![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শিক্ষার গুণ, মান ও পরিমাণ নিয়ে অভিভাবক-অভিভাবিকা, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবীদের সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টির বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময়ে মিডিয়ায় আলোচনা সমালোচনার মাধ্যমে সকলের স্বরব উপস্থিতি আশাব্যঞ্জক। পরিমাণ তথা সংখ্যার বিচারে আমরা শিক্ষায় অনেক এগিয়েছি। যার ফলে শতকরা হিসাবে নব্বই এর কাছাকাছি পাশ এ দরিদ্র দেশের জন্য মহা আনন্দের।
শিক্ষার ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের কয়েকটি যুগান্তকারী ব্যবস্থা তা ধনাত্নক বা ঋণাত্মক যাই হউক না কেন, সংখ্যার বিচারে তা অস্বীকার করার উপায় নেই। বৎসরের প্রথমেই বিনামূল্যে বই বিতরণ এবং প্রাথমিক ও জুনিয়র স্তরে সারা দেশে কেন্দ্র ভিত্তিক সমাপণী পরীক্ষার ব্যবস্থা সত্যই প্রশংসার দাবী রাখে।
কিন্তু প্রবাদ আছে ‘চক চক করিলেই সোনা হয় না’। তেমনি সংখ্যার বিচারে সরকারী উক্ত যুগান্তকারী পদ্ধতি মহা আনন্দের হলেও গুণ ও মানের বিচারে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তা মহা বিপদের। এ বিপদজনক পরিস্থিতি যদি সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং তা থেকে উত্তরণের নিমিত্তে সরকার আন্তরিক ভাবে সচেষ্ট হন, তবে বর্তমানে চলমান প্রাথমিক ও জুনিয়র শ্রেণীর পরীক্ষা পদ্ধতি আমাদের আশীর্বাদ হয়ে অবশ্যই সত্য সুখের দ্বার উম্মোচন করে দিতে বাধ্য।
হতাশার বিষয় হল, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রনয়ন থেকে ফলাফল প্রকাশ করা পর্যন্ত যে স্তরগুলো রয়েছে, তা বোধ হয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই। প্রথমতঃ প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, মডারেশন, ছাপানো, কেন্দ্রে পাঠানো এর যে কোন স্তরে প্রশ্নপত্র ফাঁস, দ্বিতীয়তঃ পরীক্ষার হল, উত্তরপত্র মূল্যায়ন ও ফলাফল তৈরীর সময়ে অনৈতিকভাবে অতিরিক্ত নম্বর প্রাপ্তির সুবিধার্থে পরীক্ষার হলে উত্তর বলে দেওয়া ও উত্তরপত্রে অতিরিক্ত নম্বর প্রদানের ব্যবস্থা; তৃতীয়তঃ তারপরও পাশ না করলে, পাশের হার বাড়ানোর জন্য গ্রেস প্রদান- এই সব কারণ শিক্ষার মান ও গুণকে ভুলুন্ঠিত করছে।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, পাশের হার বৃদ্ধির জন্য নৈর্ব্যক্তিক অংশে পূর্বের ত্রিশ নম্বরের পরিবর্তে পঁয়ত্রিশ নম্বর প্রদানের নতুন পদ্ধতি চালু হয়েছে। এতে শিক্ষার্থী জানুক বা ন জানুক, পরীক্ষার হলে কেউ পঁয়ত্রিশ নম্বরের উত্তর শুদ্ধ করে দিলে তার পাশ অনিবার্য। ফলে শতভাগ পাশ ঠেকায় কে?
সুতরাং দেখা যায়, শিক্ষার্থীর শিক্ষার মান ও গুণ বৃদ্ধি হউক বা না হউক, পরিমাণ হিসাবে শতভাগ পাশ সুনিশ্চিত। ফলে জয় সরকারের, জয় শিক্ষার্থীর, জয় দুর্নীতির। পরাজয় শিক্ষার গুণ, মান, মূল্যবোধ ও নৈতিকতার।
সংগৃহীত। লেখকঃ মোহাম্মদ আজিজুল হক, অবসরপ্রাপ্ত সরকারী মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক, চট্টগ্রাম।
©somewhere in net ltd.