নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Every story I create, creates me. I write to create myself.\n- Octavia E. Butler\n\n

সুমাইতা মেহজাবীন

সুমাইতা মেহজাবীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সমাজনামা [- (মানুষ)

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:১৬



আমাদের অর্ধেক জীবন কাটে মানুষের সমালোচনা করতে করতে আর বাকি অর্ধেক "মানুষ কি বলবে" ভাবতে ভাবতে। আইসক্রিম ,চকোলেট পছন্দ করা মেয়েটা খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিয়ে কঠিন ডায়েটে চলে আসে। কারণ - মোটা হলে মানুষ কি বলবে? পছন্দের সুতির শার্টটা পড়ে ছেলেটা বাইরে কোন অনুষ্ঠানে যায় না। কারণ- ওই অনুষ্ঠানে এই শার্ট যায় না। মানুষ কি বলবে? তারপর শুরু হয় "ওইরকম" অনুষ্ঠানে পড়তে পারা যায় এমন শার্ট কেনার সক্ষমতা অর্জনের জন্য জীবনের পথে দৌড়-ঝাপ। পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে লোকটার ভালো লাগলেও তাকে গাড়িটা নিয়ে বের হতে হয়, নাহলে মানুষের চোখে সমীহ দেখা যায় না! গায়ে কালো রঙ নিয়ে জন্মানো মেয়েটা লোকসম্মুখে আসলে জড়তায় কুঁকড়ে যায়। উচ্চতায় কম হওয়া মেয়েটা/ছেলেটা তার লম্বা বন্ধুদের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে চায় না। বিয়ের অনুষ্ঠানে মেয়ের পরিবার সামর্থ্যের ঊর্ধ্বে গিয়ে, প্রয়োজনে ধার-দেনা করে হলেও বিশাল ভুরিভোজের আয়োজন করেন।বিয়ের ভুরিভোজে যে পরিমাণ মানুষ দেখা যায় তার অর্ধেককেও জানাজায় দেখা যায় না!

বিয়েতে লতায়-পাতায় আত্মীয়দের কার্ড পাঠিয়ে দাওয়াত দিতে হয়। সামাজিক স্ট্যাটাসে বড়দের বাসায় গিয়ে দাওয়াত দিয়ে আসতে হয়। নাহলে আবার তারা মাইন্ড করতে পারেন। বিয়েতে নাও আসতে পারেন কিন্তু তাদের বিয়েতে আসা জরুরি। এতে মর্যাদা কিছুটা বাড়ে কিনা! বিন্দু বিন্দু সঞ্চয়ের ওই আয়োজনে অনেক দূর দূরান্তের আত্মীয় এসে বসে বসে মন্তব্য করে "মেয়ের সাথে ছেলেটা ঠিক গেলো না!, মেয়ের হাইট কম, আরে ভাবী আমার দেবরের বাবার বড় ছেলের বউয়ের বাপ হেব্বি পয়সাওয়ালা... " সুযোগে কেউ একজন এক কালো মেয়ের বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার কাহিনীও শুনিয়ে দেন। বিয়ের স্টেজে যে দম্পতি বসে আছে তাদের বাচ্চা-কাচ্চার হাইট আর গায়ের রঙের চিন্তাটাও বাদ যায় না। মুরগীর মাংস চিবুতে চিবুতে তাদের বলতে শোনা যায় অমুকের বিয়ের জাঁকজমক খানা-পিনার আয়োজনের কথা!
ছেলেটা বয়ঃসন্ধি কালের সময় থেকে নিজের সম্পর্কে এক গোপন সত্য অনুধাবন করে গুটিয়ে নিচ্ছে কারণ সমাজ-ধর্ম-দেশ-আইন মেনে নিবে না।কারোটা প্রকাশ পেয়ে গেলে তার নিজের বাবা- মাও তার নাড়ী ছেঁড়া ধনকে, তার ঔরশজাত সন্তানকে সমাজের এক নিষিদ্ধ গোষ্ঠীর কাছে রেখে আসে কারণ, সমাজে কিভাবে মুখ দেখাবে? সে সন্তান বেড়ে উঠে নিষিদ্ধ আর বঞ্চিত জগতের বাসিন্দা হিসেবে। সমাজ তাদের দিকে তাকিয়ে নাক সিটকায়। অথচ সারাজীবন তারা কারণ খুঁজে বেড়ায় ভাগ্য তাদের নিয়ে এমন খেলা কেন খেললো?

"আমার সাথেই কেন এমন হয়" ভাবতে থাকা মেয়েটাও অন্য মেয়ের জীবন, চাল-চলন নিয়ে মন্তব্য করে। কেউ বোনের দিকে তাকালে ক্ষেপে উঠা ছেলেটাও বিষনজরে কুঁকড়ে যাওয়া মেয়েটার আতিপাতি চোখ বুলায়। অদ্ভুত আমরা মানুষরা। মানুষকে মানুষের হাত থেকে রক্ষা করতে আমরা মানুষ নিয়োগ দিই। রাতের অন্ধকারে হাঁটার সময় পাশ দিয়ে মাংসাশী প্রানী কুকুর হেঁটে গেলেও অতটা ভয় পাই না যতটা মানুষ দেখলে পাই!

মানুষ সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ অদ্ভুত প্রানী.........।।

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:৩৫

আমিই মিসির আলী বলেছেন: অনেক সুন্দর লেখা লেখেছেন।
ভালো লাগলো।
ভুল করবে নিজে দোষ দিবে ভাগ্যের উপর।
আসলেই আমরা অদ্ভুত মানুষ।

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:৪১

সুমাইতা মেহজাবীন বলেছেন: মানুষ সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ অদ্ভুত প্রানী.

২| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:৪৭

জনৈক অচম ভুত বলেছেন: "মানুষ সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ অদ্ভুত প্রানী.........।।" :|
যথার্থই বলেছেন।

৩| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:৫৪

বিজন রয় বলেছেন: ভাল লিখেছেন।
++++

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:০৭

সুমাইতা মেহজাবীন বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:৫৫

ডাঃ প্রকাশ চন্দ্র রায় বলেছেন: মানুষ বিচিত্র মনের প্রাণী সমস্ত মন জুড়ে বিচিত্র ভাবনার খনি ।।

৫| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:২৯

উল্টা দূরবীন বলেছেন: অনবদ্য লেখনী। ভালো লেগেছে।

০৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:২১

সুমাইতা মেহজাবীন বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

৬| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৩৯

প্রামানিক বলেছেন: চমৎকার লেখা। অনেক ভাল লাগল। ধন্যবাদ

০৫ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:২৬

সুমাইতা মেহজাবীন বলেছেন: ধন্যবাদ

৭| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:০৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: সুমাইতা মেহজাবীন ,




যা বলতে চেয়েছেন তা-ই আজ সমাজের দস্তুর । আমরা বোধহয় কেউই এর বাইরে নই ।

মানুষ একাধারে সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ আর নিকৃষ্ট - কুৎসিত এক প্রানী.........

০৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:২১

সুমাইতা মেহজাবীন বলেছেন: আমরা কেউই এসবের বাইরে নই

৮| ০৫ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:১৯

মাসুদ মাহামুদ বলেছেন: বেশ লিখছেন।
চিরন্তন শুভকামনা।

০৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৫১

সুমাইতা মেহজাবীন বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে :)

৯| ০৬ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:২৯

সোহানী বলেছেন: খুব খুব ভালো লাগলোম আপনারআরো লিখা পড়ার আগ্রহ জন্মালো............

০৬ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৬

সুমাইতা মেহজাবীন বলেছেন: আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। :)

১০| ০৬ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:২৯

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: সুন্দর বলেছেন। আসলেই পাশ দিয়ে একটা কুকুর হেঁটে গেলে যতোটা না ভয় পাই, তার চেয়ে বেশি ভয় পেতে হয় একজন অপরিচিত ( অনেকসময় পরিচিত) লোক হেঁটে গেলে।
সুন্দর লিখনি

০৬ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪০

সুমাইতা মেহজাবীন বলেছেন: আমরা যে পৃথিবীতে বাস করছি সেখানে মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য, মানুষের বেখালিপনা আর অপরাধ থেকে অন্য মানুষকে রক্ষা করার জন্য মানুষদেরকেই নিয়োগ দেই। যত আইন কানুন সব মানুষের কাছ থেকে মানুষকে রক্ষার জন্যই। এলিয়েন নয়। অদ্ভুত আমরা মানুষরা। ভীষণ অদ্ভুত।

১১| ০৬ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৩০

ফয়সাল রকি বলেছেন: সমাজনামাটা এমনই। তবে মজার ব্যাপার হলো, ছোট ভুল গুলো তারা বড় করে দেখবে আর দুর্বল মানুষগুলো আরো ছোট হতে থাকবে...

০৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:২২

সুমাইতা মেহজাবীন বলেছেন: হমম

১২| ০৭ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৩

কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: এই চিত্রগুলোই সমসাময়িক ঘটে কিন্তু থেকে যায় অগোচরে । মানুষ দু'মুখো- কেউ বাঁচায়, কেউ মারে ।

০৭ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:০৬

সুমাইতা মেহজাবীন বলেছেন: মানুষ বাঁচায় ,মানুষই মারে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.