নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আত্মনাং বিধিই হোক যাপিত জীবনের প্রেরণার উৎস।

তাজা কলম

সেই কবে ... সভ্যতার আদিলগ্নে সূচিত হয়েছিল নিজেকে জানার অদম্য বাসনা। গ্রিক দর্শনের ‘know thyself’ কিংবা ভারতবর্ষের প্রাচীন দার্শনিকদের, “আত্মনাং বিধি”–র উত্তর আজো মেলেনি লাখো লাখো বছরের মানব ইতিহাসে। এই আত্মঅন্বেষণই তাজাকলমের জীবন তপস্যা। তবে নিজেকে জানার সাধনা বৈরাগ্যের পথে নয় বরং মানুষের সাথে থেকে, মানুষকে ভালোবেসে, মানুষের মাঝেই তাজা কলম খুজেঁ পেতে চায় আপন অস্তিত্বের ভূভাগ। তবুও তাজা কলম পৃথিবীতে এক গৃহী সন্নাসী কারন সে নিয়ত খুজেঁ ফিরছে শূণ্য খেকে আসা এবং শূণ্যতেই বিলীন হওয়া মানব জীবনের গুঢ় রহস্য। বিশেষ অনুরোধ: এ ব্লগে প্রকাশিত লেখাগুলো কপিরাইটের আওতাভূক্ত । লেখকের অনুমতি ছাড়া এখানে প্রকাশিত কোন লেখা কিংবা লেখার অংশ বিশেষ কেহ অন্য কোথাও প্রকাশ করলে বেআইনি কাজ হিসেবে বিবেচিত হবে। প্রয়োজনে লেখকের সাথে যোগাযোগ করুন।

তাজা কলম › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রজাপতি মন ও ফুলের সৌরভ

২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:৫৯

পড়ন্ত বিকেলের রেশ

আছরের নামাজ পড়ে পরম মমতায় ভাঁজ করেন জায়নামাজ

হাতে তসবি - অনুচ্চ স্বরে আল্লাহ-র নিরান্নবই নাম

ভাবনায় আসে নিজস্ব জগত

পরিপাটি সংসার, নিরন্তর সুখ

পুত্র-পুত্রবঁধু আর আদরের পুত্তলি নাতিদের নিয়ে

স্বামি বিগত এক দশক

হঠাৎ স্ট্রোকে চলে গেলেন না ফেরার দেশে

আহা, জীবনের এ অনাবিল সুখ তার যে সইলো না !

আল্লাহ তাকে বেহেশত নসীব করুন।



সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে

হ্যা বৌমা, বড় পয়মন্ত বৌমা

পছন্দের বিয়ে হলেও ছেলের ভাগ্য আমার

বিয়ের পরেই শনৈ শনৈ ব্যবসার উন্নতি

দু' দুটো নাতি, মাশআল্লাহ

বেহেশতের হুর যেন ভুল করে পৃথিবীতে !



সুন্দরী, শিক্ষিত বৌমা কলেজ প্রভাষক

গৃহকর্মে তবু যে নেই তার জুড়ি

শিল্পের মহিমায় সাজায় এ সংসার-



বৌমা গুণী শিল্পী এক

সুলললিত কন্ঠে স্নিগ্ধ আমেজ

পরম মমতায় গায় রবীন্দ্র -

শাশুড়ী বুঁদ হয়ে শুনেন .. বিশেষ করে ঐ দু'টি গান

'সীমার মাঝে অসীম তুমি বাজাও আপন সুর' কিংবা

'আমারি মাথা নত করে দাও তোমারি চরণ তলে'

তিনি পেয়ে যান আল্লাহর সান্নিধ্য ..

বৌমার কল্যাণে কবিগুরু হয়ে যান প্রেরিত পুরুষ।



ভাবনার অলিন্দে সহসা ভাসে মেঘ থমথমে বৌমা-র মুখ

সদা হাস্যোজ্জল বৌমার কি হয়েছে আজ !

পাশের রুমেই থাকে ছেলে-ছেলের বৌ

রাতে ভেসে এসেছিল বাক-বিতন্ডার আওয়াজ -

একসাথে থাকলে কখোনো সখোনো খটাখটি

হতেই পারে । একঘেয়ে সুখে এ তো ভিন্ন স্বাদ

খোকার বাবার সাথেও তো তার হত!



টিপিক্যাল শাশুড়ী নন তিনি

বরং শিক্ষিতা, আধুনিক এবং উদারমনা

সংসারের শান্তির জন্য অনাহুত নাক গলানো তার ধাত বিরুদ্ধ

বৌমার জন্য তবু কষ্ট ভীষণ -

এর একটা বিহিত হওয়া দরকার ভাবেন তিনি।



তসবীর দানা ঘুরাতে ঘুরাতে ডাকেন তিনি

-বৌমা, একবার এসো তো মা আমার রুমে।

-জি আম্মা আসছি আমি

পাখির ডানায় ভর দিয়ে আসে বৌমা।

-জ্বি মা, বলুন

শাশুড়ী তাকান তার বিষাদমাখা মুখে

-মা, বলো তো কি হয়েছে তোমার

সহানুভূতি কন্ঠে ছলছল করে ওঠে বৌমার চোখ।

- বলো না তুমি আমায়, আমিও তো তোমার মা .. নাইবা হলাম জন্মদাত্রী তোমার।

- মা আপনাকে বলতে যে বড় লজ্জা ...

- বলো মা বলো ..আমিও তো এক মেয়ে, বুঝি তো মেয়েদের মন

-মা, সে যে বড়ই লজ্জা .. আপনার ছেলে .. এ বয়সেও

- কি?

- জি মা, অন্য এক মেয়ের সাথে ...



শাশুড়ী চোখ বুঁজে ভাবেন কিয়ৎক্ষণ

সহসা যেন পেয়েছেন অহী। আবেগমাখা কন্ঠ তার

- মা জানো তো পুরুষ প্রজাতি বড়ই চঞ্চল। প্রজাপতি মন ফুলে ফুলে ওড়ে।

শেষটায় সে তো তোমারই, নাটাই যে তোমার হাতে।



শাশুড়ীর কথায় হতচকিত সে । কথার পিঠে কথা

- মা, আপনিও তো নারী, নারীও কি কম চঞ্চল! ফুলের সৌরভে আসে বহু প্রজাপতি- ফুল তো বহুগামী! আমি, আপনি নারী - আমাদেরও তো আছে নেশাতুর সৌরভ। আমরাও তো জুড়তে পারি অন্য কোন ঘুড়ির সুতার প্রান্তে নটাই হাতে রেখেই।



যুক্তিতে হেরে যান শাশুড়ী।

টের পান, যুগ বদলে গেছে । কিয়ামত নজদিক!

হাতের তসবি ঘুরতে থাকে দ্রুতলয়ে।

-ঠিক আছে বৌমা, তুমি যাও এখন।



ওদের প্রব্রেম ওরা্ই সলভ করুক, শাশুড়ী ভাবেন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.