![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইতিহাস পড়ি না, জন্মলগ্ন থেকে বাংলাদেশকে প্রতিদিন যেভাবে দেখেছি, সেটাই বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস।
বিভিন্ন ব্লগগুলোতে আস্তিক আর নাস্তিকের লড়াই আমি উপভোগের মানসিকতা নিয়েই পড়ি। কিন্তু মন্তব্য প্রদানে অতি সন্তর্পণে বিরত থাকি। একেকজন আঁকড়ে থাকেন তাঁদের নিজস্ব বিশ্বাস নিয়ে। তা ভাঙার চেষ্টা করা সময়ের অপচয় মাত্র।
একজন আস্তিকের ধর্মের পটভূমি, ইতিহাস, ইত্যাদি, তা যেই ধর্মেরই হোক না কেনো, অনেক বিশদ এবং বিস্তৃত বলে বিরুদ্ধবাদির যুক্তির কাছে অতি সহজেই আক্রান্ত (vulnerable) হয়ে পড়ে। অন্যদিকে নাস্তিকতার বিরুদ্ধে বলার কিছু নেই। নাস্তিক শব্দটাই যে এক কথায় সব কিছু প্রকাশ করে দেয়।
আস্তিকরা একটা সুবিধা ভোগ কের সবসময়, যা থেকে নাস্তিকরা বঞ্চিত। তা হলো, মৃত্যুর পর জীবন, অন্ততপক্ষে একটি। কারো কারো দৃষ্টিতে হোকনা তা শুধু সম্ভাবনাই, প্রতিনিয়ত সম্ভাবনার স্বপ্ন নিয়েই কি মানুষ জীবন যাপন করছে না?
আমার জীবনের একটা সত্যি ঘটনা দিয়ে শেষ করবো এই লেখাটা। নইলে এ লেখার নামকরণ শুদ্ধ হবে না।
১৯৯০ সালের কথা। তখনো U.S.S.R. ভেঙে টুকরো টুকরো হয়নি। জার্মানির ডুজেলডরফে একটি মেডিকেল কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটরদের বার্ষিক সন্মেলন শেষে ছয় দেশের প্রতিনিধিরা এক টেবিলে বসে ডিনার খাচ্ছি। আগের রাতের গালা পার্টিতে অন্যদের মদ্যপানের সাথে পাল্লা দিয়ে ১০/১২ গ্লাস অরেঞ্জ জুস খেয়ে বিগড়ানো হজম প্রক্রিয়া নিয়ে ইতোমধ্যে খানিক সমস্যায় আছি। গ্রীক ভদ্রলোক একটি প্রশ্ন করে সন্মুখীন করলেন আরেকটি সমস্যার।
গালা পার্টির রাতে আরব আমিরাতের প্রতিনিধি এক ভারতীয় মুসলমান মদে চুর হয়ে অনেক খিস্তি করেছে, একসময় হর হর করে বমিও করেছে। গ্রীসের প্রতিনিধি দুফালি করা ঝিনুকটার ভেতর লেবু চিপতে চিপতে প্রশ্নটা করলেন।
-তোমরা দুজনেই মুসলমান, তুমি মদ খেলে না, সে তো দিব্যি খেয়ে মাতাল হলো। কে সঠিক?
এখানে উল্লেখ্য, আমি এই সন্মেলনে সৌদি আরবের প্রতিনিধি। এতগুলো মদপ্রিয় লোকের সামনে কোন যুক্তি দেবার অভিরুচি ছিলো না। বাঁচিয়ে দিলেন বুলগেরিয়ান ভদ্রলোক।
-মুসলিমস্ আর নট পারমিটেড টু ড্রিঙ্ক, আই নো ইট। আত্মবিশ্বাসের সাথে বললো সে।
সেই ধারাবাহিকতায় ইতালিয়ান আপাদমস্তক নিখুঁত সুন্দরী মহিলাটি টেবিলের সবার ধর্ম জানতে চাইলেন। আমি ধরেই নিয়েছিলাম আমি ছাড়া সবাই ক্রিশ্চিয়ান। U.S.S.R. এর রাশিয়ান, আইভান যার নাম, আমাকে স্তম্ভিত করে বলে বসলো, আমি এথিস্ট (Aethist), অর্থাৎ নাস্তিক।
স্কুইডের হাত পা চিবানো বন্ধ করে থ বনে গেলাম ক্ষণিকের জন্য। জীবনের প্রথম এক স্বঘোষিত নাস্তিক আমার সামনে!
-আচ্ছা একটা প্রশ্ন করি তোমাকে, বিস্ময়ের প্রথম ধাক্কা সামলে তাকে বললাম।
-আমরা আস্তিকরা, মুসলমান কি ক্রিশ্চিয়ানরা, বিপদে আপদে, অসুখে বিসুখে স্রস্টাকে স্মরণ করি, বিধাতার কছে আত্মসমর্পণ করে মনোবল বৃদ্ধি করি, তোমরা এরকম পরিস্হিতিতি কি করো?
আইভান একটা বিষম খেলো, আমার যেনো মনে হলো আমার প্রশ্নটা শুনেই। তারপর হঠাৎ বাস এসে যাওয়ায় কথা আর এগুলো না। সবাই ফিরে গেলাম হোটেলে।
কি মজা, পরদিন সকালেই ফ্রাংকফুর্ট টু জেদ্দা! অপেক্ষায় রয়েছে বউ, ছেলেটার আব্বু ডাক শুনতে মন হয়ে আছে উন্মুখ। ভুলেই গেলাম নাস্তিক আইভানের কথা।
অনেক সকালে রুমের দরজায় নক। দেখি আইভান, দ্য রাশিয়ান। চোখ মুখ লাল, উসকো খুসকো চেহারা। রাতে ঘুমায়নি মনে হয়। কিংবা অতিরিক্ত মদ্যপাণ জনিত এলোমলোতাও হতে পারে।
-তোমাকে একটা সত্য কথা বলতে এসেছি। আর থ্যাংকু জানাতে। খানিকটা ইমোশনাল মনে হলো তাকে।
-কাল সারারাত ঘুমাইনি। শুধু ভেবেছি আর ভেবেছি। তোমার প্রশ্নটা আমার চোখ খুলে দিয়েছে।
-কি সেটা? আমি প্রশ্ন রাখলাম। একদাম ঠাহর করতে পারছিলাম না, কি বলবে এবার সে।
-আমি এথিস্ট নই, অনেক ভেবে দেখলাম, মনে প্রাণে আমি একজন পুরোদস্তর ক্যাথলিক ক্রিশ্চিয়ান। গলা তাঁর আবেগে বুঁজে আসছিলো টের পাচ্ছিলাম।
বুঝলাম, আমাকে সাক্ষী রেখে স্রষ্টার কাছে আত্মসমর্পণ করে গেলো আইভান।
২| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৩৮
ChayapuruSH বলেছেন: ++++
প্রিয়তে রাখলাম।
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:১৭
খন্দকার আলমগীর হোসেন বলেছেন: অভিজ্ঞতা ভাল লেগেছে জেনে কৃতজ্ঞতা জানাই।
৩| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৪২
সৈয়দ মোজাদ্দাদ আল হাসানাত বলেছেন: খুব ভালো লাগলো ।
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:১৭
খন্দকার আলমগীর হোসেন বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ ভাই।
৪| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৫২
নির্ণয় বলেছেন: একইধরণের আরএকটি গল্পের প্লট- বাংলাদেশের সোকল্ড ৯০ পারসেন্ট এর ভেতর থেকে সপ্তাহে ৩৪ ওয়াক্তের নামাজ না পড়াদের কাউকে প্রশ্ন করুন যে সে মুসলমান কী না। সে উত্তর দেবে হ্যাঁ। তাঁকে প্রশ্ন করুন যে ৩৫ ওয়াক্তের বদলে এক ওয়াক্তের জুম্মা পড়ে মুসলমান থাকা যায় কীনা। সেও আইভানের মত বিষম খাবে। তারপর বাস চলে আসবে। আপনিও তার কথা ভুলে যাবেন। অতঃপর সকালে সে দরজা নক করে অশ্রুসজল নয়নে বলবে যে সে আসলে খারিজ হয়ে গিয়েছে।
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:২০
খন্দকার আলমগীর হোসেন বলেছেন: অভিজ্ঞতার কথা লিখেছি। আপনিও আপনার প্লটটা দিয়ে গল্পটা লিখে ফেলুন। আমার শুভাকাংখা রইল।
৫| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৯
বস শাকিল বলেছেন: গল্পটা বেশ ভালো লাগলো। বেশির ভাগ নাস্তিকদের অবস্থা মনে হয় এরকমই ।
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৭:০৭
খন্দকার আলমগীর হোসেন বলেছেন: আপনার অনুমানের সাথে একমত। অনেকে সখ করে নাস্তিক হয়। পরে বেসিকে ফিরে এসে শান্তির অণ্বেষন করে।
৬| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৪৯
সিবাক বলেছেন: কিন্তু মন্তব্য প্রদানে অতি সন্তর্পণে বিরত থাকেন কেন সেটা বুঝলাম না।
যেটা সত্যি সেখানে তা বলতে হবে।
আমি নিজেই এক চরম নাস্তিক ছিলাম, তো তারা যা ভাবে সেটা আমি জানি।
তারা আসলে যা ভাবে সেটা পুরাটাই ভুল।
আমার নাস্তিকতার সমাপ্তি হয় যখন আমি নিজ উদ্দগে কোরআান পড়া শুরু করি, এটা খুবই অবাক ভাবে সম্পূর্ন আমাকে পরিবর্তন করে,
এটা বিশ্বাসের উর্ধে, এমন সত্য যাতে সম্মতি দেই আমি।
অবস্যই কোরআান পড়া উচিত এবং বোঝা উচিত।
আর কেউ তার বিরধীতা করলে তার জবাব দেয়া দরকার, হয়তো সে তার ভূল বুঝতে পারবে।
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:১১
খন্দকার আলমগীর হোসেন বলেছেন: "কিন্তু মন্তব্য প্রদানে অতি সন্তর্পণে বিরত থাকেন কেন সেটা বুঝলাম না।"
ওই যে বললাম,একেকজন আঁকড়ে থাকেন তাঁদের নিজস্ব বিশ্বাস নিয়ে। তা ভাঙার চেষ্টা করা সময়ের অপচয় মাত্র।
"আমি নিজেই এক চরম নাস্তিক ছিলাম, তো তারা যা ভাবে সেটা আমি জানি।"
যদি পারেন, একটা পোস্ট দিয়েন আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে। অনেকের উপকার হতে পারে। আপনাকে অভিনন্দন।
৭| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:০২
অপ্রকাশিত পথিক বলেছেন: দারুণ। আমাদের দেশের নাস্তিকদের কে বুঝানো অনেক ঝামেলার ব্যাপার। এরা হল হুজুগে! কিছু বুঝে করে আর কিছু না বুঝেই করে।
বুঝালেও বুঝতে চায় না। এরা শুধু গালাগালি করতে জানে।
ভালো লেগেছে আপনার লিখা।
শুভেচ্ছা।
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২৬
খন্দকার আলমগীর হোসেন বলেছেন: অপ্রকাশিত পথিককেও অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৩৬
ChayapuruSH বলেছেন: অসাধারন।
এরকম আরও লেখা অভিজ্ঞতা চাই।