নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আত্মনাং বিধিই হোক যাপিত জীবনের প্রেরণার উৎস।

তাজা কলম

সেই কবে ... সভ্যতার আদিলগ্নে সূচিত হয়েছিল নিজেকে জানার অদম্য বাসনা। গ্রিক দর্শনের ‘know thyself’ কিংবা ভারতবর্ষের প্রাচীন দার্শনিকদের, “আত্মনাং বিধি”–র উত্তর আজো মেলেনি লাখো লাখো বছরের মানব ইতিহাসে। এই আত্মঅন্বেষণই তাজাকলমের জীবন তপস্যা। তবে নিজেকে জানার সাধনা বৈরাগ্যের পথে নয় বরং মানুষের সাথে থেকে, মানুষকে ভালোবেসে, মানুষের মাঝেই তাজা কলম খুজেঁ পেতে চায় আপন অস্তিত্বের ভূভাগ। তবুও তাজা কলম পৃথিবীতে এক গৃহী সন্নাসী কারন সে নিয়ত খুজেঁ ফিরছে শূণ্য খেকে আসা এবং শূণ্যতেই বিলীন হওয়া মানব জীবনের গুঢ় রহস্য। বিশেষ অনুরোধ: এ ব্লগে প্রকাশিত লেখাগুলো কপিরাইটের আওতাভূক্ত । লেখকের অনুমতি ছাড়া এখানে প্রকাশিত কোন লেখা কিংবা লেখার অংশ বিশেষ কেহ অন্য কোথাও প্রকাশ করলে বেআইনি কাজ হিসেবে বিবেচিত হবে। প্রয়োজনে লেখকের সাথে যোগাযোগ করুন।

তাজা কলম › বিস্তারিত পোস্টঃ

কী তাজ্জিব আমাদের এ মানব জীবন

০৪ ঠা জুন, ২০১৩ রাত ৮:২৩

না ফেরার দেশে চলে গেছেন বাবা আজ পক্ষকাল। পরিণত বয়সে তার এ চলে যাওয়া। কিডনিরোগে আক্রান্ত হয়ে নিয়মিত ডায়লেসিসের উপর তিনি ছিলেন প্রায় দেড়টি বৎসর। ডায়লেসিস কোন চিকিৎসা না, বস্তুতঃ কৃত্রিমভাবে বাঁচিয়ে রাখার এক ব্যবস্থা তা আমরা জানতাম। অন্য কথায় ডায়ালিসস যে বিলম্বিত মৃত্যু প্রক্রিয়া সে বিষয়ে আমাদের কোন সংশয় ছিল না। তবুও তো তিনি ছিলেন এবং আমাদের প্রার্থনা ছিল আরো অনেকদিন তিনি বেঁচে থাকবেন। আমরা যারা তার স্বজন তাদের কাছে তার এ বেঁচে থাকাটাই ছিল পরমা পাওনা। কেউ কি চায় তার নিকটজন সহসা হারিয়ে যাক!



সদ্য মৃত্যুছোঁয়া বাড়িতে বিরাজ করছে খা খা শূন্যতা। শূন্যতা শুধু পরিবার সদস্যদের মাঝেই নয়, অনুভবকে একটু বিস্তার করলে বাড়ির অচেতন জড়বস্তু যেমন তৈজসপত্র থেকে শুরু করে হারিয়ে যাওয়া মানুষটির নিত্যব্যবহার্য জিনিষগুলোও যে সংবেদী দীর্ঘশ্বাস ফেলে তা বোঝা যায়।



বাবার শূন্য বিছানা যেন অপেক্ষা করছে। কখন আসবেন তিনি, নিবেন বিশ্রাম। একসময় তারাও কি বুঝে ফেলবে সেই অমোঘ বাণী, 'যে যায় সে আর ফিরে না!'



বাড়িতে আমরা যারা প্রাপ্ত বয়স্ক তারা জানি মৃত্যুর অবয়ব। আসলেই কি জানি! যতি চিহ্নের মত জীবনের গতিকে থামিয়ে দেয় মৃত্যু। এর চেয়ে বেশী কি জানা গেছে মৃত্যু বিষয়ে! বিশ্বাসের দর্পনে বিদেহী আত্মা সম্পর্কে ধারণা মিলে, আভাষ পাওয়া যায় মৃত্যু পরবর্তী পারলৌকিক জীবন সম্পর্কে। কিন্তু সে তো শুধু বিশ্বাসের আকর। বিজ্ঞান তো আজো সুরাহা করতে পারেনি দেহ ও আত্মার কার্যকারণ সম্পর্ক কিংবা এক কথায় মৃত্যৃ রহস্য। বিজ্ঞান শুধু জানে হার্টবিট বন্ধ হলেই হয় মৃত্যু। কিন্তু মৃত্যই কি সব শেষ ... বিদেহী আত্মা, মৃত্য পরবর্তী জীবন শুধুই কি মানুষের রোমান্টিক ভাবনা যা প্রতিফলিত হয়েছে ধর্মগ্রন্থগুলোতে । কে জানে !



পরিবার সদস্যের মৃত্যু যে শিশুমনে কী গভীর প্রভাব ফেলে তা অনুভব করছি আমার তিনকন্যাকে পর্যবেক্ষন করে। ওদের কাছে দাদা ছিলেন প্রিয় চরিত্র। দাদার অবসর সময়ের অনেকটুকুই কাটতো ওদেরকে নিয়ে। দাদার এ চলে যাওয়াটা ওদের কচি বয়সে একটা বড় আঘাত। দাদার কোন প্রসঙ্গ উঠলে বড় মেয়ে রাইদার মুখে স্পষ্টতঃই পড়ে শোকের ছায়া, স্তব্ধতায় যেন ওর কথা সরে না। মেঝ ও ছোট মেয়ে রাইমা ও রাইকা প্রায়ই মন খারাপ করে বসে থাকে দাদার কথা ভেবে। দাদার খালি বিছানায় ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে ওরা।



ছয় বছর বছরী মেঝ মেয়ে রাইমা বড়বেশী বাপ সোহাগী। পরশু রাতে সে হঠাৎ আমাকে বলে, ' দাদার জন্য আমার খুব মন খারাপ লাগে। আচ্ছা পাপা, দাদা তো তোমার পাপা। এই যে আমি যখন ইচ্ছে হয় তোমার কোলে উঠে পড়ি, ইচ্ছে হলেই তোমার বুকে ঘুমিয়ে পড়ি ... তুমিও কি ছোট থাকতে তোমার পাপার সাথে এমনটিই করতে? তোমার খুব কষ্ট, তাই না পাপা?'



ওর প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়নি। শুধু ভাবনায় এল কারো যাওয়াই আটকে থাকে না কোন কিছু। মৃত্যু ছিনিয়ে নিচ্ছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম। তাতে কি পৃথিবীর আহ্নিক গতি, বার্ষিক গতি থেমে যায় ! বাবা, মা চলে যায় অমোঘ নিয়মেই.. শেষকৃত্য করে শোকাচ্ছন্ন সন্তানেরা এক সময় কাটিয়ে উঠে শোক, ফিরে আসে স্বাভাবিক জীবনে।



কী তাজ্জিব আমাদের এ মানব জীবন।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জুন, ২০১৩ রাত ৮:৩৩

ডি মুন বলেছেন: বাবা ভালো থাকুন না ফেরার দেশে

২| ০৪ ঠা জুন, ২০১৩ রাত ৮:৩৫

ঘাসফুল বলেছেন: আপনার বাবার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
পরম করুনাময় আপনাকে ও আপনার পরিবারকে রহম করুন...

৩| ০৪ ঠা জুন, ২০১৩ রাত ৯:০৬

এম এম কামাল ৭৭ বলেছেন: ভাল লাগলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.