![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বপ্নের ফেরিওয়ালা, স্বপ্নের ঘুড়ি বানাই, আসেন না একত্রে সে ঘুড়ি উড়াই, তাহলে ধরেন নাটাইটা আমি আসছি একটু পরে, এসে একসাথে উড়াব সে ঘুড়ি আজীবনের তরে!
ক্লাসে পিনপতন নিরবতা। ইংলিশ ক্লাস চলছে। স্যার পুরো দস্তুর সহজ ও সাবলীল ভাষায় লেকচার দিচ্ছেন। ছাত্রদেরকে বোঝাচ্ছেন কোনো বাক্য কমপ্লেক্স থেকে সিম্পলে ট্রান্সফর্ম করতে হয় কিভাবে। হোয়াইট বোর্ডে একটি বাক্য লিখে উদাহরণ দিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে ছাত্রদেরকে বোঝাচ্ছেন। বোর্ডে লিখেছেন, I went to my teacher's house so that I could steal the book, 'The women and fiction'.
.
স্যার সচরাচর ক্লাসে পড়ানো ব্যতীত অন্য কোনো বিষয়ে কথা বলেন না। বাক্যটা লেখার পর সহসা বলে উঠলেন এটা আমার নিজের জীবনের কাহিনী। ছাত্ররা সকলে হো হো করে হেসে উঠল! বলে কি স্যার! স্যার শেষমেশ চুরি করেছেন আবার সেটা অকপটে ক্লাসের সকলের সামনে বলেও ফেললেন? এবার তো ছাত্ররা স্যারকে এক প্রকার জোর করল ঘটনা কি খোলাসা করার জন্য। স্যার বলতে শুরু করলেন,
.
"আমি তখন ক্লাস সেভেনের ছাত্র। আমার বাবা ছিলেন কৃষক। আমি যে স্কুলে পড়তাম সে স্কুলে যাওয়ার পথে আমার এক স্যারের বাসা পড়ত। উনি আমাদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত দুধ নিতেন। স্কুলে যাওয়ার পথে আমি প্রতিদিন বোতলে করে স্যারের বাসায় দুধ দিয়ে তারপর স্কুলে যেতাম। একদিন দুধ দিতে গিয়ে দেখলাম স্যারের ব্যক্তিগত লাইব্রেরিতে একটা বই রাখা। বইটির নাম 'ন্য হন্যতে'। বইটি দেখে মনে পড়ল এই বইয়ের প্রথম খণ্ড 'ল ন্যুই বেঙ্গলী' বইটি আমি আগে পড়েছি। কিন্তু দ্বিতীয় এ খণ্ডটি এখনো পড়া হয়নি। স্যারকে বললাম বইটি দিতে পড়ে আবার ফেরত দিব। স্যার বলল তুমি এখনো এ বইটি পড়ার মত উপযুক্ত হওনি। কলেজে উঠো তারপর আমার কাছে এসে বইটি নিয়ে যেও। স্যারের কথা শুনে তো আমার রাগ হলো। বইটি পড়তেই হবে যে করে হোক। বই পড়ার সাথে কলেজে উঠার কোনো সম্পর্ক নেই। বইটি ছিল মূলত একজন ইউরোপিয়ান ও ভারতবর্ষীয় এক নারীর প্রেম উপাখ্যান। "
.
এটুকু বলে স্যার থামলেন। ছাত্ররা সকলে একটু নড়ে চড়ে বসল প্রেম শব্দটা শুনে। বয়েজ কলেজে কারো মুখে প্রেম সম্পর্কিত কোনো বিষয় শোনার অর্থ হলো কাটখোট্টা মরুভূমিতে এক পশলা শীতল বৃষ্টি। সকলের শোনার আগ্রহ বেড়ে গেল। স্যার আবার বলতে লাগলেন, "বইটির প্রথম খণ্ডটার লেখক ইউরোপ থেকে নিজে এসেছিলেন ২৩ বছর বয়সে ভারতবর্ষে চাকুরীর সুবাদে। এসে তিনি যে কোম্পানিতে কাজ পেয়েছিলেন সে কোম্পানির এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা দয়া পরবশ হয়ে তার নিজের বাড়িতে লেখককে থাকতে দিয়েছিলেন। আর তারই পরিপ্রেক্ষিতে ঐ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে লেখকের। এক পর্যায়ে বিচ্ছেদের মাধ্যমে তাদের এ প্রেম শেষ হয়। লেখক আবার নিজ দেশে ফিরে যান। ভারতবর্ষে এসেছিলেন ২৩ বছর বয়সে। কিছুকাল পর ফিরে গিয়ে ৭৭ বছর বয়সে নিজের ব্যর্থ প্রেমকাহিনী নিয়ে একটি বই লিখেন। অর্থাৎ, ভারতবর্ষ থেকে চলে যাওয়ার ৫৪ বছর পর। বইটিতে লেখক তার প্রেমিকা মৈত্রেয়ী দেবীর রুপ, গুণ বর্ণণা করতে গিয়ে কিছু মিথ্যা কথা বাড়িয়ে লেখেন বইটিতে। এ ছিল বইয়ের প্রথম খণ্ডটির ইতিবৃত্ত।
.
বইটির দ্বিতীয় খণ্ডের লেখিকা প্রথম খণ্ডের লেখকের প্রেমিকা। তিনি কিভাবে যেন জানতে পারেন এত বছর পর যে, তার ইউরোপীয় প্রেমিক তাকে নিয়ে বই লিখেছে। সে তার জবাবেই বইটির ২য় খণ্ড লিখে। আর ঐ বইটিই চুরি করার জন্য আমি স্যারের বাসায় গিয়েছিলাম। স্যারকে বলার পরে স্যার যখন বইটি পড়তে দিতে অস্বীকৃতি জানালেন তখন বইটি চুরি করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। বইটি পড়ার জন্য একটা অভিনব কৌশল বের করলাম। স্যারের ওয়াইফকে জানালাম বইয়ের ব্যাপারটা। তাকে বললাম আমি বইটির কভার কেটে আমার পুরাতন একটা বইয়ের উপরে লাগিয়ে পুরাতন বইটি বুক শেলফে রেখে দিব। যতদিন পড়া শেষ না হচ্ছে ততদিন যেন তিনি স্যারকে এ বিষয়ে কিছু না বলেন। স্যারের ওয়াইফকে বলে বইয়ের কভার কেটে পুরাতন একটা বইয়ের উপরে কভারটা লাগিয়ে বুক শেলফের ঠিক জায়গায় রেখে দিলাম। ৩ দিন পর বইটা পড়া শেষে আবার কভার পরিবর্তন করে যথাস্থানে থুয়ে দিলাম।
.
বইটই পড়া শেষে স্যারকে গিয়ে বললাম স্যার আপনার 'ন্য হন্যেতে' বইটা আমার পড়া শেষ। স্যার বিস্ময় প্রকাশ করে জিজ্ঞাস করলেন কিভাবে? আমি বললাম স্যার আপনার বইটা খুলে দেখলেই বুঝতে পারবেন। স্যার বই খুলে কভারে আঠা লাগানো দেখে সমগ্র বিষয়টা বুঝে গেলেন।" স্যার কথা শেষ না করতেই ক্লাসের সকলে একযোগে হাত তালি দেয়া শুরু করল। সকলে কিছুক্ষণ হৈ হুল্লোড় করার পর স্যার বললেন, এবার তাহলে পড়ার দিকে মনোনিবেশ করা যাক। আমরা যা পড়াচ্ছিলাম তাহলে "I went to my teacher's house so that I could steal the book, 'The women and fiction" বাক্যটির সিম্পল ফর্ম কি দাড়াল? এর সিম্পল ফর্ম দাড়াল "সব চুরি চুরি নয়"। ক্লাসের সকলে আবার আরেক পালা হাত তালি দিয়ে স্যারকে অভিবাদন জানাল। এক সময় স্যার হাসি মুখে ক্লাস থেকে বেরিয়ে গেলেন।
ক্লাসে পিনপতন নিরবতা। ইংলিশ ক্লাস চলছে। স্যার পুরো দস্তুর সহজ ও সাবলীল ভাষায় লেকচার দিচ্ছেন। ছাত্রদেরকে বোঝাচ্ছেন কোনো বাক্য কমপ্লেক্স থেকে সিম্পলে ট্রান্সফর্ম করতে হয় কিভাবে। হোয়াইট বোর্ডে একটি বাক্য লিখে উদাহরণ দিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে ছাত্রদেরকে বোঝাচ্ছেন। বোর্ডে লিখেছেন, I went to my teacher's house so that I could steal the book, 'The women and fiction'.
.
স্যার সচরাচর ক্লাসে পড়ানো ব্যতীত অন্য কোনো বিষয়ে কথা বলেন না। বাক্যটা লেখার পর সহসা বলে উঠলেন এটা আমার নিজের জীবনের কাহিনী। ছাত্ররা সকলে হো হো করে হেসে উঠল! বলে কি স্যার! স্যার শেষমেশ চুরি করেছেন আবার সেটা অকপটে ক্লাসের সকলের সামনে বলেও ফেললেন? এবার তো ছাত্ররা স্যারকে এক প্রকার জোর করল ঘটনা কি খোলাসা করার জন্য। স্যার বলতে শুরু করলেন,
.
"আমি তখন ক্লাস সেভেনের ছাত্র। আমার বাবা ছিলেন কৃষক। আমি যে স্কুলে পড়তাম সে স্কুলে যাওয়ার পথে আমার এক স্যারের বাসা পড়ত। উনি আমাদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত দুধ নিতেন। স্কুলে যাওয়ার পথে আমি প্রতিদিন বোতলে করে স্যারের বাসায় দুধ দিয়ে তারপর স্কুলে যেতাম। একদিন দুধ দিতে গিয়ে দেখলাম স্যারের ব্যক্তিগত লাইব্রেরিতে একটা বই রাখা। বইটির নাম 'ন্য হন্যতে'। বইটি দেখে মনে পড়ল এই বইয়ের প্রথম খণ্ড 'ল ন্যুই বেঙ্গলী' বইটি আমি আগে পড়েছি। কিন্তু দ্বিতীয় এ খণ্ডটি এখনো পড়া হয়নি। স্যারকে বললাম বইটি দিতে পড়ে আবার ফেরত দিব। স্যার বলল তুমি এখনো এ বইটি পড়ার মত উপযুক্ত হওনি। কলেজে উঠো তারপর আমার কাছে এসে বইটি নিয়ে যেও। স্যারের কথা শুনে তো আমার রাগ হলো। বইটি পড়তেই হবে যে করে হোক। বই পড়ার সাথে কলেজে উঠার কোনো সম্পর্ক নেই। বইটি ছিল মূলত একজন ইউরোপিয়ান ও ভারতবর্ষীয় এক নারীর প্রেম উপাখ্যান। "
.
এটুকু বলে স্যার থামলেন। ছাত্ররা সকলে একটু নড়ে চড়ে বসল প্রেম শব্দটা শুনে। বয়েজ কলেজে কারো মুখে প্রেম সম্পর্কিত কোনো বিষয় শোনার অর্থ হলো কাটখোট্টা মরুভূমিতে এক পশলা শীতল বৃষ্টি। সকলের শোনার আগ্রহ বেড়ে গেল। স্যার আবার বলতে লাগলেন, "বইটির প্রথম খণ্ডটার লেখক ইউরোপ থেকে নিজে এসেছিলেন ২৩ বছর বয়সে ভারতবর্ষে চাকুরীর সুবাদে। এসে তিনি যে কোম্পানিতে কাজ পেয়েছিলেন সে কোম্পানির এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা দয়া পরবশ হয়ে তার নিজের বাড়িতে লেখককে থাকতে দিয়েছিলেন। আর তারই পরিপ্রেক্ষিতে ঐ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে লেখকের। এক পর্যায়ে বিচ্ছেদের মাধ্যমে তাদের এ প্রেম শেষ হয়। লেখক আবার নিজ দেশে ফিরে যান। ভারতবর্ষে এসেছিলেন ২৩ বছর বয়সে। কিছুকাল পর ফিরে গিয়ে ৭৭ বছর বয়সে নিজের ব্যর্থ প্রেমকাহিনী নিয়ে একটি বই লিখেন। অর্থাৎ, ভারতবর্ষ থেকে চলে যাওয়ার ৫৪ বছর পর। বইটিতে লেখক তার প্রেমিকা মৈত্রেয়ী দেবীর রুপ, গুণ বর্ণণা করতে গিয়ে কিছু মিথ্যা কথা বাড়িয়ে লেখেন বইটিতে। এ ছিল বইয়ের প্রথম খণ্ডটির ইতিবৃত্ত।
.
বইটির দ্বিতীয় খণ্ডের লেখিকা প্রথম খণ্ডের লেখকের প্রেমিকা। তিনি কিভাবে যেন জানতে পারেন এত বছর পর যে, তার ইউরোপীয় প্রেমিক তাকে নিয়ে বই লিখেছে। সে তার জবাবেই বইটির ২য় খণ্ড লিখে। আর ঐ বইটিই চুরি করার জন্য আমি স্যারের বাসায় গিয়েছিলাম। স্যারকে বলার পরে স্যার যখন বইটি পড়তে দিতে অস্বীকৃতি জানালেন তখন বইটি চুরি করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। বইটি পড়ার জন্য একটা অভিনব কৌশল বের করলাম। স্যারের ওয়াইফকে জানালাম বইয়ের ব্যাপারটা। তাকে বললাম আমি বইটির কভার কেটে আমার পুরাতন একটা বইয়ের উপরে লাগিয়ে পুরাতন বইটি বুক শেলফে রেখে দিব। যতদিন পড়া শেষ না হচ্ছে ততদিন যেন তিনি স্যারকে এ বিষয়ে কিছু না বলেন। স্যারের ওয়াইফকে বলে বইয়ের কভার কেটে পুরাতন একটা বইয়ের উপরে কভারটা লাগিয়ে বুক শেলফের ঠিক জায়গায় রেখে দিলাম। ৩ দিন পর বইটা পড়া শেষে আবার কভার পরিবর্তন করে যথাস্থানে থুয়ে দিলাম।
.
বইটই পড়া শেষে স্যারকে গিয়ে বললাম স্যার আপনার 'ন্য হন্যেতে' বইটা আমার পড়া শেষ। স্যার বিস্ময় প্রকাশ করে জিজ্ঞাস করলেন কিভাবে? আমি বললাম স্যার আপনার বইটা খুলে দেখলেই বুঝতে পারবেন। স্যার বই খুলে কভারে আঠা লাগানো দেখে সমগ্র বিষয়টা বুঝে গেলেন।" স্যার কথা শেষ না করতেই ক্লাসের সকলে একযোগে হাত তালি দেয়া শুরু করল। সকলে কিছুক্ষণ হৈ হুল্লোড় করার পর স্যার বললেন, এবার তাহলে পড়ার দিকে মনোনিবেশ করা যাক। আমরা যা পড়াচ্ছিলাম তাহলে "I went to my teacher's house so that I could steal the book, 'The women and fiction" বাক্যটির সিম্পল ফর্ম কি দাড়াল? এর সিম্পল ফর্ম দাড়াল "সব চুরি চুরি নয়"। ক্লাসের সকলে আবার আরেক পালা হাত তালি দিয়ে স্যারকে অভিবাদন জানাল। এক সময় স্যার হাসি মুখে ক্লাস থেকে বেরিয়ে গেলেন।
২| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪৩
নাঈম মুছা বলেছেন: ধন্যবাদ মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন।
৩| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৪৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: নাঈম মুছা ,
বই চুরি কোনও পাপ নয় ।
এরকম কতো বই যে চুরি করেছি ছেলেবেলায় !
তবে ঐ বই দু'টো পড়েছেন নিশ্চয়ই ? চমৎকার , তাইনা ?
৪| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৭ ভোর ৫:৩৯
নাঈম মুছা বলেছেন: আহমেদ জী এস হা হা আপনিও তাহলে.....।
আপনার ছোটো বেলা তো তাহলে সেই মাপের ভালো কেটেছে! হুম পড়েছি এবং মুভিও দেখেছি। চমৎকার বললে ভুল হবে না।
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪২
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: সুন্দর ।