নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তামিম আল আদনানী

তামিম আল আদনানী

লেখক, আলেম, দ্বায়ী, মোটিভেশনাল স্পিকার

তামিম আল আদনানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিভিন্ন দলের কর্মী সমর্থকদের প্রতি : জালিমের সহযোগী হবেন না!

১৫ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০১

বিভিন্ন দলের কর্মী সমর্থকদের প্রতি : জালিমের সহযোগী হবেন না!
.
জালিম সাধারনত একা বড় ধরণের জুলুম করতে পারেনা। তাকে বড় জালিম বানানোর পেছনে ভূমিকা রাখে সহযোগী ও সমর্থকরা। তারা দুনিয়াবী সামান্য কিছু স্বার্থ যেমন পদ পদবী, অর্থ সম্পদ ও ভোগ বিলাসের জন্য জালিমের সহযোগী হয়। তাদের এই সহযোগিতার কারণে জালিমরা ধীরে ধীরে বড় জালিমে পরিণত হয়।
এই কারণে জালিমরা যেমন অপরাধী তাদের সহযোগী ও সমর্থকরাও সমান অপরাধী। জালিম যেমন দুনিয়া আখিরাতে লাঞ্ছনা ও শাস্তির হকদার তেমনি তাদের সহযোগী, সমর্থক ও সহনুভূতিশীল লোকেরাও লাঞ্ছনা ও শাস্তির হকদার। আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারীমে জালিমের প্রতি সহনুভূতিশীল লোকদের উদ্দেশ্যে করে বলেছেন-
وَ لَا تَرْكَنُوْۤا اِلَی الَّذِیْنَ ظَلَمُوْا فَتَمَسَّكُمُ النَّارُ وَ مَا لَكُمْ مِّنْ دُوْنِ اللهِ مِنْ اَوْلِیَآءَ ثُمَّ لَا تُنْصَرُوْنَ.
তোমরা জালিমদের দিকে একটুও ধাবিত হয়োনা, তাহলে জাহান্নামের আগুন তোমাদেরকেও স্পর্শ করবে এবং আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোনো রকমের বন্ধু থাকবেনা, আর তখন কেউ তোমাদের সাহায্য করবে না। -[সূরা হূদ ১১৩]
আসুন একটু চিন্তা করি, জালেমের প্রতি সহনুভূতিশীল ও তাদের দিকে ধাবিত লোকদের জন্যই যদি এত বড় শাস্তি হয় তাহলে যারা খোদ জালিম ও সহযোগী তাদের জন্য কতবড় শাস্তি অপেক্ষা করছে!
আশা করি এই আয়াতটি চিন্তাশীলদেরকে জালিমের সহযোগিতা এবং তাদের প্রতি সহনুভূতি প্রদর্শন করা থেকে বিরত রাখার জন্য যথেষ্ট হবে।
.
আল্লামা আলুসী রহিমাহুল্লাহ তাফসীরে রুহুল মাআনীতে জালিমদের প্রতি ধাবিত হওয়ার কয়েকটি রূপ বর্ণনা করেছেন। সেগুলো হল-
.
১। তোষামোদী ও চাটুকারিতা করা- আমাদের সমাজে এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা ভাল মানুষ হিসেবে পরিচিত কিন্তু সুযোগ পেলে জালিম ক্ষমতাসীন ও সম্পদশালীদের তোষামোদ করেন। দুঃখজনক ব্যপার হল এই তালিকায় অনেক আলেমও যুক্ত আছেন। তারা সামান্য সুযোগ সুবিধা ও নৈকট্যের আশায় জালিমদের তোষামোদী করেন।
২। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও প্রতিরোধ না করা- শক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যদি জালিমকে বাধা না দেয়া হয় এবং প্রতিরোধ না করা হয় তাহলে এটিও তাকে সহযোগিতা করার মধ্যে গণ্য হবে।
৩। পোশাক আশাক ও চাল চলনে তাদের অনুসরণ করা।
৪। তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা এবং তাদের সাথে ঘনিষ্ঠতা রাখা- (অনেককে দেখা যায়, তারা জালিমের নামের শুরুতে মাননীয় এবং শেষে সাহেব যুক্ত করেন। অনেকে আবার তাদের সাথে সুসম্পর্ক রাখেন এবং সুসম্পর্ক রাখাকে গৌরবের মনে করেন। খুব গর্ব করে বলেন, অমুক নেতা বা মন্ত্রীর সাথে আমার সুসম্পর্ক আছে।) – [তাফসীরে রুহুল মাআনী (সুরা হুদের ১১৩ নাম্বার আয়াতের তাফসীর)]
.
আফসোস! আমরা তো জালিমদের সাথে সুসম্পর্ক থাকাকে গৌরবের মনে করি অথচ সালাফরা জালিমের দিকে মুগ্ধ চোখে তাকাতেও ভয় পেতেন। সাইদ ইবনুল মুসাইয়িব রহিমাহুল্লাহ বলেছেনঃ
لا تملؤوا أعينكم من أعوان الظلمة إلا بإنكار من قلوبكم لئلا تحبط أعمالكم الصالحة
তোমরা জালিমদের সহযোগীদের দিকে আন্তরিক ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছাড়া মুগ্ধ চোখে তাকাবেনা, নয়তো তোমাদের নেক আমলগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। - [সিফাতুস সাফওয়া খন্ড-২ পৃ-৮০]
.
প্রিয় পাঠক, আমাদের মনে যদি জাহান্নামের আগুনের নূন্যতম ভয় থেকে থাকে তাহলে যেন কোনভাবে আমরা জুলুম না করি এবং জালিমের সহযোগিতা ও তাদের প্রতি সহনুভূতি দেখানোর মত ভয়ানক কাজ না করি। আল্লাহ তাআলা আমাদের এমন অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখুন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.