব এজন্য সবাইকে বলেনঃ-

“দমের তত্ত্ব জানরেও মন
দমে আসে দমের মানুষ,
দমে করে আত্মগোপন।। ”

অন্য একটি গানে বলেনঃ-

” দম সাধন কররে, ধররে ধররে দম ধর..
চব্বিশের ভেদ জানিয়া, দমের খেলা কর.
সাধন কররে, ধররে ধররে দম ধর..”

নামাজ পড়া হলো আমাদের জন্য খুব জরুরি। নামাজ বিনে আখিরাতে জান্নাত লাভ সম্ভব নয়।কিন্তু মানুষ নামাজে গিয়ে দুনিয়াদারী চিন্তা করে।ফলে নামাজ সঠিক হয় না।ক্বারী সাহেব বলেনঃ-

” কাবার দিকে মুখ ফিরায়লায়
অন্তর তোমার কোন মুখী,
কও দেখি
এক জাগে থাকেনি তোমার মন পাখি…”

অন্য একটি গানে সঠিক নামাজ আদায় করা হিসেবে বলেনঃ-

“চব্বিশ হাজার ছয়শত বার, কেরাতে রাখিয়া শুমার
পান করে লও, নামেরই সুধা।
সাক্ষাতে জানিয়া মাবুদ, ঈমান রাখিও সাবুদ
পুলছিরাতের উপরেতে, আলিফের মত হও সিধা।।
হুজুরী ক্বলবে করো’ সজিদা।”

মাতাপিতা বিহনে আমরা অচল।উনাদের বদৌলতে আজ আমরা এই সুন্দর পৃথিবীতে এসেছি।মাতাপিতা সম্পর্কে ক্বারী সাহেবের ২টি গানের অংশ নিম্নরূপঃ-
মা’ সম্পর্কে :-

” মায়ের মত আপন কেউ, নাইরে জগতে.
জীবন ভরে মাথায় তুলে, বহন করিলে
পারবে না এক বিন্দু দুধের ঋণ শোধিতে..

গর্ভে রাখে মায়েরই সন্তান
প্রশবেরি কষ্ট মায়ের, ছাকরাতের সমান.
(এত) দুঃখ ভুলে আদর করে’ টেনে লয় কোলে
দুগ্ধ দিয়াছে’ শিশুর মুখেতে.”

বাবা’ সম্পর্কেঃ-

” ধর্ম কর্ম বাবা হইতে, আসিয়াছে দুনিয়াতে
বাবা হইলেন মায়ের পরশমনি.
বলে সাধক আমীর উদ্দিন, পরিবার হয় বাবার অধীন
ছেলে মেয়ের কাছে উভয় গুনি, তুমি জাননি..
বাবার অধিকারে মা জননী.”

১৯৭৮ সালে প্রথম লন্ডন ভ্রমণকালে সেখানকার রুপ, সৌন্দর্য, সাহিত্য, সংস্কৃতি, আচার-আচরণ ইত্যাদি ক্বারী সাহেব তাঁর গানের মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন।যার আংশিক অংশ নিম্নরূপঃ-

“এই দেশে মদের বার, আছেরে ভাই হাজার হাজার
নারী পুরুষ একাকার যায় তার ভিতরে
বাঙালিরা শতকরা অর্ধেকের উপরে,
অবশিষ্ট সকলেই যায়, মজা পায় যে আর কি ছাড়া।।

রাস্তা দিয়া যায় লোকজনা, দরকার ছাড়া কেউ কথা কয় না
গাড়ি চলে হরণ দেয় না, শুদ্ধ নীতির তরে।
বুড়ীরেও ইয়ং কইলে খুশি হয় অন্তরে
বৃদ্ধাগুলি খাড়া কইরা থ্যাংক ইউ দিব তোমারে।। ”

মানব সমাজ হতে সকল প্রকার সমস্যার নিরসন করতে হবে। সেইসব খারাপ সমাজ পরিচালকদের অপসারণ করতে হবে।যার ইঙ্গিত অনেক আগেই উনি তাঁর গানে বলে দিয়েছেনঃ-

” এদের মারিয়া কর ক্ষয়
জগত কর স্বর্গময়
ফকির আমীর উদ্দিন বলে হবে
সত্যের হবে জয়
এসো শান্তির বাকবাকুম
মার আগডুম বাগডুম.. ”

ক্বারী আমীর উদ্দিন আহমেদ একজন সুফি সাধক।তিনি অনেক আগে থেকেই মানুষকে বাইয়্যাত করান, যা আজও বিদ্যমান রয়েছে।তাঁর একটি গান উল্লেখ করা যায়ঃ-

“ঔষধালয় প্রেম সরকার, আমি তাঁর ঔষধ কেনভেচার
নিতে যদি ইচ্ছে হয় কার, আমার কাছে বলনা।
ঔষধ আছে চারি জাত, শুনেন দিয়া কর্ণপাত
জীবনে পার হইবে ছিরাত, আখেরাত ভাবতে হয়না।।
আমার ঔষধ সেবন করবে যেজনা।”

এইজন্য উনি উনার ঠিকানা ও বলে দিয়েছেন ছন্দের মাধ্যমেঃ-

” রেজিষ্টার্ড ১৩০ নাম্বারে,পরিচিতি ঘরে ঘরে
শহরে নগর বন্দরে,ইহার গুণ সবার জানা।
এবার যদি নাহি নেন,দরকার পড়লে খোঁজ করিবেন
আমীর ঔষধালয় জানেন, আলমপুরে ঠিকানা।।
আমার ঔষধ সেবন করবে যে জনা।।”

বর্তমানে উনি সপরিবারে লন্ডন প্রবাসী। ক্বারী সাহেব আজও সঙ্গীত সাধনায় মগ্ন আছেন। তিনি তাঁর এই সাধনার ফসল গুলো সবার নিকট পৌছে দিতে বিভিন্ন সময়ে উনার বই প্রকাশ করেছেন।উনার রচিত বইয়ের নামঃ-
★গুলজারে মা আরেফাত
★বিরহের উচ্ছ্বাস
★প্রেমের জগত
★পরশমণি
★আমিরী সঙ্গীত (১ম ও ২য় খন্ড)
সর্বশেষ উনি উনার লোকসঙ্গীত ভাবনাকে “আমিরী সঙ্গীত”নামে খন্ডাকারে বের করে চলেছেন।বর্তমানে এর ১ম ও ২য় খন্ড বের হয়েছে।পরবর্তী খন্ডগুলি বের হবার জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সবশেষে বলতে চাই, বাউল সম্রাট সুফি সাধক ক্বারী আমীর উদ্দিন আহমেদ সাহেব আমাদের মাঝে হাজার বছর বেঁচে থাকুন।আমি উনার সার্বিক মঙ্গল ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৭:৩০

বলেছেন: অনেক তথ্য দিলেন আসল তথ্য বাকি রইলো -- উনি যে "(পুরুষ + পুরুষ) ভ * সাধক "এটা বললে কি দোষ হতো।।।

২| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: জানলাম উনার সম্পর্কে।

৩| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৫৯

আমান৮২ বলেছেন: অনেক লম্বা লিখা , ভাল লাগল ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.