| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কেন তাদের জিহাদে এত ভয়?
আমরা সকলেই জানি যে, ইসলামের রুকন বা প্রধান স্তম্ভ পাঁচটি-
কালিমা,নামায,রোযা,হজ্ব ও যাকাত। আর এই খুঁটিগুলোকে টিকিয়ে রাখার মাধ্যম হিসেবে একটি ছাদও যে আছে সেটা হয়তো অনেকেই জানিনা।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
ذروةُ سنامِ الإسلامِ الجهادُ في سبيلِ اللهِ
ইসলামের সর্বোচ্চ চূড়া হল জি$হা/দ । - আল মু'জামুল কাবীর লিত তাবারানী ৭৮৮৫, তিরমিজি ২৬২৬
ছাদ যেমন ভিতরে থাকা খুঁটি ও অন্যন্য আসবাব পত্রকে ঝড় বৃষ্টি এবং শত্রুর আক্রমণ থেকে হেফাজত করে। জি$হা/দও তেমনি মুসলিমদের ঈমান আমলকে শত্রুর আঘাত থেকে হেফাজত করে।
মুসলিমদের ঈমান ও আমল নষ্ট করার জন্য শত্রুরা সদা সর্বদা তৎপর। তারা চায় মুসলিমরা যেন ঈমানহারা হয়ে কাফের হয়ে যায়। নাহলে অন্তত যেন তাদের পছন্দের ইসলামের (বিকৃত ইসলামের) অনুসরণ করে, যেই ইসলাম কখনো কুফরের সাথে সংঘাতে জড়ায়না, কাফেরদের সাথে শত্রুতা রাখেনা এবং প্রয়োজনে যে কোন কুফর ও হারামকে হেকমত-মাসলাহাতের দোহাই দিয়ে হালাল করে নেয়।
এরজন্য তারা যে পরিকল্পনা নিয়েছে তা হল- বাছাইকরা কিছু মুসলিম দেশে আক্রমণ করে বাকিদেরকে ভীত সন্ত্রস্থ করে রাখা। এরপর সব জায়গায় নিজেদের একান্ত আজ্ঞাবহ পাপেটদেরকে ক্ষমতায় বসানো। যারা নামে মুসলিম হলেও কাজে কর্মে হবে কাফের। উপরে মুসলিম দরদী সাজলেও গোপনে গোপনে কাফেরদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবে। বর্তমানে প্রায় প্রতিটি মুসলিম দেশেই আমরা এমন পাপেটদেরকে ক্ষমতায় দেখতে পাচ্ছি। যারা মুসলিমদের স্বার্থ রক্ষার চেয়ে তাদের কাফের প্রভূদের স্বার্থ রক্ষায় অধিক তৎপর। এরা সবাই নিজ নিজ দেশে অন্যায় অশ্লীলতা, সুদ যিনা, খুন খারাবী সহ যাবতীয় অপরাধ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিচ্ছে। মুসলিমদের নৈতিকতা ও পরিবার ব্যবস্থা ধ্বংস করার জন্য সমকামিতা,লিভটুগেদার,সিঙ্গেল মাদার, সারোগেসি মাদারের মত ধ্বংসাত্মক কর্ম ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
-
আরাকান, কাশ্মীর, পূর্ব তুর্কিস্তান, ইয়েমেন, সিরিয়া সহ পৃথিবীর বিভিন্নস্থানে মুসলিমরা আজ নির্যাতন নিপীড়নে শিকার। এসব অঞ্চলের মুসলিমদের উপর দশকের পর দশক ধরে যেই বর্বরতা ও নিপীড়ন চলছে, বিশেষত প্রায় দুই বছর ধরে ই/স"র|য়েল ফিলিস্তিনে যে বর্বরতা চালাচ্ছে তা অবর্ণনীয়। ই/স"র|য়েল সেখানে নির্বিচারে বোম্বিং চালিয়ে পুরো শহরকে ধ্বংস্তুপে পরিণত করেছে। স্কুল,কলেজ,হাসপাতাল কিছুই হায়েনাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি, যেদিকে চোখ যায় শুধু ধ্বংস আর ধ্বংস। তাদের এই বর্বর আক্রমনে ৫০ হাজারের অধিক নিরপরাধ মুসলিম শহীদ হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এত এত মানুষকে হত্যা করার পরও যেন হায়েনাদের রক্তপিপাসা মেটেনি, তাই বেঁচে যাওয়া মানুষগুলোকেও মেরে ফেলার ষড়যন্ত্রে মেতেছে। শরনার্থী শিবিরগুলোতে আশ্রয় নেয়া মানুষদের কাছে খাদ্য পানি চিকিৎসা সামগ্রী সহ সব ধরণের মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। খাবার পানি ও চিকিৎসার অভাবে এই মানুষগুলো এখন জীবন্ত লাশে পরিণত হয়েছে।
-
মুসলিম জাতির জীবনে এই দুর্যোগ ও বিপর্যয় কখনোই দূর হবেনা যদি আমরা জি$হা/দ থেকে দূরে থাকি। ফিলিস্তিনের চারপাশের আরব রাষ্ট্রগুলোর পাপেট শাসকদেরকে এবং তাদের প্রভু সাপের মাথা আ/মে-রি/কাকে জি$হা/দের মাধ্যমে বিতাড়িত না করলে কোনোদিনও বাইতুল মাকদিস উদ্ধার করা যাবেনা, অন্যান্য মুসলিম ভূখন্ডগুলো থেকেও পশ্চিমাদের দাস সেক্যুলার শাসকদের ও তাদের কাফের মনিবদেরকে উৎখাত না করলে উম্মাহর হারানো গৌরব পুনরুদ্ধার করা যাবেনা এবং এই দুঃখ ও দুর্দশা দূর করা যাবেনা।
বস্তুত, জি$হা/দ ফি সাবিলিল্লাহ ছাড়া এই উম্মাহর লাঞ্চনা ও দুর্দশা কাটানো সম্ভব নয়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: إِذَا تَبَايَعْتُمْ بِالْعِينَةِ، وَأَخَذْتُمْ أَذْنَابَ الْبَقَرِ، وَرَضِيتُمْ بِالزَّرْعِ، وَتَرَكْتُمُ الْجِهَادَ، سَلَّطَ اللَّهُ عَلَيْكُمْ ذُلًّا لَا يَنْزِعُهُ حَتَّى تَرْجِعُوا إِلَى دِينِكُمْ
যখন তোমরা ঈনা পদ্ধতিতে ব্যবসা করবে, গরুর লেজ আঁকড়ে ধরবে, কৃষিকাজ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকবে এবং জি$হা/দ ছেড়ে দিবে তখন আল্লাহ তোমাদের উপর লাঞ্ছনা ও অপমান চাপিয়ে দিবেন। তোমরা তোমাদের দ্বীনে ফিরে না আসা পর্যন্ত আল্লাহ তোমাদেরকে এই অপমান থেকে মুক্তি দিবেন না। ( সুনানে আবু দাউদ ৩৪৬২)
এই হাদীস থেকে স্পষ্ট যে, সুদযুক্ত লেনদেনে জড়িত থাকা, দুনিয়ার প্রতি মোহগ্রস্ত হয়ে পড়া, এবং সর্বোপরি জি$হা/দ থেকে দূরে থাকাই হল এইসব লাঞ্ছনা ও অপমানের কারণ, আর জি$হা/দের আমল সহ পূর্ণাঙ্গ দ্বীনের দিকে ফিরে আসাই হল মুক্তির একমাত্র উপায়।
একারণেই কুফফফারগোষ্ঠী ও তাদের দোসররা যখন মুসলিমদের ধ্বংস করতে চায় তখন তারা প্রথমে জি$হা/দ ও মু/জ|হি'দীনের ব্যাপারে অপপ্রচার চালায়, যেন সবাই তাদের ভুল বোঝে এবং তাদের সাথে না মেশে। এরপর তারা মুক্তিকামীদের স/ন্ত্রা/সী জ*ঙ্গি ইত্যাদি অপবাদ দিয়ে দমন পীড়ন শুরু করে। কারন তারা জানে একমাত্র জি$হা/দই পারে বিপর্যস্ত উম্মাহর জীবনে গৌরব ও সম্মানের ইতিহাস ফিরিয়ে আনতে।
দুশমন যখন উম্মাহকে শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে মু/জ|হি'দীনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তখন একদল মুনাফিকও যোগ দেয় তাদের সঙ্গে। বস্তুত উম্মাহর ইতিহাসে শুরু থেকে আজ পর্যন্ত মুনাফিকের অভাব হয়নি কখনো। বর্তমান ফিলিস্তিনের দিকে তাকালেও আমরা এমন অসংখ্য মুনাফিকের দেখা পাব, যারা সর্বশক্তি দিয়ে জায়নবাদী রাষ্ট্র এবং তার প্রভূ আ/মে-রি/কাকে হেফাজতের চেষ্টা করে যাচ্ছে। সামান্য কিছু অর্থ সম্পদ ও ক্ষমতার লোভে জেনেশুনেই তারা কুফফারদের পদলেহন করে এবং উম্মাহর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এই মুনাফিকগোষ্ঠীই মুসলিমদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা নিজেরাও ওদের হাত থেকে রেহাই পায়না।
আল্লাহ আমাদেরকে তাদের অনিষ্ট থেকে হেফাজত করুন। আমাদেরকে জি$হা/দ সহ পূর্ণাঙ্গ দ্বীনে ফিরে এসে উম্মাহর হারানো গৌরব পুনরুদ্ধারে শরীক হওয়ার সৌভাগ্য দান করুন।
©somewhere in net ltd.